From: Zoglul Husain (zoglul@hotmail.co.uk)
মোকাব্বিরকে 'গেট আউট' বলে বের করে দিলেন ড. কামাল, Sheershakagoj24, ৪ এপ্রিল, ২০১৯
[সুলতান মনসুরের মতই মোকাব্বির খান দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এর দু'দিন পর আজ ৪ এপ্রিল ২০১৯ মোকাব্বির খান কামাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে গেলে কামাল হোসেন চরম রাগান্বিত হয়ে বলেন, আপনি এখান থেকে বেরিয়ে যান, গেট আউট, গেট আউট। আমার অফিস ও চেম্বার আপনার জন্য চিরতরে বন্ধ। ফলে তিনি বেরিয়ে যান। সুলতান মনসুর ও মকাব্বির খানকে বিরোধীরা মীরজাফর খেতাব দিয়েছেন। কিন্তু, কামাল হোসেন যে সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা "বঙ্গবন্ধু" নাম আওড়ান এবং জিয়ার নাম করেন না, তার কি? এ নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে। হাসিনার পক্ষ হয়ে কিছু আওয়ামী নেতা ও কর্মকর্তা কামাল হোসেনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলে রিপোর্ট বেরিয়েছে। এ নিয়েও বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে। নীচের রিপোর্টটি দেখুনঃ]
বঙ্গবন্ধু প্রশ্নে একাট্টা কামাল, ক্ষোভে ফুঁসছে বিএনপি
তাকে নেতা বানানোই ছিল বড় ভুলঃ হাফিজ
দৈনিক সময়ের আলো
২ এপ্রিল, ২০১৯জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকেই ফ্রন্টপ্রধান ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে কানাঘুষা ছিল বিএনপির একটি বড় অংশের। বিশেষ করে কথায় কথায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গুণকীর্তন করা, জিয়াউর রহমান এমনকি খালেদা জিয়ার নাম উচ্চারণ না করা। এসব নিয়ে চাপা ক্ষোভ এখন ফুঁসে উঠছে বিএনপি নেতাদের মধ্যে। ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে থাকা বিএনপি তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক মানে। কিন্তু প্রকাশ্যে না বললেও সেটি মানতে চান না বঙ্গবন্ধুর এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সহচর কামাল হোসেন। এমনকি তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও সরাসরি কিছু বলতে চান না। আর ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ পদে থেকে কামাল হোসেনের এসব বিরুদ্ধাচরণ বিএনপিকে কুরে কুরে খাচ্ছে, যা ইদানীং প্রকাশ্য হচ্ছে। বিএনপি নেতারা এখন প্রকাশ্যে কামাল হোসেনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছেন।
বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সময়ের আলোকে জানান, অন্য দলের কাউকে বিএনপি সহ্য করবে কোন লাভে? সহ্য করে ফায়দা পেয়েছে দলটি। ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না ও আ স ম আবদুর রবকে মানতে পারলেও এখন কামাল হোসেনকে আর মানতে পারছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের আগে যেক'টি দাবি ও উদ্দেশ্য নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়, তার প্রথম ও প্রধান দাবিই ছিল কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি। কিন্তু ফ্রন্টের প্রধান হয়ে কোনো বক্তব্যেই কামাল হোসেন দাবিটি জোরালো করেননি। এমনকি তাকে জোর করে দুয়েকটা বক্তৃতায় বলানো হয়েছে। বিষয়টি শুরু থেকে বেমানান থাকায় এ পর্যায়ে এসে সহ্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। এখন ঐক্যফ্রন্টের যৌক্তিকতা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।
রোববার রাজধানীর প্রেসক্লাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আলোচনা সভায় স্বাধীনতার ঘোষক প্রশ্নে কামাল হোসেনের বক্তব্যে শোরগোল করে বিএনপি। এক পর্যায়ে হট্টগোল সৃষ্টি হলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তা থামিয়ে দেন। তবুও বিএনপির চাপের মুখে নতিস্বীকার করেননি ড. কামাল হোসেন। উপরন্তু গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু তাকে কিছু একটা বলার জন্য কানে কানে পরামর্শ দিতে গিয়ে উল্টো ধমক খান। ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়ক মন্টুকে কামাল হোসেন বলেন, 'কোনো কিছু বলব না আমি। যা বলেছি এটুকুই বলব। আমি কিছুই বলব না। আমাকে আপনারা কানে কানে কোনো কিছু বলার চেষ্টা করছেন।' 'মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘোষণা কর' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়ার প্রকাশ্যে এমন ঘটনা ঘটে।
এর আগে কামাল হোসেনের বক্তব্য চলাকালে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলতে চিৎকার করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা স্লোগান দেন, 'স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া লও লও লও সালাম।' স্লোগানের সময় কামাল হোসেন বক্তব্য থামিয়ে মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় দর্শক সারির প্রথম লাইন থেকে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলতে এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করেন এক নেতা। এ কথা বলতে হবে। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই নেতাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেন। তবে এরপরও কয়েক সেকেন্ড স্লোগান চলে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, 'প্রেসক্লাবে ওইদিনের আলোচনা সভায় আমি ছিলাম। আসলে আমি ঠিক জানি না, কামাল হোসেন কী বলেছেন। কোন নেতাকর্মীরা হট্টগোল করেছেন। নেতাকর্মীদের চাপের মুখে ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিএনপি শিগগিরই বেরিয়ে আসবে কি না জানেন না দলের এই নীতিনীর্ধারক।
তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহম্মেদ সময়ের আলোকে বলেন, 'ড. কামাল হোসেনকে নেতা বানানোই ছিল বিএনপির বড় ভুল। বিএনপির অনেক দুর্বলতা রয়েছে। যিনি জিয়াউর রহমানকে স্বীকার ও খালেদা জিয়ার মুক্তি চান না তার নেতৃত্বে কোনো ঐক্য পরিচালিত হলে, তা নেতাকর্মীরা স্বাভাবিকভাবেই মানবেন না। এক মাস হোক কিংবা ছয় মাস পরে হোক ঐক্যফ্রন্ট ভেঙে দিতে হবে। খুব দ্রুত বিএনপিকে বেরিয়ে আসতে হবে।'
তিনি বলেন, 'জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, যারা ভোটের রাজনীতি কখনও করেননি তারা এখন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ন্তারূপে কথাবার্তা বলছেন। বিএনপির মতো বড় দল যে তাদের দ্বারস্থ হয়েছে এটি তো ভুল।'
মেজর হাফিজ বলেন, 'বিএনপির একা পথ চলাই ভালো বলে আমি মনে করি। বিএনপি যথেষ্ট শক্তিশালী দল। আমাদের কোনো জোটেরও প্রয়োজন নেই। আমাদেরও ভুল-ভ্রান্তি থাকতে পারে। সেটি নিয়ে আত্মসমালোচনা করে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।'
ওই সভায় কামাল হোসেন বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। জাদুঘরে গিয়ে দেখেন, বঙ্গবন্ধু যে জাতির পিতা, উনার নেতৃত্বে যে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই মর্যাদা নিয়ে উনি এখনও আছেন এবং থাকবেন। উনাকে নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না।'
__._,_.___