Banner Advertise

Thursday, April 23, 2009

[chottala.com] Today's 'mastan' tomorrow's VC (Must read article)!



Plz. do not miss it:
 
 
বাঘা তেঁতুল
সৈয়দ আবুল মকসুদ

উপাচার্য উপাখ্যান

ভাইস চ্যান্সেলর শব্দটি শুনলে কখনো আমার চোখে ভাসে দুজন উপাচার্যের প্রতিমূর্তি। একজন বঙ্গের অর্থাৎ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বাঙালি উপাচার্য স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়; ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই আরেকজন উপাচার্য স্যার আজিজুল হক। স্যার গুরুদাস বিরাট পণ্ডিত ছিলেন। ১৮৯০ সালে ভিসি হওয়ার আগে ওকালতি করেছেন, বিচারপতিও ছিলেন। ব্যানার্জির শরীরে এক ছটাক মাংস ছিল না, ফুঁ দিলে উড়ে যেতেন। কিন্তু ছাত্ররা তাঁকে ভয় ও সমীহ করত যম অথবা দেবতার মতো।
স্যার গুরুদাস যা খেতেন তা শুনলে মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ফিট হয়ে যাবেন। কলকাতার বেতার জগৎ -এ পড়েছি, তিনি সকালে ছোট দুটি ঘিয়ে ভাজা লুচি ও একটুখানি আলুর তরকারি; দুপুরে এক ছটাক চালের ভাত, একটু আলু-পটল ভাজি, ছোট এক টুকরো মাছের ঝোল, কখনো চা-চামচের তিন-চার চামচ দই; সন্ধ্যায় খেতেন এক তোলা ওজনের ময়দা অথবা এরারুটের একটি রুটি আর এক টুকরো মিছরি। ওটাই রাতের খাওয়া। ওই খেয়েই জীবনের শেষ ৩৮ বছর বাংলার উচ্চশিক্ষার উন্নতির জন্য ১৮ ঘণ্টা কাজ করেছেন।
স্যার আজিজুল হক ছিলেন ১৯৩০-এর দশকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। তিনি ছিলেন স্রেফ বিএ পাস। বিএল পাস করে কৃষ্ণনগরে কিছুকাল ওকালতিও করেছেন। যে ডিগ্রি নিয়ে স্যার আজিজুল হক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের ভিসি হন, সে ডিগ্রি এখন বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর রয়েছে। কলকাতার অতি উচ্চশিক্ষিত হিন্দুসমাজের মানুষের কাছেও তিনি ছিলেন শ্রদ্ধেয়। মর্যাদা তিনি অর্জন করেছেন তাঁর ব্যক্তিত্ব ও চরিত্রের কারণে।
সেকালে অসংখ্য উপাচার্য ছিলেন না। স্যার গুরুদাস যখন ভিসি ছিলেন তখন বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, আসামে ছিলেন মাত্র একজন উপাচার্য। স্যার আজিজুল হক যখন উপাচার্য তখন বাংলায় ছিলেন তাঁরা দুজনঃ কলকাতায় তিনি আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমেশচন্দ্র মজুমদার। সেকালে ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতির মধু ছিল না এবং এখনকার মতো প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে একদিক থেকে উপাচার্যরাও বদল হতেন না। সেকালে ভিসির চাকরি পোক্ত করতে পেশিবহুল ছাত্রদের কোনো ভূমিকাই ছিল না।
গত নির্বাচনের পর অনেকেরই দিন বদলে গেছে, ছাত্র সংগঠনেরও। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুরু হয়েছে ক্রুসেড। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষিত হয়েছে। যেকোনো ভিসির জন্য এই যুদ্ধাবস্থা বিরাট মাথাব্যথার কারণ। কারা এসব করছে, তার ছবিসুদ্ধ প্রতিবেদন প্রায় প্রতিদিন কাগজে আসছে এবং টিভি চ্যানেলগুলোতে দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি মন্ত্রীকে যা বলার তা ফিসফিস করে বলে এসেছেন। বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদেরও তিনি মোদ্দা কথায় তাঁর মূল বক্তব্য বলেন।
মাননীয় উপাচার্য মহোদয় বলেছেন, 'ছাত্রলীগের লেবাসে ক্যাম্পাসে সহিংস ঘটনা ঘটাচ্ছে ছাত্রদলের ক্যাডাররা। ক্যাম্পাসের বাইরে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের উসকানিতে শিক্ষাঙ্গনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। কারা এসব করছে, তাদের আমি চিনি।'
উপাচার্য ও অধ্যাপকেরা হলেন ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক। বিশ্ববিদ্যালয়ের হালাকু খাঁরাও ছাত্র। ক্যাম্পাসের যুদ্ধক্ষেত্রের এসব পরাক্রান্ত বীরের পাশে ইস্পাতের মতো দৃঢ়তা নিয়ে কেন দাঁড়ান-এই প্রশ্ন যদি উপাচার্য মহোদয়কে কেউ জিজ্ঞেস করে, তিনি নির্ঘাৎ কবির ভাষায়ই জবাব দেবেনঃ 'ঠেকে গেছি প্রেমের দায়ে'। কারণ ভিসি ও ক্রুসেডকারীরা তো একই দলের অর্থাৎ একই ঝাড়ের বাঁশঃ কেউ পাকা বাঁশ কেউবা কাঁচা বাঁশ বা কোড়ল। এই কোড়লেরাই একদিন পাকা বাঁশ হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই ভবিষ্যতের নাগরিক তৈরি করে। বিভিন্ন ক্যাম্পাসে অস্ত্রসহ যেসব বীরের ছবি পত্রিকায় ছাপা হচ্ছে, ২০১১ সালে তাদেরই কেউ হবেন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। কেউ হবেন জেলা বা উচ্চ আদালতের বিচারক, বিভিন্ন দলের সাজা পাওয়া নেতাদের, যাঁদের এজলাসে একের পর এক জামিন হবে। কেউ হবেন কনজারভেটার অব ফরেস্ট। একদিকে বন হবে উজাড়, অন্যদিকে তাঁদের বালিশ-তোশকের মধ্যে থাকবে টাকার তাড়া। কেউ হবেন পুলিশ বিভাগের বড় কর্মকর্তা, যাঁর কাছে ছোট একটা ব্যাগ নিয়ে খুনের আসামির শালা রাতের বেলা দেখা করবে। কারও পোস্টিং হবে মালয়েশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত বা কনসাল হিসেবে, প্রবাসী শ্রমিকেরা লাশ হয়ে ফিরলেও তাঁরা দেশে ফিরবেন ১০ কোটি টাকার মালিক হয়ে।
আজকের হল দখল ও ভর্তিবাণিজ্যে বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারী কেউ কেউ হবেন একদিন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সাংসদ, সচিব, উপজেলা চেয়ারম্যান বা মহানগরের মেয়র। যাঁদের আমলনামা তৈরি করতে করতে দুদকের কোনো নীতিবাগীশ চেয়ারম্যানেরও কালঘাম ছুটে যাবে। অথবা এখনকার ক্যাম্পাসের বীরদেরই কেউ একদিন হবেন দুদকেরই চেয়ারম্যান। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ঘুম হারাম করে দেবেন দুর্নীতি তদন্তের নামে। অর্থাৎ এখনকার এই নায়কদের এখানেই শেষ নয়, শুরু মাত্র।
এখন যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যার গুরুদাস বা স্যার আজিজ ভিসি হতেন, তাহলে তাঁরা ক্যাম্পাসে যুদ্ধ শুরু হওয়া মাত্রই ছুটে যেতেন রণাঙ্গনে। ছাত্রদের বলতেন, নিজেদের মধ্যে মারামারি করার আগে আমার মাথা ফাটাও। 'ক্রসফায়ারে'র মধ্যে দাঁড়িয়ে বলতেন, ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি না করে আমার বুকে গুলি করো। নিজের দলের সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধেও নির্মম ব্যবস্থা নিতেন।
আমরা ভবিষ্যতে কেমন একটি শিক্ষিত বাংলাদেশ চাই, তা নির্ভর করে প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ওপর। প্রাইমারি স্কুলের হেডমাস্টারের ছাতা বগলে নিয়ে স্কুলে যাওয়া আর বাড়িতে আসার মধ্যেই জীবন শেষ হবে। ভিসিদের ভবিষ্যতে সাংসদ প্রার্থীর নমিনেশন পাওয়ার ষোলআনা সম্ভাবনা। চাকরিদাতা কী শর্তে নিয়োগ দিলেন, তার চেয়ে বড় হলো, নিজের বিবেক কী বলে। দলীয় মন্ত্রে দীক্ষিত হওয়া দোষের নয়-প্রত্যেকের নৈতিক বলে বলীয়ান হওয়া জরুরি।
সৈয়দ আবুল মকসুদঃ গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।


The new Internet Explorer® 8 - Faster, safer, easier. Optimized for Yahoo! Get it Now for Free!

__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___