Banner Advertise

Friday, September 27, 2013

[chottala.com] রক্ত হাতে জামায়াত - পলিটিক্যাল ইসলাম : দ্য ড্রামা



Logo_print
 

রক্ত হাতে জামায়াত
-
শুভ কিবরিয়া


বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াত কখনো জনগণের আকাক্সক্ষার সঙ্গে থাকতে পারেনি। ১৯৭১ সালে ইসলামি রাজনীতির নামে বাংলাদেশের জন্মের বিরোধিতা করেছে। দেশের সংগ্রামী মানুষের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী হিসেবে দেশের জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তার পরও মার্কিন রণনীতির আওতায়, বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক দলগুলোর নীতিহীনতায়, সামরিক শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় জামায়াত রাজনীতিতে তাদের নয়াশিকড় গেড়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় তারা সহিংস প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জনআস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই প্রতিকূলতার মধ্যেও জনবল, অস্ত্রবল, অর্থবলে নীতিহীন শাসকশ্রেণী এবং আমলাতন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা এককভাবে হরতালের মতো কর্মসূচি দিয়ে, চোরাগোপ্তা হামলা করে তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব এবং পেশীশক্তির প্রমাণ সুস্পষ্ট করেছে। রক্তমাখা পথেই এগিয়েছে। প্রাণ দিয়েছে, প্রাণ নিয়েছে। সামনের দিনের উদ্বেগাকুল অনিশ্চয়তাময় রাজনীতিতে জামায়াতের এই রক্তাক্ত রণনীতি কোন পথে যাবে তার বিশ্লেষণ করেছেন শুভ কিবরিয়া

দুর্দিনে টিকে থাকার লড়াই সুদিনের বিপ্লবের সমান। জামায়াত বর্তমানে এই নীতিতে চলছে। তবে রণকৌশল হিসেবে তার অস্তিত্ব ও শক্তির প্রমাণ রাখতে মরিয়া তারা। মাঝে মাঝে হরতাল ডাকা, দেশব্যাপী সহিংসতা চালানো, পুলিশের ওপর আক্রমণ সেই কৌশলের অংশ।
জামায়াতের রাজনৈতিক অস্তিত্ব প্রকাশ্য না থাকলে তার অর্থনৈতিক সম্পদ সুরক্ষা করা কঠিন। কাজেই একই সঙ্গে জামায়াতকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে লড়াই করতে হচ্ছে। এ জন্য অনুকূল পরিস্থিতির অপেক্ষায় থেকে প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য জামায়াত প্রাণপণে সহিংসতার ওপর নির্ভর করছে। আঘাতের বদলে পাল্টা আঘাত, এমনকি কখনো কখনো আঘাত করে প্রতিপক্ষকে দুর্বল করার নীতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে জামায়াতের সব রকম আপস চেষ্টা অদৃশ্য শক্তির ইশারায় ভেস্তে যাচ্ছে। মহাজোট সরকারের প্রথম থেকেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুকে কেন্দ্র করে জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার গুঞ্জন উঠেছে, তখনই আচমকা এমন কিছু ঘটেছে, যার ফলে পুরো প্রক্রিয়া ভেস্তে গেছে। জামায়াত নেতৃত্ব জানে এই সমঝোতা কারা চাইছে না। জামায়াত এখন নিশ্চিত করেই জানে যে, সরকারের সঙ্গে তাদের সমঝোতা হচ্ছে না। রণকৌশলও বদলে ফেলেছে জামায়াত। তারা আপসের পথে না হেঁটে লড়াইয়ের পথে হাঁটতে চাইছে। শেখ হাসিনার সরকারের শাসনামলের এ সময় পর্যন্ত জামায়াত-শিবির যে রাজনৈতিক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে, আক্রমণ ঠেকিয়ে রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বন করে মাঠে আছে, সেই কৌশল অচিরেই তারা বদলে ফেলবে। আগামী ২৫ অক্টোবর ২০১৩, দুই বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে যদি সমঝোতা না হয়, রাজনীতির মীমাংসা যদি রাজপথে করতে হয়, জামায়াত সে সুযোগকে সর্বান্তঃকরণে কাজে লাগাবে। তখন জামায়াত যা করতে চাইবেÑ
এক. মাঠের আন্দোলন যাতে সর্বোচ্চ সহিংস হয়ে ওঠে তারা সে চেষ্টা চালাবে। ১৮ দলীয় জোটের ব্যানারে ডাকা হরতাল, অবরোধ, কর্মসূচি যাতে সহিংস হয়ে ওঠে তার জন্য তারা মাঠ থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত বিশেষ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে।
দুই. ঢাকাকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য মহাসড়কগুলোর নির্দিষ্ট স্থানে ব্যারিকেড দেবে। সেই ব্যারিকেড ভাঙতে চাইলে সেখানে সশস্ত্র আক্রমণ নীতিতে চলবে জামায়াত। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন যাতে ভীত হয়, সে কারণে পুলিশ তাদের বিশেষ টার্গেটে থাকবে।
তিন. ২৫ অক্টোবরের পর থেকে দেশের আমলাতন্ত্রের মধ্যে সরকারবিরোধী অংশকে সক্রিয় করে তুলবে জামায়াত। প্রশাসন শিথিলকরণ সফল হলে, সেই সুযোগে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয় এরকম বড় ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটবে। এর অন্তরালে থাকবে জামায়াত। ট্রেনে আগুন, ট্রেন লাইন উপড়ে ফেলা, রাস্তায় গাছ কেটে ব্যারিকেড, হাতবোমা নিক্ষেপ, হঠাৎ ঝটিকা আক্রমণ, এমনকি বহু মানুষ জমা হয় এরকম বাজার-শপিংমল-রেস্টুরেন্টে হামলা হতে পারে।
চার. সহিংসতা উস্কে দিতে পারলে, মানুষকে ভীতি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিতে পারলে, টার্গেট কিলিং মিশন সক্রিয় হয়ে উঠবে জামায়াতের। আওয়ামী লীগ বা মহাজোটের যেসব ক্যাডার, রাজনৈতিক মস্তান কিংবা ঝড়ো কথা বলা নেতা তাদের পেশীশক্তির উৎস সে রকম দু'একজনের ওপর হামলা করে স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগকে দুর্বল করার নীতি নেবে জামায়াত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-মস্তানি ও নেতিবাচক কাজের মূল শক্তি, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক তাকিমের ওপর হামলা করে তাকে পঙ্গু ও জীবনমৃত করার নীতি স্থানীয়ভাবে শক্তিনির্ভর রাজনীতিতে শিবিরের জন্য যে সুফল এনেছে, সেই মডেল সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যাবে।
পাঁচ. দেশে যদি জরুরি অবস্থা জারি হয়, সেনাশাসন আসে যেটা জামায়াতকে বিশেষ সুবিধা দেবে। অতীতে সবসময় সেনাশাসন জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে লাভবান করেছে। এমনকি ১/১১-এর সময়ে যখন শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া কারাগারে, তখন জামায়াত নেতারা বিশেষ সুবিধা ভোগ করেছে। জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতা নিজামী এবং মুজাহিদ প্লট বরাদ্দ পেয়েছে, এমনকি ১/১১ সময়ে তাদের প্লটে বহুতল ভবন উঠেছে। এখনও যা অক্ষত আছে।
জরুরি শাসন যাতে আসে এরকম পরিস্থিতি আনতে চেষ্টা করবে জামায়াত। কেননা, অচিরেই মাঠের রাজনীতিতে, ভোটের রাজনীতিতে তাদের সুবিধে পাবার সুযোগ নেই। স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বন্ধ থাকলে, সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের গুছিয়ে নিতে চাইবে তারা। নিজেদের আর্থিক সম্পদ ব্যবহার করে জরুরি শাসন বা সেনাশাসন যারা চালাবেন সেই প্রশাসন যন্ত্রকে নিজেদের পক্ষে এনে বিশেষ সুবিধা নিতে চাইবে জামায়াত।
ছয়. রাজনৈতিকভাবে সংঘবদ্ধ জামায়াতের যে বিপুল আর্থিক শক্তি গড়ে উঠেছে, তার সুফল এখন এই বৈরী অবস্থায় কাছে লেগেছে। থানা, পুলিশ, আদালত, বিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তিকে নগদ টাকা দিয়ে অনেক সুবিধে ভেতরে ভেতরে নিয়েছে জামায়াত। তাই, তাদের আর্থিক শক্তি যাতে অক্ষুণœ থাকে সেজন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাবে তারা। রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ মিললেই, অস্থিতিশীলতাকে আরও নাজুক করার চেষ্টা চালাবে জামায়াত। নানা সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য স্থানীয়ভাবে দেশের সন্ত্রাসী ও আন্ডারওয়ার্ল্ডের একটা বড় অংশকে টাকার বিনিময়ে জামায়াত কাজে লাগাবে।
সাত. রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলতা ও সহিংসতা কোনো গ্রামার মেনে চলে না। তবে, সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলতা চলতে থাকলে রাজনৈতিকভাবে প্রাণিত ক্যাডারভিত্তিক নির্দিষ্ট আদর্শ বাস্তবায়ন আকাক্সক্ষী দলগুলো এই সুযোগে সুশৃঙ্খলভাবে তাদের টার্গেটে আঘাত করে। ২৫ অক্টোবরের পরে বাংলাদেশের দুই বড় রাজনৈতিক দল যদি সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে, সে সহিংসতা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। বিভিন্ন মহল তার সুবিধা নিতে চাইবে। বিশৃঙ্খলতাকে ব্যবহার করে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের জন্য জামায়াত সচেষ্ট হয়ে উঠবে। পরিস্থিতি এরকম ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকলে জেলখানা বিদ্রোহ দেখা দিতে পারে। জেলখানায় আক্রমণ হতে পারে। দেশের কেপিআই বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় হামলা হতে পারে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে হামলা হতে পারে। জামায়াত সেই রক্তমাখা রাজনীতির পথকেই তাদের মুক্তির পথ হিসেবে দেখতে চাইবে।

পলিটিক্যাল ইসলাম : দ্য ড্রামা
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল কোর্টে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচার হচ্ছে, দণ্ড দেয়া হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রে আল্লাহর শাসন কায়েমে রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবার আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করছে। গণতান্ত্রিক রাজনীতির ফর্মেটে তারা আল্লাহর আইন কায়েম করতে চায়। জামায়াতের এ রাজনীতি বিশ্বব্যাপী 'পলিটিক্যাল ইসলামের' চেহারায় পরিচিত। মিসরে ব্রাদারহুড, তিউনিশিয়ায় ইসলামপন্থি ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনে জিতে যে প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রক্ষমতায় গেছে, জামায়াত সে ধরনের রাজনীতিই করে। উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে পলিটিক্যাল ইসলামের যে নয়া জাগরণ ঘটেছে বিশেষত মিসর, লিবিয়া, ইরাক, সিরিয়া, তিউনিশিয়া, মরক্কো, মালি, সোমালিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নাইজেরিয়াসহ পৃথিবীর নানা কোণে তার প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা গণতন্ত্র কি ভূমিকা রাখছে, সেটা বিবেচনায় নিতে হবে।
পলিটিক্যাল ইসলাম বনাম পশ্চিমা গণতন্ত্র এখন এক ধরনের মুখোমুখি লড়াইয়ে রত। মিসরে সেনা ক্যু ঘটিয়ে প্রেসিডেন্ট মুরসিকে পতন ঘটাতে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো প্রকাশ্য ও গোপন সমর্থন যুগিয়েছে। এই প্রক্রিয়ার একটা রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও আছে। গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এখন এক ধরনের অস্ত্রনির্ভর সংগ্রামে রূপ নিয়েছে। এর পরিণাম কি তা অজানা। তবে, আপাতত দৃষ্টিতে সর্বত্রই সহিংসতা, সশস্ত্র লড়াই জারি রয়েছে। ফলে, রাষ্ট্রগুলো কার্যকরভাবে কাজ করছে না। পলিটিক্যাল ইসলাম যেখানে সক্রিয় সেই রাষ্ট্রগুলো কখনো ব্যর্থ রাষ্ট্র, কখনো রেজিমেন্টেড রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। ইরান তার বড় উদাহরণ। ইউরোপের বুকে তুরস্ক তার সুনির্দিষ্ট উদাহরণ। কাজেই এক মানুষ এক ভোটে, ভোট কেনাবেচার গণতন্ত্র বনাম 'আল্লাহর শাসন চাই' রাজনীতির লড়াই এখন তুঙ্গে। লক্ষণীয়, ইসলামি ব্রাদারহুডের আদলে সারা পৃথিবীতে যেসব রাজনৈতিক দল সংগ্রাম করছে, তাদের বেড়ে ওঠা কিন্তু ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদী প্রক্রিয়ার অন্তরালে। মিসরে পশ্চিমা সমর্থক ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার দ্বারা পুষ্ট স্বৈরশাসকদের আমলে সেখানে বিকশিত হয়েছে 'পলিটিক্যাল ইসলাম'। এই প্রবণতা খুব লক্ষ্য করার মতো বিষয়। 'পলিটিক্যাল ইসলাম' ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদকে পুষ্ট করে ইসলামি সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। তারা পশ্চিমা আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেয় নাই। পশ্চিমা বিদেশি তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর সম্পদ লুণ্ঠনের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সশস্ত্র অবস্থান নেয় নাই, দু'একটা ব্যতিক্রম বাদ দিলে। বাংলাদেশেও জামায়াত পশ্চিমা তেল গ্যাস কোম্পানির তেল গ্যাস লুণ্ঠনের প্রশ্নে কোনো প্রকাশ্য রাজনৈতিক প্রতিরোধের কর্মসূচি নেয় নাই। ফুলবাড়ীতে এশিয়া এনার্জির উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি তৈরির লড়াইয়ে জামায়াতের কোনো পরিষ্কার অবস্থান দেখা যায় নাই। সেদিক থেকে, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে পলিটিক্যাল ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কাতারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দাঁড়িয়ে আছে। পৃথিবীর কাছে জামায়াতের পরিচিতিও তাই। সে কারণেই ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াত নেতাদের বিচারকে পশ্চিমা গণমাধ্যম ইসলামি নেতাদের দণ্ড হিসেবে দেখাতে চায়।
পলিটিক্যাল ইসলামের আন্তর্জাতিক ভবিষ্যতের সঙ্গে জামায়াতের ভবিষ্যৎও জড়িত। জামায়াত পলিটিক্যাল ইসলামের অতীত থেকে তাই শিক্ষা নিতে চায়। মিসরে ইসলামি ব্রাদারহুড নেতারা অতীতে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের মধ্য থেকেও যে রাজনৈতিক বিকাশের সুযোগ বেছে নিয়েছে, জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্ব সেই রক্তমাখা পথেই এগুতে চাইবে।

ভারত : মিত্র ও শত্রুর ছায়া
বাংলাদেশে পলিটিক্যাল ইসলামের উত্থান ভারতকে রাজনৈতিক, ভৌগোলিক, সামরিক, সাংস্কৃতিকভাবে চিন্তিত করে। ভারতে সামরিক ও বেসামরিক থিঙ্কট্যাংক বাংলাদেশে জামায়াতের উত্থান-পতনের বিষয়ে চিন্তিত। ইতিপূর্বে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং জামায়াতের উত্থান  সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছিলেন তারই প্রতিধ্বনি দেখা যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদের মন্তব্যে। সম্প্রতি জামায়াত নেতাদের দণ্ড সম্পর্কে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবর উদ্দিন বিবিসি রেডিওকে জানান, 'যদিও এটা বাংলাদেশের মানুষের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ ব্যাপারে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন, তারপরেও আমরা মনে করি এখন যাদের বিচার চলছে তারা ১৯৭১-এ যে নৃশংস অপরাধ করেছিলেন তার বিচার চাওয়ার অধিকার বাংলাদেশের থাকবেই।'
দেশ হিসেবে পাকিস্তান, তুরস্ক, মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ বিচার নিয়ে প্রশ্ন তুললেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিষ্কারভাবে তাদের অবস্থান তুলে ধরে মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেছেন, 'বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপরে আমাদের আস্থা আছে এবং আমাদের বিশ্বাস এই বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ ন্যায়বিচার পাবেন।'
সুতরাং এটা পরিষ্কার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান, তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশ এমনকি আমেরিকা, ব্রিটেনের নানা মহলের সুদৃষ্টি পেলেও যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রশ্নে ভারতীয় শাসক দল এবং শাসকতন্ত্রের আস্থা পায়নি। জামায়াত তাই, ভবিষ্যতে ভারতবিরোধিতার রাজনৈতিক কার্ড ব্যবহারে অধিকমাত্রায় আগ্রহী। সামনের নির্বাচনে এ বিষয়ে জামায়াত বিশেষ মনোযোগী হবে। জামায়াতের নতুন নেতৃত্ব ভারতবিরোধিতাকে, ভারতে মৌলবাদী দল বিজেপির রাজনৈতিক উত্থানকে এমনকি ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমান নির্যাতন প্রশ্নে নতুন নতুন কৌশল নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির পানি ঘোলা করার চেষ্টা করবে। শেখ হাসিনার মহাজোট সরকারের শাসনামলে তা প্রভাব না ফেললেও সামনে ভোটের রাজনীতিতে তা বড় হয়ে উঠতে পারে।

নয়া নেতৃত্বের হাতে জামায়াত
যুদ্ধাপরাধের অপরাধে দণ্ডিত, অভিযুক্ত বয়স্ক নেতাদের অপসারণ করে জামায়াতের নেতৃত্বে আসছে ১৯৭১ পরবর্তী জেনারেশন, ইসলামি ছাত্রশিবিরের সংগঠনে বেড়ে ওঠা নেতাকর্মীরা। বর্তমানে তারাই নেতৃত্ব দিচ্ছে। ভবিষ্যৎ নেতৃত্বও তাদের হাতে। এরা অধিকতর র‌্যাডিক্যাল কিন্তু চিন্তা ও বেশভূষায় পশ্চিমাপন্থি। ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের মতো পশ্চিমা শিক্ষা ও জীবনধারার অনুসারী এই নয়া নেতৃত্ব ইসলামি ব্রাদারহুডের আদলে সংগ্রামে আগ্রহী। জামায়াতের মাথার ওপর থেকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ সরে গেলে তারা নতুনভাবে জামায়াতকে সামনে আনবে। রাজনৈতিকভাবে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে, অন্য নামে তারা সামনে আসবে। এদের একটা অংশ সামরিক কৌশলকে প্রাধান্য দেবে। একটা অংশ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠাকে প্রাধান্য দেবে। সামনে থাকা নেতৃত্ব এ দুয়ের সমন্বয় করে এক ধরনের সশস্ত্র বিপ্লবের সুযোগ খুঁজবে গণতান্ত্রিক সমাজে মিশে থেকে। তুরস্ক ও মিসর যাদের মডেল হবে। কাজেই সামনে যদি বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক রাজনীতি ফিরে না আসে, তবে জামায়াত সেই বিশৃঙ্খলাকে ব্যবহার করবে। নির্বাচন হলে, ছলে বলে কৌশলে তারা অংশ নেবে বিএনপির কাঁধে ভর করে।


http://www.shaptahik.com/v2/print_publication/index.php?DetailsId=8565
http://www.shaptahik.com/v2/?DetailsId=8565




__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___