|
|
__._,_.___
একপ্রকার জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই মসনদে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের প্রস্থানের দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা না থাকলেও পর্দার অন্তরালে বেশ ব্যস্ত বিদেশিরা। নেপথ্যের তৎপরতা চলছে বেশ তড়িৎ গতি এবং সতর্কতার সঙ্গে। সরকারও খুব কৌশলী ভূমিকায়। কাউকে বুঝতে দিতে চাচ্ছে না আসলে কী হচ্ছে বা হতে যাচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতসহ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোও বুঝেশুনে পা ফেলছে। রাজনৈতিক দল ও কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন না দিয়ে পারছে না সরকার। এক্ষেত্রে সরকারের উপর অনেকটাই বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউসহ শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার চায়। যে নির্বাচনে বৃহত্তর রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নেবে এবং বাংলাদেশের মানুষ তাদের পছন্দের সরকার নির্বাচন করতে পারবে। আর এবারের এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের প্রভাবশালী প্রতিবেশি ভারতেরও চাপ রয়েছে। শীর্ষ কাগজ
এদিকে আগামী বছরের নভেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তাতে ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হচ্ছেন হিলারী ক্লিন্টন। ইতিমধ্যে এ সম্পর্কে যেসব জরিপ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, হিলারী যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবেন। যা আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য আরেকটি বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে এটি মাথায় রেখেই আওয়ামী লীগ আগামী বছরের প্রথমদিকে মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও ইতিপূর্বে তারা বলে আসছিলো ২০১৯ সালের আগে কোনো নির্বাচন নয়।
তবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই, পরিস্থিতি স্বাভাবিক অর্থাৎ ইতিবাচক রাজনীতির দিকে যাচ্ছে দেশ। মধ্যবর্তী নির্বাচনের সঙ্গে রাজনীতিতে নতুন করে ঝড়ো হাওয়ার আভাসও লক্ষ্য করছেন বিশ্লেষকরা। এ ঝড়ো হাওয়া কোন দিকে মোড় নেয় বলা মুশকিল। কারণ, আওয়ামী লীগ সরকার এ নির্বাচনের আয়োজন করতে যাচ্ছে তাদের ক্ষমতাকে আরো পাকাপোক্ত করার মানসিকতা নিয়েই। তবে তা কতটুকু সম্ভব হবে সেটা সময়ই বলে দেবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বিদেশিরা আওয়ামী লীগকে চাপ দিচ্ছে একটি অংশগ্রহণমূলক মধ্যবর্তী নির্বাচন আয়োজনের জন্য। যেহেতু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক ছিলো না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন মানে, সব দলের অংশগ্রহণ। এক্ষেত্রে বিএনপিও নির্বাচনের বাইরে থাকবে না। তবে সেই বিএনপি আর বেগম খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের বিএনপি থাকবে না। সেটি হবে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার অনুগত বিএনপি। এমনই সুগভীর পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। বেগম খালেদা জিয়াও এ সম্পর্কে কম অবগত নন। তাই তিনি আগাম বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন।
বিদেশীদের চাপ
ইতিপূর্বে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউ একটি মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য সরকারকে তাগিদ দিয়ে আসছিলো। জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও সব দলের অংশগ্রহণে একটি জাতীয় নির্বাচনের তাগিদ দেয়া হয়েছে। তাতে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং এক বাক্যে বলে এসেছে, ২০১৯ সালের আগে কোনো নির্বাচন নয়। অবশেষে চলতি বছরের শুরুতে বিএনপি-জামায়াত জোট সারাদেশে একযোগে লাগাতার আন্দোলন শুরু করে। ঢাকার সঙ্গে সারাদেশ ছিলো প্রায় বিচ্ছিন্ন। তখন সরকার মধ্যবর্তী নির্বাচন ইস্যুতেই আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় রাজী বলে কূটনীতিকদের জানিয়েছিলো। শর্তটি ছিলো- আন্দোলন শিথিল করা। যাতে সহিংসতা না হয়। অবশ্য বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে বার বারই দাবি করে বলা হয়েছে, সরকার জনগণের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে সহিংসতা চালাচ্ছে। সব শেষে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ তিনমাস পর গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় ছেড়ে 'ফিরোজায়' ফিরে যাওয়ার পর বিভিন্ন মহল থেকে গুঞ্জন শুরু হলো অভ্যন্তরীণ সমঝোতা হয়েছে বলে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন কোনো অভ্যন্তরীণ সমঝোতা নয়, যা হবে প্রকাশ্যেই হবে, দেশবাসীর সামনে হবে। অবশ্য খালেদা জিয়ার এ বক্তব্যকে অনেকে রাজনৈতিক বক্তব্য বলেই ধরে নিয়েছেন। আন্দোলন ও সহিংসতা বন্ধ হওয়ার পর শুধু কূটনৈতিক পর্যায়ে নয়, বরং সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সরকারকে একটি সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের তাগিদ দেয়া শুরু করেছেন। এ তাগিদকে সরকার কোনো কূটনৈতিক চাপ বলে মনে করছেন না বরং এটিকে বিদেশি চাপ হিসেবেই দেখতে হচ্ছে সরকারকে। যদিও সাধারণভাবে মনে করা হচ্ছে সরকারের সব কিছুই ঠিকঠাক রয়েছে। ভালোভাবেই চলছে দেশ।
অবশ্য, এ বিষয়ে সরকারের একজন সাবেক মন্ত্রী (যিনি বর্তমানে সংসদ সদস্য) জানিয়েছেন, সরকারের উপর প্রায় সব সময়ে কোনো না কোনো চাপ থাকে। এসব খুব একটা বিবেচ্য বিষয় নয়। তিনি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এক সময় সব কিছুই ঠিক হয়ে যাবে। বিদেশি চাপ নিয়ে ভাবনার কিছুই নেই বলেও মনে করেন তিনি। এদিকে গত ১১ মে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কাজের কাজ কিছুই করছে না। বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখার চাইতে অভ্যন্তরীণ (রাজনৈতিক) বিষয় নিয়েই বেশি নাক গলাচ্ছে। সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করাকে 'চাপ অনুভব' বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট গত ২ জুলাই বলেছেন- বাংলাদেশে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মর্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বদলায়নি। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু হওয়া প্রয়োজন। দলগুলো চাইলে এই আলোচনার উদ্যোগ নিতে রাজি আছে যুক্তরাষ্ট্র। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বার্নিকাট বাংলাদেশের জন্য সু-খবর রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন।
মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাটের বক্তব্যের তিন দিনের মাথায় ৫ জুলাই ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, 'কাউকে আগামী নির্বাচনে বাইরে রাখা হবে না'। আগাম নির্বাচন নিয়ে যখন নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে ঠিক তখনই আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের একজন সদস্যের এমন মন্তব্য খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন মোহাম্মদ নাসিমের এ বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারার সূচনা হতে পারে।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তিন সিটিতে সদ্য সমাপ্ত কারচুপির নির্বাচনের পর এর পক্ষে দেশি-বিদেশি কারো সমর্থনই আদায় করতে পারেনি সরকার। এতে সরকার ভেতরে বেশ বিব্রত। কারণ, গত বছরের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ওই নির্বাচনের পক্ষে দেশি-বিদেশি কিছুটা হলেও সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয়েছিলো সরকার। অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে তখন বিভিন্ন মহলের সমর্থন আদায়ে জোর প্রচেষ্টাও চালানো হয়েছিলো। যদিও বাস্তবে ৫ জানুয়ারিতে কোনো নির্বাচনই হয়নি বলে প্রায় সব মহলই মত দিয়েছিলেন। কেননা ভোটের আগেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ জনকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করে রাখা হয়েছিলো। ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো শতকরা ৫ ভাগ মানুষও ভোট কেন্দ্রে যায়নি। ওই নির্বাচনে ৪০টিরও বেশি ভোট কেন্দ্রে একজন ভোটারও উপস্থিত হয়নি। ওই নির্বাচনের দুই দিন পর ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক দলীয় সভায় বলেছিলেন, নির্বাচন সর্বজন গ্রহণযোগ্য হয়নি। তবে, একেবারেই অগ্রহণযোগ্য সে কথাও বলা যাবে না। তারপরও সরকারের অনুগত হিসেবে পরিচিত কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক সংস্থা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পক্ষে সাফাই গেয়েছিলো। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য যেকোনো উপায়ে একটি নির্বাচন দরকার ছিলো বলেও অনেকে যুক্তি দিয়েছিলেন। কিন্তু ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরের পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভোটের দিন ২৮ এপ্রিল বিকেল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের প্রভাবশালী প্রায় সব দেশের পক্ষ থেকেই নির্বাচনে অনিয়মে তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে। ভোটে অনিয়ম হয়েছে মর্মে ১ মে শেখ হাসিনাকে ফোন করে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে গত ২৬ মার্চ ব্রাসেলসে একটি বিশেষ বৈঠক করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ওই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্যই ছিলো বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে করণীয় ঠিক করা। বৈঠকে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয় ইইউ।
কয়েকটি বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে জানতে চাওয়ার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়। এক. একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে বিরোধী দলের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপের আয়োজন করতে সরকার কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কিনা এবং নেবে কিনা। দুই. বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে সরকার কি ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। তিন. বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নিখোঁজ হওয়া ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- এখনও কেন বন্ধ হয়নি। দ্রুত বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বন্ধ ও জোরপূর্বক রাজনৈতিক ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়া বন্ধ করতে সরকার কি উদ্যোগ নিয়েছে। চার. কেনো বাংলাদেশে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের জায়গা সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। বিরোধী দলগুলোকে তাদের কর্মসূচি কেনো পালন করতে দেয়া হচ্ছে না। পাঁচ. রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরকার কেন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। ছয়. বাংলাদেশের আইন-শৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনী (বিশেষ করে পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা) রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হত্যায় উৎসাহ যোগাচ্ছে- এ বিষয়ে সরকারের বক্তব্য জানতে চাওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে- 'একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসতে হবে' এই মর্মে বাংলাদেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের নেয়া পদক্ষেপের কিছু সুফল ইতিমধ্যে পাওয়াও গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত বৈঠকের আলোকে ইতোমধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের সরকার যাতে অতিদ্রুত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে না পড়ে সেজন্য অনেক বিষয়েই যথেষ্ট গোপনীয়তার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ভারতের ভূমিকা
পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো মনে করে, বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশি রাষ্ট্র হচ্ছে ভারত। আর এ দেশটি বাংলাদেশের প্রায় সব জাতীয় নির্বাচনে ভেতরে ভেতরে ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে গত ৫ জানুয়ারি ভোটবিহীন বিতর্কিত নির্বাচনে অনেকটা প্রকাশ্যেই ভূমিকা পালন করেছে। ৫ জানুয়ারির আগে ভারতের তৎকালীন শীর্ষ কূটনীতিক সুজাতা সিং বাংলাদেশের ওই বিতর্কিত নির্বাচনে প্রকাশ্যে প্রভাব খাটিয়েছিলেন। যা ওই সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ মিডিয়ার সামনে ফাঁস করে দেন। আর এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো মনে করছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় ভারতের সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে ভারতকেই এগিয়ে আসতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশ সরকারকে একটি বিশেষ বার্তা দিয়েছেন, যা এখনো অস্পষ্ট। কারণ, ভারতের ক্ষমতাসীনরা জনগণের ভোটে (বিপুল সমর্থন নিয়ে) নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। তাই ভারতের বর্তমান সরকারও বাংলাদেশের নাগরিকদের ভোটে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায়।
কূটনীতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে চলা কূটনৈতিক তৎপরতার সঙ্গে শুরুতে ভারত কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চললেও পরে কূটনীতিকদের যৌথ উদ্যোগের সঙ্গে অংশ নেয়। আর কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়া হঠাৎ করে ভারত দীর্ঘ বছরের ঝুলন্ত ছিটমহল ইস্যুর সমাধান প্রক্রিয়ার নেপথ্যে ভিন্ন কিছু রয়েছে বলেও বিশ্লেষকরা মনে করেছন।
সবশেষ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর পরবর্তী সময়ে দেশে একটি আগাম নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া প্রায় সব রাজনৈতিক দলই আগাম নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগও 'একটি আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে' এমন খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। গত সপ্তাহে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সিপিবি'র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জল্পনা-কল্পনা হচ্ছে। নির্বাচন কবে হবে এমন প্রশ্নের জবাবের চাইতে বড় প্রশ্ন হচ্ছে নির্বাচন পদ্ধতি কি হবে? স্বচ্ছ কোনো প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে নাকি ক্ষমতাসীনরা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভোটগ্রহণ করবে। অবশ্য নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কোনো কথা বলেন নি। কিন্তু ক্যামেরার অনুপস্থিতিতে যেসব কথা হয়েছে আসলে কি কথা হয়েছে তা জনগণের কাছে এখনো অস্পষ্ট। বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর একান্তে ১৫ মিনিটের বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে যথেষ্ট কৌতুহল রয়েছে রাজনীতিক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে।
আবারো মাইনাস ফর্মূলা!
দেশি-বিদেশি চাপ ও জনগণের ইচ্ছার আলোকে শেষ পর্যন্ত একটি মধ্যবর্তী নির্বাচনে সরকার বাধ্য হলেও ক্ষমতায় থাকার সব প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাবে। বিশেষ করে, নির্বাচন ঘোষণার আগেই বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয় নেতাদের শাস্তি দিতে চায় সরকার। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল মামলার রায় প্রায় চূড়ান্ত। এছাড়া কর্মসূচি চলাকালে নাশকতার অভিযোগ এনে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা দেয়া হয়েছে তা দ্রুত বিচার করে ফেলতে চায় সরকার। সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, বিএনপি ও জামায়াতের জনপ্রিয় নেতারা অংশ নিতে না পারলে নতুন করে সাধারণ নির্বাচন দিলেও বিজয়ী হবে আওয়ামী লীগ। আর এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জামায়তে ইসলামী ও বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতার মামলার বিচার শুরু হতে যাচ্ছে ঈদের পরই।
এক্ষেত্রে মূল টার্গেট হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে মাইনাস করার দু'টি উপায় নিয়ে কাজ চলছে ভেতরে ভেতরে। এক, খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা। দুই, বিদেশে রাখা। অর্থাৎ বিদেশে গেলে দেশে আসতে না দেয়া। জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ হলেই তিনি নির্বাচনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। অন্যদিকে তারেক রহমান তো দেশে আসতে পারছেনই না। কোকোর পরিবারও ড্যান্ডি ডায়িং ঋণ মামলার দায় বয়ে বেড়াচ্ছেন বিদেশে। এ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষে বিকল্প বিএনপি দাঁড় করানো সম্ভব হবে। বাস্তবে এমন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বিএনপি নেতাদের দিয়ে বলানো হচ্ছে, 'এই বিএনপি দিয়ে কিছু হবে না'। অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি ব্যর্থ। অন্যদের নেতৃত্বে বিএনপি চলবে। খালেদা জিয়াসহ তার পরিবারের কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না পেলে নেতৃত্ব অন্য দিকে চলে যাবে। ষোলকলা পূর্ণ হবে। এমন চিন্তা তাদের।
তবে এতো কিছুর পরও একটা আশংকা থেকেই যাচ্ছে সরকারের মধ্যে। বেগম খালেদা জিয়া বা তারেক রহমান নির্বাচন করতে না পারলেই যে নেতৃত্ব তাদের হাত থেকে চলে যাবে- এটা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। কারণ, খালেদা জিয়া সামনে থাকলে তাকে চ্যালেঞ্জ করতে অনেক নেতাই চাইবেন না। অতীত অভিজ্ঞতা তা-ই বলে। তাই বিএনপির এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন তারা সরকারকে ভিন্ন পথে এগোনোর পরামর্শ দিচ্ছেন। আর তা হলো, বিদেশ পাঠিয়ে দেয়া বা বিদেশ গেলে দেশে আসতে না দেয়া। কিন্তু, সরকারের সেই পরিকল্পনাও ফাঁস হয়ে গেছে। বেগম খালেদা জিয়া আপাতত বিদেশ আর যাচ্ছেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সবাই মনে করছেন, ঈদের পর নতুন কিছু ঘটবে। সরকার নতুন চাল দেবে। এখন দেখা যাক, হাওয়া কোন দিকে ঘুরে।
Attachment(s) from Pryalal Karmakar prio_bangla@yahoo.com [chottala] | View attachments on the web
1 of 1 Photo(s)
Data Group, Alexandria, VA…:: We know Database/Clustering/Always On/BI/SharePoint better ::..Learn, get Certifications, & Job all from one place&
all happens in less than 5 monthsReferral: More than 80% of our students come from referrals
Job Placement: 11 jobs in one day (A Record – Nobody can claim, but we do)No Computer/IT Background NeededSpecial Note:We train in Enterprise Environment NOT on Laptop Environment. So, what you will see in our training environment, you will see the same thing at workplaceCourses: Database/SharePoint/SQL Server/MySQL/Oracle/BI/SQL Programming/ ReportingStart Date: Saturday 25th July, 2015
Class Time: 10 AM to 1 PM
Class Format: Virginia & New York in person or Online from anywhereTraining Package: Training/Knowledge, Certifications, Interview Prep, Resume, Experience, Reference, & Job Placement
Office Hour/Private Tutoring: 7 Days a week from 10 AM to 6 PM
Class Environment: Data Center/CLOUD/ SAN/VPN/Oracle/SQL Server/ SharePoint/ MySQL/App Servers/Apps (.NET, ASP, PHP, Java/JSP)Projects and Lab: Hands on and 100% practical in Data Center Environment – Real Life Projects and concepts are used for all demos
Job Placement: We provide job - Guaranteed
Internship: Earn College Credits-US college/University
Text Book: Written by Zakir HossainCorporate Office
5600 General Washington DR, Suit: B212, Alexandria, VA 22312New York Office41-66 72 Street, Suite: 1BJackson Heights, NY 11377Phone: 917-819-0550/703-203-2325You and your friends/family are cordially invited to stop by at Data Group and talk with us in person & ask us how we can help you in getting a dream job you are looking for.Regards,Zakir Hossain, Chief of IT Operations, USAID, CEO, Data Group
5600 General Washington DR, Suite: B212, Alexandria, VA 22312Phone: 703-203-2325, 703-310-4949, Ext: 101/105