Banner Advertise

Monday, March 10, 2014

[chottala.com] রাজনীতিতে ‘গুণগত’ পরিবর্তন!!! by মাসুদা ভাট্টি




মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০১৪, ২৭ ফাল্গুন ১৪২০
রাজনীতিতে 'গুণগত' পরিবর্তন!!!
মাসুদা ভাট্টি
২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিএনপি রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেয়। বেগম জিয়া নিজেই দেন এই ঘোষণা। সন্দেহ নেই, এই ঘোষণা কেবল নির্বাচনে পরাজয়ের কারণে আসেনি। বরং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চলা বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে যে ভয়ঙ্করের রাজনীতি এদেশের মানুষের ঘাড়ে জেঁকে বসেছিল তা থেকে মানুষ উত্তরণের পথ খুঁজছিল। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে এদেশের মানুষকে এই অপশাসন থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছে সফলভাবে। ফলে বিএনপি-জামায়াতের ভূমিধস পরাজয় ঘটেছে। বেগম জিয়া সে কারণেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, দলীয় রাজনীতিতে তিনি গুণগত পরিবর্তন ঘটাবেন। কিন্তু গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে হলে তো প্রথমেই তাঁর গুণধর পুত্রদের রাজনীতি থেকে দূরে সরাতে হবে। কারণ, এই দুই পুত্রের কারণেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সমান্তরালে হাওয়া ভবন নামে একটি ভবন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেখান থেকে প্রকৃত সরকারের চেয়েও শক্তিশালী একটি ছায়া সরকার বাংলাদেশ চালাতে শুরু করেছিল। এমনকি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্তও এই হাওয়া ভবন থেকে আসত তখন। দেশকে জঙ্গীরাষ্ট্রে পরিণত করার সকল আয়োজনও সম্পন্ন হয়েছিল এখান থেকেই। এছাড়া বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করতে হাওয়া ভবন থেকে গ্রেনেড হামলার মতো ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে ক্রমশ প্রমাণ বেরিয়ে আসছে। কিন্তু বেগম জিয়া যেহেতু তাঁর পুত্রদের বিশেষ করে বড় পুত্র তারেক জিয়াকে দল থেকে সরাতে পারেননি সেহেতু তাঁর কথিত 'গুণগত পরিবর্তন' দেখার সৌভাগ্য আমাদের হয়নি। তারপর গত ছয় বছরে বিএনপির রাজনীতি ক্রমাগত আমাদের সেই 'গুণগত'(?) পরিবর্তনের প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছে, যাতে বোঝা যাচ্ছে যে, বিএনপি আসলে নিজেদের রাজনীতিই ভুলে গিয়েছে। রাজনীতি ও আন্দোলনকে 'আউটসোর্স' করার যে নতুনতর আয়োজন বেগম জিয়া আমাদের সেটিই শিখিয়েছেন তাঁর রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়ে। 
যাহোক, বিএনপি রাজনীতির এই গুণগত পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি যোগ হয়েছে নতুন একটি অধ্যায়। হঠাৎই ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বলে গণমাধ্যম জানিয়েছে। বিষয়টি কৌতুককর, সন্দেহ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোহ্্রাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে কৌতুক করেছেন বিষয়টি নিয়ে। এবং তিনি বলতে গেলে অতিকথনই করেছেন এ নিয়ে এবং যথারীতি তিনি এ জন্য সমালোচিতও হয়েছেন। আমরা মনে করি যে, প্রধানমন্ত্রীর এ বিষয়ে এভাবে বলাটা উচিত হয়নি। কারণ, তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং কোন ধরনের উস্কানিমূলক ভাষা তিনি ব্যবহার করবেন না বলেই আশা করা যায়। কিন্তু বেগম জিয়া ও বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেবের বৈঠকের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির আরেকটি কঠিন সত্যও যে বেরিয়ে এসেছে সে বিষয়টি নিয়েই আজকে আলোচনা করতে চাইছি। তা হলো জেনারেল জিয়া আমাদের জানিয়েছিলেন যে, রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে আসলে কিছুই নেই। এই বৈঠক আবারও সে কথাটি আমাদের সামনে এনে হাজির করেছে। এই বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বিএনপি বিশেষ করে বেগম জিয়া স্ব উদ্যোগে এক সময় চরম অপমান করে দল থেকে বের করে দিয়েছিলেন। কবর জিয়ারতের রাজনীতি থেকে ডা. চৌধুরী নিজেকে একটু সরাতে চেয়েছিলেন বলেই তাঁর এ পরিণতি হয়েছিল বলে অনেকে মনে করে থাকেন। কিন্তু সে জন্য তাঁকে রেললাইন ধরে দৌড়াতে হয়েছিল মনে করার কোন কারণ নেই। এর পেছনে আরও বড় কোনও কারণ ছিল যা কোনদিনই হয়ত বেরিয়ে আসবে না। কারণ, সেগুলো জনসম্মুখে আনার দায় ও দায়িত্ব ছিল ডা. চৌধুরীর। তিনি এতদিন যেহেতু সে বিষয়ে মুখ খোলেননি এখন তো তিনি আবার তাঁর সাবেক রাজনীতির ঘরে ফিরে যাওয়ার আয়োজন প্রায় শেষই করেছেন; সেহেতু জাতি জানতেও পারবে না কেন বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে প্রায় 'ইমপীচ্' করা হয়েছিল? কেনই বা তাঁকে নিজ হাতে গড়া রাজনৈতিক দল থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল? কেন তাঁকে রেললাইন ধরে দৌড়ে প্রাণ বাঁচাতে হয়েছিল? 
আমরা দেখেছি যে, বিগত বছরগুলোতে ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপি-জামায়াতের বাইরে (কিন্তু রাজনীতিতে একই কাতারভুক্ত) ড. কামাল হোসেন, আ স ম রব, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্নাদের নিয়ে একটি বিকল্প রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের চেষ্টা করেছেন। মূলত এই প্ল্যাটফর্ম যতটা না আওয়ামী লীগবিরোধী ততটাই বিএনপি-জামায়াতের নিকটবর্র্তী। মজার ব্যাপার হলো, এদের পক্ষ থেকে এদেশের জঙ্গী রাজনীতির প্রবক্তা, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতকে কখনওই সমালোচনা করে কিছু বলা হয়নি। এদেশে দুর্নীতিকে স্থায়িত্ব দেয়া বিএনপি বা তারেক জিয়ার সমালোচনাও এখান থেকে কখনও শোনা যায়নি। কেবলমাত্র আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার যে কোন ত্রুটি-বিচ্যুতিতে এঁরা মুখর থেকেছেন। তা খারাপ অবশ্যই নয়, কিন্তু তাতে তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন হয়নি এদেশের মানুষের কাছে। আমরা জানি, ড. কামাল হোসেন এদেশের রাজনীতিতে কেবল একজন 'ব্যক্তি' মাত্র, একসময় আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর থেকে তিনি নিজেকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছিলেন এবং এক সময় তিনি দল থেকে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু বেরিয়ে এসে তিনি রাজনৈতিক দল গঠনে কার্যত ব্যর্থ হন। কারণ মানুষের কোন স্পষ্ট ধারণা তাঁর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে গড়ে ওঠেনি। বিশেষ করে আওয়ামী রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে এর বিকল্প কোন সুষ্ঠু রাজনৈতিক প্রোগ্রাম তিনি জনগণের সামনে হাজির করতে পারেননি। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালীন তাঁর অবস্থান এবং বঙ্গবন্ধু পরবর্তীকালে তাঁর রাজনৈতিক দোলাচল, বিদেশী যোগাযোগ ইত্যাদি তাঁকে এদেশের মানুষের রাজনৈতিক ভাবনা থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। ফলে তিনি যখন নিজেই সক্রিয় রাজনৈতিক দল খোলার ঘোষণা দিলেন তখন তাঁর পাশে কতিপয় ছাড়া বিশাল কোন জন-এর সমাবেশ দেখা গেল না। 
অন্যদিকে ডা. বি. চৌধুরী এদেশে বিএনপির রাজনীতির প্রাণপুরুষ বলতে গেলে। যদিও তাঁরও জন্ম আওয়ামী পরিবারেই। কিন্তু তিনি জেনারেল জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক হাত হিসেবেই এদেশে পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হিসেবে একটি রাজনৈতিক শক্তির প্রয়োজনীয়তা তিনি জিয়াউর রহমানকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং সে লক্ষ্যেই তিনি কাজ করে গিয়েছেন। এমনকি বিএনপিকে ইসলামী জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে ট্যাগ করার কৃতিত্বও তাঁরই। মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ এবং অবস্থান কি সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই আমার। কিন্তু স্মরণ করা যেতে পারে, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে এটিএন বাংলা টেলিভিশনে 'সাবাশ বাংলাদেশ' নামক কুরুচিপূর্ণ অনুষ্ঠানটির নেপথ্যকার তিনি নিজেই এবং তখন জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির যে জোট গঠিত হয়েছিল তাতেও তিনি কোন প্রকার বাধা হননি। ফলে এদেশের রাজনীতিতে ডা. বি চৌধুরী আসলে সনাতনপন্থীই অর্থাৎ ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে উস্কে দিয়ে আওয়ামী লীগের বিকল্প একটি প্ল্যাটফর্মে থেকেই রাজনীতিকে তিনি দেখেছেন মূলত।
এরপর বাকি থাকলেন আ স ম রব। এক সময়ের জাসদ এবং তারপর এরশাদ শাহী। এর সম্পর্কে বলার বিষয় সামান্যই। কাদের সিদ্দিকী সম্পর্কেও যত কম বলা যায় ততই স্বাস্থ্যকর। কারণ একজন মুক্তিযোদ্ধা যে চিরকাল মুক্তিযোদ্ধা নন তার জ্বলজ্বলে প্রমাণ কাদের সিদ্দিকী স্বয়ং। এদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তাঁর ভূমিকা সর্বাধিক বলেই আমি মনে করি। কারণ, তখন যে অনেক মুক্তিযোদ্ধাই আসলে চেতনা-বিষয়ে অজ্ঞ ছিলেন পরবর্তীকালে কাদের সিদ্দিকীর মতো অনেকেই তার প্রমাণটি আমাদের দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বনিবনা হয় না ভাল কথা, কিন্তু তাই বলে আওয়ামী বিরোধিতার নামে দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের সঙ্গে গিয়ে নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার 'পাপ'(!) খ-াতে হবে তা কাদের সিদ্দিকীই জানিয়েছেন আমাদের। এখন তো আবার শুনছি তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে আদালত পর্যন্ত দৌড়াচ্ছেন। দেখা যাক, দৌড়ের ফলাফল কী হয়? ডা. চৌধুরী রেললাইন দিয়ে দৌড়ে তো আবার সেই বেগম জিয়ার কাছেই পৌঁছেছেন!!
এখন প্রশ্ন হলো, এই যে যাঁদের কথা উপরে বলেছি তাঁদের সকলেই নিজ নিজ অবস্থান এবং গোষ্ঠীগতভাবে বিগত নির্বাচনের আগে তা বন্ধ করার জন্য যারপরনাই শক্তি খরচ করেছেন। ধর্ণা দিয়েছেন দেশী ও বিদেশী বিভিন্ন অপশক্তির কাছে। কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন, ঠেকাতে পারেননি নির্বাচন। যে প্রকারেরই হোক না কেন, নির্বাচন একটি হয়েছে এবং দেশে আপাত শান্তি ফিরে এসেছে। স্বাভাবিক গতি ফিরে পেয়েছে অর্থনীতি। আমরা কিছুদিন যাবত এদের কোন কর্মকা-ই দেখতে পাচ্ছিলাম না; অনেকেই হয়ত ভেবেছেন যে, যাক বাঁচা গেল, এদের চুপ করানো গিয়েছে। কারণ, জনসমর্থনের অভাব যাঁদের রয়েছে তাঁদের কথা মানুষ শুনতেও চায় না, বিশ্বাসও করে না। ব্যক্তিকে কিছু ব্যক্তিমাত্রই শোনেন বা বোঝার চেষ্টা করেন, সমষ্টির কাছে ব্যক্তির অবস্থান সামান্যই। একথা বুঝতে পেরেই হয়ত ডা. বি চৌধুরী তাঁর মিত্রদের অর্থাৎ ড. কামাল হোসেন, আ স ম রব, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্নাকে ছেড়ে আবার গিয়ে হত্যে দিয়ে পড়েছেন বেগম জিয়ার কাছে। প্রশ্ন হলো, এঁদের কাছ থেকে দেশের, রাজনীতির, গণতন্ত্রের এবং সর্বোপরি জাতির আর কিছু পাওয়ার আছে কি? 
প্রশ্নটি দিয়েই শেষ করতে চাই আজকের আলোচনার। বেগম জিয়ার রাজনীতিতে গুণগত মান ফিরিয়ে আনার কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম। জানি না, এই গুণগত মান বলতে তিনি আমাদের কী বুঝিয়েছিলেন? আমরা এখনও বুঝতে পারিনি, বিএনপি রাজনীতির কি মানের তিনি পরিবর্তন এনেছেন? অপরদিকে ডা. চৌধুরী, ড. হোসেন, সিদ্দিকী, রব, রহমানরাই বা এদেশের রাজনীতিকে কি দিতে পারেন? কি দিতে চান সে বিষয়েও আমরা এখন পর্যন্ত বুঝতে পারিনি, পারব কি-না তাও জানি না। আশা করি, পাঠকও এতক্ষণে একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন? প্রশ্নটি আর কিছুই নয়, সত্য সত্যই কি দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন ও গুণগত পরিবর্তন প্রয়োজন নয়? আমি তো বিশ্বাস করি, প্রয়োজন, অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু সে পরিবর্তন নিশ্চয়ই উপরে যাঁদের কথা বলেছি তাঁদের হাত ধরে আসবে না? আপনারা কি একমত আমার সঙ্গে? 

ঢাকা ॥ ১০ মার্চ, সোমবার ॥ ২০১৪ ॥ 
masuda.bhatti@gmail.com
প্রকাশ :মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০১৪, ২৭ ফাল্গুন ১৪২০





__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___

[chottala.com] রাজনীতিতে আবার খালেদার গোপালী/



রাজনীতিতে আবার খালেদার গোপালী/
 রাজনীতিতে আবারও আলোচনায় 'গোপালী।' অর্থাৎ গোপালগঞ্জ। রবিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আবারও গোপালগঞ্জ জেলাকে নিয়ে মন্তব্য করায় এ নিয়ে হাস্যরসের শেষ নেই। কেউ বিষয়টি রসিকতার দৃষ্টিতে দেখছেন। আবার কেউ কেউ করছেন কঠোর সমালোচনা। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে 'গোপালী এখন ট্রেনে নেই...' এমন বক্তব্যে হতাশা ব্যক্ত করেছেন সাধারণ মানুষ। এর আগেও গত বছরের ডিসেম্বর মাসে পুলিশ সদস্য ও গোপালগঞ্জ জেলাকে নিয়ে দেয়া বক্তব্যে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন খালেদা জিয়া। 
রবিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, 'গোপালীরা নাকি কপালি হয়।' হায়রে গোপালী! গোপালী এখন আর ট্রেনে নেই। গোপালীকে এখন ক্রেন দিয়ে টেনে তুলতে হবে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেয়া সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। ৫৭টি ভোটকেন্দ্রে শূন্য ভোট পড়েছে সে নির্বাচনে গঠিত সংসদ অবৈধ। আর এ নির্বাচনের পর যে সরকার গঠন করা হয়েছে তাও অবৈধ। তাঁর এ বক্তব্যের পর পরই নানা মহলে শুরু হয় সমালোচনা । কারো মতে, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন বক্তব্য মানায় না। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা ট্রেন মিস করিনি আপনারাই ভুল ট্রেনে উঠেছেন। আর জনগণ আপনাদের সেই ভুলের মাসুল দিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করব। আমাদের নিয়ে তাদের এত ভয় যে বিএনপি কোন কর্মসূচী দিতে পারে না। আমরা একটা সমাবেশ করতে চাই অথচ তারা অনুমতি দেয় না। 
সম্প্রতি একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, 'আমি গোপালগঞ্জের হওয়ায় গর্বিত। এ জেলা নিয়ে যে যাই বলুক, কথায় আছে গোপালীরা কপালি হয়। বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের নাম শুনলে ওনার (খালেদা জিয়া) গায়ে জ্বালা ধরে। তাই এই জেলাকে নিয়ে তিনি যা ইচ্ছা তাই বলে যাচ্ছেন।' 
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে রোডমার্চ ফর ডেমোক্র্যাসি কর্মসূচী ঘোষণা করেছিলেন খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক এই কর্মসূচীকে ঘিরে শুরু হয় ব্যাপক উত্তেজনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে খালেদা জিয়াকে তাঁর গুলশানের বাড়িতে অনেকটা অবরুদ্ধ করে রেখেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কর্মসূচীকে ঘিরে ক্ষুব্ধ খালেদা জিয়ার কণ্ঠে উচ্চারিত হয় গোপালগঞ্জের ব্যঙ্গাত্মক নাম। সেদিন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এক নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে বলেছেন, 'চুপ বেয়াদব কোথাকার। এই যে মহিলা আপনি এখন কথা বলছেন না কেন। এতক্ষণ তো অনেক কথা বললেন। দেশ কোথায়? গোপালী? গোপালগঞ্জ জেলার নামই বদলিয়ে দেব। গোপালগঞ্জ আর থাকবে না। মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচীতে বের হতে খালেদা জিয়াকে বাধা দেয়ার পর তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার এই মন্তব্যে সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকে, টুইটার, ব্লগ সহ রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা হাস্যরস এবং সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ক্ষুব্ধ হন গোপালগঞ্জের মানুষ। এই বক্তব্যের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় সভা, সমাবেশ ও অবরোধ কর্মসূচী পালিত হয়। 
পুলিশের উদ্দেশে খালেদা জিয়া সেদিন আরও বলেছিলেন, আপনার মেয়েরা এত ঝগড়া করে কেন? এই মেয়েরা ঝগড়া করছ কেন। কিসের জন্য এত কথা বল। চুপ থাক বেয়াদব কোথাকার। আপনাদের অফিসার কোথায়? এতক্ষণ তো অনেক কথা বললেন। মুখটা বন্ধ কেন। দেশ আজ কোথায় যাচ্ছে। এরা সবাই গোপালগঞ্জের। গোপালগঞ্জের নামই বদলে যাবে। গোপালগঞ্জ থাকবে না। যারা এসব করছে তাদের ওপর আল্লাহর গজব পড়বে।


__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___

Re: [chottala.com] FW: India's water war against Bangladesh



She is waging this kind of war against Pakistan, Nepal and bhutan too.


On Monday, March 10, 2014 11:15 AM, Shahadat Hussaini <shahadathussaini@hotmail.com> wrote:
 

 

Date: Mon, 10 Mar 2014 13:01:45 +0600
Subject: Re: India's water war against Bangladesh
From: bdmailer@gmail.com
To:

বাংলাবান্ধার বিপরীতে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ : পঞ্চগড়ের ২৫টি নদনদী এখন মরা খাল


বাংলাদেশের উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণের ফলে পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট বড় ২৫টি নদনদী মরা খালে পরিণত হয়েছে। এক সময়ের প্রমত্তা করতোয়া মহানন্দা নদীর বুকে এখন জেগে উঠেছে বিশাল বালুচর। পর্যাপ্ত পানির প্রবাহ না থাকায় নদীর বুকে আবাদ হচ্ছে ইরি বোরো ধান। নদনদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের সীমান্ত এই জনপদের প্রাকৃতিক পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হতে বসেছে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2014/03/10/238104#.Ux1guc6_iSq


2014-03-05 11:58 GMT+06:00 Isha Khan <bdmailer@gmail.com>:
ভারতীয় আন্তঃনদী সংযোগে দ্রুত অগ্রগতি :: নির্বিকার বাংলাদেশ

ভারতে বহুল আলোচিত আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের কার্যক্রমে নাটকীয় অগ্রগতি ঘটেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সম্প্রতি। যার প্রথম ধাপ হিসেবে কেন (Ken) ও বেতোয়া (Betwa) নদীর মাঝে সংযোগকারী কৃত্রিম খাল তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে শিগগির। উল্লেখ্য, মধ্য প্রদেশ ও উত্তর প্রদেশ জুড়ে প্রবাহিত কেন ও বেতোয়া নদী উভয়েই যমুনায় মিশেছে। আর যমুনা মিশেছে গঙ্গায়।
পুরোপুরি কংক্রীটে তৈরি কেন-বেতোয়া নদী সংযোগ খালটি হবে প্রস্তাবিত আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের ৩০টি পরিকল্পিত খালের প্রথমটি - যার দৈর্ঘ্য ৩২৩.৪৫ কিলোমিটার। তবে এই নির্মাণ উদ্যোগের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো মধ্যপ্রদেশের সাত্তারপুর-পান্না জেলার সীমান্তে প্রকল্পের মধ্যে ৭৩.৮০ মিটার উচু একটি ড্যাম ['দাউদান' (Daudhan) নামে পরিচিত] গড়ে তোলা হবে। যার দু' স্থানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের দুটি কেন্দ্র থাকবে।
কেন-বেতোয়া সংযোগ খাল থেকে ভারত মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশের ৪.৯৭ লাখ হেক্টর জমিকে নতুন করে সেচের আওতায় আনবে বলে পরিকল্পনা করছে। যেসব জেলায় সংযোগ খাল থেকে সেচের পানি যাবে তার মধ্যে রয়েছে - মধ্যপ্রদেশের সাত্তারপুর, টিক্কাগড়, পান্না, রাচি, বিদিশা এবং উত্তর প্রদেশের ঝাশি ও হামিরপুর। সেচ ছাড়াও বিদ্যুত উৎপাদনের পরিকল্পনা থাকায় কেন-বেতোয়া প্রকল্প বিশেষজ্ঞ পরিমন্ডলে 'সেচসহ বিদ্যুত প্রকল্প' হিসেবেই পরিচিত এখন।
ভারতে ও ভারতের বাইরে - উভয় স্থানে পরিবেশবাদী ব্যক্তি ও সংগঠনগুলো প্রথম থেকে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে সোচ্চার। ভারতীয় পরিবেশ বিশেজ্ঞদের বড় উদ্বেগের কারণ হলো পান্না জেলায় ভারতের যে 'টাইগার রিজার্ভ পার্ক' রয়েছে সেই বনভূমির বিরাট এলাকা প্রকল্পের কাজের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। সরকারিভাবেই স্বীকার করা হচ্ছে যে, ,৪০০ হেক্টর বনভূমি নষ্ট হবে এই প্রকল্পে। এছাড়া এই প্রকল্পের কৃত্রিম খালের জন্য বহু মানুষকে উচ্ছেদও হতে হবে। সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ১০টি গ্রামের ৮,৫৫০ মানুষ উচ্ছেদ হওয়ার আশংকার কথা কথা বলা হয়েছে। এছাড়া পানি বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদীরা সচরাচর এটাও বলে থাকেন যে, প্রত্যেক নদীর অববাহিকার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সুরক্ষা সেই নদীর অববাহিকাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে। পানি বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদীদের এসব বক্তব্য শুরু থেকে আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে।
আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের ধারণা নিয়ে ভারত প্রথম কাজ শুরু করে ১৯৮২ সালে। ১৯৮০ সালে ভারতের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় পানিসম্পদ বিষয়ে যে জাতীয় পরিকল্পনা তৈরি করে তাতে প্রথম নদীগুলোর আন্ত:সংযোগের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই দুই বছর পর গঠন করা হয় ন্যাশনাল ওয়াটার ডেভলপমেন্ট এজেন্সি বা এনডব্লিউডিএ।
নদীসংযোগ পরিকল্পনা আবার গড়ে উঠেছে এ ধারণার ওপর ভিত্তি করে যে, ভারতের কিছু অববাহিকায় 'উদ্বৃত্ত পানি রয়েছে' এবং সেখান থেকে তা 'পানির অভাবগ্রস্ত অববাহিকা'য় নেয়া যেতে পারে। এইরূপ প্রকৌশলগত চিন্তার প্রথম উদ্যোক্তা ছিলেন ১৯৬৩-৬৪ সালে খ্যাতনামা সেচ ও বিদ্যুতমন্ত্রী ড. কানুরি লক্ষণ রাও। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পানির তীব্র সংকট ও মরুকরণের মুখে পানিকেন্দ্রীক ওই ভাবনা এবং ১৯৮২ পরবর্তী উদ্যোগসমূহ স্বাভাবিকভাবেই জনমানসে ব্যাপক সমর্থন পায়। এই ধারণার সমর্থকরা তখন থেকে বলছে, এটা বাস্তবায়ন করা গেলে দেশের ৩৫ মিলিয়ন হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে। ৩৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত নতুন করে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত করা যাবে এবং অনেক প্রদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণও সহজ হবে।
অত্যধিক ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে প্রথম থেকে আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভাব্যতা নিয়ে অনেক সন্দেহ ছিল। এমনকি গঙ্গার শাখানদী হিসেবে মহানদি, গোদাভারী ইত্যাদিতে 'উদ্ধৃত্ত' পানি থাকার যে ধারণার ওপর ভিত্তি করে এই মেগা প্রকল্পের অভিযাত্রা - তার যথার্থতা সম্পর্কেও এখনো কোন পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ গবেষণা ও জরিপ হয়নি সেখানে।
বিজ্ঞানসম্মত উপাত্তের অভাবে তাত্ত্বিক সমর্থন না থাকা সত্ত্বেও এই প্রকল্প ধারণাটি বিশেষ বেগবান হয় ১৯৯৯ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বে এনডিএ জোট দেশটির কেন্দ্রে ক্ষমতা গ্রহণের পর। রাজস্থান, গুজরাট, অন্ধ্র প্রদেশ, কর্নাটক ও তামিলনাড়–র মতো হিন্দু প্রধান ও খরা প্রবণ এলাকাগুলোতে ভোট পাওয়ার জন্য বিজেপি এই প্রকল্পকে বিশেষ ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে অনেক বছর ধরে। এই প্রকল্পের জন্য তারা যে টাস্কফোর্স গঠন করে খুব সচেতনভাবে তার প্রধান করা হয় শিবসেনা নেতা সুরেশ প্রভুকে।
পরবর্তীকালে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউপিএ জোট ক্ষমতায় এসে এই প্রকল্প নিয়ে ধীরে চলো নীতি নিয়েছিল। তবে ২০১২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সেদেশের সুপ্রীম কোর্ট-এর একটি বেঞ্চ (এস কুমার, এস এইচ কাপাডিয়া ও এ কে পাটনায়েকের সমন্বয়ে গঠিত) আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ভারত সরকারকে নির্দেশনা দেয়। আন্ত:সংযোগের জন্য উল্লিখিত নদীগুলো যে আন্তর্জাতিক নদী এবং তার বিশাল অববাহিকা জুড়ে যে অন্যান্য দেশের মানুষও বসবাস করে এবং নদীর পানির যেকোনরূপ ব্যবহার যে তাদেরও স্বার্থসংশ্লিষ্ট সুপ্রীম কোর্ট নির্দেশনা দেয়ার সময় সে বিষয়টি পুরোপুরি অগ্রাহ্য করে।
কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের অনেক শরিকের অনাগ্রহ সত্ত্বেও ভারতের পানি সম্পদ মন্ত্রী হরিস রাউত নিজে প্রকল্পের ব্যাপারে উৎসাহি ছিলেন। যে কারণে সুপ্রীম কোর্টের রায় পেয়ে তাঁর পক্ষে প্রকল্প এগিয়ে নেয়া সহজ হয়। তবে গত ১ ফেব্রুয়ারি হরিস রাউত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে উত্তরখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আর কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গোলাম নবী আজাদকে।
এ পর্যন্ত প্রস্তাবিত ৩০টি সংযোগ খালের মধ্যে তিনটির ডিটেইল প্রজেক্ট রিপোর্ট [ডিপিআর] তৈরি করা হয়েছে - যার মধ্যে প্রথমে রাখা হয়েছে কেন-বেতোয়া প্রকল্পকে। একমাত্র এই প্রকল্পটিরই সম্ভাব্যতা যাচাই হয়েছে এবং ভারত ওই ভিত্তিতেই অন্যান্য সংযোগ প্রকল্পগুলো নিয়ে এগোবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের দু'টি প্রধান দিক রয়েছে - যার একটি বলা হয় পেনিনসুলা অংশ এবং অন্যটিকে বলা হয় হিমালয়ান অংশ। প্রথম অংশে থাকবে দক্ষিণ ভারতের মহানদি, গোদাভারী, পেন্নার, কৃষ্ণা, কাবেরী ইত্যাদি নদীর মধ্যে সংযোগ সাধনের জন্য ১৬ কৃত্রিম খাল তৈরি। আর দ্বিতীয় দিকে - উত্তর হিমালয় নদী উন্নয়ন কার্যক্রম বা (Northern Himalayan River Development Component)-এ থাকবে মূলত গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী এবং এগুলোর শাখা নদীতে পানি সংরক্ষণের জন্য কৃত্রিম সংরক্ষণাগার তৈরি। এখানে অধিক প্রবাহের সময় পানি ধরে রেখে শুষ্ক সময়ে সে পানি ব্যবহার করা হবে। এ জন্য থাকবে ১৪টি কৃত্রিম সংযোগ খাল। ৩০টি সংযোগ খালের সম্মিলিত দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার। এরূপ বিশালত্বের কারণে ভারতীয় গণমাধ্যমে একে 'mother of all projects' নামেও অভিহিত করা হয়। অনেক গবেষক একে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্মাণ প্রকল্প হিসেবেও অভিহিত করেছেন। বলা হচ্ছে, কেবল প্রকল্পের নির্মান অংশের জন্যই প্রায় দেড় শ' থেকে দু' শ' বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। ভারতীয় মিডিয়ায় এই প্রকল্পের জন্য ব্যয়ের যে হিসাব সচরাচর উল্লিখিত হয় তা হলো ৫,৬০,০০০ কোটি ভারতীয় রূপি।
আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও বিবাদ রয়েছে খোদ ভারতেও। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও কেন্দ্রীয় রাজনীতির সমীকরণে পড়ে ভারত সরকার আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের কেন-বেতোয়া সংযোগ খাল নির্মাণ উদ্যোগ নিয়ে এগোলেও এ নিয়ে সেখানে মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক বিবাদও রয়েছে। যে কারণে এ বছরের শুরুতে কেন-বেতোয়া সংযোগ খাল প্রকল্পের প্রতি সবুজ সংকেত দিলেও মধ্য ও উত্তর প্রদেশের মধ্যে সমঝোতার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করে দিয়েছে। যার সদস্য হলেন পি. চিদাম্বরম, কপিল শিবাল ও পানিসম্পদ মন্ত্রী।
কেন-বেতোয়া প্রকল্প নিয়ে মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশের বিবাদের অনেকগুলো দিক রয়েছে: প্রথমত. কেন অববাহিকার প্রায় ৮৭ ভাগ পড়েছে মধ্যপ্রদেশে - ফলে এখান থেকে পানি প্রত্যাহারের পরিকল্পনায় তারা উদ্বিগ্ন। দ্বিতীয়ত, যে সংযোগ খালের মাধ্যমে এই পানি বেতোয়া অববাহিকায় নিয়ে যাওয়া হবে তার ৩২৩ কিলোমিটারের মধ্যে মাত্র ১৮ কিলোমিটার পড়েছে উত্তর প্রদেশে। অর্থাৎ খালের জন্য যেসব জমি নষ্ট হবে তার প্রায় পুরোটাই যাবে মধ্যপ্রদেশের। প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ২১৩৫ হেক্টর যাবে মধ্যপ্রদেশ থেকে এবং মাত্র ১৮০ হেক্টর যাবে উত্তর প্রদেশ থেকে। ফলে উচ্ছেদ হওয়া গ্রামবাসীদের মধ্যে বেশিরভাগকে পুনর্বাসন করতে হবে মধ্যপ্রদেশে।
প্রত্যক্ষ স্বার্থগত ওই বিবাদের পাশাপাশি প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়েও বহু ভারতীয় সন্দিগ্ধ। এরূপ সন্দেহের অন্যতম বিষয় 'উদ্ধৃত' পানির ধারণা। ভারতের প্রভাবশালী সাময়িকী 'ফ্রন্টলাইন'-কে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে (-২০ এপ্রিল ২০১২) অল ইন্ডিয়া পিপলস্ সায়েন্স নেটওয়ার্কের সভাপতি ডি. রঘুনাথন বলেছেন, 'উদ্ধৃত্ত কথাটি তৈরি হয় সাপ্লাই - ডিমান্ডের উপর ভিত্তি করে। গঙ্গা অববাহিকায় পানির বর্তমান ও ভবিষ্যত চাহিদা সম্পর্কে কোন নিরপেক্ষ স্টাডি ছাড়াই ধরে নেয়া হচ্ছে সেখানে বেশি পানি আছে এবং তা সরিয়ে নেয়া যেতে পারে। এই অববাহিকায় যখন আরও অধিক চাহিদা তৈরি হবে তখন এই মেগা প্রকল্প কী কাজে লাগবে? সকল অববাহিকাতেই পানির চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।'
তবে প্রকল্পের প্রতি বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়ের সবুজ সংকেত দেখে রঘুনাথের মতো কণ্ঠস্বর এমুহূর্তে ভারতে কমছে। এই প্রকল্পের ফলে কী কী লাভ হবে - সেটা নিয়ে ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা হামেশা বললেও এর ফলে কী কী সামাজিক ক্ষতি হবে ও সংকট তৈরি হবে তার ওপর কোন সমীক্ষা চালানোর কথাও এখন আর কেউ বলছে না। পুরো আন্ত:নদী প্রকল্পের আওতাধীন কমবেশি প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার কৃত্রিম খাল তৈরি করতে গিয়ে যে পরিমাণ মানুষকে জোর করে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ করে বাস্তুহারা করতে হবে তার ওপরও কোন সমীক্ষা হয়নি এখনো। গবেষকদের অনুমান এতে প্রায় ৫০-৬০ লাখ মানুষকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হতে হবে। অধিকাংশই যারা কৃষক ও আদিবাসী।
এইরূপ উচ্ছেদের ফলে কেবল যে আর্থিক ক্ষতি হয় তা নয় - বিভিন্ন জনপদের বিপুল সাংস্কৃতিক ক্ষতিও ঘটে তাতে। বড় আকারে উচ্ছেদের মধ্যদিয়ে শত শত বছর জুড়ে গড়ে ওঠা একটি জনগোষ্ঠীর পুরো সাংস্কৃতিক ও গোষ্ঠীগত অবকাঠামো তাৎক্ষণিকভাবে ধূলিস্যাৎ হয়ে পড়ে। ভারতে গত ৫০ বছরে বিভিন্ন ড্যাম, বিদ্যুত কেন্দ্র ও মেগা নির্মাণ কাঠামোর কারণে এভাবে প্রায় প্রায় ৫ কোটি মানুষের জোরপূর্বক উচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে।
এই প্রকল্পের Northern Himalayan Component অংশটি বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে উদ্বেগের। কারণ গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি নদীর অববাহিকায় বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের বাস। এই দুটি প্রধান নদী দিয়ে একদিকে যেমন ভারতের পুরো নদী প্রবাহের ৬০ ভাগ প্রবাহিত হয় - তেমনি বাংলাদেশের জন্যও এই দুই নদীর প্রবাহই ভূ-উপরিস্থ পানির প্রধান উৎস। পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি Northern Himalayan River Development Component-এ ১৪টি সংযোগ খালের মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার শুরু করা হয় তা হলে বাংলাদেশে এসব নদী ও তাদের শাখা নদীর প্রবাহ নিশ্চিতভাবেই বর্তমানের চেয়েও অনেক কমে যাবে। যেহেতু কেন ও বেতোয়ার পানি প্রথমে যমুনা এবং পরে গঙ্গায় আসে সে কারণে উজানে এই প্রবাহের তথাকথিত 'উদ্ধৃত্ত' অংশ থেকে পানি প্রত্যাহারের মানেই হলো ভাটির অববাহিকা হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের পানি প্রাপ্তি কমে যাওয়া।
গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনার সম্মিলিত অববাহিকার বাংলাদেশ সীমান্তে রয়েছে ৭ ভাগ অঞ্চল, নেপালে ৯ ভাগ, ভূটানে ২ ভাগ, চীনে প্রায় ২০ ভাগ এবং ভারতে ৫৮ ভাগ। স্বাভাবিকভাবে এই নদীগুলোর অববাহিকায় পানি প্রত্যাহার বা পানি নিয়ন্ত্রণমূলক যেকোন পরিকল্পনায় উপরোক্ত সকল শরিকের মতামত, অংশীদারিত্ব ও সম্পৃক্তি প্রয়োজন।
ভারতে কেন-বেতোয়া প্রকল্পের বাস্তবায়ন উদ্যোগ বাংলাদেশে কীরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের লক হেভেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনারত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা পানিবিজ্ঞানী ড. খালেকুজ্জামান এ বিষয়ে তাঁর গবেষণা তথ্যের আলোকে এই প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশ সরাসরি এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গঙ্গার প্রবাহ থেকে পানি সরানো হলে ফারাক্কা পয়েন্টে অবশ্যই পানি কম আসবে এবং যার ফলে গঙ্গাচুক্তি থাকার পরও আমরা পানি পাবো না।
এদিকে, গত ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে পদ্মা ও যমুনায় পানি প্রবাহ তিন ভাগের এক ভাগে নেমে আসবে। এতে করে এখানকার নদী, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। গবেষক ও নাগরিক সমাজের তরফ থেকে এমন উদ্বেগ সত্ত্বেও সরকারিভাবে আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে এখনো দৃষ্টিগ্রাহ্য কোন প্রতিবাদ বা উদ্বেগ ধক্ষণিত হতে দেখা যায় না।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক পানি আইনের যে নৈতিকভিত্তি - অর্থাৎ দীর্ঘ অববাহিকার কোন নদীতে ভৌগলিকভাবে উঁচু অবস্থানে বা উজানে বসবাসকারীরা অবশ্যই এমনভাবে সে পানি ব্যবহার করবে না - যা অববাহিকার নিচু অবস্থানে বসবাসকারীদের পানি প্রাপ্তি বা ব্যবহারকে বিঘিœত করে - তার আলোকেও আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প বিষয়ক ভারতীয় তৎপরতা আপত্তিযোগ্য। যদিও ১৯৯৭ সালে গৃহীত এতদসংক্রান্ত জাতিসংঘের কনভেনশনটি এখনো প্রয়োজনীয় সংখ্যক রাষ্ট্রের [৩৫টি] অনুমোদনের অভাবে কার্যকর হয়নি - কিন্তু এটাকে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পানি বিবাদে একটি ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই কনভেনশনের যৌক্তিক কাঠামোটি গড়ে উঠেছে - পানির যেকোন উৎসধারাকে অববাহিকার মানুষদের মাঝে সমতা এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে বন্টনের ধারণার ওপর। এ ছাড়া নদীর পানি বিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতি ও প্রথার মৌলিক ভিত্তি হলো - একই নদীর পুরো অববাহিকার মানুষের অধিকার রযেছে তার প্রবাহে। এই প্রথার পুরোপুরি লঙ্ঘনের মধ্যদিয়েই ভারত আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।।



On Tue, Mar 4, 2014 at 7:36 PM, Isha Khan <bdmailer@gmail.com> wrote:
India's water war against Bangladesh

Text:
http://www.amadershomoys.com/content/2014/03/04/middle0368.htm

Video:
http://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=GPkYWbS0K7k






__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___

[chottala.com] FW: পরিমল, ভজন সিকদারের পর এবার অলক সাহা: ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ




 

Date: Mon, 10 Mar 2014 12:59:45 +0600
Subject: পরিমল, ভজন সিকদারের পর এবার অলক সাহা: ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ
From: bdmailer@gmail.com
To:

পরিমল, ভজন সিকদারের পর এবার অলক সাহা: ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ

পরিমল, ভজন সিকদারের পর এবার অলক সাহা নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।গত শনিবার মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ঝামা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী এ ঘটনার শিকার হয়।এদিকে, এ ঘটনার বিচারের দাবিতে মিছিল-পোস্টারিং করেছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-অভিভাবকেরা। পরে প্রধান শিক্ষকের হস্তক্ষেপে তারা শ্রেণিকক্ষে ফিরে যায়।অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে রক্ষা করতে এবং বিষয়টি আড়াল করতে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন।এই ঘটনায় অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।

http://www.risingbd.com/detailsnews.php?nssl=83098dfe608068784d2187e357334d31


__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___

[chottala.com] FW: India's water war against Bangladesh




 

Date: Mon, 10 Mar 2014 13:01:45 +0600
Subject: Re: India's water war against Bangladesh
From: bdmailer@gmail.com
To:

বাংলাবান্ধার বিপরীতে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ : পঞ্চগড়ের ২৫টি নদনদী এখন মরা খাল


বাংলাদেশের উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণের ফলে পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট বড় ২৫টি নদনদী মরা খালে পরিণত হয়েছে। এক সময়ের প্রমত্তা করতোয়া মহানন্দা নদীর বুকে এখন জেগে উঠেছে বিশাল বালুচর। পর্যাপ্ত পানির প্রবাহ না থাকায় নদীর বুকে আবাদ হচ্ছে ইরি বোরো ধান। নদনদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের সীমান্ত এই জনপদের প্রাকৃতিক পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হতে বসেছে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2014/03/10/238104#.Ux1guc6_iSq


2014-03-05 11:58 GMT+06:00 Isha Khan <bdmailer@gmail.com>:
ভারতীয় আন্তঃনদী সংযোগে দ্রুত অগ্রগতি :: নির্বিকার বাংলাদেশ

ভারতে বহুল আলোচিত আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের কার্যক্রমে নাটকীয় অগ্রগতি ঘটেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সম্প্রতি। যার প্রথম ধাপ হিসেবে কেন (Ken) ও বেতোয়া (Betwa) নদীর মাঝে সংযোগকারী কৃত্রিম খাল তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে শিগগির। উল্লেখ্য, মধ্য প্রদেশ ও উত্তর প্রদেশ জুড়ে প্রবাহিত কেন ও বেতোয়া নদী উভয়েই যমুনায় মিশেছে। আর যমুনা মিশেছে গঙ্গায়।

পুরোপুরি কংক্রীটে তৈরি কেন-বেতোয়া নদী সংযোগ খালটি হবে প্রস্তাবিত আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের ৩০টি পরিকল্পিত খালের প্রথমটি - যার দৈর্ঘ্য ৩২৩.৪৫ কিলোমিটার। তবে এই নির্মাণ উদ্যোগের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো মধ্যপ্রদেশের সাত্তারপুর-পান্না জেলার সীমান্তে প্রকল্পের মধ্যে ৭৩.৮০ মিটার উচু একটি ড্যাম ['দাউদান' (Daudhan) নামে পরিচিত] গড়ে তোলা হবে। যার দু' স্থানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের দুটি কেন্দ্র থাকবে।

কেন-বেতোয়া সংযোগ খাল থেকে ভারত মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশের ৪.৯৭ লাখ হেক্টর জমিকে নতুন করে সেচের আওতায় আনবে বলে পরিকল্পনা করছে। যেসব জেলায় সংযোগ খাল থেকে সেচের পানি যাবে তার মধ্যে রয়েছে - মধ্যপ্রদেশের সাত্তারপুর, টিক্কাগড়, পান্না, রাচি, বিদিশা এবং উত্তর প্রদেশের ঝাশি ও হামিরপুর। সেচ ছাড়াও বিদ্যুত উৎপাদনের পরিকল্পনা থাকায় কেন-বেতোয়া প্রকল্প বিশেষজ্ঞ পরিমন্ডলে 'সেচসহ বিদ্যুত প্রকল্প' হিসেবেই পরিচিত এখন।

ভারতে ও ভারতের বাইরে - উভয় স্থানে পরিবেশবাদী ব্যক্তি ও সংগঠনগুলো প্রথম থেকে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে সোচ্চার। ভারতীয় পরিবেশ বিশেজ্ঞদের বড় উদ্বেগের কারণ হলো পান্না জেলায় ভারতের যে 'টাইগার রিজার্ভ পার্ক' রয়েছে সেই বনভূমির বিরাট এলাকা প্রকল্পের কাজের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। সরকারিভাবেই স্বীকার করা হচ্ছে যে, ,৪০০ হেক্টর বনভূমি নষ্ট হবে এই প্রকল্পে। এছাড়া এই প্রকল্পের কৃত্রিম খালের জন্য বহু মানুষকে উচ্ছেদও হতে হবে। সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ১০টি গ্রামের ৮,৫৫০ মানুষ উচ্ছেদ হওয়ার আশংকার কথা কথা বলা হয়েছে। এছাড়া পানি বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদীরা সচরাচর এটাও বলে থাকেন যে, প্রত্যেক নদীর অববাহিকার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সুরক্ষা সেই নদীর অববাহিকাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে। পানি বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদীদের এসব বক্তব্য শুরু থেকে আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে।

আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের ধারণা নিয়ে ভারত প্রথম কাজ শুরু করে ১৯৮২ সালে। ১৯৮০ সালে ভারতের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় পানিসম্পদ বিষয়ে যে জাতীয় পরিকল্পনা তৈরি করে তাতে প্রথম নদীগুলোর আন্ত:সংযোগের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই দুই বছর পর গঠন করা হয় ন্যাশনাল ওয়াটার ডেভলপমেন্ট এজেন্সি বা এনডব্লিউডিএ।

নদীসংযোগ পরিকল্পনা আবার গড়ে উঠেছে এ ধারণার ওপর ভিত্তি করে যে, ভারতের কিছু অববাহিকায় 'উদ্বৃত্ত পানি রয়েছে' এবং সেখান থেকে তা 'পানির অভাবগ্রস্ত অববাহিকা'য় নেয়া যেতে পারে। এইরূপ প্রকৌশলগত চিন্তার প্রথম উদ্যোক্তা ছিলেন ১৯৬৩-৬৪ সালে খ্যাতনামা সেচ ও বিদ্যুতমন্ত্রী ড. কানুরি লক্ষণ রাও। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পানির তীব্র সংকট ও মরুকরণের মুখে পানিকেন্দ্রীক ওই ভাবনা এবং ১৯৮২ পরবর্তী উদ্যোগসমূহ স্বাভাবিকভাবেই জনমানসে ব্যাপক সমর্থন পায়। এই ধারণার সমর্থকরা তখন থেকে বলছে, এটা বাস্তবায়ন করা গেলে দেশের ৩৫ মিলিয়ন হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে। ৩৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত নতুন করে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত করা যাবে এবং অনেক প্রদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণও সহজ হবে।

অত্যধিক ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে প্রথম থেকে আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভাব্যতা নিয়ে অনেক সন্দেহ ছিল। এমনকি গঙ্গার শাখানদী হিসেবে মহানদি, গোদাভারী ইত্যাদিতে 'উদ্ধৃত্ত' পানি থাকার যে ধারণার ওপর ভিত্তি করে এই মেগা প্রকল্পের অভিযাত্রা - তার যথার্থতা সম্পর্কেও এখনো কোন পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ গবেষণা ও জরিপ হয়নি সেখানে।

বিজ্ঞানসম্মত উপাত্তের অভাবে তাত্ত্বিক সমর্থন না থাকা সত্ত্বেও এই প্রকল্প ধারণাটি বিশেষ বেগবান হয় ১৯৯৯ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বে এনডিএ জোট দেশটির কেন্দ্রে ক্ষমতা গ্রহণের পর। রাজস্থান, গুজরাট, অন্ধ্র প্রদেশ, কর্নাটক ও তামিলনাড়–র মতো হিন্দু প্রধান ও খরা প্রবণ এলাকাগুলোতে ভোট পাওয়ার জন্য বিজেপি এই প্রকল্পকে বিশেষ ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে অনেক বছর ধরে। এই প্রকল্পের জন্য তারা যে টাস্কফোর্স গঠন করে খুব সচেতনভাবে তার প্রধান করা হয় শিবসেনা নেতা সুরেশ প্রভুকে।

পরবর্তীকালে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউপিএ জোট ক্ষমতায় এসে এই প্রকল্প নিয়ে ধীরে চলো নীতি নিয়েছিল। তবে ২০১২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সেদেশের সুপ্রীম কোর্ট-এর একটি বেঞ্চ (এস কুমার, এস এইচ কাপাডিয়া ও এ কে পাটনায়েকের সমন্বয়ে গঠিত) আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ভারত সরকারকে নির্দেশনা দেয়। আন্ত:সংযোগের জন্য উল্লিখিত নদীগুলো যে আন্তর্জাতিক নদী এবং তার বিশাল অববাহিকা জুড়ে যে অন্যান্য দেশের মানুষও বসবাস করে এবং নদীর পানির যেকোনরূপ ব্যবহার যে তাদেরও স্বার্থসংশ্লিষ্ট সুপ্রীম কোর্ট নির্দেশনা দেয়ার সময় সে বিষয়টি পুরোপুরি অগ্রাহ্য করে।

কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের অনেক শরিকের অনাগ্রহ সত্ত্বেও ভারতের পানি সম্পদ মন্ত্রী হরিস রাউত নিজে প্রকল্পের ব্যাপারে উৎসাহি ছিলেন। যে কারণে সুপ্রীম কোর্টের রায় পেয়ে তাঁর পক্ষে প্রকল্প এগিয়ে নেয়া সহজ হয়। তবে গত ১ ফেব্রুয়ারি হরিস রাউত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে উত্তরখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আর কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গোলাম নবী আজাদকে।

এ পর্যন্ত প্রস্তাবিত ৩০টি সংযোগ খালের মধ্যে তিনটির ডিটেইল প্রজেক্ট রিপোর্ট [ডিপিআর] তৈরি করা হয়েছে - যার মধ্যে প্রথমে রাখা হয়েছে কেন-বেতোয়া প্রকল্পকে। একমাত্র এই প্রকল্পটিরই সম্ভাব্যতা যাচাই হয়েছে এবং ভারত ওই ভিত্তিতেই অন্যান্য সংযোগ প্রকল্পগুলো নিয়ে এগোবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের দু'টি প্রধান দিক রয়েছে - যার একটি বলা হয় পেনিনসুলা অংশ এবং অন্যটিকে বলা হয় হিমালয়ান অংশ। প্রথম অংশে থাকবে দক্ষিণ ভারতের মহানদি, গোদাভারী, পেন্নার, কৃষ্ণা, কাবেরী ইত্যাদি নদীর মধ্যে সংযোগ সাধনের জন্য ১৬ কৃত্রিম খাল তৈরি। আর দ্বিতীয় দিকে - উত্তর হিমালয় নদী উন্নয়ন কার্যক্রম বা (Northern Himalayan River Development Component)-এ থাকবে মূলত গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী এবং এগুলোর শাখা নদীতে পানি সংরক্ষণের জন্য কৃত্রিম সংরক্ষণাগার তৈরি। এখানে অধিক প্রবাহের সময় পানি ধরে রেখে শুষ্ক সময়ে সে পানি ব্যবহার করা হবে। এ জন্য থাকবে ১৪টি কৃত্রিম সংযোগ খাল। ৩০টি সংযোগ খালের সম্মিলিত দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার। এরূপ বিশালত্বের কারণে ভারতীয় গণমাধ্যমে একে 'mother of all projects' নামেও অভিহিত করা হয়। অনেক গবেষক একে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্মাণ প্রকল্প হিসেবেও অভিহিত করেছেন। বলা হচ্ছে, কেবল প্রকল্পের নির্মান অংশের জন্যই প্রায় দেড় শ' থেকে দু' শ' বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। ভারতীয় মিডিয়ায় এই প্রকল্পের জন্য ব্যয়ের যে হিসাব সচরাচর উল্লিখিত হয় তা হলো ৫,৬০,০০০ কোটি ভারতীয় রূপি।

আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও বিবাদ রয়েছে খোদ ভারতেও। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও কেন্দ্রীয় রাজনীতির সমীকরণে পড়ে ভারত সরকার আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের কেন-বেতোয়া সংযোগ খাল নির্মাণ উদ্যোগ নিয়ে এগোলেও এ নিয়ে সেখানে মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক বিবাদও রয়েছে। যে কারণে এ বছরের শুরুতে কেন-বেতোয়া সংযোগ খাল প্রকল্পের প্রতি সবুজ সংকেত দিলেও মধ্য ও উত্তর প্রদেশের মধ্যে সমঝোতার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করে দিয়েছে। যার সদস্য হলেন পি. চিদাম্বরম, কপিল শিবাল ও পানিসম্পদ মন্ত্রী।

কেন-বেতোয়া প্রকল্প নিয়ে মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশের বিবাদের অনেকগুলো দিক রয়েছে: প্রথমত. কেন অববাহিকার প্রায় ৮৭ ভাগ পড়েছে মধ্যপ্রদেশে - ফলে এখান থেকে পানি প্রত্যাহারের পরিকল্পনায় তারা উদ্বিগ্ন। দ্বিতীয়ত, যে সংযোগ খালের মাধ্যমে এই পানি বেতোয়া অববাহিকায় নিয়ে যাওয়া হবে তার ৩২৩ কিলোমিটারের মধ্যে মাত্র ১৮ কিলোমিটার পড়েছে উত্তর প্রদেশে। অর্থাৎ খালের জন্য যেসব জমি নষ্ট হবে তার প্রায় পুরোটাই যাবে মধ্যপ্রদেশের। প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ২১৩৫ হেক্টর যাবে মধ্যপ্রদেশ থেকে এবং মাত্র ১৮০ হেক্টর যাবে উত্তর প্রদেশ থেকে। ফলে উচ্ছেদ হওয়া গ্রামবাসীদের মধ্যে বেশিরভাগকে পুনর্বাসন করতে হবে মধ্যপ্রদেশে।

প্রত্যক্ষ স্বার্থগত ওই বিবাদের পাশাপাশি প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়েও বহু ভারতীয় সন্দিগ্ধ। এরূপ সন্দেহের অন্যতম বিষয় 'উদ্ধৃত' পানির ধারণা। ভারতের প্রভাবশালী সাময়িকী 'ফ্রন্টলাইন'-কে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে (-২০ এপ্রিল ২০১২) অল ইন্ডিয়া পিপলস্ সায়েন্স নেটওয়ার্কের সভাপতি ডি. রঘুনাথন বলেছেন, 'উদ্ধৃত্ত কথাটি তৈরি হয় সাপ্লাই - ডিমান্ডের উপর ভিত্তি করে। গঙ্গা অববাহিকায় পানির বর্তমান ও ভবিষ্যত চাহিদা সম্পর্কে কোন নিরপেক্ষ স্টাডি ছাড়াই ধরে নেয়া হচ্ছে সেখানে বেশি পানি আছে এবং তা সরিয়ে নেয়া যেতে পারে। এই অববাহিকায় যখন আরও অধিক চাহিদা তৈরি হবে তখন এই মেগা প্রকল্প কী কাজে লাগবে? সকল অববাহিকাতেই পানির চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।'

তবে প্রকল্পের প্রতি বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়ের সবুজ সংকেত দেখে রঘুনাথের মতো কণ্ঠস্বর এমুহূর্তে ভারতে কমছে। এই প্রকল্পের ফলে কী কী লাভ হবে - সেটা নিয়ে ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা হামেশা বললেও এর ফলে কী কী সামাজিক ক্ষতি হবে ও সংকট তৈরি হবে তার ওপর কোন সমীক্ষা চালানোর কথাও এখন আর কেউ বলছে না। পুরো আন্ত:নদী প্রকল্পের আওতাধীন কমবেশি প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার কৃত্রিম খাল তৈরি করতে গিয়ে যে পরিমাণ মানুষকে জোর করে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ করে বাস্তুহারা করতে হবে তার ওপরও কোন সমীক্ষা হয়নি এখনো। গবেষকদের অনুমান এতে প্রায় ৫০-৬০ লাখ মানুষকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হতে হবে। অধিকাংশই যারা কৃষক ও আদিবাসী।

এইরূপ উচ্ছেদের ফলে কেবল যে আর্থিক ক্ষতি হয় তা নয় - বিভিন্ন জনপদের বিপুল সাংস্কৃতিক ক্ষতিও ঘটে তাতে। বড় আকারে উচ্ছেদের মধ্যদিয়ে শত শত বছর জুড়ে গড়ে ওঠা একটি জনগোষ্ঠীর পুরো সাংস্কৃতিক ও গোষ্ঠীগত অবকাঠামো তাৎক্ষণিকভাবে ধূলিস্যাৎ হয়ে পড়ে। ভারতে গত ৫০ বছরে বিভিন্ন ড্যাম, বিদ্যুত কেন্দ্র ও মেগা নির্মাণ কাঠামোর কারণে এভাবে প্রায় প্রায় ৫ কোটি মানুষের জোরপূর্বক উচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে।

এই প্রকল্পের Northern Himalayan Component অংশটি বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে উদ্বেগের। কারণ গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি নদীর অববাহিকায় বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের বাস। এই দুটি প্রধান নদী দিয়ে একদিকে যেমন ভারতের পুরো নদী প্রবাহের ৬০ ভাগ প্রবাহিত হয় - তেমনি বাংলাদেশের জন্যও এই দুই নদীর প্রবাহই ভূ-উপরিস্থ পানির প্রধান উৎস। পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি Northern Himalayan River Development Component-এ ১৪টি সংযোগ খালের মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার শুরু করা হয় তা হলে বাংলাদেশে এসব নদী ও তাদের শাখা নদীর প্রবাহ নিশ্চিতভাবেই বর্তমানের চেয়েও অনেক কমে যাবে। যেহেতু কেন ও বেতোয়ার পানি প্রথমে যমুনা এবং পরে গঙ্গায় আসে সে কারণে উজানে এই প্রবাহের তথাকথিত 'উদ্ধৃত্ত' অংশ থেকে পানি প্রত্যাহারের মানেই হলো ভাটির অববাহিকা হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের পানি প্রাপ্তি কমে যাওয়া।

গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনার সম্মিলিত অববাহিকার বাংলাদেশ সীমান্তে রয়েছে ৭ ভাগ অঞ্চল, নেপালে ৯ ভাগ, ভূটানে ২ ভাগ, চীনে প্রায় ২০ ভাগ এবং ভারতে ৫৮ ভাগ। স্বাভাবিকভাবে এই নদীগুলোর অববাহিকায় পানি প্রত্যাহার বা পানি নিয়ন্ত্রণমূলক যেকোন পরিকল্পনায় উপরোক্ত সকল শরিকের মতামত, অংশীদারিত্ব ও সম্পৃক্তি প্রয়োজন।

ভারতে কেন-বেতোয়া প্রকল্পের বাস্তবায়ন উদ্যোগ বাংলাদেশে কীরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের লক হেভেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনারত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা পানিবিজ্ঞানী ড. খালেকুজ্জামান এ বিষয়ে তাঁর গবেষণা তথ্যের আলোকে এই প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশ সরাসরি এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গঙ্গার প্রবাহ থেকে পানি সরানো হলে ফারাক্কা পয়েন্টে অবশ্যই পানি কম আসবে এবং যার ফলে গঙ্গাচুক্তি থাকার পরও আমরা পানি পাবো না।

এদিকে, গত ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে পদ্মা ও যমুনায় পানি প্রবাহ তিন ভাগের এক ভাগে নেমে আসবে। এতে করে এখানকার নদী, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। গবেষক ও নাগরিক সমাজের তরফ থেকে এমন উদ্বেগ সত্ত্বেও সরকারিভাবে আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে এখনো দৃষ্টিগ্রাহ্য কোন প্রতিবাদ বা উদ্বেগ ধক্ষণিত হতে দেখা যায় না।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক পানি আইনের যে নৈতিকভিত্তি - অর্থাৎ দীর্ঘ অববাহিকার কোন নদীতে ভৌগলিকভাবে উঁচু অবস্থানে বা উজানে বসবাসকারীরা অবশ্যই এমনভাবে সে পানি ব্যবহার করবে না - যা অববাহিকার নিচু অবস্থানে বসবাসকারীদের পানি প্রাপ্তি বা ব্যবহারকে বিঘিœত করে - তার আলোকেও আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প বিষয়ক ভারতীয় তৎপরতা আপত্তিযোগ্য। যদিও ১৯৯৭ সালে গৃহীত এতদসংক্রান্ত জাতিসংঘের কনভেনশনটি এখনো প্রয়োজনীয় সংখ্যক রাষ্ট্রের [৩৫টি] অনুমোদনের অভাবে কার্যকর হয়নি - কিন্তু এটাকে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পানি বিবাদে একটি ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই কনভেনশনের যৌক্তিক কাঠামোটি গড়ে উঠেছে - পানির যেকোন উৎসধারাকে অববাহিকার মানুষদের মাঝে সমতা এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে বন্টনের ধারণার ওপর। এ ছাড়া নদীর পানি বিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতি ও প্রথার মৌলিক ভিত্তি হলো - একই নদীর পুরো অববাহিকার মানুষের অধিকার রযেছে তার প্রবাহে। এই প্রথার পুরোপুরি লঙ্ঘনের মধ্যদিয়েই ভারত আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।।

http://amaderbudhbar.com/?p=3224




On Tue, Mar 4, 2014 at 7:36 PM, Isha Khan <bdmailer@gmail.com> wrote:
India's water war against Bangladesh

Text:
http://www.amadershomoys.com/content/2014/03/04/middle0368.htm

Video:
http://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=GPkYWbS0K7k




__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___