"মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম এখনও চলছে" ॥ একাত্তরের বিজয় - ৩
সরদার সিরাজুল ইসলাম
(পূর্ব প্রকাশের পর)
পাক বাহিনীর আক্রমণের প্রথম প্রহরে প্রতিরোধটি শুরু করেছিল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এটা তাদের জন্য ফরজ ছিল। মস্কোপন্থী ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টির অংশগ্রহণ ও ভূমিকা ছিল গৌরবময়। মওলানা ভাসানী মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা তথা অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করলেও তার অনুসারীরা চীনপন্থী হওয়ায় এবং চীন পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় ওরা কার্যত পাকিস্তানের পক্ষেই ছিলেন। উল্লেখ্য, চীনপন্থী সর্বহারা পার্টির নেতা কমরেড আবদুল হক মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। একই অভিযোগ কমরেড মোহাম্মদ তোয়াহার বিরুদ্ধে। আনোয়ার জাহিদ পাক বাহিনীকে রসদ সরবরাহ করে মুরগি সাপ্লাইয়ার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ভাসানী ন্যাপ সম্পাদক মশিউর রহমান যাদু মিঞা শেষ পর্যন্ত কলাবরেটর আইনে আটক হয়েছিলেন। যাদু মিঞা-কাজী জাফর এরা ভারতে গিয়ে মওলানা ভাসানীকে দেশে আনার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। কিন্তু মওলানা ভাসানী তাদের ফাঁদে পা দেননি। অন্যান্য ডাকসাইটে চৈনিক নেতা যেমন মান্নান ভূইয়া, খোকা এরা কোথায়, কার পক্ষে ছিলেন তা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন এটি নিশ্চিত হয়েই পাকবাহিনীতে কর্মরত বাংলাভাষী সেনার একটি অংশ মুক্তিযুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন। অবশ্য ২৫ মার্চ (৭১) পূর্ব পাকিস্তানে কর্মরত বাংলাভাষী সেনা কর্মকর্তার সংখ্যা ছিল ১৭৬ জন কিন্তু এর মধ্যে ৯৪ জন পাকবাহিনীর পক্ষেই ছিলেন আর মাত্র ৮২ জন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এছাড়া ছুটিতে অবস্থানরতদের মধ্যে ২২জন (তবে এরশাদ ছুটিতে এসেও পাকিস্তানেই ফিরে যান) এবং খুনী রশিদ, ফারুক, ডালিমসহ ৩১জন মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাকিস্তান থেকে ছুটিতে এসে যোগ দেন। (সূত্র : মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান মেজর (অব.) সামসুল আবেদীন-ইউপিএল ১৯৯৫)। এই প্রেক্ষিতে সেক্টর কমান্ডার মেজর রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম বলেছেন, 'কোন সৈনিকের পক্ষেই স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়ার ক্ষমতা নেই। এ দায়িত্ব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অর্থাৎ জনগণের নির্ধারিত আস্থাভাজন বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে কোন সৈনিকের পক্ষে পাকবাহিনী ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণা বা বিদ্রোহ করা সম্ভব ছিল না। কেননা সে সময়ে যদি রাজনৈতিকভাবে ঘটনার মীমাংসা হয়ে যেত সে ক্ষেত্রে যদি কোন সৈনিক বিদ্রোহ করত তবে তার কোর্টমার্শাল কেউ ঠেকাতে পারত না। তাই সবাইকে বঙ্গবন্ধুর চূড়ান্ত ঘোষণার অপেক্ষা করতে হয়েছে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় চট্টগ্রাম অষ্টম বেঙ্গলের মেজর জিয়াসহ বাঙালী কর্মকর্তারা ২৫ মার্চ রাত ২টা পর্যন্ত সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসসহ পাকবাহিনীর প্রত্যক্ষ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল এবং বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেন রাত দুটা নাগাদ। তবে তাঁর ট্রুপস কালুর ঘাট রেখে তিনি ৩০ মার্চ ভারতের ত্রিপুরায় চলে যান। অন্যদিকে মেজর শফিউল্লাহ ছিলেন জয়দেবপুরে এবং খালেদ মোশারফ কুমিল্লায় কর্মরত অবস্থায়। এরা প্রথম পর্বেই যথাক্রমে- ময়মনসিংহ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে অগ্রসর হয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেন। মেজর মঞ্জুর, মেজর তাহের এবং মেজর জিয়া উদ্দিন এরা পাকিস্তান থেকে ভারত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন আগস্ট (১৯৭১) মাসে। মেজর তাহেরকে ফাঁসি দেন জিয়া, জিয়া হত্যার প্রথম শিকার মঞ্জুর আর মেজর পরে লে. ক. জিয়াউদ্দিন, বীরউত্তম খেতাব নিয়ে জামায়াত নেতা (কক্সবাজার)।
এয়ার ভাইস মার্শাল একে খোন্দকার বীরউত্তমের ভাষায়, 'মহান মুক্তিযুদ্ধ শুধু সেক্টর কমন্ডার বা মিলিটারি যুদ্ধ ছিল না। এটা ছিল সর্বস্তরের মানুষের যুদ্ধ। মুক্তিবাহিনীর শতকরা আশি জনই ছিল গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষ। অন্য সব যুদ্ধের মতো আমরা যুদ্ধ শুরু করেছিলাম আত্মরক্ষার চেষ্টার মধ্য দিয়ে। আত্মরক্ষার মধ্য দিয়ে এপ্রিলের শেষে ভারতে আশ্রয়। পরে মে-জুন মাসের দিকে আমরা আক্রমণাত্মক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলাম। (জনকণ্ঠ- ১৭.১২.২০০৩)।
পাকবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ শুরু হলে প্রায় ১ কোটি বাঙালী ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ভারত এদের আশ্রয়-আহার-অস্ত্র দেন। প্রথম থেকেই মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়াও কলকাতায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার, সেক্টর কমান্ডারদের হেড কোয়ার্টার, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণী কর্মকা- ভারতের মাটিতেই ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গণচীন ছিল পাকিস্তানের পক্ষে যদিও মার্কিন জনগণ ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। তাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই ভারতকে সুকৌশলে এগুতে হয়েছে।
(চলবে)
পাক বাহিনীর আক্রমণের প্রথম প্রহরে প্রতিরোধটি শুরু করেছিল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এটা তাদের জন্য ফরজ ছিল। মস্কোপন্থী ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টির অংশগ্রহণ ও ভূমিকা ছিল গৌরবময়। মওলানা ভাসানী মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা তথা অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করলেও তার অনুসারীরা চীনপন্থী হওয়ায় এবং চীন পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় ওরা কার্যত পাকিস্তানের পক্ষেই ছিলেন। উল্লেখ্য, চীনপন্থী সর্বহারা পার্টির নেতা কমরেড আবদুল হক মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। একই অভিযোগ কমরেড মোহাম্মদ তোয়াহার বিরুদ্ধে। আনোয়ার জাহিদ পাক বাহিনীকে রসদ সরবরাহ করে মুরগি সাপ্লাইয়ার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ভাসানী ন্যাপ সম্পাদক মশিউর রহমান যাদু মিঞা শেষ পর্যন্ত কলাবরেটর আইনে আটক হয়েছিলেন। যাদু মিঞা-কাজী জাফর এরা ভারতে গিয়ে মওলানা ভাসানীকে দেশে আনার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। কিন্তু মওলানা ভাসানী তাদের ফাঁদে পা দেননি। অন্যান্য ডাকসাইটে চৈনিক নেতা যেমন মান্নান ভূইয়া, খোকা এরা কোথায়, কার পক্ষে ছিলেন তা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন এটি নিশ্চিত হয়েই পাকবাহিনীতে কর্মরত বাংলাভাষী সেনার একটি অংশ মুক্তিযুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন। অবশ্য ২৫ মার্চ (৭১) পূর্ব পাকিস্তানে কর্মরত বাংলাভাষী সেনা কর্মকর্তার সংখ্যা ছিল ১৭৬ জন কিন্তু এর মধ্যে ৯৪ জন পাকবাহিনীর পক্ষেই ছিলেন আর মাত্র ৮২ জন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এছাড়া ছুটিতে অবস্থানরতদের মধ্যে ২২জন (তবে এরশাদ ছুটিতে এসেও পাকিস্তানেই ফিরে যান) এবং খুনী রশিদ, ফারুক, ডালিমসহ ৩১জন মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাকিস্তান থেকে ছুটিতে এসে যোগ দেন। (সূত্র : মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান মেজর (অব.) সামসুল আবেদীন-ইউপিএল ১৯৯৫)। এই প্রেক্ষিতে সেক্টর কমান্ডার মেজর রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম বলেছেন, 'কোন সৈনিকের পক্ষেই স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়ার ক্ষমতা নেই। এ দায়িত্ব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অর্থাৎ জনগণের নির্ধারিত আস্থাভাজন বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে কোন সৈনিকের পক্ষে পাকবাহিনী ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণা বা বিদ্রোহ করা সম্ভব ছিল না। কেননা সে সময়ে যদি রাজনৈতিকভাবে ঘটনার মীমাংসা হয়ে যেত সে ক্ষেত্রে যদি কোন সৈনিক বিদ্রোহ করত তবে তার কোর্টমার্শাল কেউ ঠেকাতে পারত না। তাই সবাইকে বঙ্গবন্ধুর চূড়ান্ত ঘোষণার অপেক্ষা করতে হয়েছে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় চট্টগ্রাম অষ্টম বেঙ্গলের মেজর জিয়াসহ বাঙালী কর্মকর্তারা ২৫ মার্চ রাত ২টা পর্যন্ত সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসসহ পাকবাহিনীর প্রত্যক্ষ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল এবং বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেন রাত দুটা নাগাদ। তবে তাঁর ট্রুপস কালুর ঘাট রেখে তিনি ৩০ মার্চ ভারতের ত্রিপুরায় চলে যান। অন্যদিকে মেজর শফিউল্লাহ ছিলেন জয়দেবপুরে এবং খালেদ মোশারফ কুমিল্লায় কর্মরত অবস্থায়। এরা প্রথম পর্বেই যথাক্রমে- ময়মনসিংহ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে অগ্রসর হয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেন। মেজর মঞ্জুর, মেজর তাহের এবং মেজর জিয়া উদ্দিন এরা পাকিস্তান থেকে ভারত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন আগস্ট (১৯৭১) মাসে। মেজর তাহেরকে ফাঁসি দেন জিয়া, জিয়া হত্যার প্রথম শিকার মঞ্জুর আর মেজর পরে লে. ক. জিয়াউদ্দিন, বীরউত্তম খেতাব নিয়ে জামায়াত নেতা (কক্সবাজার)।
এয়ার ভাইস মার্শাল একে খোন্দকার বীরউত্তমের ভাষায়, 'মহান মুক্তিযুদ্ধ শুধু সেক্টর কমন্ডার বা মিলিটারি যুদ্ধ ছিল না। এটা ছিল সর্বস্তরের মানুষের যুদ্ধ। মুক্তিবাহিনীর শতকরা আশি জনই ছিল গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষ। অন্য সব যুদ্ধের মতো আমরা যুদ্ধ শুরু করেছিলাম আত্মরক্ষার চেষ্টার মধ্য দিয়ে। আত্মরক্ষার মধ্য দিয়ে এপ্রিলের শেষে ভারতে আশ্রয়। পরে মে-জুন মাসের দিকে আমরা আক্রমণাত্মক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলাম। (জনকণ্ঠ- ১৭.১২.২০০৩)।
পাকবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ শুরু হলে প্রায় ১ কোটি বাঙালী ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ভারত এদের আশ্রয়-আহার-অস্ত্র দেন। প্রথম থেকেই মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়াও কলকাতায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার, সেক্টর কমান্ডারদের হেড কোয়ার্টার, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণী কর্মকা- ভারতের মাটিতেই ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গণচীন ছিল পাকিস্তানের পক্ষে যদিও মার্কিন জনগণ ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। তাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই ভারতকে সুকৌশলে এগুতে হয়েছে।
(চলবে)
জনকণ্ঠ: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩, ৩০ অগ্রহায়ন ১৪২০
"মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম এখনও চলছে" ॥ একাত্তরের বিজয় - ১
সরদার সিরাজুল ইসলাম
জনকণ্ঠ : বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৩, ২৮ অগ্রহায়ন ১৪২০
"মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম এখনও চলছে" একাত্তরের বিজয় - ২
সরদার সিরাজুল ইসলাম
জনকণ্ঠ: শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩, ২৯ অগ্রহায়ন ১৪২০
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-12-13&ni=157476
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-12-13&ni=157476
"মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম এখনও চলছে" ॥ একাত্তরের বিজয় - ৩
সরদার সিরাজুল ইসলাম
জনকণ্ঠ : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩, ৩০ অগ্রহায়ন ১৪২০
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩, ৩০ অগ্রহায়ন ১৪২০
এবার মোটা আলীদের ফাঁসি শুরু হলো
মুহম্মদ শফিকুর রহমান
আহমেদ ছফা ছিলেন সত্যিকার অর্থেই বিদগ্ধ কবি, সব্যসাচী লেখক কথাশিল্পী ও নিখাদ বুদ্ধিজীবী। জীবনকে তিনি উপভোগ করেছেন একেবারেই কম মূল্যে হয়েছেন এবং এভাবে এক আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাঁর একটি প্রবন্ধ 'বাঙালী মুসলমানের মন।' এতে তিনি যা বলেছেন- 'বাঙালী মুসলমান সমাজ স্বাধীন চিন্তাকেই বেশি ভয় করে। তাঁর মনের আদিম সংস্কারগুলো কাটেনি। সে কিছু গ্রহণ করেন না মনের গভীরে। ...তাঁর জানাশোনার পরিধি খুবই সঙ্কুচিত। ...বাঙালী মুসলমানের মন একেবারেই অপরিণত। সবচেয়ে মজার কথা- এ কথাটা ভুলে . . .
যে ভাবে কাদের মোল্লার ফাঁসি হলো
মশিউর রহমান খান ॥ বৃহস্পতিবার রাতে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কিছুক্ষণ আগে কিছুটা বিমর্ষ হয়ে যান যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা। ওই রাতে পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা শেষবারের মতো দেখা করতে কারাগারে যান। কারাগারের কনডেম সেলে একটি মোড়াতে বসে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই শেষবারের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা বলেন বলে সূত্র জানায়। তাঁরা বেরিয়ে আসার পর পরই কাদের মোল্লাকে কারা কর্তৃপক্ষ জানান, আজ বৃহস্পতিবার রাতেই আপনার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে। আপনি মানসিকভাবে . . .
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
আজ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগীরা চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে দেশের মেধাবী, বুদ্ধিজীবী এবং গুণী ব্যক্তিদের সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে ঘাতকরা চেয়েছিল জাতিকে সম্পূর্ণভাবে মেধাশূন্য করতে। এ ক্ষতি কোনদিনই পূরণ হবার নয়। জাতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবে অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, ডা. ফজলে রাব্বি, ডা. আলীম চৌধুরী, শহীদুল্লাহ কায়সারসহ অগণিত শহীদ বুদ্ধিজীবীকে। এই হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে পাকবাহিনী ও তাদের এদেশীয় . .
শেষ হাসি স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তিই হাসবে তবে সরকারকে কঠোর হতে হবে
স্বদেশ রায়
এই লেখা যখন ওয়েবে পাঠক পাবেন বা সকালে পত্রিকায় পড়বেন তখনও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তির উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা থাকবে। তাঁদের মতো আমিও উৎকণ্ঠিত। তবে হতাশ নই। বরং স্থির বিশ্বাস থেকে বলতে চাই, ১৬ ডিসেম্বরের আগে কসাই কাদেরের ফাঁসি বাংলাদেশের মাটিতে হবেই। হয়ত বলা হতে পারে এতটা দুর্গম পথ কেন স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তিকে পাড়ি দিতে হচ্ছে। এর প্রথম উত্তর রবীন্দ্রনাথ থেকে দেয়া যায়, শ্রেয়কে দিতে হয় দুর্মূল্য। পাশাপাশি এটাও বলতে হয়, সত্যের পথ অনেক কঠিন ও কঠোর। মঙ্গলবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে যখন টেলিভিশনের পর্দায় . . .
আমাদের জাতীয় পতাকা
বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল রক্তস্নাত। ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে এবং হাজার হাজার মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয় আমাদের লাল-সবুজ পতাকাশোভিত বাংলাদেশের। চিরসবুজ আমাদের এই বাংলাদেশ। দেশের তরুণরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল স্বতঃস্ফূর্তভাবে। পতাকার সবুজ ও লাল রং ব্যবহারের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, সবুজ রং বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীক, বৃত্তের লাল রং উদীয়মান সূর্য, স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীক। বাংলাদেশ জাতীয় পতাকার এই রূপটি ১৯৭২ সালের ১৭ . . .
__._,_.___