Banner Advertise

Thursday, December 22, 2011

[chottala.com] বাংলাদেশ-যু ;ক্তরাষ্ট্র ;ের সম্পর্কú 3; দূরত্ব!



বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে দূরত্ব!

মোহীত উল আলম | তারিখ: ২৩-১২-২০১১
 
বর্তমান বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিদ্যাবুদ্ধিতে এবং সামরিক শক্তিতে এক প্রবল দেশ। তার সঙ্গে তুলনায় বাংলাদেশ চুনোপুঁটি। তাই ১৯ ডিসেম্বর ২০১১-এর প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় রাহিদ এজাজের প্রতিবেদনে যখন বলা হলো ‘বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে দূরত্ব’ সৃষ্টি হয়েছে, তখন ব্যাপারটা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো, যদিও এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হওয়া আমার পক্ষে ‘আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর’ রাখার মতো।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, যদিও মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশের নানা অর্জন দেখে সন্তুষ্ট, কিন্তু তারা অসন্তুষ্ট হয়েছে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হওয়ায় (শ্রিংকিং স্পেস), বেসরকারি সংস্থাগুলোর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণনীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং তৃতীয়ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হচ্ছে কি না সেটা নিয়েও মার্কিন প্রশাসন উদ্বিগ্ন। কথাগুলো সম্প্রতি একটি চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসচিব হিলারি ক্লিনটন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন। আর ঢাকার মার্কিন দূত মজিনা জানিয়েছেন আরেকটি ব্যবসাসংক্রান্ত উদ্বেগের কথাও, আর সেটা হলো বাণিজ্যিক রূপরেখা চুক্তি বা টিটফা সইয়ের ব্যাপারটি। মজিনা জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সফরে নাও আসতে পারেন, যিনি অবশ্য মার্কিন ফার্স্ট লেডি হিসেবে ইতিমধ্যেই ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
হিলারি ক্লিনটনের গোস্সার দাম বাংলাদেশের কাছে অনেক বেশি। তাই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি চাইবে না যে মার্কিন প্রশাসন তাদের অসস্তুষ্টি দীর্ঘায়িত করুক। তবে বাংলাদেশ মার্কিন প্রশাসনকে খুশি রাখার জন্য যা কিছু করবে তার মধ্যে একটা বিরাট ‘কিন্তু’ আছে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিভিন্ন মাত্রায় বহু জটিলতা আছে এবং এই দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে জিনিসটা সচরাচর আমাদের দেশপ্রেমমূলক অনুভূতি ও স্বাজাত্যবোধে লাগে সেটা হচ্ছে এ ভয় যে বাংলাদেশ কোনো নতজানু নীতি গ্রহণ করছে কি না। সম্প্রতি তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে দুর্ভেদ্যতা ও টিপাইমুখের ওপর বাঁধ বসানোর ভারতীয় সংকল্পের একতরফা ঘোষণার কাছে বাংলাদেশকে অসহায় মনে হচ্ছে। এক বিশেষজ্ঞ সভায় সম্প্রতি উপস্থিত থেকে আমি জেনেছি, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে বাণিজ্য ঘাটতি আছে, তার চেয়ে অনেক বেশি নাকি আছে চীনের সঙ্গে, যদিও সে কথাটা আমরা তেমন করে আমলে আনি না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত। চীনের সঙ্গে বানিজ্য ঘাটতির ব্যাপারে আমরা রাও কাড়তে চাই না, কারণ, বক্রার্থে বলছি, যখন ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় সর্বতো সহায়তা দিয়েছিল তখন চীন ও আমেরিকা মিলে নতুন দোস্তি পাতানোর রাজনৈতিক গুটি চালাচালির জন্য পাকিস্তানকে দুই দেশের মধ্যকার ঘটক হিসেবে নির্বাচিত করেছিল।
পৃথিবীর সব দেশের মতোই মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েই তাদের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত। আফগানিস্তান বলেন, ইরাক বলেন, পাকিস্তান বলেন—সব দেশের প্রতি তাদের অনুসৃত নীতিমালা তাদেরই স্বার্থসংশ্লিষ্ট-বিষয়ক। কাজেই হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশে আসবেন না বা নাও আসতে পারেন, এ জন্য যেমন আমরা বিচলিত, তার চেয়েও বোঝা দরকার কী কী কারণে বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক আচরণে মার্কিন প্রশাসন তুষ্ট নয়। কোথায় কোথায় তাদের স্বার্থে আঘাত লাগল।
প্রথমে আসুক শ্রিংকিং স্পেসের কথা। শুনেছি বাংলাদেশ সরকার একটি সম্প্রচার নীতিমালা গ্রহণ করতে চাইছে, অর্থাৎ মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করতে চাইছে। সে জন্য মার্কিন প্রশাসনের উদ্বেগকে আমরাও যথোপযুক্ত মনে করি। সরকার এটা না করুক, সেটাই আমরা চাই। তবে এখানে যেকোনো একটি দেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং মার্কিন প্রশাসনের অন্য দেশের জন্য ধারণাকৃত ও নির্ধারিত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দুটো আলাদা জিনিস। বিশেষ করে বুদ্ধিতে এবং শক্তিতে চুনোপুঁটিসম দেশগুলোর জন্য মার্কিন প্রশাসনের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অর্থ হচ্ছে মার্কিন প্রশাসনের ইচ্ছানুযায়ী লক্ষ্যভুক্ত দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার চর্চা হচ্ছে কি না সেটা দেখা। আজ যদি বাংলাদেশের সব পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল এক স্বরে বলে যে বাংলাদেশে বিদেশি অর্থপুষ্ট বেসরকারি সংস্থাগুলো দারিদ্র্য দূরীকরণের পরিবর্তে দারিদ্র্যের পরিবর্ধন করেছে, তখন মার্কিন প্রশাসন থেকে মনে করা হবে যে বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। কারণ, মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি হলো বিদেশি-পুঁজি সন্নিবেশিত অরাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো বাংলাদেশের দারিদ্র্য দূরীকরণে নিবিষ্টমনে আর্তমানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে।
আমি একবার একটি দারিদ্র্য দূরীকরণসংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থার সুসজ্জিত শীতাতপনিয়ন্ত্রিত দপ্তরে বসে একটি পোস্টার নিরিখ করেছিলাম। তাতে বলা ছিল এ রকম কথা: আমি অভুক্ত ছিলাম, তুমি আমার কথা বলে আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে টাকা এনে এ দপ্তর সাজিয়েছ, নিজের ব্যবহারের জন্য পাজেরো জিপ কিনেছ। আমি শীতার্ত ছিলাম, তুমি আমার কথা বলে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে পাঁচতারকা হোটেলে থেকে সেভয় কাটের দামি স্যুট বানিয়েছ। আমি বন্যায় ভাসছিলাম, তুমি আমার কথা বলে বিদেশ থেকে টাকা সংগ্রহ করে বারিধারায় বাড়ি করেছ আর তোমার আন্তর্জাতিক সংস্থা তোমার কথা বলে নিউইয়র্কের সাবার্বে বাড়ি কিনেছে। তুমি এবং তোমার সংস্থা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমার পক্ষে গরম গরম কথা বলো, কিন্তু আমি এখনো সে ঢাকা শহরের উপকণ্ঠে রেললাইনের পাশের বস্তিতে কি শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ঋতুতে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাই, শীতে কাঁপি, আর অভুক্ত থাকি।
পোস্টারটি সাঁটানো ছিল ওই দপ্তরে এ জন্য যে যাতে ওই সংস্থার লোকজন নিজেদের বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকল এ বলে যে তারা ওই রকম করে না। কিন্তু শুধু স্মারক-পোস্টারে যদি চিঁড়া ভিজত বাংলাদেশ বহু আগেই দারিদ্র্যবিরহিত দেশে পরিণত হতো। কিন্তু বেসরকারি সংস্থাগুলোর এমনতর ব্যর্থতা মার্কিন প্রশাসনের মনোযোগ এড়িয়ে যেতে পারে, কারণ তারা ওই সংস্থাগুলোকে ব্যর্থ হিসেবে দেখতে চায় না।
হিলারি ক্লিনটনের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মান নিয়ে সংশয়ও বহু অতীতাশ্রয়ী কূটনৈতিক প্রশ্নের জটাজালে জড়িত। এ যুদ্ধাপরাধমূলক কর্মকাণ্ড যখন সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে, তখন মার্কিন প্রশাসনের, বিশেষ করে নিক্সন-কিসিঞ্জারের ভূমিকা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে। আগেই বলেছি এবং এটি এখন সর্বজনেও জ্ঞাত যে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ব্যগ্রতায় দূতিয়ালি হিসেবে পাকিস্তানকে নেক নজরে দেখার জন্য বাংলাদেশের গণমানুষের মুক্তিযুদ্ধকে অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে ছাঁটাই করে দিয়েছিল প্রথমত যুক্তরাষ্ট্র এবং দ্বিতীয়ত চীন। এবং আর্চার ব্লাডের নেতৃত্বে ঢাকায় মার্কিন কূটনৈতিক দপ্তরের বারবার সতর্কবাণী সত্ত্বেও নিক্সন-কিসিঞ্জার প্রশাসন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে মুখ ফিরিয়ে ছিল। সৈয়দ আনোয়ার হোসেন ব্লাডের সঙ্গে নিক্সন প্রশাসনের বিরোধকে মিউটিনি বা বিদ্রোহের সমপর্যায়ের বলে পর্যন্ত অভিহিত করেছেন। নভেম্বরের শেষের দিকে যখন পাকিস্তানের পরাজয় ঘনীভূত হয়ে আসে, ডা. মালিক যখন বারবার জেনারেল নিয়াজীর কাছে জানতে চাইছিলেন আত্মসমর্পণ করা যুক্তিযুক্ত হবে না কেন, যেটা করলে যখন এতগুলো লোকের নিছক প্রাণহানি বাঁচানো যেত, তখন নিয়াজীকে ইসলামাবাদ থেকে জানানো হয় আত্মসমর্পণ না করতে, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সপ্তম রণতরী এসে বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাবে এবং উত্তর দিক থেকে আক্রমণে নামবে চীনের পীত রঙের সেনারা। উপরন্তু ইয়াহিয়া আত্মসমর্পণের নির্দেশ প্রদানের পরিবর্তে ৩ ডিসেম্বর ভারতের ওপর উসকানিমূলক আক্রমণ চালায় এবং বাংলাদেশের ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
খুব সংগতভাবে এ প্রশ্ন আসবে, মার্কিন প্রশাসনের মিথ্যা আশ্বাসের ওপর ভর না করে পাকিস্তান যদি পরাজয় নিশ্চিত জেনে আত্মসমর্পণ করত তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের কর্মকাণ্ড খানিকটা হলেও কম হতো, নিদেনপক্ষে ১৪ ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যা সংঘটিত হতো না, যে হত্যা সংঘটনের পেছনে এখন গ্রেপ্তারকৃত বা গ্রেপ্তারের বাইরে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণের দালালিক এবং দালিলিক প্রমাণ আছে বিস্তর। হিলারি আইনের ছাত্রী জানি, ইতিহাস তাঁর কতটুকু পড়া আছে জানি না, কিন্তু ইতিহাসের ছোট ছোট আবর্তনের তলায় তলায় লম্বা লম্বা আবর্তন কাজ করে এবং সেভাবে দেখলে বোঝা যাবে ৪০ বছর আগে মার্কিন প্রশাসন যেমন নিজস্ব স্বার্থের কারণে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করে দেখে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও হত্যাকাণ্ডকে উসকে দিতে সাহায্য করেছিল, ঠিক ৪০ বছর পর আরেকটি মার্কিন প্রশাসন যুদ্ধাপরাধ বিচারের আন্তর্জাতিক মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে যদি যুদ্ধাপরাধের বিচার করাকে প্রলম্বিত করার প্রচেষ্টা নেয়, তাহলে বুঝতে হবে বিশ্বব্যাপী যে গণবিরোধী ভূমিকা পালন করার জন্য মার্কিন প্রশাসন যুগ যুগব্যাপী খ্যাত, তার থেকে তারা এক বিন্দুও বিচ্যুত হয়নি। তাই ৪০ বছর আগে তাদের দোসর পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশের যেসব লোক এবং দল বাঙালি নিধনে মত্ত ছিল, ঠিক তাদেরই পক্ষে যেন ধামা ধরতে আবার ৪০ বছর পরে মার্কিন প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে দেখছি।
আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে অবশ্য অতীতাশ্রয়ী কোনো সিদ্ধান্ত ধরে এগোনো যায় না। তাই আগের শত্রু, পরে মিত্র এবং আগের মিত্র পরে শত্রুতে রূপান্তরিত হতে সময় লাগে না। তাই মার্কিন প্রশাসন হয়তো এখন আমাদের সরকারের বন্ধু-প্রশাসন এবং তাই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে চিড় ধরলে, কিংবা হিলারি না এলে আমাদের সরকারের বিচলিত হওয়ার কারণ আছে।
কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের যদি এ অভিজ্ঞতা হয় যে বেসরকারি দারিদ্র্যসংশ্লিষ্ট সংস্থার বেশির ভাগই তাদের আরাধ্য কাজ করতে পারছে না, যদি এ অভিজ্ঞতাও হয় যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্তর্জাতিক আইনসম্মতভাবে করে ফেলা দরকার এবং শ্রম আইনের ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসন প্রদত্ত শর্তগুলো মেনে চলা বাংলাদেশের পক্ষে কঠিন, তার ফলে এটা নিশ্চিত হবে যে বাংলাদেশ সরকার তার ভূমিকা সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে পরিষ্কার, কিন্তু এতে যদি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন গোস্সা করেন এবং বাংলাদেশ সফর থেকে বিরত থাকেন, তাহলে তাঁর পক্ষে ভূমিকা গ্রহণ করা কি নতজানু পদক্ষেপ হবে না?
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মার্কিন প্রশাসনের চোখরাঙানি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আটকে রাখতে পারেনি, ঠিক সে রকম মার্কিন প্রশাসনের বর্তমান বিরক্তিসূচক মনোভাব জনসমর্থিত একটি সরকারকে তার নিজস্ব কর্মকাণ্ড থেকে বিচ্যুত রাখতে পারবে না।
মোহীত উল আলম: সভাপতি, ইংরেজি, ইউল্যাব, ঢাকা।
mohit_13_1952@yahoo.com


__._,_.___


[* Moderator's Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___