Banner Advertise

Sunday, April 19, 2015

[chottala.com] RE: {NA Bangladeshi Community} প্রকাশ্যে বিবস্ত্রকরণযজ্ঞ কে থামাবে? অপমানদগ্ধ নারীকে কে বাঁচাবে?



নারীর শ্লীলতাহানি সরকারের পরিকল্পিত-অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ | প্রকাশের সময় : ২০১৫-০৪-২০ | আপডেট : ২০১৫-০৪-২০ ০০:১০:৩৫ Share on -  182       স্টাফ রিপোর্টার : বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা পরিকল্পিত বলে দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যেন নারী ভোটাররা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে যেতে না পারে, সে জন্য সরকার পরিকল্পিতভাবে ন্যক্কারজনক এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। রোববার বেলা ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মা, বোন ও শিশু-কিশোরদের ওপর যৌন নির্যাতন ও বিবস্ত্র করার প্রতিবাদ' শীর্ষক এ মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশজীবী পরিষদ। এমাজউদ্দীন আরো বলেন, কিছুসংখ্যক নর্দমার কিটের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে নষ্ট হতে দিতে পারি না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব ও ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য দোষীদের শাস্তি দাবি করছি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ছাত্রীদের অপমান করেছে তারা শুধু কোমলমতি মেয়েদের অপমান করেনি, পুরো জাতিকে অপমান করেছে। এ ঘটনা শুনার আগে আমার মৃত্যু হওয়া উচিত ছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন। মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সাংবাদিক নেতা  রুহুল আমিন গাজী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ, প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ। - See more at: 


From: shahadathussaini@hotmail.com
To: shahadatsuhrawardy@gmail.com; nabdc@googlegroups.com; bangladesh-progressives@googlegroups.com; pfc-friends@googlegroups.com; chottala@yahoogroups.com; farida_majid@hotmail.com
Subject: {NA Bangladeshi Community} প্রকাশ্যে বিবস্ত্রকরণযজ্ঞ কে থামাবে? অপমানদগ্ধ নারীকে কে বাঁচাবে?
Date: Sun, 19 Apr 2015 15:16:37 -0400

প্রকাশ্যে বিবস্ত্রকরণযজ্ঞ কে থামাবে? অপমানদগ্ধ নারীকে কে বাঁচাবে?

বস্ত্রহীন-বিপন্ন নারীর বাঁচাও বাঁচাও আর্তচিৎকার প্রায় সবাই শুনেছেন। পহেলা বৈশাখের দিন নারীর প্রতি সহিংসতা ও চরম অবমাননার ঘটনাটি সবার নজরে এসেছে। অবশ্য এটাও ঠিক যে, অনেক ঘটনা নজরের বাইরেই রয়ে গেছে। সব খবর সবসময় প্রকাশ পায় না। কখনো আক্রান্ত বা ক্ষতিগ্রস্তরাও লোকলজ্জার ভয়ে অনেক কালো দাগ আর যন্ত্রণা চেপে রাখে। জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণের সেঞ্চুরির খবর এসেছিল। যারা সেঞ্চুরি করতে পারেনি, তাদের খবর হয়তো আসেনি। একজন আদিবাসী ছাত্রীকেও সম্প্রতি পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়েছে সেখানে। এসবই রতন-মানিকদের কীর্তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মুক্তবুদ্ধি ও জ্ঞানচর্চা কেন্দ্রের সন্নিকটে জাতীয় পর্যায়ে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে নারীকে বিবস্ত্র ও লাঞ্ছিত করার খবরটিও চেপে রাখা যায়নি। কেউ কেউ মোবাইল ফোনে ধারণও করেছে। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক বা সামাজিক মিডিয়ায় সবিস্তারে ও সচিত্র বিবরণ প্রকাশ পেয়েছে। চরম নৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিপর্যয়ের এহেন অবক্ষয় পৃথিবীর অন্যত্র দেখা যায় কিনা, সন্দেহ। শাহবাগকেন্দ্রিক কথিত আন্দোলনের নামে তরুণ-তরুণীদের উত্তেজিত করার পাশাপাশি পর্দার আড়ালে আদিরসের খেলা জমানো হয়েছিল। এসব বদমায়েশি উগ্র-রাজনীতির উন্মাদনা করেছে এমনই পশুরা, যারা উত্তেজনা-উস্কানি ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। অন্ধকারের এসব নেতিবাচক শক্তির পশুত্বই বারবার প্রত্যক্ষ করেছে সমগ্র জাতি। মুখে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ আর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের ধুয়া তুলে জঘন্যতম নারী নির্যাতনের খলনায়করা এখন সত্যকে মিথ্যা আর ভালোকে মন্দ বলে অভিহিত করছে। সময় এসেছে আয়নায় উদ্ভাসিত এদের কুচরিত্র ও আসল অবয়ব প্রকাশ এবং ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করার। এরা যে আসলে কত নিকৃষ্ট, সেটাও মানুষের অনুধাবনের প্রয়োজন রয়েছে। না হলে এই ঘৃণ্য অপশক্তিই ঘৃণা আর পশুত্বের দ্বারা নারীত্ব আর মানবতার চরম লাঞ্ছনা ঘটাতেই থাকবে। ধর্ম, দর্শন, নৈতিকতার বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে। বাংলাদেশকে লুটপাটের দেশ আর নারীদের পথে-ঘাটে উপভোগের সামগ্রীতে পরিণত করবে। মানুষ নিশ্চয় নিজের মা-বোনদের ইজ্জত-আব্রু, নিজের বিশ্বাসকে প্রকাশ্যে পদদলিত হতে দেবে না।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাস ও বাস্তবতা লক্ষ করলে দেখা যায়, দেশে রাজনৈতিক বিপর্যয় যথেষ্ট হয়েছে। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ও সামান্য নয়। আইনশৃঙ্খলার বিপর্যয় তো অতলস্পর্শী। নৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিপর্যয় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। অনেকবারই পহেলা বৈশাখ বা এ ধরনের সাংস্কৃতিক আয়োজনে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। এবার সেটা আরো আগ্রাসী রূপেই ঘটেছে এবং লক্ষ করার বিষয় হলো, নিগৃহীত নারীর বাঁচাও বাঁচার চিৎকারে দু-একজন ছাড়া অন্যদের মধ্যে সামাজিক প্রতিরোধ তৈরি হয়নি। জাতির বিবেকের পক্ষেও সুতীব্র প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়নি। কর্তাব্যক্তিরা নারীর অপমানে বিশেষ কুণ্ঠিত হয়েছেন বলেও মনে হয় না। হলে, সেখানে দায়িত্বরত অথচ অকর্মন্য পুলিশের চাকরি থাকার কথা নয়। যারা সেখানে প্রত্যক্ষদর্শী রূপে উপস্থিত ছিলেন এবং যারা খবরটি পরে জেনেছেন, তাদেরও অপমানে নতজানু হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বিশেষ কিছুই হয়নি। এদেশে হত্যার বিচার না হলে কিংবা গুম-হওয়া মানুষ পাওয়া না গেলে যেমন কিছুই হয় না; দেশের প্রধান শহরে দিবালোকে নারীর বস্ত্রহরণ করলেও মনে হচ্ছে মানুষের বিবেকের দরজায় সশব্দ প্রতিবাদ ও ঘৃণার স্ফূলিঙ্গ জ্বলে ওঠে না। মানুষ বরং আনন্দিত হয় চটুল বিতর্কে, রুটিহীন আক্রমণে, অশালীন বক্তৃতায়। কর্তারাও ঘটনার প্রতিবিধানের বদলে রাজনৈতিক ঘোলাজল ও প্রতিপক্ষ নিধনেই পারদর্শী। সাগর-রুনী, ইলিয়াস আলী, সালাহউদ্দিন ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে কার্যকর তৎপরতার বদলে বাজার-মাৎ-করা রাজনীতি যথেষ্ট হয়েছে। এদেশে যে কোনো ঘটনা বা দুর্ঘটনার কার্যকারণ অনুসন্ধানের চেয়ে সেটি নিয়ে গুজব উৎপাদন ও রাজনৈতিক যুদ্ধ শুরু করাই সহজ। এ কারণেই কেন পহেলা বৈশাখের মতো আয়োজনের মধ্যে প্রকাশ্য-জনসমক্ষে নারীকে উলঙ্গ করার মতো ঘটনা ঘটেছে, সেটা অনুধাবন করা জরুরি। বিশ্বের যেসব দেশকে ফ্রি সেক্স বা উদার জীবনযাপনের জন্য আমরা নিন্দা করি, সেসব দেশেও এমন অনাচার করার সাহস কেউ পায় না! প্রায়ই অনেকে ভারতের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বলেন এবং হিন্দি ছবির কদর্যতার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন যে হচ্ছে, সেটাও সত্য। সেই ভারতেও নারী একাকী থাকলে কখনো কখনো নিগৃহীত বা ধর্ষিতা হয়; কিন্তু হাজার হাজার মানুষের মধ্যে বা উৎসব আমেজের মধ্যে দলবদ্ধ হয়ে নারীকে বস্ত্রহীন করা হয় না।
তাহলে প্রশ্ন হলো, এদেশে এমনটি হচ্ছে কেন? এদেশে তো ধর্মীয় রক্ষণশীলতা না থাকলেও শালীনতা আছে। মানবাধিকারের বিরাট বিরাট প্রবক্তা আছেন। নারী আন্দোলনের অনেক অগ্নিময়ী সেনানী আছেন। তদুপরি রাজনীতির ময়দানের পক্ষ আর প্রতিপক্ষ দুর্গের কর্ণধার হয়ে আছেন দুজন নারী। শুদ্ধ সংস্কৃতিচর্চার বহু ব্যক্তি ও সংগঠন আছে। সবাই মিলে এতদিন তাহলে কী করলেন যে কতিপয় কামাসক্ত সদম্ভে তাদের পাশবিক লালসা চরিতার্থ করতে পারলো? এসব অপরাধী কারা? কী তাদের আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক ও আদর্শিক পরিচয়? এসব প্রশ্ন নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে এবং সঠিক উত্তর বের করতে হবে। যারা ঘটনার অনুসন্ধান করবেন তারাই শুধু নয়; প্রতিটি সচেতন নাগরিককেই এখন এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর রাজনৈতিক ঘোলাজল সরিয়ে বের করতে হবে। জানতে হবে, আমরা কাদের সঙ্গে আছি বা কারা আমাদের সঙ্গে আছে। পহেলা বৈশাখ, থার্টি ফার্স্ট ইত্যাদি উৎসব কেন অপরাধীদের দাপট দেখানোর ক্ষেত্রে পরিণত হয়? চারদিকে কেন পাশবিক শক্তির অভয়ারণ্য? এসবই এখন ব্যক্তি মানুষ বা সামাজিক মানবগোষ্ঠীর কল্যাণ যারা চান, তাদের চিন্তা-ভাবনার বিষয়।
মনে রাখা ভালো, শুধু গান-বাজনার নাম সংস্কৃতি নয়, সংস্কৃতি হলো শুদ্ধবোধ ও বিশ্বাস। ধর্মীয়, নৈতিক ও আদর্শিক দৃঢ়তা সংস্কৃতির শক্তি। সেটা নস্যাৎ হয়ে গেলে হৈ-হুল্লোড়, উগ্র-উচ্ছ্বাস, বাড়াবাড়ি ও বেলেল্লাপনা বাড়বেই; বিপর্যয় আসবেই। রাজনীতি বা অর্থনীতিতে যেমন এসেছে; সংস্কৃতিতেও এখন তেমনি বিপর্যয় ধেয়ে আসছে। অর্থাৎ একটি ক্ষেত্রের বিপর্যয় আরো অনেকগুলো ক্ষেত্রে ধস ডেকে আনছে। বৈশাখী আয়োজনে নারীর বস্ত্রহরণের ঘটনার মাধ্যমে সর্বব্যাপী ধস ও বিপর্যয়ের চিত্রটিই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেল অপরাধীরা এবং অপরাধীরা যে এখন আর কাউকে পরোয়া করে না, সে বার্তাটিও জানিয়ে গেলো প্রকাশ্য সূর্যালোকে হাজার হাজার মানুষের সামনেই অপকর্মটি সংগঠিত করার দ্বারা। এসব অপরাধের ফলে সৃষ্ট ক্ষত আর লজ্জা কার? 
অপরাধের আগেই উচিত অপরাধের কারণ বন্ধ করা। আল্লামা সাঈদী ইংরেজি নববর্ষের নামে রাতভর মদ্যপান আর উচ্ছৃঙ্খলার বিরুদ্ধে জনমত গড়েছেন সারা জীবন। প্রাজ্ঞ আলেম ও চিন্তাবিদ জানতেন, এসব কুপ্রবণতা মানুষের পশুত্বকে বলবান করবে। তাই তিনি মুসলমানদের নিজের ধর্ম-সংস্কৃতি আঁকড়ে থাকার আহ্বান জানাতেন। তথাকথিত সেক্যুলার ও প্রগতিশীল মহল আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ল। শুধু তাকেই নয়, যারাই ইসলাম আর নৈতিকতার কথা বলেছেন, তাদেরই মৌলবাদী, জঙ্গিবাদী, সাম্প্রদায়িক, যুদ্ধাপরাধী বানিয়ে ফেলা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব যেমন জনআন্দোলনকারী বিপ্লবীদের জঙ্গি নাম দিচ্ছে, এখানেও ইসলাম, নৈতিক মূল্যবোধ ও শিষ্টাচারের পক্ষের মানুষদের চরিত্রহনন করা হচ্ছে। তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়েও দেয়া হচ্ছে। যারা অন্যায়, অনৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাদেরই যদি সরিয়ে দেয়া হয়, তখন তো পাশবিক শক্তিরই জয়জয়াকার। এমন পাশবিক অপশক্তিই চারদিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে সমাজ ও মানুষকে ক্রমেই ঘিরে ফেলছে। আমাদের নারীরা, আমাদের সমাজের আদর্শ মানুষ, আলো ও আদর্শের পতাকাবাহী তরুণেই তাই আজকে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। আর ধর্ষণের সেঞ্চুরিকারীরা পুরস্কৃত।
এমন পরিস্থিতি অবশ্যই চিন্তার কারণ। এতে সমাজ ও মানুষের মানমর্যাদা-নিরাপত্তা ভূলুণ্ঠিত হতে বাধ্য। তারপরও এ অবক্ষয়ের মধ্যেও রয়েছে আলোর দিশা। ইউরোপ-আমেরিকার প্রচ- ভোগবাদ ও ইন্দ্রীয় সুখের নামে বিকৃতি ও বিপদ টের পেয়ে সেখানে দলে দলে মানুষ যেভাবে ইসলামে দাখিল হচ্ছে, পর্দা মেনে নিচ্ছে, বাংলাদেশেও সেটা হবে; হতে বাধ্য। ইউরোপ-আমেরিকায় ইসলামের নৈতিক ও আদর্শিক দিকগুলোকে ব্যবহারিক জীবনে সবচেয়ে বেশি মেনে নিচ্ছে সেসব দেশের নারী সমাজ। কারণ তারা দেখেছে পশ্চিমা সমাজ কি নৃশংসভাবে নারীকে উপভোগ করে এবং এক সময় পরিত্যাগ করে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আর ইসলাম? নারী এবং অপরাপর মানুষকে ইহ ও পরকালীন জীবনে মর্যাদার নিশ্চয়তা আর সম্মান দান করে। করে বলেই মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েও অকুতোভয়চিত্তে নন্দিত জননেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান হাসতে হাসতে শাহাদাতের পেয়ালা পান করেন। শহীদ আবদুর কাদের মোল্লা আদর্শের জমিনে অটল থাকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। শহীদ আবদুল মালেক থেকে এদেশের মাটিতে ইসলাম, নৈতিক মূল্যবোধ ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার যে চলমান সংগ্রাম, তা নারীকে লাঞ্ছনার হাত থেকে বাঁচাতে এবং মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতে উচ্চমর্যাদায় আসীন করার প্রত্যয়ে দীপ্ত। দেশের সর্বত্র অবদমিত ও নিগৃহীত নারী-পুরুষ ক্রমে ক্রমে আদর্শের বাতিঘরের আলোকস্তম্ভ দেখতে পাচ্ছেন। অন্যদিকে তারা এটাও দেখতে পাচ্ছেন খলনায়ক ও উত্তেজনার নামে মানুষকে দিকভ্রান্তকারীদের কুচরিত্র। সত্য আর মিথ্যার নিরন্তন দ্বন্দ্বে আকীর্ণ বাংলাদেশ আদর্শের পথে মহৎ আত্মত্যাগের প্রেরণায় মানবতাবিরোধী প্রকৃত অপশক্তির ছদ্মবেশ অচিরেই উন্মোচিত করবে এবং এদের পদাঘাতে পদাঘাতে পর্যুদস্ত করে সত্য ও মানবিক মর্যাদার আলোকমালা প্রজ্বলিত করবেই। কারণ কোনো মহৎ ও আদর্শিক ত্যাগ ও সংগ্রাম কখনোই ব্যর্থ হয় না। বিশেষত যখন চারদিকে নির্যাতিত নারী ও মানুষের আহাজারি আর বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার, তখন ইসলাম ও মুসলমানদেরই ঐতিহাসিক দায়িত্বে মানবতার ত্রাণে এগিয়ে আসতে হবে। এটাই শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে মুসলমানদের মূল দায়িত্ব এবং ইসলামের স্বর্ণালী যুগে স্পেন থেকে সুদূর চীন পর্যন্ত মুসলমানরা মানবতাবাদী এমন আদর্শিক দায়িত্বই পালন করেছেন। বিপর্যস্ত মানবিক-মর্যাদা ও অধিকারহীনতার বাংলাদেশে এখন সেই নৈতিক-আদর্শিক দায়িত্ব পালনের দায়িত্ব চূড়ান্ত পর্যায় চলছে। সম্মিলিত ইসলামী আন্দোলনকে এখন আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক বিপর্যয় ও অবক্ষয় প্রতিহত করে মানুষ ও মানবতাকে বাঁচাতে হবে। কারণ এযাবতকাল মানুষ তথাকথিত উদার ও আদর্শহীন রাজনীতিকে দেখেছে মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠস্বরূপ। এদের দ্বারা গুণগত-আদর্শিক উত্তরণ আসলেই সম্ভব নয়। এরা একে অপরের প্রকাশ্য শত্রু হলেও মূলগত বন্ধু। এখন প্রয়োজন সাচ্চা, পরীক্ষিত, আদর্শবাদী আন্দোলনের দিন। যারা সামনের কাতারে এসে নারীর লজ্জা মুছে দেবে। নারীকে প্রকাশ্যে বস্ত্রহীনতা থেকে রক্ষা করবে। আর কাউকে ইজ্জত-আব্রুর জন্য বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে দেবে না। যারা নিজের জীবন বাঁচানোর জন্যও আপস করেন না; তারা এবং তাদের অনুসারীরাই বিপন্ন নারী-পুরুষ-মানবতাকে বাঁচাতে পারবে। এই সত্য যত দ্রুত মানুষ উপলব্ধি করবে; তত দ্রুত বাংলাদেশের বিদ্যমান কালো অধ্যায় ও অন্ধকার কেটে যাবে।


--
You received this message because you had subscribed to the Google Groups "North America Bangladeshi Community forum". Any posting to this group is solely the opinion of the author of the messages to nabdc@googlegroups.com who is responsible for the accuracy of his/her information and the conformance of his/her material with applicable copyright and other laws where applicable. The act of posting to the group indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator(s). To post to this group, send email to nabdc@googlegroups.com.
---
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "North America Bangladeshi Community" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to nabdc+unsubscribe@googlegroups.com.
Visit this group at http://groups.google.com/group/nabdc.
For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.


__._,_.___

Posted by: Shahadat Hussaini <shahadathussaini@hotmail.com>


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___

[chottala.com] 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' কি নিশ্চিত



'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' কি নিশ্চিত
কাজী সিরাজ
শেয়ার - মন্তব্য (0) - প্রিন্ট
অ-অ+

ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছুদিন ধরে সারা দেশেই একটা স্বস্তিদায়ক পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে এই স্বস্তি কতটা স্থায়ী হবে, তা নির্ভর করছে নির্বাচন কেমন হবে তার ওপর। নির্বাচন কমিশন ও সরকারের আচরণ-উচ্চারণই নির্ধারণ করবে নির্বাচনের প্রকৃত চরিত্র। তাদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বলা হচ্ছে নির্বাচন সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ হবে; সব পক্ষের জন্য নির্বাচনী প্রচারণা এবং সংশ্লিষ্ট সব কাজে 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' থাকবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই সরকারি ও সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট সমর্থিত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র পদপ্রার্থীরা বলছেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ওয়াদা সম্পূর্ণই ধাপ্পা। সিটি নির্বাচন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও প্রধানমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী-মিনিস্টার কেউই এই নির্বাচনের আচরণবিধি মানছেন না বলে জোরালো অভিযোগ উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বলেছেন, সংসদ চাইলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও দলীয় ভিত্তিতে হতে পারে; তবে যতক্ষণ তা বলবৎ হচ্ছে না ততক্ষণ চলমান আইন মানতে হবে। 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' কি নিশ্চিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাই শুধু নন, সচেতন নাগরিক সমাজ থেকেও প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী করে দুই সিটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করলেন? কিভাবে তিনি গণভবনে আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরীর ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে দল সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিলেন? কেমন করে ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমাদানকারী প্রার্থী সারাহ বেগম কবরীকে বললেন, 'আমার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন!' এর সবই স্থানীয় সরকার নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী বলে প্রতিভাত। কী করল নির্বাচন কমিশন? এটা না একটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান? এখনো কাগজে-কলমে যে দায়িত্ব ও ক্ষমতা আছে তাতে কমিশনের হাত অনেক লম্বা। যত বড় ক্ষমতাশালীই হোন না কেন, যে কারো বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অপরাধে কমিশন কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু শাসকদলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগেই ঘোষিত প্রার্থীদের পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণার অপরাধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ তো দূরের কথা, একটা টুঁ শব্দও উচ্চারণ করল না কাজী রকিবউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য নির্বাচন কমিশনারদের পদ সাংবিধানিক পদ। মৃত্যু ও পদত্যাগের মাধ্যমেই একমাত্র তাঁদের পদ শূন্য হতে পারে, অন্য কোনোভাবে নয়। মেয়াদকালে তাঁদের চাকরিচ্যুত করার কোনো সুযোগও নেই। তার পরও তাঁদের ভূমিকায় শুধু বিরোধী দল কেন, সাধারণ মানুষও হতাশ। চট্টগ্রামে মন্ত্রী মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে সরাসরি আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান। একটি হোটেলে ১০ লাখ টাকা খরচ করে আয়োজিত এক সভায় তিনি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, চট্টগ্রামে যেকোনো মূল্যে জিততেই হবে। দিন পনেরো আগে টিভি চ্যানেল একাত্তরের জনপ্রিয় টক শো একাত্তর জার্নালে আমার সঙ্গে সহ-আলোচক ছিলেন জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ। সিটি নির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গ নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে অনুষ্ঠান চলাকালেই জানিপপের চট্টগ্রামের সংগঠক ও মন্ত্রী মোশাররফ হোসেনের আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন। কাজেই বিএনপি নেতা আগে অভিযোগ করেছিলেন বলে একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষকে হেয় করার 'অপপ্রয়াস' বলার কোনো সুযোগ নেই। ঢাকা ও চট্টগ্রামে ইসি কর্তৃক নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার আগেই শাসকদলের প্রার্থীরা বিলবোর্ড, নিয়ন সাইন, বহুরঙা পোস্টার, ব্যানার, বেলুন পোস্টার ইত্যাদির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন আগাম নির্বাচনী প্রচারে। অথচ তা স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিধিমালার পরিপূর্ণ লঙ্ঘন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার স্বয়ং বলেছিলেন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে অর্থাৎ ৮ এপ্রিলের আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু সরকারদলীয় প্রভাবশালী প্রার্থীরা তা কানেই তোলেননি। এমনকি বিলবোর্ডসহ বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম (পোস্টারসহ) দুই দিনের মধ্যে সরিয়ে ফেলার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন সিইসি, সেসবের অনেকই এখনো রাস্তায় দেখা যায়। কী করেছে নির্বাচন কমিশন? কারো বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি।

আরেকটি চিত্র উদ্বেগজনক। বিএনপি সমর্থিত অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী পুলিশ ও শাসকদলীয় ক্যাডারদের দাবড়ানোর চোটে বাসাবাড়িতে তো নয়ই, এলাকায়ও থাকতে পারছেন না। কোথাও নির্বাচনী প্রচারে নামার খবর পেলে সেখানেও দাবড়াচ্ছে পুলিশ। এ রকম কিছু ঘটনা মিডিয়ায়ও এসেছে। গত ১০ এপ্রিল শুক্রবার বিকেল ৩টায় কামরাঙ্গীরচরের ঝাউচর এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় বেরিয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী শহিদুল হক। এলাকার কিছু বাসিন্দাও তাঁর সঙ্গে প্রচারে শামিল হয়। খবর পেয়ে ধেয়ে আসে ২০-২৫ জনের একদল পুলিশ। ধাওয়া দেয় শহিদুল হক এবং তাঁর সঙ্গীদের। নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি। একই দিন সন্ধ্যায় (৭টায়) কামরাঙ্গীরচরের করিমাবাদ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন বিএনপি সমর্থিত ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট রাশেদ আলম খোকন। তাঁকেও ধাওয়া দেয় পুলিশ। পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য খোকনসহ তাঁর সমর্থকরা নৌকায় বুড়িগঙ্গা পার হয়ে কেরানীগঞ্জে পালিয়ে যান। চট্টগ্রামে ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর দিদারুর রহমান লাবু পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পুলিশের ভয়ে। 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' কি নিশ্চিতনামতেই পারছেন না প্রচারে। ৩৭ নম্বর হালিশহর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান কাউন্সিলর হাসান মুরাদ। বন্দর ও ইপিজেড থানায় তিনটি রাজনৈতিক মামলার জের ধরে তাঁকেও প্রচারে নামতে দিচ্ছে না পুলিশ। চট্টগ্রামে বিএনপি সমর্থিত আরো আট প্রার্থীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা দেওয়া হয়েছে ৪২টি। পুলিশের ভয়ে সবাই তটস্থ। মোটামুটি অবস্থাটা হচ্ছে- তিন সিটিতেই বিএনপি সমর্থিত বেশির ভাগ প্রার্থী সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীদের মতো নির্বাচনী প্রচারে সমান সুযোগ পাচ্ছেন না। শুধু তা-ই নয়, তাঁরা যাতে ভোটারদের কাছে পৌঁছতে না পারেন সে জন্যও নানা অপতৎপরতা চলছে বলে অভিযোগ খুব জোরালো। শুধু প্রার্থীরা নন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রার্থীর স্ত্রী-সন্তানদেরও হয়রানি করছে নানা বাহিনী। হুমকি-ধমকিও চলছে বলে অভিযোগ আসছে অবিরাম। চট্টগ্রামের আরেকটি ঘটনার কথা উল্লেখ না করলেই নয়। বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী মঞ্জুর আলমের একটি প্রচার মিছিলে বায়েজিদ এলাকার জালালাবাদে হামলা চালায় সরকার সমর্থকরা। তাতে আহত হন সাবেক হুইপ ও বিএনপি নেতা ওয়াহিদুল আলম এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর স্ত্রীসহ বেশ কিছু মহিলা সমর্থক। এটা জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। নির্বাচন কমিশনের স্থানীয় কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে, কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই। যা বলা হয়েছে কেউ কেউ রসিকতা করে সে সম্পর্কে বলছেন, কমিশন যেন বলছে, ''ছিঃ, এসব 'কলে না' বাবারা, লোকে 'খালাপ' বলবে যে!''

আবার শুরুর প্রসঙ্গেই ফিরে যাই। তিন সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বস্তির ভাব বিরাজ করার কথা বলেছি। এখনো তা নষ্ট হয়ে যায়নি। কিন্তু নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আচরণ সম্পর্কে শুরুতে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা, দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রচার-প্রচারণার বিষয়সহ ঢাকা-চট্টগ্রামের যে চারটি কেস স্টাডি উল্লেখ করেছি তা থেকে এই আশাজাগানিয়া নির্বাচন নিয়ে একেবারে নিরুদ্বিগ্ন থাকা যাচ্ছে না। দিন যত যাচ্ছে, উদ্বেগ তত বাড়ছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে আওয়ামী লীগের নির্বাচন সমন্বয় কমিটির দুই হেভিওয়েট নেতা কাজী জাফর উল্যাহ এবং কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেছেন, তাঁরা দুই মেয়র ও ৫০ কাউন্সিলর জেতানোর জন্য কাজ করছেন। যেকোনো দল তা চাইতেই পারে। কিন্তু শাসকদলের এই চাওয়ার সঙ্গে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা যদি প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য প্রার্থীদের জন্য প্রতিকূল ও ভয়ংকর হয়ে ওঠে তখন নির্বাচনটি কেমন হবে তা নিয়ে মানুষের মনে নানা সন্দেহ-সংশয় দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। এই লেখা যখন লিখছি, (১৭.০৪.২০১৫ রাত ৯টা) তখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মির্জা আব্বাস সশরীরে নির্বাচনী প্রচারে শামিল হতে পারবেন কি না। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা দুটি রাজনৈতিক মামলায় (গাড়ি পোড়ানো, নাশকতার) উচ্চ আদালতে দ্বিধাবিভক্ত রায়ের কারণে বিষয়টি ঝুলে আছে। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক তাঁকে তিন সপ্তাহের জামিন দিলেও কনিষ্ঠ বিচারক জামিন দিতে রাজি হননি। প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্তের পর বোঝা যাবে মির্জা আব্বাস নিজে তাঁর নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারবেন কি না। এখন পর্যন্ত তিনি যে আভাস দিয়ে রেখেছেন তাতে বলা চলে, জামিন না হলে আত্মগোপনে থেকেই, এমনকি গ্রেপ্তার হলেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবেন। শাসকদলের দুই মেয়র পদে এবং ৫০ কাউন্সিলর পদে জয়ের অভীপ্সা বিএনপিও জানে। তাদের বেশির ভাগ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ভালোভাবে সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের মতো সমান সুযোগ পেয়ে, সমানতালে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারছেন না, তাও জানেন দলের হাইকমান্ড। কিন্তু তার পরও তাঁরা ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছেন এবং এখনো ভোটযুদ্ধে আছেন এটা একটা ভালো খবর। কিন্তু বৈরী হাওয়া যদি সহনীয় সীমা অতিক্রম করে, সরকারপক্ষে দুই মেয়র ও ৫০ কাউন্সিলর জয়ের বাসনা যদি 'দখলের' বেপরোয়া তাণ্ডবের দিকে ধাবিত হয়, তাহলে পরিস্থিতি কি এখন যেমন আছে তেমন থাকবে? আমাদের সবার মনে থাকার কথা যে অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নবম সংসদ নির্বাচনটি ২০০৮ সালের ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, নানা দ্বিধাদ্বন্দ্বের পরও তাতে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। কিন্তু বেশ প্রচার ছিল যে বিএনপির 'হাওয়া ভবন' কেন্দ্র চায়নি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক। তারা জেতার ব্যাপারে সন্দিহান ছিল এবং চেয়েছিল ফাঁকা মাঠে গোল দিতে। ৩০০ আসনে মহাজোট প্রার্থীরা তাঁদের মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছিলেন। কিন্তু উচ্চ আদালতের চেম্বার জজ মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির হু. মু. এরশাদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ অবৈধ ঘোষণার পর মহাজোট সেই নির্বাচন বর্জন করে। হাওয়া ভবনের 'কলের পুতুল' বলে পরিচয় লাভকারী অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ আর সেই নির্বাচন করাতে পারেননি। বিএনপি মির্জা আব্বাসের ব্যাপারে উচ্চ আদালতের বিভক্ত রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এখনো নির্বাচনে আছে, আশা করা যায় এই ইস্যুতে তারা নির্বাচন বর্জনের পথে হাঁটবে না। কিন্তু তাঁর পক্ষে যারা প্রচার অভিযানে নেমেছে, তাদের যদি হয়রানি করা হয়, পেট্রলবোমা হামলা বা নাশকতার মামলায় পাঁচ-সাতজন আসামির সঙ্গে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-সাত শ আসামির তালিকায় ফেলে যদি দলের তৃণমূলের পরীক্ষিত ও পরিশ্রমী নেতা-কর্মীদের পুলিশ ও সরকারি অন্যান্য ক্যাডার বাহিনী দাবড়ে বেড়াতে থাকে, তাহলে সন্দেহ জাগবে এসবের পেছনে ক্ষমতাসীনদের হয়তো কোনো কারসাজি আছে। কোনো কোনো মন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো কোনো কর্মকর্তা ফৌজদারি মামলা এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কথা বলে নির্বাচন প্রার্থী ও তাঁদের কর্মীদের পুলিশি হয়রানিকে 'হালাল' সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। অর্থাৎ তাঁদের নির্বাচন করা এবং প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করাটা 'হারাম'। তা হলে নির্বাচন কমিশন তাঁদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করল কিভাবে? তাঁদের নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যেত। নির্বাচনের জন্য প্রার্থিতা দাখিলের ফরমে প্রার্থীরা নিশ্চয়ই কোনো তথ্য গোপন করেননি। তাহলে এই প্রশ্ন কি সংগত নয় যে নির্বাচন কমিশন যাঁকে বা যাঁদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য যোগ্য ঘোষণা করবে, তিনি বা তাঁরা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সমান সুযোগ পাবেন না কেন? নির্বাচন কমিশন তো মামলা-মোকদ্দমার খবর জানে। তা ছাড়া অভিযুক্ত মানে তো অপরাধী নয়। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগে কাউকে শাস্তি দেওয়া তো অন্যায়। ফৌজদারি মামলার যেসব আসামি এখনো জামিন পাননি বা জামিন নেননি, তাঁদের মধ্যে নির্বাচন কমিশন যাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার যোগ্য বলে রায় দিয়েছে, তিনি বা তাঁরা যাতে নির্বিঘ্নে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ চালাতে পারেন, সেদিকে খেয়াল রাখা নির্বাচন কমিশনের অবশ্যকর্তব্য। তাঁরা যাতে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত জামিনে থাকতে পারেন সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কথা বলা খুবই জরুরি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তা করছে না। এতে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা।

তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে আশার একটা বড় দিক ছিল জাতীয় রাজনীতির বিবদমান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান কার্যকর বিরোধী দলের মধ্যে মুখোমুখি সাংঘর্ষিক অবস্থার অবসানের স্বপ্ন। দ্বেষ-হিংসা আর হানাহানির রাজনীতির পঙ্কিলতা থেকে বেরিয়ে আসার একটা সুন্দর পথ খুলে দেবে এই নির্বাচন- এই প্রত্যাশা দেশবাসীর। ছোট্ট একটি নির্বাচন। এই নির্বাচনে সরকার অদলবদল হবে না। তবুও এই সিটি নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে বাইরের দুনিয়াও। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জাতিসংঘ মহাসচিব স্বয়ং এই নির্বাচন স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক ও যথাযথ ভূমিকা পালন করতে বলেছেন। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার একটি সমন্বিত প্যাকেজ উদ্যোগের অংশ এই তিন সিটি নির্বাচন। এই নির্বাচনের পর হয়তো একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য মধ্যবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হবে। কিন্তু এই নির্বাচনে সরকারি বৈরী আচরণ যদি অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যায় এবং তা নিয়ন্ত্রণে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশন যদি অপারগ হয় কিংবা অক্ষম হয় অথবা সরকারকে সন্তুষ্ট করার জন্য কাজ করছে বলে বোঝা যায়, তা হলে এই নির্বাচনী আয়োজন ভবিষ্যতের জন্য বড় কোনো দুর্যোগ ডেকে আনতে পারে। এখনো সময় আছে নির্বাচন কমিশন তার সাংবিধানিক অস্তিত্ব প্রমাণ করার, নির্বাচনটাকে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণমূলক ও অর্থপূর্ণ করার। বিএনপি নির্বাচনে না থাকলে এই নির্বাচন তার লক্ষ্য অর্জন করবে না, মানুষের আশা ও স্বপ্ন পূরণ হবে না। আশা করি, সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী বিএনপির নির্বাচন বর্জন করার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দেবেন না।

লেখক : সাংবাদিক



__._,_.___

Posted by: Shahadat Hussaini <shahadathussaini@hotmail.com>


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___

[chottala.com] প্রকাশ্যে বিবস্ত্রকরণযজ্ঞ কে থামাবে? অপমানদগ্ধ নারীকে কে বাঁচাবে?



প্রকাশ্যে বিবস্ত্রকরণযজ্ঞ কে থামাবে? অপমানদগ্ধ নারীকে কে বাঁচাবে?

বস্ত্রহীন-বিপন্ন নারীর বাঁচাও বাঁচাও আর্তচিৎকার প্রায় সবাই শুনেছেন। পহেলা বৈশাখের দিন নারীর প্রতি সহিংসতা ও চরম অবমাননার ঘটনাটি সবার নজরে এসেছে। অবশ্য এটাও ঠিক যে, অনেক ঘটনা নজরের বাইরেই রয়ে গেছে। সব খবর সবসময় প্রকাশ পায় না। কখনো আক্রান্ত বা ক্ষতিগ্রস্তরাও লোকলজ্জার ভয়ে অনেক কালো দাগ আর যন্ত্রণা চেপে রাখে। জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণের সেঞ্চুরির খবর এসেছিল। যারা সেঞ্চুরি করতে পারেনি, তাদের খবর হয়তো আসেনি। একজন আদিবাসী ছাত্রীকেও সম্প্রতি পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়েছে সেখানে। এসবই রতন-মানিকদের কীর্তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মুক্তবুদ্ধি ও জ্ঞানচর্চা কেন্দ্রের সন্নিকটে জাতীয় পর্যায়ে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে নারীকে বিবস্ত্র ও লাঞ্ছিত করার খবরটিও চেপে রাখা যায়নি। কেউ কেউ মোবাইল ফোনে ধারণও করেছে। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক বা সামাজিক মিডিয়ায় সবিস্তারে ও সচিত্র বিবরণ প্রকাশ পেয়েছে। চরম নৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিপর্যয়ের এহেন অবক্ষয় পৃথিবীর অন্যত্র দেখা যায় কিনা, সন্দেহ। শাহবাগকেন্দ্রিক কথিত আন্দোলনের নামে তরুণ-তরুণীদের উত্তেজিত করার পাশাপাশি পর্দার আড়ালে আদিরসের খেলা জমানো হয়েছিল। এসব বদমায়েশি উগ্র-রাজনীতির উন্মাদনা করেছে এমনই পশুরা, যারা উত্তেজনা-উস্কানি ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। অন্ধকারের এসব নেতিবাচক শক্তির পশুত্বই বারবার প্রত্যক্ষ করেছে সমগ্র জাতি। মুখে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ আর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের ধুয়া তুলে জঘন্যতম নারী নির্যাতনের খলনায়করা এখন সত্যকে মিথ্যা আর ভালোকে মন্দ বলে অভিহিত করছে। সময় এসেছে আয়নায় উদ্ভাসিত এদের কুচরিত্র ও আসল অবয়ব প্রকাশ এবং ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করার। এরা যে আসলে কত নিকৃষ্ট, সেটাও মানুষের অনুধাবনের প্রয়োজন রয়েছে। না হলে এই ঘৃণ্য অপশক্তিই ঘৃণা আর পশুত্বের দ্বারা নারীত্ব আর মানবতার চরম লাঞ্ছনা ঘটাতেই থাকবে। ধর্ম, দর্শন, নৈতিকতার বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে। বাংলাদেশকে লুটপাটের দেশ আর নারীদের পথে-ঘাটে উপভোগের সামগ্রীতে পরিণত করবে। মানুষ নিশ্চয় নিজের মা-বোনদের ইজ্জত-আব্রু, নিজের বিশ্বাসকে প্রকাশ্যে পদদলিত হতে দেবে না।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাস ও বাস্তবতা লক্ষ করলে দেখা যায়, দেশে রাজনৈতিক বিপর্যয় যথেষ্ট হয়েছে। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ও সামান্য নয়। আইনশৃঙ্খলার বিপর্যয় তো অতলস্পর্শী। নৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিপর্যয় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। অনেকবারই পহেলা বৈশাখ বা এ ধরনের সাংস্কৃতিক আয়োজনে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। এবার সেটা আরো আগ্রাসী রূপেই ঘটেছে এবং লক্ষ করার বিষয় হলো, নিগৃহীত নারীর বাঁচাও বাঁচার চিৎকারে দু-একজন ছাড়া অন্যদের মধ্যে সামাজিক প্রতিরোধ তৈরি হয়নি। জাতির বিবেকের পক্ষেও সুতীব্র প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়নি। কর্তাব্যক্তিরা নারীর অপমানে বিশেষ কুণ্ঠিত হয়েছেন বলেও মনে হয় না। হলে, সেখানে দায়িত্বরত অথচ অকর্মন্য পুলিশের চাকরি থাকার কথা নয়। যারা সেখানে প্রত্যক্ষদর্শী রূপে উপস্থিত ছিলেন এবং যারা খবরটি পরে জেনেছেন, তাদেরও অপমানে নতজানু হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বিশেষ কিছুই হয়নি। এদেশে হত্যার বিচার না হলে কিংবা গুম-হওয়া মানুষ পাওয়া না গেলে যেমন কিছুই হয় না; দেশের প্রধান শহরে দিবালোকে নারীর বস্ত্রহরণ করলেও মনে হচ্ছে মানুষের বিবেকের দরজায় সশব্দ প্রতিবাদ ও ঘৃণার স্ফূলিঙ্গ জ্বলে ওঠে না। মানুষ বরং আনন্দিত হয় চটুল বিতর্কে, রুটিহীন আক্রমণে, অশালীন বক্তৃতায়। কর্তারাও ঘটনার প্রতিবিধানের বদলে রাজনৈতিক ঘোলাজল ও প্রতিপক্ষ নিধনেই পারদর্শী। সাগর-রুনী, ইলিয়াস আলী, সালাহউদ্দিন ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে কার্যকর তৎপরতার বদলে বাজার-মাৎ-করা রাজনীতি যথেষ্ট হয়েছে। এদেশে যে কোনো ঘটনা বা দুর্ঘটনার কার্যকারণ অনুসন্ধানের চেয়ে সেটি নিয়ে গুজব উৎপাদন ও রাজনৈতিক যুদ্ধ শুরু করাই সহজ। এ কারণেই কেন পহেলা বৈশাখের মতো আয়োজনের মধ্যে প্রকাশ্য-জনসমক্ষে নারীকে উলঙ্গ করার মতো ঘটনা ঘটেছে, সেটা অনুধাবন করা জরুরি। বিশ্বের যেসব দেশকে ফ্রি সেক্স বা উদার জীবনযাপনের জন্য আমরা নিন্দা করি, সেসব দেশেও এমন অনাচার করার সাহস কেউ পায় না! প্রায়ই অনেকে ভারতের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বলেন এবং হিন্দি ছবির কদর্যতার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন যে হচ্ছে, সেটাও সত্য। সেই ভারতেও নারী একাকী থাকলে কখনো কখনো নিগৃহীত বা ধর্ষিতা হয়; কিন্তু হাজার হাজার মানুষের মধ্যে বা উৎসব আমেজের মধ্যে দলবদ্ধ হয়ে নারীকে বস্ত্রহীন করা হয় না।
তাহলে প্রশ্ন হলো, এদেশে এমনটি হচ্ছে কেন? এদেশে তো ধর্মীয় রক্ষণশীলতা না থাকলেও শালীনতা আছে। মানবাধিকারের বিরাট বিরাট প্রবক্তা আছেন। নারী আন্দোলনের অনেক অগ্নিময়ী সেনানী আছেন। তদুপরি রাজনীতির ময়দানের পক্ষ আর প্রতিপক্ষ দুর্গের কর্ণধার হয়ে আছেন দুজন নারী। শুদ্ধ সংস্কৃতিচর্চার বহু ব্যক্তি ও সংগঠন আছে। সবাই মিলে এতদিন তাহলে কী করলেন যে কতিপয় কামাসক্ত সদম্ভে তাদের পাশবিক লালসা চরিতার্থ করতে পারলো? এসব অপরাধী কারা? কী তাদের আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক ও আদর্শিক পরিচয়? এসব প্রশ্ন নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে এবং সঠিক উত্তর বের করতে হবে। যারা ঘটনার অনুসন্ধান করবেন তারাই শুধু নয়; প্রতিটি সচেতন নাগরিককেই এখন এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর রাজনৈতিক ঘোলাজল সরিয়ে বের করতে হবে। জানতে হবে, আমরা কাদের সঙ্গে আছি বা কারা আমাদের সঙ্গে আছে। পহেলা বৈশাখ, থার্টি ফার্স্ট ইত্যাদি উৎসব কেন অপরাধীদের দাপট দেখানোর ক্ষেত্রে পরিণত হয়? চারদিকে কেন পাশবিক শক্তির অভয়ারণ্য? এসবই এখন ব্যক্তি মানুষ বা সামাজিক মানবগোষ্ঠীর কল্যাণ যারা চান, তাদের চিন্তা-ভাবনার বিষয়।
মনে রাখা ভালো, শুধু গান-বাজনার নাম সংস্কৃতি নয়, সংস্কৃতি হলো শুদ্ধবোধ ও বিশ্বাস। ধর্মীয়, নৈতিক ও আদর্শিক দৃঢ়তা সংস্কৃতির শক্তি। সেটা নস্যাৎ হয়ে গেলে হৈ-হুল্লোড়, উগ্র-উচ্ছ্বাস, বাড়াবাড়ি ও বেলেল্লাপনা বাড়বেই; বিপর্যয় আসবেই। রাজনীতি বা অর্থনীতিতে যেমন এসেছে; সংস্কৃতিতেও এখন তেমনি বিপর্যয় ধেয়ে আসছে। অর্থাৎ একটি ক্ষেত্রের বিপর্যয় আরো অনেকগুলো ক্ষেত্রে ধস ডেকে আনছে। বৈশাখী আয়োজনে নারীর বস্ত্রহরণের ঘটনার মাধ্যমে সর্বব্যাপী ধস ও বিপর্যয়ের চিত্রটিই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেল অপরাধীরা এবং অপরাধীরা যে এখন আর কাউকে পরোয়া করে না, সে বার্তাটিও জানিয়ে গেলো প্রকাশ্য সূর্যালোকে হাজার হাজার মানুষের সামনেই অপকর্মটি সংগঠিত করার দ্বারা। এসব অপরাধের ফলে সৃষ্ট ক্ষত আর লজ্জা কার? 
অপরাধের আগেই উচিত অপরাধের কারণ বন্ধ করা। আল্লামা সাঈদী ইংরেজি নববর্ষের নামে রাতভর মদ্যপান আর উচ্ছৃঙ্খলার বিরুদ্ধে জনমত গড়েছেন সারা জীবন। প্রাজ্ঞ আলেম ও চিন্তাবিদ জানতেন, এসব কুপ্রবণতা মানুষের পশুত্বকে বলবান করবে। তাই তিনি মুসলমানদের নিজের ধর্ম-সংস্কৃতি আঁকড়ে থাকার আহ্বান জানাতেন। তথাকথিত সেক্যুলার ও প্রগতিশীল মহল আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ল। শুধু তাকেই নয়, যারাই ইসলাম আর নৈতিকতার কথা বলেছেন, তাদেরই মৌলবাদী, জঙ্গিবাদী, সাম্প্রদায়িক, যুদ্ধাপরাধী বানিয়ে ফেলা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব যেমন জনআন্দোলনকারী বিপ্লবীদের জঙ্গি নাম দিচ্ছে, এখানেও ইসলাম, নৈতিক মূল্যবোধ ও শিষ্টাচারের পক্ষের মানুষদের চরিত্রহনন করা হচ্ছে। তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়েও দেয়া হচ্ছে। যারা অন্যায়, অনৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাদেরই যদি সরিয়ে দেয়া হয়, তখন তো পাশবিক শক্তিরই জয়জয়াকার। এমন পাশবিক অপশক্তিই চারদিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে সমাজ ও মানুষকে ক্রমেই ঘিরে ফেলছে। আমাদের নারীরা, আমাদের সমাজের আদর্শ মানুষ, আলো ও আদর্শের পতাকাবাহী তরুণেই তাই আজকে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। আর ধর্ষণের সেঞ্চুরিকারীরা পুরস্কৃত।
এমন পরিস্থিতি অবশ্যই চিন্তার কারণ। এতে সমাজ ও মানুষের মানমর্যাদা-নিরাপত্তা ভূলুণ্ঠিত হতে বাধ্য। তারপরও এ অবক্ষয়ের মধ্যেও রয়েছে আলোর দিশা। ইউরোপ-আমেরিকার প্রচ- ভোগবাদ ও ইন্দ্রীয় সুখের নামে বিকৃতি ও বিপদ টের পেয়ে সেখানে দলে দলে মানুষ যেভাবে ইসলামে দাখিল হচ্ছে, পর্দা মেনে নিচ্ছে, বাংলাদেশেও সেটা হবে; হতে বাধ্য। ইউরোপ-আমেরিকায় ইসলামের নৈতিক ও আদর্শিক দিকগুলোকে ব্যবহারিক জীবনে সবচেয়ে বেশি মেনে নিচ্ছে সেসব দেশের নারী সমাজ। কারণ তারা দেখেছে পশ্চিমা সমাজ কি নৃশংসভাবে নারীকে উপভোগ করে এবং এক সময় পরিত্যাগ করে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আর ইসলাম? নারী এবং অপরাপর মানুষকে ইহ ও পরকালীন জীবনে মর্যাদার নিশ্চয়তা আর সম্মান দান করে। করে বলেই মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েও অকুতোভয়চিত্তে নন্দিত জননেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান হাসতে হাসতে শাহাদাতের পেয়ালা পান করেন। শহীদ আবদুর কাদের মোল্লা আদর্শের জমিনে অটল থাকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। শহীদ আবদুল মালেক থেকে এদেশের মাটিতে ইসলাম, নৈতিক মূল্যবোধ ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার যে চলমান সংগ্রাম, তা নারীকে লাঞ্ছনার হাত থেকে বাঁচাতে এবং মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতে উচ্চমর্যাদায় আসীন করার প্রত্যয়ে দীপ্ত। দেশের সর্বত্র অবদমিত ও নিগৃহীত নারী-পুরুষ ক্রমে ক্রমে আদর্শের বাতিঘরের আলোকস্তম্ভ দেখতে পাচ্ছেন। অন্যদিকে তারা এটাও দেখতে পাচ্ছেন খলনায়ক ও উত্তেজনার নামে মানুষকে দিকভ্রান্তকারীদের কুচরিত্র। সত্য আর মিথ্যার নিরন্তন দ্বন্দ্বে আকীর্ণ বাংলাদেশ আদর্শের পথে মহৎ আত্মত্যাগের প্রেরণায় মানবতাবিরোধী প্রকৃত অপশক্তির ছদ্মবেশ অচিরেই উন্মোচিত করবে এবং এদের পদাঘাতে পদাঘাতে পর্যুদস্ত করে সত্য ও মানবিক মর্যাদার আলোকমালা প্রজ্বলিত করবেই। কারণ কোনো মহৎ ও আদর্শিক ত্যাগ ও সংগ্রাম কখনোই ব্যর্থ হয় না। বিশেষত যখন চারদিকে নির্যাতিত নারী ও মানুষের আহাজারি আর বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার, তখন ইসলাম ও মুসলমানদেরই ঐতিহাসিক দায়িত্বে মানবতার ত্রাণে এগিয়ে আসতে হবে। এটাই শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে মুসলমানদের মূল দায়িত্ব এবং ইসলামের স্বর্ণালী যুগে স্পেন থেকে সুদূর চীন পর্যন্ত মুসলমানরা মানবতাবাদী এমন আদর্শিক দায়িত্বই পালন করেছেন। বিপর্যস্ত মানবিক-মর্যাদা ও অধিকারহীনতার বাংলাদেশে এখন সেই নৈতিক-আদর্শিক দায়িত্ব পালনের দায়িত্ব চূড়ান্ত পর্যায় চলছে। সম্মিলিত ইসলামী আন্দোলনকে এখন আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক বিপর্যয় ও অবক্ষয় প্রতিহত করে মানুষ ও মানবতাকে বাঁচাতে হবে। কারণ এযাবতকাল মানুষ তথাকথিত উদার ও আদর্শহীন রাজনীতিকে দেখেছে মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠস্বরূপ। এদের দ্বারা গুণগত-আদর্শিক উত্তরণ আসলেই সম্ভব নয়। এরা একে অপরের প্রকাশ্য শত্রু হলেও মূলগত বন্ধু। এখন প্রয়োজন সাচ্চা, পরীক্ষিত, আদর্শবাদী আন্দোলনের দিন। যারা সামনের কাতারে এসে নারীর লজ্জা মুছে দেবে। নারীকে প্রকাশ্যে বস্ত্রহীনতা থেকে রক্ষা করবে। আর কাউকে ইজ্জত-আব্রুর জন্য বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে দেবে না। যারা নিজের জীবন বাঁচানোর জন্যও আপস করেন না; তারা এবং তাদের অনুসারীরাই বিপন্ন নারী-পুরুষ-মানবতাকে বাঁচাতে পারবে। এই সত্য যত দ্রুত মানুষ উপলব্ধি করবে; তত দ্রুত বাংলাদেশের বিদ্যমান কালো অধ্যায় ও অন্ধকার কেটে যাবে।



__._,_.___

Posted by: Shahadat Hussaini <shahadathussaini@hotmail.com>


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___

[chottala.com] শ্রীমানদের কবলে শ্রীহীন বিশ্ব



শ্রীমানদের কবলে শ্রীহীন বিশ্ব

জয়নুল আবেদীন

২০ এপ্রিল ২০১৫,সোমবার, ০০:০০


৩১ মার্চ সিআইটি বিশ্বের শীর্ষ ১০ বিপজ্জনক দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকার শীর্ষে ইরাক। উত্থান-পতন হয় স্রষ্টার অমোঘ নিয়মে। হারুন-অর-রশীদ আব্বাসীয় খলিফাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং তৎকালীন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নরপতিদের অন্যতম। তার রাজত্বকালে বাগদাদ বিশ্বের জাঁকজমকপূর্ণ ও ঐশ্বর্যশালী নগরীতে পরিণত হয়েছিল। রূপকথার স্বপ্নপুরী বাগদাদের ঐশ্বর্য ও সৌন্দর্য বহু কবি-সাহিত্যিকের রচনার বিষয়বস্তু ছিল। ঐতিহাসিক পি কে হিট্টির ভাষায়, During the period of Harun-ar-Rashid Baghdad became a city with no peer throughout the whole world. 
৮০৯ (হারুন-অর-রশীদের মৃত্যু) থেকে ১২৫৩ সাল। আব্বাসীয় শেষ খলিফা আল-মুতাসিম বিল্লাহ আমির-মোসাহেব পরিবেষ্টিত হয়ে দেশ চালাতেন। তাদের পরামর্শে সারা দেশে ছদ্মবেশে ছড়িয়ে থাকত গুপ্তচর। পোষা হতো গুপ্তঘাতক। খলিফার বিরুদ্ধে সমালোচনাকারী হয়তো গুম, নয়তো লাশ হয়ে পড়ে থাকত। গুপ্তঘাতকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য খলিফার কাছে পত্র পাঠান মোঙ্গল নেতা হালাকু খান। খলিফা ঔদ্ধত্যপূর্ণভাবে পত্রের উত্তর পাঠান। পরিণামে হালাকু খান সপরিবারে খলিফাকে হত্যাসহ বাগদাদ ধ্বংস করেন। বাগদাদের ৫০০ বছরে আহরিত শিল্প ও সাহিত্য মাত্র পাঁচ দিনে ধ্বংসপ্রাপ্ত হলো। মোঙ্গলেরা ষোলো লাখ নর-নারী, বৃদ্ধ ও শিশুকে কেটে অথবা পিষে মেরেছিল। কথিত আছে, দজলায় বহু দূর পর্যন্ত পানির পরিবর্তে রক্তের স্রোত বয়ে গিয়েছিল।
১২৫৩ থেকে ২০০৩ সাল। তরল স্বর্ণের দেশ খেতাব পায় ইরাক। প্রাচ্যের একটি বড় শক্তি হিসেবে আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ইরাক। এ কারণে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল পড়ে হুমকির মুখে। গোয়েন্দা সূত্র আমেরিকাকে এই মর্মে অবগত করে যে, ইরাকে মারাত্মক ক্ষতিসাধনকারী রাসায়নিক অস্ত্রের গোপন কারখানা (WMD) রয়েছে। ইরাকরাজ অস্বীকার করা সত্ত্বেও শুরু হয় সম্মিলিত আক্রমণ। পরাশক্তির বোমারু বিমান ঝাঁকে ঝাঁকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাগদাদে। দীর্ঘ আট বছর ঝাঁঝরা করাসহ চিরুনি অনুসন্ধান চালিয়েও ইরাকে এ মারণাস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এতে ব্যর্থ হয়ে সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে আনা হয় রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ। সেই চির পরিচিত 'নেকড়ে ও মেষশাবক' নীতির আওতায় বিচার করে সাদ্দামের ফাঁসির দণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়। ইরাকযুদ্ধে দুই লক্ষাধিক মায়ের বুক খালি হওয়া ছাড়াও ব্যাপক ধ্বংসলীলা চলে বাগদাদে। বিশ্বমোড়লেরা গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ১২ বছরের মাথায় ইরাককে বিশ্বের ১০টি বিপজ্জনক দেশের শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ৫৫ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ে ১৯৪৮ সালে ঘোষিত হয় কৃত্রিম ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল। ইসরাইল রাষ্ট্রে হু হু করে বাড়তে থাকে ইহুদি। ১৯২২ থেকে ২০১৪ সাল ফিলিস্তিন এলাকায় মুসলমান সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ লাখ থেকে ১৭ লাখ। ১৯২৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসরাইলে ইহুদি সংখ্যা ৩৫ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৮০ লাখ। এ দিকে ফিলিস্তিনিদের শুরু হয় মানবেতর জীবন। অন্য দিকে ইসরাইল পরিণত হয় বিশ্বের ষষ্ঠ সামরিক শক্তিতে। বিশ্বমোড়লির দু'মুখো নীতির প্রতিবাদ করতেন পিএলও প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত। সামান্য পেটের পীড়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ভালো চিকিৎসার কথা বলে বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হয় ফ্রান্স। সেখানে হাসপাতালে স্ত্রীকেও কাছে থাকতে না দিয়ে ২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর আরাফাতের মৃত্যু ঘোষণা করা হয়। মৃত্যুর কারণ নিয়ে শুরু হয় ধূম্রজাল। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মতে, মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল নাÑ তাকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে।
শিশুদের ডাংগুলি খেলার মতো একধরনের খেলা থেকে আধুনিক ক্রিকেট। ১৫ শতকের আগেও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের কেন্ট, সাজেক্স ও সারে কাউন্ট্রিগুলোতে ক্রিকেট খেলার প্রচলন ছিল। ১৭ শতকে শ্রমিকেরা এটি খেলতে শুরু করে। রাজা প্রথম চার্লসের সময় অভিজাত শ্রেণী এ খেলার প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করেন। ক্রিকেট খেলার চেয়ে ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে জুয়া খেলা তাদের বেশি আকৃষ্ট করত। ক্রমে ক্রমে ক্রিকেটে প্রচুর বিনিয়োগ শুরু হয়। দক্ষিণ ইংল্যান্ডে এটি একটি জনপ্রিয় বিনোদনে পরিণত হয়ে যায়। এ সময় বড় বড় কাব এবং পেশাদার ক্রিকেট খেলোয়াড়ের আবির্ভাব ঘটে। ক্রিকেটের জন্ম ইউরোপের একটি দেশে হলেও ইউরোপ মহাদেশে এর প্রসার নেই। কারণ হিসেবে একটি গল্প প্রচলিত আছে। অফিসে আসা-যাওয়ার পথে এক মাঠে ভিড় দেখে হিটলার কারণ জানতে চান। উত্তরে জানতে পারেন, ক্রিকেট খেলা। বিকেলে অফিস থেকে ফেরার পথে, খেলার ফলাফল জানতে চান। উত্তরে জানতে পারেন, খেলা চলছে। প্রতিদিন আসা-যাওয়ার পথে একই প্রশ্ন, একই উত্তরের পর পঞ্চম দিন জানতে পারেন, ফলাফল ড্র। এ কথা শুনে হিটলার বলেন, 'খেলা বন্ধ করো, এ খেলা দেশকে কুঁড়ের রাজ্য বানিয়ে ফেলবে।'
ইউরোপ বন্ধ করে দিলেও খেলাটি ভীষণ জনপ্রিয়তাসহ শুরু হয়ে যায় বহির্বিশ্বে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে ১৯০৯ সালে গঠিত হয় 'ইম্পেরিয়েল ক্রিকেট কনফারেন্স' (ICC) নামে একটি সংগঠন। ১৯৬৩ সালে লিখিত গঠনতন্ত্রসহ গঠিত হয় 'ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল' (ICC)। এর পরিচালনা পর্ষদ টেস্ট খেলুড়ে ১০টি দেশ নিয়েÑ যার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে ওঈঈ-এর সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। কনিষ্ঠ হয়েও ক্রিকেট পাগল বাঙালি কয়েকটি গরিষ্ঠ দেশকে ধরাশায়ী করে ক্রিকেটবিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছে। দু'বার বিশ্বকাপজয়ী ইন্ডিয়া ২০০৭ সালে বাংলাদেশের কারণে কোয়ার্টার ফাইনালের মুখও দেখেনি। অনেক ভারতীয়র মতে, নেপাল, ভুটান ও সিকিমের মতো বাংলাদেশ পুঁচকে রাষ্ট্র এবং 'বাংলাদেশ' পাক-ভারত যুদ্ধের 'বাই প্রোডাক্ট'। শনৈঃশনৈ অগ্রগতি থেকে পাক-ভারত বাংলাদেশকে অনুজের দৃষ্টিতে না দেখে প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখতে শুরু করে। পুঁচকে প্রতিপক্ষ কুলে উঠে গেলে পাক-ভারতের জাত-কুল-মান পাংচার হয়ে পড়বে।
এই জাত-কুল-মান বাঁচাতে বিশ্বের কোটি কোটি চোখের সামনে স্পাইডার ক্যামেরা ছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একটি খেলা সম্পন্ন হলো। মানুষ মাত্রই ভুল-বিচ্যুতি হতে পারে। আম্পায়ারদের সূক্ষ্ম ভুল-চ্যুতি ধরার জন্যই ব্যবহার করা হয় স্পাইডার ক্যামেরা। থার্ড আম্পায়ার স্পাইডার ক্যামেরার সাহায্যে সঠিক বিষয়টি তুলে ধরেন। দর্শকেরা স্পাইডারের রিপ্লেতে চোখ রেখে থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের আগেই সঠিক বিষয়টি দেখতে পান। স্পাইডার না থাকার কারণে এক দিকে, সে দিনের খেলায় তর্কিত কোনো বিষয়ই রিপ্লেতে দেখানো হয়নি, অপর দিকে সংরক্ষিত হয়নি অপরাধের আলামতও। মুস্তফা কামাল (আইসিসির সভাপতি) এসব অনিয়মের সমালোচনা করেছেন। এ কারণে ফাইনালের আগের দিন আইসিসির সভায় কামালকে, হয়তো ক্ষমা চাইতে হবে নয়তো বিবৃতি প্রত্যাহার করতে হবেÑ না হলে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তার ঠাঁই হবে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়। 
'আইসিসির ৩.৩ (বি) ধারানুসারে সভাপতি ছাড়া ট্রফি দেয়ার অধিকার কারো নেই, এটা আইসিসির গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী' মর্মে প্রতিবাদ করার পর গঠনতন্ত্রের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ প্রদর্শন করে ভারতের নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন বলেন, 'দেখি কিভাবে আপনি ট্রফি প্রদান করেন।' কোটি কোটি মানুষ দেখেছে, ট্রফি দেয়া দূরের কথা, পুরস্কার বিতরণী মঞ্চেও তার ঠাঁই হয়নি। গঠনতন্ত্র অনুসারে ১০ সদস্যের অধিকাংশের সম্মতিতে আইসিসি পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও মূলত পরিচালিত হয় ইন্ডিয়ার ইশারায়। ১৯৬৩ সালে ঘরোয়া 'ইম্পেরিয়েল' শব্দটি 'ইন্টারন্যাশনাল' পরিচয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্বে। বিনোদনের দিক দিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল জনপ্রিয়তার শীর্ষে। শ্রীমানদের বিষাক্ত ছোবলে 'ইন্টারন্যাশনাল' শব্দটি 'ইন্ডিয়া' পরিচয়ে সঙ্কুচিত হয়ে জনধিক্কারে পৌঁছতে বেশি দিন সময় লাগবে না।
শৈশবে পাড়াগাঁয়ে কুস্তি খেলার প্রচলন ছিল। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা পর্যায় পর্যন্ত প্রতিযোগিতা চলত। আমাদের এলাকায় বিখ্যাত কুস্তি খেলোয়াড়ের নাম 'ফকিরা'। জাতে কৈবর্ত, পেশায় জেলে ও নেশায় কুস্তিখেলোয়াড়। রাতে ছন পাতার ঘরে মাদুর পেতে ঘুমায়। কুঁড়েবাসী ফকিরার কদর বেড়ে যায় বর্ষার শুরুতে। ঢাকা বনাম ত্রিপুরা (বর্তমান কুমিল্লা) খেলা হলে আমরা অপেক্ষায় থাকতাম, কখন ফকিরা নামবে। ফকিরার হার-জিতের সাথে জড়িত ছিল আমাদের জেলার মানসম্মান। খেলা শুরু হলেই হিন্দু-মুসলিম এক। জয়ের জন্য হিন্দু মন্দিরে, মুসলমান মসজিদে প্রার্থনা করে। শুধু প্রার্থনা নয়, নিগ্রোর মতো কালো ফকিরাকে একনজর দেখার জন্য মানুষ উন্মুখ হয়ে পড়ত। 
খেলোয়াড়দের স্থান-কাল-পাত্র নেইÑ নেই বর্ণ, গোত্র ও ধর্ম। খেলোয়াড় শুধুই খেলোয়াড়। তাই বিশ্বজুড়ে 'ম্যারাডোনা' নাম রয়েছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের। বিশ্বকাপের শুরুতেই পছন্দের পতাকায় পতাকায় আকাশ ঢেকে যায়। খেলোয়াড় শুধুই খেলোয়াড় বলে, এ দেশে সাকিব আল হাসানের ভক্তের চেয়ে শচীন, গাঙ্গুলীর ভক্ত কম নয়। 
নকলের জোয়ার শুরু হলে শিক্ষার্থীর সাধনায় যে কারণে ভাটা পড়তে শুরু করে, সে কারণে খেলার ফলাফলে হস্তক্ষেপ শুরু হলে খেলোয়াড়দের সাধনায় ভাটা পড়ে যায়। সাধনাহীন খেলোয়াড়ের খেলা দর্শক দেখে না। খেলা না দেখলে বিজ্ঞাপন কমে যাবে। বিজ্ঞাপন কমে গেলে মরুপথের নদীর মতো একদিন আইসিসিও হারিয়ে যাবে। এখন ঘোর কলিকাল, অন্যায়কারী সিঁড়ি পায় স্বর্গেরÑ প্রতিবাদকারী ছিটকে পড়ে গর্তে। শ্রীমানদের কবলে শ্রীহীন বিশ্ব ইতিহাস হয়ে থাকবে। 
মাথায় যখন পচন ধরে, চিকিৎসক তখন জবাব দেন। চিকিৎসক যখন জবাব দেন, তখন বিধিমোতাবেক সবাই সৎকারের চিন্তা শুরু করেÑ বিশ্ব ভিআইপিদের মাথার পচন নিরাময়ের সাধ্যাতীত। ভুলক্রমে রাজা দশরথের তলের কাপড় পড়ে থাকতে দেখে সভাসদ ইচ্ছে করে তলের কাপড় ফেলে রেখে ছিলেন। বিশ্ব ভিআইপিরা ইচ্ছে করে তলের কাপড় ফেলে রাখলেÑ সভাসদ জন্মদিনের পোশাক পরতে শুরু করলেও বারণ করার কেউ থাকবে না। হজরত মুহাম্মাদ সা: নিজে মিষ্টি খাওয়া বন্ধ রেখে অন্যকে মিষ্টি খেতে বারণ করেছিলেন। 
লেখক : আইনজীবী

- See more at: http://dev.dailynayadiganta.com/detail/news/16583#sthash.mrDW5YO9.dpuf


__._,_.___

Posted by: Shahadat Hussaini <shahadathussaini@hotmail.com>


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___