আবু আহমেদ test@gmail.com |
দুঃখ, ইউনূস বিদেশে বিখ্যাত স্বদেশে উপেক্ষিত
22 April 2013, Monday
ইউনূস অনেক বিখ্যাত লোক, অনেকের ধারণার চেয়েও বিখ্যাত।
ইউনূস কতটা বিখ্যাত সেটা টের পাওয়া যাবে আপনি যদি কোনো দেশের রাজধানীতে গিয়ে ওই সব দেশের উঁচু পদের লোকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা বলতে পারেন তোমাদের তো ইউনূস আছে, যে তোমাদের দেশকে বিখ্যাত করেছে। ইউনূসের জন্য অন্য অনেক দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা সাক্ষাৎকারপ্রার্থী হয়ে বসে থাকেন। ইউনূস এখন বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি বক্তা। তিনি বক্তৃতায় কী বলছেন? বলছেন তাঁর ক্ষুদ্রঋণের কথা। কিভাবে জামানত বাদে দরিদ্র লোকদের সামান্য আর্থিক সুবিধা দিয়ে তাদের আরো বেশি উৎপাদনশীল করা যায়। ইউনূসের কথা হলো, এরা ঘরে বসে থাকত। কিন্তু সামান্য ঋণ পেলে এরা কাজের অন্যান্য উপকরণ একত্র করে কিছু একটা করতে পারে এবং তাদের কাজের ফল বিক্রি করে পরে তারা ঋণও ফেরত দিতে পারে।
ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণের ধারণার বাস্তব প্রয়োগ শুরু হয় তিনি যখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ছিলেন। একেবারে কাছের গ্রামেই তিনি নিজের পকেট থেকে কিছু অর্থ দিয়ে সে কাজ শুরু করেন। সেই গ্রামের নাম হলো জোবরা। সেই জোবরা মডেলকে ইউনূস পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিলেন। প্রতিষ্ঠা করলেন গ্রামীণ ব্যাংক। সরকারও কিছু পুঁজি দিল। বেশির ভাগ পুঁজি দিল ইউনূসের উদ্যোগে সেই দরিদ্র ঋণগ্রহীতারা, যাদের সনাতনী ব্যাংকগুলো শুধু গরিব বলেই ঋণ দিত না। আশির দশকের প্রথম থেকে শুরু করে ২০০০ সাল পর্যন্ত ইউনূস হাজার হাজার গরিব মহিলার কাছে তাঁর ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে হাজির হলেন। তত দিনে তাঁর গ্রামীণ ব্যাংক মডেল দেশে-বিদেশে অনেক পরিচিতি লাভ করল। সেই পরিচিতি পেয়েছিল ইউনূসের কারণে। প্রথমে একটি আইডিয়া বা ধারণা, তারপর প্রতিষ্ঠান, তারপর গরিবদের দ্বারে গিয়ে ঋণ বিতরণ।
ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণের রিকভারি বা উসুল হলো ৯০ শতাংশের ওপর। ইউনূস দেখিয়ে দিলেন গরিবরা কাজও করে, ঋণও ফেরত দেয়। ২০০৭ সালে ইউনূস শান্তিতে নোবেল প্রাইজ পেলেন। পুরো বাংলাদেশ খুশি হলো। ভাবল, আমাদের তো একজন ইউনূস আছে। সেই হালকা-পাতলা গঠনের লোকটি, যাঁর মুখে সদা হাসি লেগে আছে, যিনি স্যুট-টাই পরা ভুলে গেছেন- তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত হলেন Banker to the Poor বা গরিবের ব্যাংকার হিসেবে। ইউনূসের মডেলকে বিশ্বের অন্য অনেক দেশ অনুকরণ করতে লাগল। ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণের বিষয়গুলো বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হলো। বাংলাদেশেও অনেক এনজিও গ্রামীণ ব্যাংকের দেখাদেখি ক্ষুদ্রঋণের কাজে নেমে পড়ল। তবে দুঃখ হলো, শেষ পর্যন্ত অনেক ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসায়ে রূপান্তর ঘটল। এটা ইউনূসের দোষ নয়। বাস্তবতা হলো, ক্ষুদ্রঋণের উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে গিয়ে অনেকে দারিদ্র্যের ওপর ভর করে ব্যবসা করে চলেছে। এর মূল কারণ হলো এ ক্ষেত্র সম্পূর্ণ ফ্রিডম।
রেগুলেটরি ব্যবস্থা ভালো না থাকায় অনেক এনজিও দরিদ্র লোকদের কাছে অতি উঁচু সুদে ঋণ বিক্রি করছে। আজকে বাংলাদেশ যদি ক্ষুদ্রঋণ বিক্রির উর্বর ভূমি হিসেবে চিহ্নিত হয়, তাহলে ইউনূসের সেই আদি ধারণার অপব্যবহার হচ্ছে বলা যাবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের করণীয় হলো ব্যবসায়িক মূলধনের বিস্তৃতির দিকে যেতে না দেওয়া। একটা রেগুলেটরি কমিশন গঠন করা যেত এ লক্ষ্যে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, সরকার এসব ক্ষেত্রে আন্তরিক নয়। যাহোক, ইউনূস বিখ্যাত হলেন তাঁর গ্রামীণ ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণের ধারণার জন্য। ইউনূস বিশ্বব্যাপী একটাই মেসেজ ছড়ালেন, সেটা হলো আগামী দুই দশকে বা তত সময়ের মধ্যে বিশ্ব থেকে দারিদ্র্যকে জাদুঘরে পাঠাতে হবে। অনেক লোক ইউনূসের এ কথায় বিশ্বাসও করছে। ইউনূসের মূল আইডিয়া হলো Social Business। এ ব্যবসার ধরন সম্পর্কে ইউনূস বললেন, এতে যে লাভ হবে তা বণ্টন হবে না। পুনঃপুঁজি হয়ে পুনঃবিনিয়োগ হবে। এতে নিয়োগ বাড়বে, সমাজের সম্পদ সৃষ্টি করবে এবং সম্পদের বণ্টনও সুষম হবে। তাঁর এই আইডিয়াও অনেকে লুফে নিচ্ছে।
এই হলো এক ধারণা, যে ধারণা দিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের শেষদিকে ক্ষুদ্রঋণের ধারণা নিয়ে নিজে জোবরা গ্রামে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। এখন ইউনূস অনেক বিখ্যাত। নোবেল বিজয়ী অনেকেই আছেন, তবে ইউনূসের মতো সম্মান অন্য নোবেল বিজয়ীরা পাননি। বিশ্বের সব নামিদামি মেডেল-পুরস্কার সবই পেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের মেডেল প্রাপ্তি এর অন্যতম। ইউনূস হলেন এই পদকে ভূষিত একমাত্র মুসলিম স্কলার। জানি না, ভবিষ্যতে কখন আর এক বাংলাদেশি নোবেল পান। তবে এটা ঠিক, বাংলাদেশ অনেক কৃতী সন্তানের জন্ম দিয়েছে। তাঁদের অনেকেই বিদেশে অনেক নাম কুড়িয়েছেন। কিন্তু আমাদের সন্দেহ তাঁরা স্বদেশে এতটা মূল্য পেতেন কি না।
যাহোক, আমাদের ইচ্ছা, প্রতিভাবানদের জন্য স্বদেশ-বিদেশ বলতে কিছু নেই। এক পর্যায়ে তাঁরা বিশ্বের সম্পদ হয়ে ওঠেন। আজকে ইউনূস যেমন বিশ্বের সম্পদ, তেমনি বাংলাদেশেরও। সারাটা জীবন কাটিয়েছেন তিনি বাংলাদেশেই। নতুন প্রজন্মের সামনে তেমন রোলমডেল নেই। ইউনূসের মতো লোকরাই হলেন ভালো রোলমডেল। বিখ্যাত লোকদের কাজের সমালোচনা থাকবেই। যারা কিছু করে না, তাদের কোনো সমালোচনাও হয় না। তাই ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণের এবং পরবর্তী সময়ে Social Business ধারণা ও প্রয়োগের সমালোচনা হবেই। আমাকে বললেও আমি শত পৃষ্ঠার সমালোচনা উপস্থাপন করতে পারতাম। অমর্ত্য সেন যখন অর্থনীতিতে নোবেল পান, তখন ভারতের অনেকে যেমন সমালোচনা করেছেন, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত দৈনিক The Wall Street লিখল- একজন সমাজতন্ত্রীকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলো। ভারতের বামেরা বললেন, ও তো পশ্চিমের দালাল। দালাল না হলে কেউ কি নোবেল পায়? তবে সত্য হলো নোবেল নোবেলই। বিশ্বব্যাপী এটাই সর্বোচ্চ সম্মান ও কাজের স্বীকৃতির জন্য পুরস্কার। প্রশ্ন হলো- আমার দেশ বাংলাদেশ কেন ইউনূসকে কাজে লাগাচ্ছে না? এ প্রশ্ন এ দেশের হাজার হাজার লোকের। ইউনূস আর কত দিন স্বদেশে উপেক্ষিত থাকবেন?
লেখক : অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ইউনূস কতটা বিখ্যাত সেটা টের পাওয়া যাবে আপনি যদি কোনো দেশের রাজধানীতে গিয়ে ওই সব দেশের উঁচু পদের লোকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা বলতে পারেন তোমাদের তো ইউনূস আছে, যে তোমাদের দেশকে বিখ্যাত করেছে। ইউনূসের জন্য অন্য অনেক দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা সাক্ষাৎকারপ্রার্থী হয়ে বসে থাকেন। ইউনূস এখন বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি বক্তা। তিনি বক্তৃতায় কী বলছেন? বলছেন তাঁর ক্ষুদ্রঋণের কথা। কিভাবে জামানত বাদে দরিদ্র লোকদের সামান্য আর্থিক সুবিধা দিয়ে তাদের আরো বেশি উৎপাদনশীল করা যায়। ইউনূসের কথা হলো, এরা ঘরে বসে থাকত। কিন্তু সামান্য ঋণ পেলে এরা কাজের অন্যান্য উপকরণ একত্র করে কিছু একটা করতে পারে এবং তাদের কাজের ফল বিক্রি করে পরে তারা ঋণও ফেরত দিতে পারে।
ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণের ধারণার বাস্তব প্রয়োগ শুরু হয় তিনি যখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ছিলেন। একেবারে কাছের গ্রামেই তিনি নিজের পকেট থেকে কিছু অর্থ দিয়ে সে কাজ শুরু করেন। সেই গ্রামের নাম হলো জোবরা। সেই জোবরা মডেলকে ইউনূস পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিলেন। প্রতিষ্ঠা করলেন গ্রামীণ ব্যাংক। সরকারও কিছু পুঁজি দিল। বেশির ভাগ পুঁজি দিল ইউনূসের উদ্যোগে সেই দরিদ্র ঋণগ্রহীতারা, যাদের সনাতনী ব্যাংকগুলো শুধু গরিব বলেই ঋণ দিত না। আশির দশকের প্রথম থেকে শুরু করে ২০০০ সাল পর্যন্ত ইউনূস হাজার হাজার গরিব মহিলার কাছে তাঁর ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে হাজির হলেন। তত দিনে তাঁর গ্রামীণ ব্যাংক মডেল দেশে-বিদেশে অনেক পরিচিতি লাভ করল। সেই পরিচিতি পেয়েছিল ইউনূসের কারণে। প্রথমে একটি আইডিয়া বা ধারণা, তারপর প্রতিষ্ঠান, তারপর গরিবদের দ্বারে গিয়ে ঋণ বিতরণ।
ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণের রিকভারি বা উসুল হলো ৯০ শতাংশের ওপর। ইউনূস দেখিয়ে দিলেন গরিবরা কাজও করে, ঋণও ফেরত দেয়। ২০০৭ সালে ইউনূস শান্তিতে নোবেল প্রাইজ পেলেন। পুরো বাংলাদেশ খুশি হলো। ভাবল, আমাদের তো একজন ইউনূস আছে। সেই হালকা-পাতলা গঠনের লোকটি, যাঁর মুখে সদা হাসি লেগে আছে, যিনি স্যুট-টাই পরা ভুলে গেছেন- তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত হলেন Banker to the Poor বা গরিবের ব্যাংকার হিসেবে। ইউনূসের মডেলকে বিশ্বের অন্য অনেক দেশ অনুকরণ করতে লাগল। ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণের বিষয়গুলো বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হলো। বাংলাদেশেও অনেক এনজিও গ্রামীণ ব্যাংকের দেখাদেখি ক্ষুদ্রঋণের কাজে নেমে পড়ল। তবে দুঃখ হলো, শেষ পর্যন্ত অনেক ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসায়ে রূপান্তর ঘটল। এটা ইউনূসের দোষ নয়। বাস্তবতা হলো, ক্ষুদ্রঋণের উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে গিয়ে অনেকে দারিদ্র্যের ওপর ভর করে ব্যবসা করে চলেছে। এর মূল কারণ হলো এ ক্ষেত্র সম্পূর্ণ ফ্রিডম।
রেগুলেটরি ব্যবস্থা ভালো না থাকায় অনেক এনজিও দরিদ্র লোকদের কাছে অতি উঁচু সুদে ঋণ বিক্রি করছে। আজকে বাংলাদেশ যদি ক্ষুদ্রঋণ বিক্রির উর্বর ভূমি হিসেবে চিহ্নিত হয়, তাহলে ইউনূসের সেই আদি ধারণার অপব্যবহার হচ্ছে বলা যাবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের করণীয় হলো ব্যবসায়িক মূলধনের বিস্তৃতির দিকে যেতে না দেওয়া। একটা রেগুলেটরি কমিশন গঠন করা যেত এ লক্ষ্যে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, সরকার এসব ক্ষেত্রে আন্তরিক নয়। যাহোক, ইউনূস বিখ্যাত হলেন তাঁর গ্রামীণ ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণের ধারণার জন্য। ইউনূস বিশ্বব্যাপী একটাই মেসেজ ছড়ালেন, সেটা হলো আগামী দুই দশকে বা তত সময়ের মধ্যে বিশ্ব থেকে দারিদ্র্যকে জাদুঘরে পাঠাতে হবে। অনেক লোক ইউনূসের এ কথায় বিশ্বাসও করছে। ইউনূসের মূল আইডিয়া হলো Social Business। এ ব্যবসার ধরন সম্পর্কে ইউনূস বললেন, এতে যে লাভ হবে তা বণ্টন হবে না। পুনঃপুঁজি হয়ে পুনঃবিনিয়োগ হবে। এতে নিয়োগ বাড়বে, সমাজের সম্পদ সৃষ্টি করবে এবং সম্পদের বণ্টনও সুষম হবে। তাঁর এই আইডিয়াও অনেকে লুফে নিচ্ছে।
এই হলো এক ধারণা, যে ধারণা দিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের শেষদিকে ক্ষুদ্রঋণের ধারণা নিয়ে নিজে জোবরা গ্রামে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। এখন ইউনূস অনেক বিখ্যাত। নোবেল বিজয়ী অনেকেই আছেন, তবে ইউনূসের মতো সম্মান অন্য নোবেল বিজয়ীরা পাননি। বিশ্বের সব নামিদামি মেডেল-পুরস্কার সবই পেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের মেডেল প্রাপ্তি এর অন্যতম। ইউনূস হলেন এই পদকে ভূষিত একমাত্র মুসলিম স্কলার। জানি না, ভবিষ্যতে কখন আর এক বাংলাদেশি নোবেল পান। তবে এটা ঠিক, বাংলাদেশ অনেক কৃতী সন্তানের জন্ম দিয়েছে। তাঁদের অনেকেই বিদেশে অনেক নাম কুড়িয়েছেন। কিন্তু আমাদের সন্দেহ তাঁরা স্বদেশে এতটা মূল্য পেতেন কি না।
যাহোক, আমাদের ইচ্ছা, প্রতিভাবানদের জন্য স্বদেশ-বিদেশ বলতে কিছু নেই। এক পর্যায়ে তাঁরা বিশ্বের সম্পদ হয়ে ওঠেন। আজকে ইউনূস যেমন বিশ্বের সম্পদ, তেমনি বাংলাদেশেরও। সারাটা জীবন কাটিয়েছেন তিনি বাংলাদেশেই। নতুন প্রজন্মের সামনে তেমন রোলমডেল নেই। ইউনূসের মতো লোকরাই হলেন ভালো রোলমডেল। বিখ্যাত লোকদের কাজের সমালোচনা থাকবেই। যারা কিছু করে না, তাদের কোনো সমালোচনাও হয় না। তাই ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণের এবং পরবর্তী সময়ে Social Business ধারণা ও প্রয়োগের সমালোচনা হবেই। আমাকে বললেও আমি শত পৃষ্ঠার সমালোচনা উপস্থাপন করতে পারতাম। অমর্ত্য সেন যখন অর্থনীতিতে নোবেল পান, তখন ভারতের অনেকে যেমন সমালোচনা করেছেন, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত দৈনিক The Wall Street লিখল- একজন সমাজতন্ত্রীকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলো। ভারতের বামেরা বললেন, ও তো পশ্চিমের দালাল। দালাল না হলে কেউ কি নোবেল পায়? তবে সত্য হলো নোবেল নোবেলই। বিশ্বব্যাপী এটাই সর্বোচ্চ সম্মান ও কাজের স্বীকৃতির জন্য পুরস্কার। প্রশ্ন হলো- আমার দেশ বাংলাদেশ কেন ইউনূসকে কাজে লাগাচ্ছে না? এ প্রশ্ন এ দেশের হাজার হাজার লোকের। ইউনূস আর কত দিন স্বদেশে উপেক্ষিত থাকবেন?
লেখক : অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
__._,_.___