Banner Advertise

Monday, October 10, 2011

RE: [chottala.com] SAUDI ARABIA HAS NO RIGHTS TO INERFERE IN WARCRIME TRIAL !!!!!!!!!



Dr. Manik
Please also read this...
http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=206005

Bangladeshi Govt. failed to send any peace envoy to Victim's family to ask for Pardon for last four years. 
 
Only communicating with egyptian embassy was not enough. 
 
 

To: khalidhasan@hotmail.com
CC: shah.mahmood@navy.mil; sonarbangladesh@yahoogroups.com; guhasb@gmail.com; serajurrahman@btinternet.com; shahadathussaini@hotmail.com; khondkar.saleque@gmail.com; srbanunz@gmail.com; veirsmill@yahoo.com; chottalasultan@yahoo.com; sayfaldin@aol.com; sajjadur3@gmail.com; alapon@yahoogroups.com; chottala@yahoogroups.com; mohiuddin@netzero.net; anis.ahmed@netzero.net; Ovimot@yahoogroups.com; WideMinds@yahoogroups.com; nurunnabi@gmail.com; nizam.nrb@gmail.com; shahanara.rahman@yahoo.com; drmohsinali@yahoo.com; abdul_momen@hotmail.com; khabor@yahoogroups.com; eastsidepc71@gmail.com
From: manik195709@yahoo.com
Date: Mon, 10 Oct 2011 09:52:47 -0700
Subject: [chottala.com] SAUDI ARABIA HAS NO RIGHTS TO INERFERE IN WARCRIME TRIAL !!!!!!!!!

 
Dear All,
 
Barberic Saudis executed eight Bangladeshi muslims, more are in waiting lists to be executed. We don't have any language to condemn this type of iron-aged barberic act ! If it happened in India , certain elements in this forum would have outcried vigorously. Shame on you guys being so numb and silent in this matter. Now Saudi Arabia has no rights to interfere into the war crime trial in Bangladesh, Please read the article below and express sympathy to the devastated families.
 
Respectfully,
Dr. Manik
 
 
দেশের সব বিউটি পার্লারের সেবা কক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরা অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেb হাইকোর্ট
সৌদি আরবে শিরশ্ছেদ হওয়া বাংলাদেশি যুবক আবুল হোসেনের স্বজনদের আহাজারি। ছবিটি গতকাল ফরিদপুরের মটকচর গ্রাম থেকে তোলা। ছবি : নির্মলেন্দু চক্রবর্তী শংকর
'ওই দ্যাশে ক্যারে পাডাইছিলাম?' কালের কণ্ঠ ডেস্ক
তাঁরা আটজনই গরিব ঘরের সন্তান। মা-বাবা সুখের আসায় সহায়-সম্পত্তি বেচে, কেউবা বন্ধকে কর্জ করে ছেলেকে পাঠিয়েছেন সৌদি আরবে। সেখানে এক মিসরীয়কে খুনের ঘটনায় জড়িয়ে যান তাঁরা। শিরশ্ছেদের রায় নিয়ে পাঁচ বছর ধরে কারাগারে কাটিয়েছেন দুঃস্বপ্নের প্রহর। পরিবারগুলো তাদের বাদবাকি টাকাপয়সা খরচ করে চেষ্টা চালিয়ে গেছে তাঁদের বাঁচাতে, আশায় ছিল কোনো না কোনো উপায়ে রক্ষা ফেয়ে ফিরে আসবেন তাদের সন্তান। কিন্তু গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর প্রকাশ্যে বর্বর কায়দায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তাঁদের। খবর শুনে আর্তনাদ ওঠে পরিবারগুলোতে। কিশোরগঞ্জের এক মা চিৎকার করে বলে ওঠেন, 'জল্লাদের দ্যাশে আমার সুমনরে কেরে পাডাইছলাম?' ওই আট হতভাগার বাড়ি ঘুরে শোকের এই খণ্ডচিত্র তুলে ধরেছেন আমাদের প্রতিনিধিরা।
'মা, ঔষধ খাইয়েন, নাইলে বাঁচবেন না' : 'মা, ঔষধ খাইয়েন, নাইলে বাঁচবেন না। আপনি না বাঁচলে দেশে আইসা কারে দেখমু? টাকা না থাকলে হাঁস-মুরগি বিক্রি কইরা হইলেও ঔষধ কিন্না খাইয়েন।' গত শুক্রবার সৌদি আরবে শিরশ্ছেদের মাধ্যমে বর্বর কায়দায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কয়েক ঘণ্টা আগে এসব কথা মাকে বলেছিলেন কুমিল্লার দাউদকান্দির পিপিয়াকান্দির ফারুক। বাবা জামাল উদ্দিন মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ায় কথা বলতে না পেরে ফোনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফারুক। গতকাল রবিবার দিনভর এসব কথা বলে মাতম করছিলেন মা সাজেদা বেগম।
গতকাল সকালে হাঁটুপানি ডিঙিয়ে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা পিপিয়াকান্দিতে ফারুকের
বাড়িতে গিয়ে দেখেন, সেখানে মানুষের ভিড়। শনিবার বিকেল পর্যন্ত মা-বাবা জানতেন না ফারুক আর বেঁচে নেই। রাতে সাংবাদিকরা মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে পরিবারের সবাই কান্নায় ভেঙে পড়ে। তাঁর মা শুধু বলেন, 'এখন আর কে বলবে মা, তুমি ঔষধ খেয়ো...।'
ফারুকের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, 'জমি বন্ধক রেখে, সুদে এক লাখ টাকা নিয়ে বড় ছেলে ফারুককে সৌদি আরবে পাঠিয়েছিলেন সুদিনের আশায়। জমি গেল, টাকা গেল, এখন সেই ছেলের লাশও পাব না। সরকারের কাছে দাবি, আমার ছেলের লাশটি এনে দিন। তাকে আমরা দাফন করব।'
জামাল উদ্দিনের পাঁচ ছেলের মধ্যে ফারুক সবার বড়। দেশে থাকতে তিনি ট্রাক্টর চালাতেন। মা জানান, সাত বছর চার মাস আগে ফারুক ক্লিনার ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে যান। প্রথম তিন বছরে তিন ৫০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর ঘটনার শিকার হন তিনি। দাউদকান্দির মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শামসুল হক সরকার বলেন, 'ফারুক খুব ভালো ছেলে ছিল। সময়ের কারণে তারা নিঃস্ব। পরিবারটিকে সহায়তার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।'
পরিবারের লোকজন বলেছে, 'সৌদি আরবে ওরা ১১ বাংলাদেশি একই কক্ষে থাকত। এর মধ্যে ৮-৯ জন মিলে এক মিসরীয়কে হত্যা ও চুরির অপরাধে সবাইকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। সে জেলখানা থেকে প্রায়ই মাকে ফোনে বলত, মা খুনের ঘটনার সঙ্গে আমি মোটেই জড়িত নই। তাই অবশ্যই মুক্তি পেয়ে তোমার কাছে ফিরে আসব।' বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, 'ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে ঢাকায় ও সৌদি আরবে যোগাযোগ করে প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। এ মামলার অন্য আসামি টাঙ্গাইলের শফিকুল ইসলামের ভাই শাহজাহান মিয়ার উদ্যোগে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদবির এবং সৌদি আরবে উকিল রেখে মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে আমরা এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি।'

'জল্লাদের দ্যাশে কেরে পাডাইছলাম সুমনরে'
'জল্লাদের দ্যাশে আমার সুমনরে কেরে (কেন) পাডাইছলাম? এইডা কেমন দ্যাশ? কোরআন-হাদিসে তো মানুষরে মাফ কইর‌্যা দেওনেরও আইন আছে। সৌদি বাদশাহর কাছে আমারে লইয়া যাও, আমি তারে এই কতাডা জিগাইয়াম। একজনের জীবনের লাইগ্যা আট মায়ের বুক খালি কইরা তার কী লাভ অইছে।' বিলাপে-আহাজারিতে সৌদি বিচারব্যবস্থার প্রতি এভাবেই ধিক্কার জানান কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার হোসেন্দি ইউনিয়নের কুমারপুর গ্রামের সুমনের মা আসিয়া খাতুন (৫৫)।
'আমার পুতেরে মারনের সময় পুতের ভিতরটা কী করছিল। এর চেয়ে আমার কোলে রোগে-শোকে কষ্ট কইরা মরত, তবু আমার মনে কোনো দুঃখ থাকত না। যারে আমি কোনো দিন মারি নাই, তারে কিনা ভিন দেশের মানুষ হাজার হাজার মানুষের সামনে খুন করল'_বলে বিলাপ করতে করতে জ্ঞান হারান আসিয়া।
পুরো কুমারপুর গ্রামের মানুষ সৌদি বিচারব্যবস্থার নিষ্ঠুরতায় বিস্মিত হয়েছে। গতকাল সকালে গিয়ে দেখা যায়, পুরো গ্রাম শোকে কাতর ও বিক্ষুব্ধ।
সুমনের বাবা আবদুল হাই (৭২) পাথরের মতো উঠানে বসে আছেন ভোর থেকে। আর বিড়বিড় করে বলছেন, 'আপনেরা সুমনের লাশটা ফিরাইয়া আননের ব্যবস্থা করেন, তাহলেই আমার বুকটা ঠাণ্ডা অইব।'
জ্ঞান ফিরলে সুমনের মা আসিয়া বলেন, 'শুক্রবার বিকেল ৩টায় ছেলের সঙ্গে ফোনে শেষবারের মতো কথা হয়। সুমন আমাকে বলেছিল ছোট ভাইবোনকে দেখে রাখার জন্য। তার জন্য মন খারাপ করতে নিষেধ করেছিল। শরীরের যত্ন নেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু তাকে যে মেরে ফেলা হবে, তা বলেনি। পরে টেলিভিশনের খবর শুনে জানতে পারি।'
পরিবার জানায়, সুমন সৌদি আরবে গাড়ি চালাতেন। তাঁর কাজ ছিল রিয়াদে একটি কম্পানির মালামাল পরিবহন করা। ওই মিসরীয়কে হত্যায় তিনি জড়িত ছিলেন না। তাঁকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
সুমনের চাচি লিজা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, বৃহস্পতিবার তাঁকে ফোন করে সুমন জানিয়েছিলেন, সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি আবেদন করেছিলেন, তাঁকে যেন তিন মাসের ইনজেকশন দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দেশের মাটি, মানুষ ও আত্মীয়স্বজনকে দেখে মরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সুমন বলেছিলেন, এক ধরনের ইনজেকশন আছে, কারো শরীরে প্রয়োগ করলে সে তিন মাস পর মারা যাবে। তবে লিজা জানান, শুক্রবার ফোনে সুমন প্রথমে তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানান, তাঁদের আজ মাথা কাটা হবে। চাচির কাছ থেকে কান্নাকাটি করে বিদায় নেন সুমন। অনুরোধ করেন এ খবর মা-বাবাকে না জানাতে। সুমন কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন তাঁর মৃত্যুর খবর যখন জানাজানি হবে, তখন অসুস্থ মা-বাবা যেন আরো অসুস্থ না হয়ে পড়েন, সেদিকে খেয়াল রাখতে। ওষুধপত্র এনে রাখতে বলেছিলেন তিনি।
পরিবারের লোকজন জানায়, পরিবারের বড় ছেলে ছিল সুমন (২৭)। ১৮ বছর বয়সে সব জমি বন্ধক দিয়ে তাঁকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। শুরুর দিকে মাসে মাসে টাকা পাঠাতেন। কিন্তু ওই টাকায় জমি ছাড়াতে পারেননি তাঁর বাবা। সুমনের মা জানান, ছেলের কাছ থেকে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড হওয়ার খবর পাওয়ার পর ছেলেকে বাঁচাতে তিনি কমপক্ষে ২০০ বার ঢাকা গিয়েছেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসে দৌড়াদৌড়ি করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীনের সঙ্গে দেখা করে ছেলেকে বাঁচানোর আবেদন করেছিলেন। এসব করতে গিয়ে তাঁদের অবশিষ্ট সহায়-সম্পত্তিও বিক্রি করে দিতে হয়েছে।
সুমনের বাবা আবদুল হাই জানান, ছয় মাস ধরে তাঁর চাচাতো ভাই আবদুল মান্নান ও মুক্তিযোদ্ধা সাবেক ইউপি মেম্বার ইউনুছ আলী রঙ্গু মিয়া তাঁদের ভরণপোষণ করছেন। সুমন মাদ্রাসায় দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলেন। গ্রামের লোকজন জানায়, সুমন খুবই শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিলেন। এলাকার কোনো দলাদলি বা হাঙ্গামায় নিজেকে জড়াতেন না।

টাঙ্গাইলের পাঁচ বাড়িতে মাতম
'তুমি ভালো থেকো মা। ঠিকমতো ওষুধ খেয়ো। আমার জন্য কান্না কইরো না। দোয়া কইরো। পরে আবার মোবাইল করব।' গত শুক্রবার দুপুরে সর্বশেষ মাকে মোবাইল ফোনে এ কথা বলেন সৌদি আরবে শিরশ্ছেদ হওয়া টাঙ্গাইলের চার যুবকের একজন মাসুদ হোসেন। মা তাঁর জন্য দোয়া করেছেন আর আশায় ছিলেন কখন মাসুদ আবার মোবাইল করবেন। কিন্তু সে আশা তাঁর চিরদিনের জন্য শেষ হয়ে গেছে। গতকাল রবিবার সকালে কালিহাতী উপজেলার পূর্বাসিন্দা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাসুদের বাড়িতে লোকজনের ভিড়। ঘরের বারান্দায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে আছেন মা রোকেয়া বেগম। তাঁর মাথায় পানি ঢালছে প্রতিবেশীরা। কেউ তেমন কোনো কথা বলছে না। পাশের মাদ্রাসায় মাসুদের আত্মার শান্তির জন্য কোরআন খতম দেওয়া হচ্ছে। রান্নাঘরে কাটা হচ্ছে মুরগির মাংস; গরিব মানুষকে খাওয়ানো হবে। পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন মাসুদের চাচা আবদুস সামাদ। তিনি জানান, দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মাসুদ ছিল দ্বিতীয়। গ্রামের স্কুলে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর দারিদ্র্যের কারণে আর পড়তে পারেননি। ৯ বছর আগে ঋণ করে মাসুদ সৌদি আরবে যান। তিন বছর সেখানে কাজ করার পর খবর আসে মাসুদকে জেলে দেওয়া হয়েছে। বিদেশ যাওয়ার পর তিনি আর দেশে আসেননি। তবে মাঝেমধ্যেই মোবাইল ফোনে সবার সঙ্গে কথা বলতেন।
জ্ঞান ফিরে পেয়ে উঠে বসে মাসুদের মা বলেন, 'আমার বাবা ফোন কইরা সব সময় বলতো, মা, তোমরা আমার জন্য দোয়া কইরো। তোমাদের দোয়াতে আমি বাঁচতে পারি। কিন্তু ও আর বাঁচল না।' এই বলে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর আবার বলেন, 'মাসুদ বলতো, মা, আমার আত্মায় পানি নাই, আত্মা ঘুড্ডির মতো খালি ওড়ে।' তারপর বারবার তিনি মাসুদের সঙ্গে সর্বশেষ যে কথা হয়েছিল সেগুলো বলতে থাকেন।
মাসুদের ছোট ভাইও সৌদি আরবে থাকেন। তিনি গত শনিবার মোবাইল ফোনে কথা বলেছিলেন। মাসুদকে শিরশ্ছেদ করার কথা বললেও লাশ দেশে পাঠানো হবে কি না, এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেননি। তবে বাড়ির সবাই লাশ ফেরত চেয়েছেন। প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম বলেন, 'ছেলে হিসেবে মাসুদ ভালোই ছিল। সেখানে (সৌদি আরব) কোন অবস্থায় পড়ে খুনের ঘটনায় জড়িয়েছিল, তা বলা মুশকিল। তবে সে চুরি বা ডাকাতি করবে_এটা বিশ্বাস হয় না।' পাশের বাড়ির আবদুল হালিম বলেন, 'মাসুদের বাবা গরিব মানুষ। উপার্জনের জন্য ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছিল। ছোটবেলায় তার কোনো খারাপ আচরণ দেখি নাই।'
মাসুদের বাড়ির মতো একই অবস্থা টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার বারপাখিয়া গ্রামের সুমন মিয়ার (২৫) বাড়িতে। মা জিলিমন বেগম পুত্রশোকে পাগলপ্রায়। বারবার সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ছিলেন। তাঁর মাথায় পানি ঢালা হচ্ছিল। একটু সুস্থ হলেও কোনো কথা বলতে পারছিলেন না। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
সুমন মিয়ার নানা ধমক আলী ও মামা আবু বকর জানান, তিন ভাইয়ের মধ্যে সুমন ছিলেন সবার বড়। বাবা মিলন মিয়া ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে কর্মরত। সুমন ২০০৪ সালে সৌদি আরবে যান। গত বছর সুমনের বাবা ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। ছুটি শেষে আবার চলে যান। গত বুধবার সর্বশেষ সুমনের সঙ্গে কথা হয়। তখন তিনি মামা আবু বকরকে জানান, শিগগিরই তাঁর শিরশ্ছেদ করা হবে। তাঁর জন্য দোয়া করতে বলা হয়। শুক্রবার তাঁরা ভয়াবহ খবরটি শুনতে পান।
গ্রামে থাকতে একটু দুষ্ট প্রকৃতির থাকলেও সুমন মানুষ খুন করবে_এটা কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না। তাঁর (সুমন) মা কোনোভাবে বুঝতে চাচ্ছেন না যে সুমন আর কোনোদিন তাঁকে মা বলে ডাকবে না। সুমনের মৃত্যুর খবর শুনে এলাকার লোকজন তাঁদের বাড়িতে ভিড় করছে। তারা শেষবারের মতো সুমনের লাশ দেখতে চায়। সে জন্য পরিবারের লোকজন লাশ আনার দাবি জানায় সরকারের কাছে।
শিরশ্ছেদ করা আরেক যুবক মামুনের বাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের আবদুল্লাপাড়া গ্রামে। সে মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে। মামুন দুই ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। বড় ভাই হারুন অর রশীদ জানান, মামুন ছিলেন সবার আদরের। তাঁদের বাড়ির অবস্থা ভালো নয়। জমিজমা বিক্রি ও ঋণ করে তাঁকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছিল। ২০০৭ সালে সর্বশেষ তিনি দেশে আসেন। ফিরে যাওয়ার কিছুদিন পরেই তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই মা হাজেরা বেগম (৫৫) বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন এবং 'মামুন, মামুন' বলে চিৎকার করে তাঁর ছেলেকে ফেরত চাচ্ছেন। হারুন অর রশীদ বলেন, 'এভাবে ওর মৃত্যু হবে, ভাবতে পারি না। গ্রামে থাকতে কখনো সে কোনো খারাপ কাজ করেনি। ভালোভাবে থাকার চেষ্টা করেছে। বিদেশে গিয়ে কেন সে খুন করল, জানতে পারলাম না। একদিকে ঋণ, অন্যদিকে ভাইয়ের মৃত্যু_সহ্য হচ্ছে না।'

লাশ আইনা দিবা কি না কও
টাঙ্গাইলের আরেকজন সখীপুরের শফিক আল ইসলাম ওরফে শফিক। তাঁর গ্রাম হতেয়ার ভাতকুরাচালায় গতকাল রবিবার গিয়ে দেখা যায়, মা রওশনারা ছেলের ছবি বুকে নিয়ে বিলাপ করছেন আর জনে জনে বলছেন শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ছেলের সঙ্গে তাঁর শেষ কথাগুলো, 'মাগো, কত দিন হয় তোমাকে দেখি না। তোমার হাতের রান্না খাই না। মাগো, তুমি আর চিন্তা করো না। ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করো। আমার জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করো। তোমার দোয়ায় আমি ছাড়া পাব। মাত্র তো আর কয়টা দিন। ছাড়া পেয়ে ঈদের পর বাড়ি এসে তোমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাব।'
গত শনিবার শফিকের শিরশ্ছেদের খবর বাড়িতে পেঁৗছালে আর্তনাদ ওঠে। ৭০ বছরের বৃদ্ধা মা রওশন আরা যে কাউকে কাছে পেলেই চিৎকার করে বলছিলেন, 'তোমরা আমার সোনার বাবারে আইনা (এনে) দিবা কি না কও। আমার বাবার লাশ আমার বুকে আইনা দিবা কি না কও। একবার বাবার লাশ দেখে মরবার চাই।' ৮০ বছরের বৃদ্ধ বাবা খোয়াজ উদ্দিন যেন বাকরুদ্ধ। শফিকের বড় বোন লালভানু চিৎকার করে বলেন, 'আমার ভাইরে দেশে পাঠাবার কথা বলে দস্তখত নিয়ে ওরা আমাদের সর্বনাশ করল।' প্রতিবেশী ডি এম আলাউদ্দিন বলেন, 'ছোটবেলা থেকেই একজন ভালো ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে এলাকায় শফিকের সুনাম ছিল।' স্থানীয় ইউপি সদস্য কমলা বেগম বলেন, 'শফিক বিনয়ী ও ভদ্র স্বভাবের ছেলে ছিল। সে ডাকাতি ও খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত হতে পারে, এটি আমরা বিশ্বাস করি না।'
শফিক তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে চতুর্থ। দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে তাঁকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। পাঁচ বছর পর দেশে আসেন। কিছুদিন পর ফের তিনি সৌদি আরবে চলে যান। সেখানে এক বছর কাজ করার পর ওই ঘটনায় পাঁচ বছর কারাগারে ছিলেন শফিক।

ফরিদপুরের হতভাগ্য মতিয়ার আর আবুল
ফরিদপুরের দুই যুবক। সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের নারায়ণপুর (কৃষ্ণনগর) গ্রামের মৃত শহীদ খানের মেজ ছেলে মতিয়ার রহমান খান (২৮) এবং জেলার সদরপুর উপজেলার মটকচর গ্রামের মৃত আহমদ বিশ্বাসের ছোট ছেলে আবুল হোসেন বিশ্বাস (৩০)। গতকাল রবিবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে মতিয়ারের বাড়ির উঠানের মাটিতে দুই হাত চেপে মা সুফিয়া কেঁদে কেঁদে বলছেন, 'আমার পাখির কী হইছে? আমার সালমান শাহ কোথায়? তার জীবন কি ভিক্ষা দেয়নি? তোরা কথা বলছিস না কেন?' মায়ের বুকফাটা আহাজারিতে তাঁকে ঘিরে থাকা নারী-পুরুষের চোখ ভিজে ওঠে। কেউ তাঁকে তালের পাখা দিয়ে বাতাস দিতে থাকেন, কেউ কেউ তাঁর মাথায় তেল মেখে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর কেউ কেউ বলছেন, 'ধৈর্য ধরুন। আল্লাহকে ডাকুন...।'
মতিয়ারের ছোট ভাই দীন ইসলাম জানান, বড় ভাইয়ের চেহারা দেখতে অবিকল নায়ক সালমান শাহের মতো ছিল। তাই আদর করে মা তাঁকে সালমান শাহ বলতেন। তিনি জানান, ২০০৫ সালে এসএসসি পাস করে মতিয়ার পরের বছর সৌদি আরবে যান। জমি বিক্রি করে তাঁকে পাঠানো হয় সুখের আশায়। এরপর দীন ইসলাম ধরা গলায় অনেক কষ্টে বলেন, 'রিয়াদে সালটুনিক নামের এক কম্পানিতে মতিয়ার ক্লিনার পদে কাজ নেন। প্রথম বছর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। পরে যোগাযোগ অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে বাবা মারা যান। কিন্তু ভাই দেশে আসতে পারেননি। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে মতিয়ার ছিলেন দ্বিতীয়। অবিবাহিত ছিলেন। দীর্ঘদিন পর যোগাযোগ হলে তিনি তাঁর বিপদের কথা জানান। দীন ইসলাম জানান, ভাইসহ অন্যদের জীবন বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়। ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেও আবেদন জানানো হয়। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেল গত শুক্রবার। দীন ইসলাম বলেন, 'কারাগার থেকে মতিয়ার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতেন। তাঁদের প্রাণ বাঁচানোর আর্তি জানাতেন। আমরা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলতাম, সরকার চেষ্টা করছে। বাকি সব আল্লাহর হাতে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তিনি ফোন করে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। মা রাতের খাবার খেয়েছেন কি না জানতে চান। নামাজ পড়ে তাঁর জন্য দোয়া করতে অনুরোধ করেন। এটিই ছিল স্বজনদের সঙ্গে তাঁর শেষ কথা।' বড় ভাই আকমাল খান বলেন, 'শেষবারের মতো ভাইকে দেখতে পেলাম না, তার লাশটা কি পাওয়া যাবে না?'
গতকাল দুপুরে সদরপুরের মটকচর গ্রামের আবুল হোসেনের ভগি্নপতি আবু ইউসুফ খলিফার বাড়িতে চলছিল তাঁর মা আর ছয় বোনের আহাজারি। আবু ইউসুফ জানান, ২০০৩ সালে বিয়ে করেন আবুল হোসেন। তাঁর একমাত্র সন্তান মিন্টু (৮) দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। ২০০৫ সালে ২৫০ রিয়াল বেতনে ক্লিনার পদে চাকরি নিয়ে সৌদি আরবে যান। মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তাঁর কারারুদ্ধ হওয়ার সংবাদ দেশে এলে তাঁর স্ত্রী তাসলিমা সন্তান মিন্টুকে ফেলে রেখে অন্যত্র বিয়ে করেন। সেই থেকে মিন্টু নানার বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করছে। মিন্টু প্রায়ই কেঁদে বলত, 'আমি বাবার কাছে যাব।' গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দুলাভাইয়ের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয় আবুল হোসেনের। ফোনে তাঁকে জানান, কারাগারে তাঁদের সবার মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করা হয়েছে। কখন কী হয়। তাঁদের জন্য দোয়া করতে বলে পাঁচজন এতিমকে খাওয়াতে অনুরোধ জানান আবুল হোসেন।
গত শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে কারাগার থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক বাংলাদেশি ইউসুফকে জানান, তাঁদের সবাইকে পুলিশ কারাগার থেকে নিয়ে গেছে। সন্ধ্যায় ফের ফোন করে তিনি জানান, সেই ভয়ানক খবরটি। তিনি জানান, এর পর থেকে আবুল হোসেনের মা কমেলা খাতুন প্রায় নির্বাক হয়ে গেছেন। মাঝেমধ্যে আর্তনাদের স্বরে বলে ওঠেন, 'এই দেখার জন্য কি আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন?'
প্রতিবেদনটির তথ্য




__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___