Hello, Please read an interesting article on her recent visit in Canada and her press secretary's grand uncomparable lies. Here is the link: Please read from blog (with pictures, youtube link and many relevant links): প্রধানমন্ত্রীর কানাডা সফরঃ মিথ্যা কত প্রকার ও কি কি এ্যাডভোকেট নয়ন খান | | এমন নির্জলা মিথ্যাচার কেমন করে একটা সভ্য দেশের সর্বোচ্চ স্থান থেকে হতে পারে? প্রধানমন্ত্রীর তথ্যসচিব কানাডায় এসে শিখিয়ে গেছেন মিথ্যা কাহাকে বলে আর কত প্রকারই বা তা হতে পারে!
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৮ মে বুধবার কানাডায় একান্তই পারিবারিক সফরে এসেছিলেন। সাথে নিয়ে এসেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, একজন উপদেষ্টা, সামরিক সচিব, প্রেস সচিব সহ মাঝারী সাইজের এক লাটবহর। টরন্টোর অদূরে ছোট এক শহর অশোয়ার কোয়ালিটি ইন হোটেলে আঠারোটা রুম ভাড়া করে প্রধানমন্ত্রী মেয়ে জামাই নাতি-নাতনীদের সময় দেন। ১/১১'র সময় যারা ক্ষমতায়ে থেকে 'সততা'র গুটি দাবড়িয়ে বেড়িয়েছেন, তারাও এরকম চুপি চুপি এসেছিলেন। শুধু আসেনই নি, এসব দূরদর্শীরা টরন্টোর আভিজাত্য এলাকায় নগদ ডলার দিয়ে বাড়ি কিনে ভবিষ্যতের পথটিও নিশ্চিত করে গিয়েছিলেন। যাহোক, ওসব কথা থাক।
কানাডা থেকে প্রকাশিত এক অনলাইন পত্রিকা জানায়, টরন্টোর পিয়ারসন এয়ারপোর্টে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে কানাডাস্থ বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম. ইয়াকুব আলী, শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, জামাতা খন্দকার মাশরুর হোসাইন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা। আর বিএনপি-যুবদলের নেতা কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। দেখিয়েছে কালো পতাকা।
তাঁর পুরো সফরটিই ছিল লুকোচুরিতে ভরপুর। কানাডা আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অংগ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যখন ফুলের তোড়া নিয়ে আগমন গেটে অপেক্ষমান, শেখ হাসিনা তখন গোপনে বহির্গমন পথে কানাডায় প্রবেশ করেন। কোন দেশের সরকার প্রধানের এরকম লজ্জাজনক আগমন কানাডায় অতীতে ঘটেছে কিনা তা জানতে আমাদেরকে ইতিহাসের ছাত্রের কাছে ধর্ণা দিতে হবে। আর প্রধানমন্ত্রীকেই বা দোষ দিব কিসে? তিনি যেখানেই গেছেন কালো পতাকা, বিক্ষোভ তাঁর পিছু ছাড়েনি।
কানাডা আওয়ামী লীগকে একরকম অন্ধকারে রেখে হাসিনা সদলবলে অশোয়ার এক হোটেল কোয়ালিটি ইনে অবস্থান নেন। প্রথমে বলা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী কানাডার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলবেন। কথা বলবেন কিভাবে তাঁর পিতৃহত্যাকারী নূর চৌধুরীকে দেশে ফেরত এনে ফাঁসির রায় বাস্তবায়ন করা যায় ইত্যাদি নিয়ে। কিন্তু তার কোনটাই এ সফরে সাধিত হয়নি। বরঞ্চ প্রধানমন্ত্রী কানাডার উপর বেশ চটে গেছেন বলে মনে হয়। কানাডার বহুল প্রকাশিত মেট্রোনিউজ লিখেছে, শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারও দেননি। এর কারণ হয়তোবা কানাডার মূল ধারার পত্রিকাগুলো তাঁর আসার আগপিছে কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের মানবাধিকার লংঘনের সচিত্র প্রতিবেদন ও ডঃ ইউনুস নিয়ে কয়েকটি নিবন্ধ প্রকাশ করে। প্রবাসী আওয়ামীলীগারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটিও অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে সারা হয়। মাত্র কয়েকঘন্টার নোটিশে জানানো হয় যে, ২২মে সংবর্ধনা দেয়া হবে। স্থানটি নির্ধারিত হয় নূর চৌধুরীর বাসা থেকে মাত্র ১৫ মিনিটের দুরত্বে। শেখ হাসিনা বাইরে একদল প্রবাসীর বিক্ষোভ ও কালো পতাকা পরিবেষ্টিত টরন্টো মেট্রো কনভেনশন সেন্টারের এক হল রুমে আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে কানাডাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, কানাডা যদি খুনী ও যুদ্ধাপরাধীদের অভয়ারণ্য হয়, তাহলে বাংলাদেশের সব খুনী ও যুদ্ধাপরাধীদেরকে আমরা এখানে পাঠিয়ে দিব। একজন প্রধানমন্ত্রী এরকম কাঁচা কথা কিভাবে বলতে পারেন সে চিন্তাই আজ কানাডিয়ান প্রবাসীদেরকে ভাবিয়ে তুলছে। বাবার হত্যাকারী আর দেশের স্বার্থ এক করে ফেললে প্রবাসীদের দুঃখের সীমা থাকে না। উল্লেখ্য, কানাডিয়ান আইনে মৃত্যুদন্ড অবৈধ। তারা কোন অপরাধীকেই যেদেশে মৃত্যদন্ড নিশ্চিত সেদেশে পাঠাতে পারেনা।
আগেই বলেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অশোয়ার শহরের কোয়ালিটি ইনে হোটেলে অবস্থান করেন। গত ২১ মে সময় দুপুর ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কোয়ালিটি ইনে হোটেলের সামনে কানাডা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়সাল চৌধুরী, মাহাবুব রব চৌধুরী ও সমাজসেবক মাসুদ আলীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সভা ও কালো পতাকা প্রদর্শন করা হয়।
কালো পতাকা ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিএনপি - জামাত নেতা কর্মীরা যখন হোটেলের সামনে সমবেত হন, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সালাহউদ্দিন মিয়াজী বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য শুনতে এগিয়ে যান এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাদের হোটেল লবিতে আতিথেয়তার আমন্ত্রণ জানান। বিক্ষোভকারীরা সামরিক সচিবের কথায় কর্ণপাত না করে তাদের দাবী-দাওয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছানোর আহবান জানান। মিয়াজী বিক্ষোভকারীদেরকে শেখ হাসিনার ওই মুহূর্তে হোটেলে অবস্থান না করার বিষয়টিও নিশ্চিত করেন। ইউটিউবেও (http://www.youtube.com/watch?v=I9rqHd-eodo&feature=mfu_in_order&list=UL) পুরো ঘটনাটি এভাবে দেখা যায়। এরকমই হওয়া স্বাভাবিক। অন্তত বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমনই।
অথচ এই সাধারণ ঘটনাই পরদিন ঢাকার জাতীয় দৈনিকগুলোতে সম্পূর্ণ বিকৃতভাবে প্রকাশিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস পরিবেশিত খবরে বলা হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভপ্রদর্শনের জন্য হোটেলের সামনে বিএনপি নেতা-কর্মীদের জড়ো হওয়ার বিষয়টি নজরে আসে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। তিনি কোনো প্রোটোকলের তোয়াক্কা না করে পায়ে হেঁটে পৌঁছে যান বিক্ষোভের জন্য হোটেলের সামনে জড়ো হওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের কাছে। তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। জানতে চান কানাডায় তাদের কেমন কাটছে; কেমন আছে তারা। ঘটনার আকস্মিকতায় অনেকটা হতভম্ব হয়ে যান বিএনপির নেতা-কর্মীরা। শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে চা-নাস্তার আমন্ত্রণ জানান। ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তাদের হোটেলে আপ্যায়িত করতে। পরে প্রধানমন্ত্রী আবারও সবাইকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং সকলের মঙ্গল কামনা করে হোটেলে নিজ কক্ষে চলে যান। মিডিয়াগুলো এই ঘটনাকে 'প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতা' বলেও অভিহিত করে।
কি জঘন্য মিথ্যাচার! পুরো ঘটনাটি প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। ঘটনাস্থলে অবস্থানকারী প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগ নেতারা যখন বলছেন, ঘটনার সময় প্রধানমন্ত্রী হোটেলেই ছিলেন না, তখন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য সচিব 'প্রধানমন্ত্রীর পায়ে হেটে বিক্ষোভকারীরদের কাছে' যাওয়ার তথ্য কেন সরবরাহ করলেন তা নিয়েও নানা ধরনের মুখরোচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
দিল্লীতে ট্রানজিটসহ বিভিন্ন দাসখত চুক্তি স্বাক্ষর শেষ করে ঢাকায় সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সুখ চাহি নাই, জয় চেয়েছিনু জয়ী আমি। কানাডা সফর শেষ করেও হয়তো প্রধানমন্ত্রী বলবেন, জয়ী আমি। কিন্তু আমাদের মত প্রবাসীদের একটাই প্রশ্ন, আপনি সত্যি জয়ী, কিন্তু একটা দেশের মাথায় কি এমনই পচন ধরেছে যে সাধারণ বোধ-জ্ঞান পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে লোপ পেয়েছে? দেশের মান-সম্মান, ইজ্জত নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলার কি মানে আছে?
গল্পে আছে- মাটিকে নাকি জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, 'মাটি তোমা থেকে এত গন্ধ বেরোয় কেন?' মাটি নাকি উত্তর দিয়েছিল, 'গোলাপের সাথে ছিলাম বলে।' অর্থাৎ গোলাপ ফুল গন্ধহীন মাটিকে যেমন সুগন্ধিতে রুপান্তরিত করতে পারে আবার কোন বিষাক্ত গাছ তার চারপাশের মাটিকে মানুষের জন্য ভয়ংকর রকমের বিপদের কারণও ঘটাতে পারে।
(কৃতজ্ঞতায়ঃ মেট্রোনিউজ, আরটিএনএন ডট নেট, নতুনবাংলা ডট কম, বেংগলি টাইমস ডট কম)
লেখকঃ সিনিয়র আইনজীবী, মিশিগান, আমেরিকা ই-মেইলঃ udarakash09@gmail.com | | http://www.sonarbangladesh.com/articles/AdvNayanKhan | |