রাজনীতিতে আবার খালেদার গোপালী/
রাজনীতিতে আবারও আলোচনায় 'গোপালী।' অর্থাৎ গোপালগঞ্জ। রবিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আবারও গোপালগঞ্জ জেলাকে নিয়ে মন্তব্য করায় এ নিয়ে হাস্যরসের শেষ নেই। কেউ বিষয়টি রসিকতার দৃষ্টিতে দেখছেন। আবার কেউ কেউ করছেন কঠোর সমালোচনা। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে 'গোপালী এখন ট্রেনে নেই...' এমন বক্তব্যে হতাশা ব্যক্ত করেছেন সাধারণ মানুষ। এর আগেও গত বছরের ডিসেম্বর মাসে পুলিশ সদস্য ও গোপালগঞ্জ জেলাকে নিয়ে দেয়া বক্তব্যে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন খালেদা জিয়া।
রবিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, 'গোপালীরা নাকি কপালি হয়।' হায়রে গোপালী! গোপালী এখন আর ট্রেনে নেই। গোপালীকে এখন ক্রেন দিয়ে টেনে তুলতে হবে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেয়া সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। ৫৭টি ভোটকেন্দ্রে শূন্য ভোট পড়েছে সে নির্বাচনে গঠিত সংসদ অবৈধ। আর এ নির্বাচনের পর যে সরকার গঠন করা হয়েছে তাও অবৈধ। তাঁর এ বক্তব্যের পর পরই নানা মহলে শুরু হয় সমালোচনা । কারো মতে, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন বক্তব্য মানায় না। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা ট্রেন মিস করিনি আপনারাই ভুল ট্রেনে উঠেছেন। আর জনগণ আপনাদের সেই ভুলের মাসুল দিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করব। আমাদের নিয়ে তাদের এত ভয় যে বিএনপি কোন কর্মসূচী দিতে পারে না। আমরা একটা সমাবেশ করতে চাই অথচ তারা অনুমতি দেয় না।
সম্প্রতি একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, 'আমি গোপালগঞ্জের হওয়ায় গর্বিত। এ জেলা নিয়ে যে যাই বলুক, কথায় আছে গোপালীরা কপালি হয়। বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের নাম শুনলে ওনার (খালেদা জিয়া) গায়ে জ্বালা ধরে। তাই এই জেলাকে নিয়ে তিনি যা ইচ্ছা তাই বলে যাচ্ছেন।'
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে রোডমার্চ ফর ডেমোক্র্যাসি কর্মসূচী ঘোষণা করেছিলেন খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক এই কর্মসূচীকে ঘিরে শুরু হয় ব্যাপক উত্তেজনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে খালেদা জিয়াকে তাঁর গুলশানের বাড়িতে অনেকটা অবরুদ্ধ করে রেখেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কর্মসূচীকে ঘিরে ক্ষুব্ধ খালেদা জিয়ার কণ্ঠে উচ্চারিত হয় গোপালগঞ্জের ব্যঙ্গাত্মক নাম। সেদিন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এক নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে বলেছেন, 'চুপ বেয়াদব কোথাকার। এই যে মহিলা আপনি এখন কথা বলছেন না কেন। এতক্ষণ তো অনেক কথা বললেন। দেশ কোথায়? গোপালী? গোপালগঞ্জ জেলার নামই বদলিয়ে দেব। গোপালগঞ্জ আর থাকবে না। মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচীতে বের হতে খালেদা জিয়াকে বাধা দেয়ার পর তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার এই মন্তব্যে সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকে, টুইটার, ব্লগ সহ রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা হাস্যরস এবং সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। ক্ষুব্ধ হন গোপালগঞ্জের মানুষ। এই বক্তব্যের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় সভা, সমাবেশ ও অবরোধ কর্মসূচী পালিত হয়।
পুলিশের উদ্দেশে খালেদা জিয়া সেদিন আরও বলেছিলেন, আপনার মেয়েরা এত ঝগড়া করে কেন? এই মেয়েরা ঝগড়া করছ কেন। কিসের জন্য এত কথা বল। চুপ থাক বেয়াদব কোথাকার। আপনাদের অফিসার কোথায়? এতক্ষণ তো অনেক কথা বললেন। মুখটা বন্ধ কেন। দেশ আজ কোথায় যাচ্ছে। এরা সবাই গোপালগঞ্জের। গোপালগঞ্জের নামই বদলে যাবে। গোপালগঞ্জ থাকবে না। যারা এসব করছে তাদের ওপর আল্লাহর গজব পড়বে।
__._,_.___