Hope that you are fine.
বাংলাদেশের অর্থনীতি কোন্ পথে
লেখক: প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী | শনি, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১১, ৯ আশ্বিন ১৪১৮
বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতির অবস্থা ভাল ও মন্দের মিশেলে অবস্থান করছে। অর্থনীতির ইতিবাচক গতিপ্রবাহ গত দু'বছর নয় মাসে ঘটলেও কখনো কখনো দমকা হাওয়ার মত এলোমেলো ঝড়ো বাতাসে তা পর্যদুস্ত হয়ে পড়েছে। শেয়ার বাজারের সমস্যা এখনো সমাধান করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। অবশ্য দ্রুত সমাধান না করা গেলেও কিছু কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তবে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত যারা যেমন বাজার ব্যবস্থা পর্যালোচনা না করে বিনিয়োগ করেছেন, পেনশনের সর্বস্ব শেয়ার বাজারে খাটিয়েছেন কিংবা মা বা স্ত্রীর গয়না এনে, জমি বিক্রি করে বিনিয়োগ করে চড়া দরে শেয়ার কিনে পথে বসেছেন তারা আসলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। শেয়ার বাজার কেলেংকারির পূর্বে কিন্তু কেউ তেমনভাবে মিডিয়াতে সাধারণভাবে লিখিত বা মৌখিকভাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করেনি। বরং প্রশংসার বন্যায় ভেসে গেছে। অর্থমন্ত্রী সে সময়ে আত্মতৃপ্ত হয়ে মন্তব্য করেছেন তার নির্দেশনার কারণেই এই অবস্থা। আমাদের পুঁজিবাজার মূলত শেয়ার ভিত্তিক। বন্ড মার্কেট এখনো গড়ে উঠেনি। এমনকি ফাইন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস মার্কেটও গড়ে ওঠেনি। ফলে বহুমুখী বিনিয়োগ সুবিধা না থাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হুমকীর সম্মুখীন হচ্ছেন। আবার শেয়ার মার্কেটে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সরকারি শেয়ার ও ভাল কোম্পানীর শেয়ারসমূহ আসছে না। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অনেকেই তাদের অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় বাড়ায় কিংবা আয় বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতে গেছে। এমনকি যে সমস্ত প্রাইস সেনসিটিভ ইনফরমেশন আছে সেগুলোও ঠিকমত পর্যালোচনা করে দেখেনি। এদের এই যে ভুল, তার জন্য এককভাবে সরকারকে দায়ী করা যায় না। কিন্তু যারা সত্যি সত্যি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে পরিত্রাণের উপায় দেখানোর দায়িত্ব সরকারের উপরেই বর্তায়।
ব্যাংকিং সেক্টরের অবস্থাও যে খুব সুখকর তা কিন্তু নয়। দেশে সার্বিকভাবে ব্যাংকিং সেক্টরের ভিত্তি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। ক্রমাগত ভুল সিদ্ধান্ত এবং অতিরিক্ত মুনাফা প্রবণতা কিছু কিছু ব্যাংককে সমস্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এদেরকে সতর্ক করে সঠিকভাবে পরিচালনা করার দিক-নির্দেশনা যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর বর্তায় তবে তারা সেক্ষেত্রে সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছে বলা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি-নির্ধারক পর্যায়ে অভিজ্ঞ বাণিজ্যিক ব্যাংকার ও সামষ্টিক অর্থনীতিবিদ নেই। হ্যাঁ অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও ভাল হয়েছে। যেমন মোট দেশজ উত্পাদনের প্রবৃদ্ধির হার হচ্ছে ৬.৭%। আবার সরকার চেষ্টা করেছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে। নারীর ক্ষমতায়ন করতে। একই সাথে গত প্রায় দু'বছর নয় মাসে গণতান্ত্রিক চর্চার প্রয়াস থাকায় ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও স্বস্তির সাথে ব্যবসা করতে পারছে। এদিকে অটিজম নিয়ে সম্মেলন করা হলো। এটি একটি ভাল উদ্যোগ। যে পরিবারে প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়ে আছে, কেবল তারাই সমস্যাটির প্রকৃতি অনুধাবন করতে পারে। প্রতিবন্ধীরাও মানুষ, তাদেরকে সুন্দর জীবনে ফিরিয়ে আনা আমাদের নৈতিক কর্তব্য।
ভারত বৃহত্তর প্রতিবেশী দেশ। সে দেশের সাথে অবশ্যই সুসম্পর্ক রাখতে পারলে আমাদেরই লাভ। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের অবদান ভোলার নয়। কিন্তু বর্তমান তরুণ প্রজন্ম চায় বন্ধুত্ব যাতে সমানে সমানে হয় অর্থাত্ উইন-উইন সিচুয়েশন বিরাজ করে। একপক্ষ কেবলি দিয়ে যাবে, অন্যপক্ষ নিয়ে যাবে তা নয়। এমন কি পেরোটো ওপটিমালিটির বাস্তবায়নও করা সম্ভব নয় অর্থাত্ দু'পক্ষের মধ্যে ট্রানজেকশন হলে একপক্ষ লাভবান হবে অন্যপক্ষ অন্তত ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এই যে সমস্যা এর থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করার দায়িত্ব দু'পক্ষের সরকারের মধ্যেই কেবল পড়ে না বরং ব্যবসায়ী-আমলা এবং জনসাধারণের মানস গঠনে মধ্যে পড়ে। দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার হলে যেন দু'পক্ষই লাভবান হয় তা বুঝতে হবে। ভারত বৈরিতা কিংবা পূজা নয়, বরং আমরা ক্ষুদ্র রাষ্ট্র হলেও সমঅধিকার ভিত্তিক কিংবা ন্যূনতম পক্ষে কিছুটা লাভবান হতে পারি তা কিন্তু সুনিশ্চিত করা দরকার। বর্তমানে ইন্টারনেটের জগতে এবং অবাধ তথ্য প্রবাহের জগতে সত্য সাময়িকভাবে ধামাচাপা দেখা যায় কিন্তু পুরোপুরি দেয়া যায় না। অবশ্যই সোনিয়া গান্ধীর বাংলাদেশ সফর এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মনমোহন সিং-এর বাংলাদেশ সফর শুভ সূচনা হতে পারে। কিন্তু এ সূচনাকে অনেক দূর এগিয়ে নিতে হবে। অবশ্যই ভারতের বিরুদ্ধাচরণকারী তাদের যে সমস্ত সন্ত্রাসী বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে তাদের ফিরিয়ে দেয়া যে বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব। ঠিক তেমনি আমাদের দেশের যে সমস্ত সন্ত্রাসী ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে তাদেরকে ফেরত দেয়া এবং সেখান থেকে বাংলাদেশে অবাধে সন্ত্রাস কার্যক্রম পরিচালনা করতে যাতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। এ কারণেই মন-মানসিকতার পরিবর্তন আবশ্যক। আমাদের দেশে ৪৬টি পণ্য ভারতে শূন্য শুল্কে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা যেভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন-আসলে এটা ঠিক নয়।
এদিকে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে যে ধরনের সমস্যার উদ্রেক হয়েছে, তা আসলে হোম ওয়ার্কের দুর্বলতাই প্রকট করে। শুষ্ক মৌসুমে কতটুকু পানি থাকে এবং চুক্তির পর ভারতের ইচ্ছা থাকলেও পানি পাব কিনা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার ছিল। বরং সরকারের উচিত আধুনিক নদী ব্যবস্থাপনাগত কৌশলের উপর জোর দিয়ে ভারতের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তি করা। এক্ষেত্রে নদীর অববাহিকা ব্যবস্থাপনা থেকে আরম্ভ করে প্রতি বছর নদীর ড্রেজিং করা এবং মেইনটেইন করা ও যাতে আমরা সমতার ভিত্তিতে পানি পাই সেজন্য সমখরচ ভিত্তিতে ব্যবস্থাপনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। দেশের যারা নদী বিশেষজ্ঞ আছেন, তাদেরকে অবশ্যই এক্ষেত্রে কাজে লাগানো প্রয়োজন। বিরোধী দলকে দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে পার্লামেন্টে বক্তব্য পেশ করার ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এদিকে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়েও আমরা মোটামুটি নিশ্চুপ।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন প্রতি বছর বিপুল অংকের টাকা গচ্চা দিচ্ছে। এই যে বিশাল ঘাটতি তাতে সরকারের ভর্তুকি কিন্তু প্রকারান্তরে সাধারণ মানুষের জনকল্যাণকে বঞ্চিত করছে। কেননা সীমিত সামর্থ্যের দেশে আমাদের সরকারি খাতের ব্যয় কতটুকু কাজে আসবে যদি তা প্রকৃতপক্ষে জনকল্যাণে ব্যয়িত না হয়? আসলে সমস্যাটা হলো আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি, সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পাই। সরকার গ্যাস পেট্রোলিয়াম অকটেন এবং ফার্নেস অয়েলের উপর ভর্তুকি হ্রাস করায় দাম বেড়েছে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের। এর বিরূপ প্রভাব কিন্তু পড়বে অর্থনীতিতে। কেননা মূল্যস্ফীতি হবে। কিন্তু বিশাল ভর্তুকি বছরের পর বছর দিয়ে পেলে কোথা থেকে টাকার যোগান আসবে সেটা বোধগম্য নয়। এ কারণেই সরকারের উচিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন মালিকেরা যাতে করে অধিক মুনাফা করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা। বাস্তবতা হলো বিভিন্ন সরকারি এজেন্সীস ঢিলেঢালাভাবে কাজ করে থাকে। ফলে পরিবহন মালিকেরা ইচ্ছেমত দাম বাড়ায়, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না এবং কোন সরকারই তাদেরকে ঘাঁটায় না। কেননা তারা সংঘবদ্ধ এবং দুর্নীতির বিশাল থাবা এই খাতে বিরাজ করছে। তাদের কারণেই অনেক সরকার ইতঃপূর্বে রেলপথের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পারেনি।
বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা অবশ্য বিশ্ব অর্থনীতির সাথে সম্পর্কযুক্ত। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে দেখি বিগত অর্থবছরে এবং চলতি অর্থবছরের প্রায় আড়াই মাসে আমদানিতব্য ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানি বাড়লেও বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণহীনতার জন্যই বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় নীতি আসলে রিয়েল এফেকটিভ এক্সচেঞ্জ রেইটকে সমন্বয় সাধন করা হচ্ছে না এবং যার ফলে টাকার অবমূল্যায়ন হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতি আবার নাজুক পরিবেশের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। এদিকে আমাদের রপ্তানিমুখী পণ্য বহুধাবিভক্তকরণ করা দরকার এবং পণ্য রপ্তানির জন্য অতিরিক্ত পণ্য উত্পাদন করা ও বিশ্বে পণ্য বিপণনের ব্যবস্থা করা দরকার। এককালে পাটের পরেই চা ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে অধিকতর উপায়। বর্তমানে চা-এর উত্পাদন বিপর্যয়কর পর্যায়ে এসেছে এবং আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও রিসার্চ এবং ডেভেলাপমেন্ট প্রোগ্রাম রীতিমত পালন না করায় এ অব্যবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে দেশের চা উন্নয়ন বোর্ডের মূল দফতর চট্টগ্রামে। এটিকে সরকার চট্টগ্রাম থেকে মৌলভীবাজারে সরাতে চাইলে বাধা দেয়া হচ্ছে। অথচ দেশের বৃহত্তর স্বার্থে মৌলভীবাজারে চা উন্নয়ন বোর্ড স্থানান্তরিত হওয়া প্রয়োজন এ কারণে যে, চা উত্পাদন নিয়ে রীতিমত গবেষণা, বিপণন ও বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়নের দফতরটি যেখানে মূলত চা উত্পাদন হয় সেখানেই হওয়া উচিত। আত্মীয়করণ, স্বজনপ্রীতি, জেলাকরণ, তোষামোদকারীদের হাত থেকে বর্তমান সরকারকে সতর্ক হওয়া উচিত।
এদিকে বিগত জোট সরকারের আমলে চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী ঘোষণার সিদ্ধান্ত দেয়া হলেও কিছুই করা হয়নি। বর্তমান সরকারও বাণিজ্যিক রাজধানী হিসাবে চট্টগ্রামকে ঘোষণা করেছেন। কিন্তু সমস্যা হলো চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী করতে হলে কেবল প্রতিষ্ঠান করলেই বা অর্থ ব্যয়ে সুন্দর করলেই হবে না, বরং চট্টগ্রাম নগরীকে ঢাকা নগরীর মত বহু অঞ্চলের মানুষের সমতাভিত্তিক নিজের নগরী হিসাবে যাতে বিবেচনা করতে পারে সেজন্য ভাবতে হবে। এ ব্যাপারে বন্ধু সাংবাদিক কুদ্দস আফ্রাদ জানালেন যে, আসলে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসবে এবং সেখানে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ নিজের নগরী মনে করে থাকতে পারবেন বলে আশা করা যায়। চট্টগ্রাম বন্দরকে আধুনিকায়ন এবং রাস্তাঘাটের উন্নয়নের পাশাপাশি চট্টগ্রাম যাতে আঞ্চলিক যোগাযোগের কেন্দ্রভূমি হয়ে উঠতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। কেবল ভারত নয়, চীন থেকে আরম্ভ করে থাইল্যান্ড, মায়ানমারসহ কানেকটিং হাব হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। চট্টগ্রামের বিমানবন্দরকে আধুনিকায়ন করতে হবে এবং দু'রানওয়ে বিশিষ্ট করা দরকার। চট্টগ্রামের সাথে ঢাকার যোগাযোগের ক্ষেত্রে চারলেন বিশিষ্ট রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেয়া দরকার। কেননা ঢাকার সাথে চট্টগ্রামের সড়কপথে যোগাযোগ অনুন্নত থাকায় পণ্য বহন ঠিক সময়মত হচ্ছে না এবং খরচও অনেক বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে মধ্য বঙ্গোপসাগরে যে বন্দর নির্মাণ হবে তাতে যাতে কেউ দুর্নীতি করতে না পারে এবং কোন বিশেষ দেশ আনুকূল্য না পায়, বরং উন্নত দেশের কারিগরি সুযোগ-সুবিধা পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। দুর্নীতি আসলেই সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। প্রধানম
বাংলাদেশের অর্থনীতি কোন্ পথে
লেখক: প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী | শনি, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১১, ৯ আশ্বিন ১৪১৮
বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতির অবস্থা ভাল ও মন্দের মিশেলে অবস্থান করছে। অর্থনীতির ইতিবাচক গতিপ্রবাহ গত দু'বছর নয় মাসে ঘটলেও কখনো কখনো দমকা হাওয়ার মত এলোমেলো ঝড়ো বাতাসে তা পর্যদুস্ত হয়ে পড়েছে। শেয়ার বাজারের সমস্যা এখনো সমাধান করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। অবশ্য দ্রুত সমাধান না করা গেলেও কিছু কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তবে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত যারা যেমন বাজার ব্যবস্থা পর্যালোচনা না করে বিনিয়োগ করেছেন, পেনশনের সর্বস্ব শেয়ার বাজারে খাটিয়েছেন কিংবা মা বা স্ত্রীর গয়না এনে, জমি বিক্রি করে বিনিয়োগ করে চড়া দরে শেয়ার কিনে পথে বসেছেন তারা আসলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। শেয়ার বাজার কেলেংকারির পূর্বে কিন্তু কেউ তেমনভাবে মিডিয়াতে সাধারণভাবে লিখিত বা মৌখিকভাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করেনি। বরং প্রশংসার বন্যায় ভেসে গেছে। অর্থমন্ত্রী সে সময়ে আত্মতৃপ্ত হয়ে মন্তব্য করেছেন তার নির্দেশনার কারণেই এই অবস্থা। আমাদের পুঁজিবাজার মূলত শেয়ার ভিত্তিক। বন্ড মার্কেট এখনো গড়ে উঠেনি। এমনকি ফাইন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস মার্কেটও গড়ে ওঠেনি। ফলে বহুমুখী বিনিয়োগ সুবিধা না থাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হুমকীর সম্মুখীন হচ্ছেন। আবার শেয়ার মার্কেটে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সরকারি শেয়ার ও ভাল কোম্পানীর শেয়ারসমূহ আসছে না। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অনেকেই তাদের অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় বাড়ায় কিংবা আয় বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতে গেছে। এমনকি যে সমস্ত প্রাইস সেনসিটিভ ইনফরমেশন আছে সেগুলোও ঠিকমত পর্যালোচনা করে দেখেনি। এদের এই যে ভুল, তার জন্য এককভাবে সরকারকে দায়ী করা যায় না। কিন্তু যারা সত্যি সত্যি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে পরিত্রাণের উপায় দেখানোর দায়িত্ব সরকারের উপরেই বর্তায়।
ব্যাংকিং সেক্টরের অবস্থাও যে খুব সুখকর তা কিন্তু নয়। দেশে সার্বিকভাবে ব্যাংকিং সেক্টরের ভিত্তি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। ক্রমাগত ভুল সিদ্ধান্ত এবং অতিরিক্ত মুনাফা প্রবণতা কিছু কিছু ব্যাংককে সমস্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এদেরকে সতর্ক করে সঠিকভাবে পরিচালনা করার দিক-নির্দেশনা যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর বর্তায় তবে তারা সেক্ষেত্রে সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছে বলা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি-নির্ধারক পর্যায়ে অভিজ্ঞ বাণিজ্যিক ব্যাংকার ও সামষ্টিক অর্থনীতিবিদ নেই। হ্যাঁ অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও ভাল হয়েছে। যেমন মোট দেশজ উত্পাদনের প্রবৃদ্ধির হার হচ্ছে ৬.৭%। আবার সরকার চেষ্টা করেছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে। নারীর ক্ষমতায়ন করতে। একই সাথে গত প্রায় দু'বছর নয় মাসে গণতান্ত্রিক চর্চার প্রয়াস থাকায় ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও স্বস্তির সাথে ব্যবসা করতে পারছে। এদিকে অটিজম নিয়ে সম্মেলন করা হলো। এটি একটি ভাল উদ্যোগ। যে পরিবারে প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়ে আছে, কেবল তারাই সমস্যাটির প্রকৃতি অনুধাবন করতে পারে। প্রতিবন্ধীরাও মানুষ, তাদেরকে সুন্দর জীবনে ফিরিয়ে আনা আমাদের নৈতিক কর্তব্য।
ভারত বৃহত্তর প্রতিবেশী দেশ। সে দেশের সাথে অবশ্যই সুসম্পর্ক রাখতে পারলে আমাদেরই লাভ। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের অবদান ভোলার নয়। কিন্তু বর্তমান তরুণ প্রজন্ম চায় বন্ধুত্ব যাতে সমানে সমানে হয় অর্থাত্ উইন-উইন সিচুয়েশন বিরাজ করে। একপক্ষ কেবলি দিয়ে যাবে, অন্যপক্ষ নিয়ে যাবে তা নয়। এমন কি পেরোটো ওপটিমালিটির বাস্তবায়নও করা সম্ভব নয় অর্থাত্ দু'পক্ষের মধ্যে ট্রানজেকশন হলে একপক্ষ লাভবান হবে অন্যপক্ষ অন্তত ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এই যে সমস্যা এর থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করার দায়িত্ব দু'পক্ষের সরকারের মধ্যেই কেবল পড়ে না বরং ব্যবসায়ী-আমলা এবং জনসাধারণের মানস গঠনে মধ্যে পড়ে। দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার হলে যেন দু'পক্ষই লাভবান হয় তা বুঝতে হবে। ভারত বৈরিতা কিংবা পূজা নয়, বরং আমরা ক্ষুদ্র রাষ্ট্র হলেও সমঅধিকার ভিত্তিক কিংবা ন্যূনতম পক্ষে কিছুটা লাভবান হতে পারি তা কিন্তু সুনিশ্চিত করা দরকার। বর্তমানে ইন্টারনেটের জগতে এবং অবাধ তথ্য প্রবাহের জগতে সত্য সাময়িকভাবে ধামাচাপা দেখা যায় কিন্তু পুরোপুরি দেয়া যায় না। অবশ্যই সোনিয়া গান্ধীর বাংলাদেশ সফর এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মনমোহন সিং-এর বাংলাদেশ সফর শুভ সূচনা হতে পারে। কিন্তু এ সূচনাকে অনেক দূর এগিয়ে নিতে হবে। অবশ্যই ভারতের বিরুদ্ধাচরণকারী তাদের যে সমস্ত সন্ত্রাসী বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে তাদের ফিরিয়ে দেয়া যে বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব। ঠিক তেমনি আমাদের দেশের যে সমস্ত সন্ত্রাসী ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে তাদেরকে ফেরত দেয়া এবং সেখান থেকে বাংলাদেশে অবাধে সন্ত্রাস কার্যক্রম পরিচালনা করতে যাতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। এ কারণেই মন-মানসিকতার পরিবর্তন আবশ্যক। আমাদের দেশে ৪৬টি পণ্য ভারতে শূন্য শুল্কে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা যেভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন-আসলে এটা ঠিক নয়।
এদিকে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে যে ধরনের সমস্যার উদ্রেক হয়েছে, তা আসলে হোম ওয়ার্কের দুর্বলতাই প্রকট করে। শুষ্ক মৌসুমে কতটুকু পানি থাকে এবং চুক্তির পর ভারতের ইচ্ছা থাকলেও পানি পাব কিনা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার ছিল। বরং সরকারের উচিত আধুনিক নদী ব্যবস্থাপনাগত কৌশলের উপর জোর দিয়ে ভারতের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তি করা। এক্ষেত্রে নদীর অববাহিকা ব্যবস্থাপনা থেকে আরম্ভ করে প্রতি বছর নদীর ড্রেজিং করা এবং মেইনটেইন করা ও যাতে আমরা সমতার ভিত্তিতে পানি পাই সেজন্য সমখরচ ভিত্তিতে ব্যবস্থাপনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। দেশের যারা নদী বিশেষজ্ঞ আছেন, তাদেরকে অবশ্যই এক্ষেত্রে কাজে লাগানো প্রয়োজন। বিরোধী দলকে দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে পার্লামেন্টে বক্তব্য পেশ করার ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এদিকে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়েও আমরা মোটামুটি নিশ্চুপ।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন প্রতি বছর বিপুল অংকের টাকা গচ্চা দিচ্ছে। এই যে বিশাল ঘাটতি তাতে সরকারের ভর্তুকি কিন্তু প্রকারান্তরে সাধারণ মানুষের জনকল্যাণকে বঞ্চিত করছে। কেননা সীমিত সামর্থ্যের দেশে আমাদের সরকারি খাতের ব্যয় কতটুকু কাজে আসবে যদি তা প্রকৃতপক্ষে জনকল্যাণে ব্যয়িত না হয়? আসলে সমস্যাটা হলো আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি, সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পাই। সরকার গ্যাস পেট্রোলিয়াম অকটেন এবং ফার্নেস অয়েলের উপর ভর্তুকি হ্রাস করায় দাম বেড়েছে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের। এর বিরূপ প্রভাব কিন্তু পড়বে অর্থনীতিতে। কেননা মূল্যস্ফীতি হবে। কিন্তু বিশাল ভর্তুকি বছরের পর বছর দিয়ে পেলে কোথা থেকে টাকার যোগান আসবে সেটা বোধগম্য নয়। এ কারণেই সরকারের উচিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন মালিকেরা যাতে করে অধিক মুনাফা করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা। বাস্তবতা হলো বিভিন্ন সরকারি এজেন্সীস ঢিলেঢালাভাবে কাজ করে থাকে। ফলে পরিবহন মালিকেরা ইচ্ছেমত দাম বাড়ায়, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না এবং কোন সরকারই তাদেরকে ঘাঁটায় না। কেননা তারা সংঘবদ্ধ এবং দুর্নীতির বিশাল থাবা এই খাতে বিরাজ করছে। তাদের কারণেই অনেক সরকার ইতঃপূর্বে রেলপথের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পারেনি।
বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা অবশ্য বিশ্ব অর্থনীতির সাথে সম্পর্কযুক্ত। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে দেখি বিগত অর্থবছরে এবং চলতি অর্থবছরের প্রায় আড়াই মাসে আমদানিতব্য ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানি বাড়লেও বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণহীনতার জন্যই বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় নীতি আসলে রিয়েল এফেকটিভ এক্সচেঞ্জ রেইটকে সমন্বয় সাধন করা হচ্ছে না এবং যার ফলে টাকার অবমূল্যায়ন হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতি আবার নাজুক পরিবেশের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। এদিকে আমাদের রপ্তানিমুখী পণ্য বহুধাবিভক্তকরণ করা দরকার এবং পণ্য রপ্তানির জন্য অতিরিক্ত পণ্য উত্পাদন করা ও বিশ্বে পণ্য বিপণনের ব্যবস্থা করা দরকার। এককালে পাটের পরেই চা ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে অধিকতর উপায়। বর্তমানে চা-এর উত্পাদন বিপর্যয়কর পর্যায়ে এসেছে এবং আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও রিসার্চ এবং ডেভেলাপমেন্ট প্রোগ্রাম রীতিমত পালন না করায় এ অব্যবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে দেশের চা উন্নয়ন বোর্ডের মূল দফতর চট্টগ্রামে। এটিকে সরকার চট্টগ্রাম থেকে মৌলভীবাজারে সরাতে চাইলে বাধা দেয়া হচ্ছে। অথচ দেশের বৃহত্তর স্বার্থে মৌলভীবাজারে চা উন্নয়ন বোর্ড স্থানান্তরিত হওয়া প্রয়োজন এ কারণে যে, চা উত্পাদন নিয়ে রীতিমত গবেষণা, বিপণন ও বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়নের দফতরটি যেখানে মূলত চা উত্পাদন হয় সেখানেই হওয়া উচিত। আত্মীয়করণ, স্বজনপ্রীতি, জেলাকরণ, তোষামোদকারীদের হাত থেকে বর্তমান সরকারকে সতর্ক হওয়া উচিত।
এদিকে বিগত জোট সরকারের আমলে চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী ঘোষণার সিদ্ধান্ত দেয়া হলেও কিছুই করা হয়নি। বর্তমান সরকারও বাণিজ্যিক রাজধানী হিসাবে চট্টগ্রামকে ঘোষণা করেছেন। কিন্তু সমস্যা হলো চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী করতে হলে কেবল প্রতিষ্ঠান করলেই বা অর্থ ব্যয়ে সুন্দর করলেই হবে না, বরং চট্টগ্রাম নগরীকে ঢাকা নগরীর মত বহু অঞ্চলের মানুষের সমতাভিত্তিক নিজের নগরী হিসাবে যাতে বিবেচনা করতে পারে সেজন্য ভাবতে হবে। এ ব্যাপারে বন্ধু সাংবাদিক কুদ্দস আফ্রাদ জানালেন যে, আসলে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসবে এবং সেখানে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ নিজের নগরী মনে করে থাকতে পারবেন বলে আশা করা যায়। চট্টগ্রাম বন্দরকে আধুনিকায়ন এবং রাস্তাঘাটের উন্নয়নের পাশাপাশি চট্টগ্রাম যাতে আঞ্চলিক যোগাযোগের কেন্দ্রভূমি হয়ে উঠতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। কেবল ভারত নয়, চীন থেকে আরম্ভ করে থাইল্যান্ড, মায়ানমারসহ কানেকটিং হাব হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। চট্টগ্রামের বিমানবন্দরকে আধুনিকায়ন করতে হবে এবং দু'রানওয়ে বিশিষ্ট করা দরকার। চট্টগ্রামের সাথে ঢাকার যোগাযোগের ক্ষেত্রে চারলেন বিশিষ্ট রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেয়া দরকার। কেননা ঢাকার সাথে চট্টগ্রামের সড়কপথে যোগাযোগ অনুন্নত থাকায় পণ্য বহন ঠিক সময়মত হচ্ছে না এবং খরচও অনেক বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে মধ্য বঙ্গোপসাগরে যে বন্দর নির্মাণ হবে তাতে যাতে কেউ দুর্নীতি করতে না পারে এবং কোন বিশেষ দেশ আনুকূল্য না পায়, বরং উন্নত দেশের কারিগরি সুযোগ-সুবিধা পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। দুর্নীতি আসলেই সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। কিন্তু মানুষ চিন্তা-চেতনায় তার ঘোষণার বাস্তব প্রতিফলন দেখতে ইচ্ছুক। পদ্মা সেতু নিয়ে যে ধরনের অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। অর্থনীতিকে দুর্নীতিগ্রস্তদের কবল থেকে বাঁচাতে হবে। এই দুর্নীতির কারণেই কেবল সামাজিক কল্যাণ বিনষ্ট হচ্ছে না, বরং সুবিধাবাদীরা সব সরকারের সময়ে সুবিধা নিয়ে থাকেন। বিশ্ব অর্থনীতির যুগে ধীরে ধীরে তরুণ প্রজন্মের মানুষের মন-মানসিকতা পরিবর্তিত হচ্ছে এবং তারা দাস প্রথায় বিশ্বাস করে না। বরং স্বাধীন রাজ্যে সকলের সাথে সমতাভিত্তিক উন্নয়ন চায়।
সীমিত আয়ের মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপে দিশেহারা। তারা আজ কোন কথার ফানুস নয়, সঠিক বাস্তবায়ন চায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতার পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুত্পাদনশীল খাতে বিনিয়োগও মুখ্য কারণ।
[লেখক: অর্থনীতিবিদ]
ন্ত্রী দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। কিন্তু মানুষ চিন্তা-চেতনায় তার ঘোষণার বাস্তব প্রতিফলন দেখতে ইচ্ছুক। পদ্মা সেতু নিয়ে যে ধরনের অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। অর্থনীতিকে দুর্নীতিগ্রস্তদের কবল থেকে বাঁচাতে হবে। এই দুর্নীতির কারণেই কেবল সামাজিক কল্যাণ বিনষ্ট হচ্ছে না, বরং সুবিধাবাদীরা সব সরকারের সময়ে সুবিধা নিয়ে থাকেন। বিশ্ব অর্থনীতির যুগে ধীরে ধীরে তরুণ প্রজন্মের মানুষের মন-মানসিকতা পরিবর্তিত হচ্ছে এবং তারা দাস প্রথায় বিশ্বাস করে না। বরং স্বাধীন রাজ্যে সকলের সাথে সমতাভিত্তিক উন্নয়ন চায়।
সীমিত আয়ের মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপে দিশেহারা। তারা আজ কোন কথার ফানুস নয়, সঠিক বাস্তবায়ন চায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতার পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুত্পাদনশীল খাতে বিনিয়োগও মুখ্য কারণ।
[লেখক: অর্থনীতিবিদ]
__._,_.___