রেল মন্ত্রণালয়ে ফেরার চেষ্টায় কালো বিড়াল : গণমাধ্যমকে দুষলেন সুরঞ্জিত
স্টাফ রিপোর্টার
রেলওয়ের আলোচিত ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় এক মাস যেতে না যেতেই মন্ত্রণালয়ের চেয়ারটিতে ফেরার চেষ্টা করছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। গতকাল আবারও মন্ত্রণালয় এবং রাজনীতিতে ফেরার ঘোষণা দেন তিনি। বলেন, দায়িত্ব দেয়া হলে আবারও রেলমন্ত্রী হবেন। জিগাতলার নিজ বাসায় গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তার দাবি, রেলওয়ের তদন্ত কমিটি তাকে নির্দোষ ঘোষণা করেছে। এর প্রেক্ষিতে তিনি আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। আধঘণ্টার বেশি এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতায় তিনি কয়েকবার গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের হেয় করে গণমাধ্যমে রিপোর্ট ও কার্টুন ছাপা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন শেষে বেলা ১১টার দিকে মন্ত্রী হিসেবে জাতীয় পতাকাবাহী গাড়িতে চড়ে তিনি সিলেটে নিজের নির্বাচনী এলাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িত রেল কর্মকর্তাদের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আবু তাহের গত রোববার বলেন, তদন্তে মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। যদিও মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে এ তদন্ত কমিটি কোনো কাজই করেনি। মন্ত্রীর বিষয়টি তদন্ত করা এ কমিটির কর্মপরিধির মধ্যে পড়ে না। কমিটির কর্মপরিধিতে শুধু রেলওয়ের কর্মকর্তাদের বিষয়ে তদন্ত করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ঘটনার নায়ক গাড়িচালক আলী আজমের বক্তব্য নেয়নি তদন্ত কমিটি। ঘুষের টাকার বস্তা নিয়ে মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিল কর্মকর্তাদের গাড়ি। সেই বিষয়টি কমিটি তদন্ত করেনি। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তদন্ত রিপোর্টকে অসম্পূর্ণ আখ্যায়িত করেছেন। এ সত্ত্বেও রেলওয়ের মহাপরিচালক গত রোববার মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বক্তব্য দেন। এর দুই দিন পর গতকাল সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংবাদ সম্মেলন করে রাজনীতিতে আবার ফিরে আসার ঘোষণা দিলেন। গত ৯ এপ্রিল ৭০ লাখ টাকা বিজিবির হাতে ধরা পড়ার পর কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে গত ১৬ এপ্রিল এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে সুরঞ্জিত রেলমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি। ঘুষ কেলেঙ্কারির এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখনও তদন্ত করছে। রেলওয়ের নিয়োগবাণিজ্য অনুসন্ধানে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। ওই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনও হয়নি। আর মন্ত্রীর ঘুষ কেলেঙ্কারি তদন্তের জন্য স্বাধীন একটি তদন্ত হওয়া উচিত, যা এখনও হয়নি। অথচ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত নিজেকে নিজেই নির্দোষ ঘোষণা করে মন্ত্রণালয়ের চেয়ারে বসে যেতে চাচ্ছেন। তর আর সইছে না।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ ঘটনায় রেলওয়ের বিভাগীয় তদন্ত রিপোর্ট বের হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মন্ত্রী হিসেবে ওই ঘটনার সঙ্গে আমার সংশ্লিষ্টতা ছিল না। মন্ত্রী হিসেবে আমি নির্দোষ। এক মাস এক দিন পর আমি আবার রাজনীতি ও জনসেবায় ফিরে যাব। এ ঘটনায় সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত হলেও এখন জনগণের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার ও স্পষ্ট। আমি আবার জনগণের কাছে ফিরে যেতে চাই।
মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করার এখতিয়ার রেলওয়ের তদন্ত কমিটির ছিল না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিজের বিবেকের কাছে, নীতি-নৈতিকতার কাছে আজ আমি অত্যন্ত পরিষ্কার। উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপালে তো চলবে না। কোথাকার রেল কর্মকর্তা, মন্ত্রীর এপিএস কী করেছে তার দায় মন্ত্রীর ওপর বর্তাতে পারে না। ছেলের অপরাধের জন্য বাবাকে দায়ী করা হয় না। অতএব, আমি মনে করি আইন ও নীতি-নৈতিকতার চোখে আমি একেবারে নির্দোষ। তিনি বলেন, বিভাগীয় তদন্ত যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় সে কারণে আমি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। পতাকা গুটিয়ে রেলভবন থেকে বাসায় এসেছিলাম। আজ অবধি পতাকা অবনমিত রয়েছে। আজ অবধি আমি প্রশাসনিক অনুষ্ঠান, সরকারি অনুষ্ঠান, গণতান্ত্রিক সভা-সমিতি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হইনি। আমার চরিত্রের বিপরীতে থেকে আমি ঘরে নিভৃতচারী ছিলাম।
দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি আবারও রেলপথমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন জানিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, মন্ত্রিত্ব দেয়ার এখতিয়ার তো সরকারের। প্রধানমন্ত্রী যদি আবার এ দায়িত্ব দেন; অতীতে যেমন পিছপা হইনি, এখনও পিছপা হব না। ৫৫ বছরের রাজনৈতিক জীবন ৫৫ সেকেন্ডে শেষ হয় না মন্তব্য করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমি মনে করি এটাই শেষ সরকার নয়। আরও সরকার আসবে, যাবে। অতীতে অনেক ঘটনা ঘটেছে। কেউ পদত্যাগ করেনি। আমি আশা করি ভবিষ্যতে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তারাও আমার এই পথে পা বাড়াবেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমার পদত্যাগের ঘটনা বাংলাদেশের গণতন্ত্রে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতার রাজনীতিতে ভোগ ছাড়া ত্যাগের রাজনীতি নেই। আমি সেদিন ওই অবস্থার প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তখন আমি বলেছিলাম যতক্ষণ পর্যন্ত প্রাথমিক তদন্তে আমি যদি নির্দোষ প্রমাণিত না হই ততক্ষণ রাজনীতি থেকে সরে থাকব। আজ আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি।
গণমাধ্যমের সমালোচনায় সুরঞ্জিত : ৩৮ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনের বক্তৃতায় কয়েকবার গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করেন সুরঞ্জিত। তার দাবি, তাকে ও পরিবারের সদস্যদের হেয় করতে গণমাধ্যম রিপোর্ট ও কার্টুন প্রকাশ করেছে। অন্যক্ষেত্রে তা করে না। তিনি বলেন, আপনারা একবারও মনে করেছেন একটা কাণ্ড হয়েছে দেখি না বিষয়টি কী। অনুসন্ধান করে রিপোর্ট করি। অথচ আমাকে নিয়ে কত ছবি, রিপোর্ট ও কার্টুন ছাপা হয়েছে, যা দুঃখজনক। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ পদে থেকে যখন কালো টাকা সাদা করা হয় তখন আপনারা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করে কী বলেছিলেন কোথা থেকে ওই টাকা এসেছিল। টাকার উত্স কোথায়? একটি পত্রিকার নাম উল্লেখ না করে তার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমার ছেলে সৌমেন কানাডা থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে এসেছে। সে রাজনীতি করে না। রাজনীতি করবেও না। আমাকে যখন একটি সামরিক শাসনের আমলে চোখ-মুখ বেঁধে জেলে নেয়া হয় তখন ছেলের বয়স ছিল ৬ বছর। তখন থেকে রাজনীতির প্রতি তার বিতৃষ্ণা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনীতি করবে না বলে সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এ ছেলে তার বন্ধু-বান্ধবসহ সমিতির নামে টেলি লাইসেন্স নিয়েছে। তাকে নিয়ে আমার একটি পছন্দের সংবাদপত্রে ‘৫ কোটি টাকা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ছেলের’ নিউজ হলো। এটাই পরে অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলো। গণমাধ্যম কতটুকু দায়িত্বশীল, কতটুকু বস্তুনিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠ? পরে আপনারা সবাই তা ছেপে দিলেন। মনে হয়েছে আমাকে, আমার রাজনৈতিক জীবন ও পরিবারকে হেয় করার জন্য এসব রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। আমার ছেলে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। যে লাইসেন্সের প্রত্যাশী, তার মূলধন ৬০ হাজার টাকা। ছয়জনের মধ্যে একজনের পড়ে ১০ হাজার টাকা। এ বিষয়টি আপনারা যেভাবে লিখলেন, যেভাবে উপস্থাপন করলেন তা দুঃখজনক। তবে আগামীতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িত রেল কর্মকর্তাদের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আবু তাহের গত রোববার বলেন, তদন্তে মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। যদিও মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে এ তদন্ত কমিটি কোনো কাজই করেনি। মন্ত্রীর বিষয়টি তদন্ত করা এ কমিটির কর্মপরিধির মধ্যে পড়ে না। কমিটির কর্মপরিধিতে শুধু রেলওয়ের কর্মকর্তাদের বিষয়ে তদন্ত করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ঘটনার নায়ক গাড়িচালক আলী আজমের বক্তব্য নেয়নি তদন্ত কমিটি। ঘুষের টাকার বস্তা নিয়ে মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিল কর্মকর্তাদের গাড়ি। সেই বিষয়টি কমিটি তদন্ত করেনি। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তদন্ত রিপোর্টকে অসম্পূর্ণ আখ্যায়িত করেছেন। এ সত্ত্বেও রেলওয়ের মহাপরিচালক গত রোববার মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বক্তব্য দেন। এর দুই দিন পর গতকাল সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংবাদ সম্মেলন করে রাজনীতিতে আবার ফিরে আসার ঘোষণা দিলেন। গত ৯ এপ্রিল ৭০ লাখ টাকা বিজিবির হাতে ধরা পড়ার পর কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে গত ১৬ এপ্রিল এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে সুরঞ্জিত রেলমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি। ঘুষ কেলেঙ্কারির এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখনও তদন্ত করছে। রেলওয়ের নিয়োগবাণিজ্য অনুসন্ধানে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। ওই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনও হয়নি। আর মন্ত্রীর ঘুষ কেলেঙ্কারি তদন্তের জন্য স্বাধীন একটি তদন্ত হওয়া উচিত, যা এখনও হয়নি। অথচ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত নিজেকে নিজেই নির্দোষ ঘোষণা করে মন্ত্রণালয়ের চেয়ারে বসে যেতে চাচ্ছেন। তর আর সইছে না।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ ঘটনায় রেলওয়ের বিভাগীয় তদন্ত রিপোর্ট বের হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মন্ত্রী হিসেবে ওই ঘটনার সঙ্গে আমার সংশ্লিষ্টতা ছিল না। মন্ত্রী হিসেবে আমি নির্দোষ। এক মাস এক দিন পর আমি আবার রাজনীতি ও জনসেবায় ফিরে যাব। এ ঘটনায় সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত হলেও এখন জনগণের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার ও স্পষ্ট। আমি আবার জনগণের কাছে ফিরে যেতে চাই।
মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করার এখতিয়ার রেলওয়ের তদন্ত কমিটির ছিল না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিজের বিবেকের কাছে, নীতি-নৈতিকতার কাছে আজ আমি অত্যন্ত পরিষ্কার। উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপালে তো চলবে না। কোথাকার রেল কর্মকর্তা, মন্ত্রীর এপিএস কী করেছে তার দায় মন্ত্রীর ওপর বর্তাতে পারে না। ছেলের অপরাধের জন্য বাবাকে দায়ী করা হয় না। অতএব, আমি মনে করি আইন ও নীতি-নৈতিকতার চোখে আমি একেবারে নির্দোষ। তিনি বলেন, বিভাগীয় তদন্ত যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় সে কারণে আমি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। পতাকা গুটিয়ে রেলভবন থেকে বাসায় এসেছিলাম। আজ অবধি পতাকা অবনমিত রয়েছে। আজ অবধি আমি প্রশাসনিক অনুষ্ঠান, সরকারি অনুষ্ঠান, গণতান্ত্রিক সভা-সমিতি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হইনি। আমার চরিত্রের বিপরীতে থেকে আমি ঘরে নিভৃতচারী ছিলাম।
দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি আবারও রেলপথমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন জানিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, মন্ত্রিত্ব দেয়ার এখতিয়ার তো সরকারের। প্রধানমন্ত্রী যদি আবার এ দায়িত্ব দেন; অতীতে যেমন পিছপা হইনি, এখনও পিছপা হব না। ৫৫ বছরের রাজনৈতিক জীবন ৫৫ সেকেন্ডে শেষ হয় না মন্তব্য করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমি মনে করি এটাই শেষ সরকার নয়। আরও সরকার আসবে, যাবে। অতীতে অনেক ঘটনা ঘটেছে। কেউ পদত্যাগ করেনি। আমি আশা করি ভবিষ্যতে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তারাও আমার এই পথে পা বাড়াবেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমার পদত্যাগের ঘটনা বাংলাদেশের গণতন্ত্রে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতার রাজনীতিতে ভোগ ছাড়া ত্যাগের রাজনীতি নেই। আমি সেদিন ওই অবস্থার প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তখন আমি বলেছিলাম যতক্ষণ পর্যন্ত প্রাথমিক তদন্তে আমি যদি নির্দোষ প্রমাণিত না হই ততক্ষণ রাজনীতি থেকে সরে থাকব। আজ আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি।
গণমাধ্যমের সমালোচনায় সুরঞ্জিত : ৩৮ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনের বক্তৃতায় কয়েকবার গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করেন সুরঞ্জিত। তার দাবি, তাকে ও পরিবারের সদস্যদের হেয় করতে গণমাধ্যম রিপোর্ট ও কার্টুন প্রকাশ করেছে। অন্যক্ষেত্রে তা করে না। তিনি বলেন, আপনারা একবারও মনে করেছেন একটা কাণ্ড হয়েছে দেখি না বিষয়টি কী। অনুসন্ধান করে রিপোর্ট করি। অথচ আমাকে নিয়ে কত ছবি, রিপোর্ট ও কার্টুন ছাপা হয়েছে, যা দুঃখজনক। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ পদে থেকে যখন কালো টাকা সাদা করা হয় তখন আপনারা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করে কী বলেছিলেন কোথা থেকে ওই টাকা এসেছিল। টাকার উত্স কোথায়? একটি পত্রিকার নাম উল্লেখ না করে তার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমার ছেলে সৌমেন কানাডা থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে এসেছে। সে রাজনীতি করে না। রাজনীতি করবেও না। আমাকে যখন একটি সামরিক শাসনের আমলে চোখ-মুখ বেঁধে জেলে নেয়া হয় তখন ছেলের বয়স ছিল ৬ বছর। তখন থেকে রাজনীতির প্রতি তার বিতৃষ্ণা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনীতি করবে না বলে সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এ ছেলে তার বন্ধু-বান্ধবসহ সমিতির নামে টেলি লাইসেন্স নিয়েছে। তাকে নিয়ে আমার একটি পছন্দের সংবাদপত্রে ‘৫ কোটি টাকা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ছেলের’ নিউজ হলো। এটাই পরে অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলো। গণমাধ্যম কতটুকু দায়িত্বশীল, কতটুকু বস্তুনিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠ? পরে আপনারা সবাই তা ছেপে দিলেন। মনে হয়েছে আমাকে, আমার রাজনৈতিক জীবন ও পরিবারকে হেয় করার জন্য এসব রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। আমার ছেলে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। যে লাইসেন্সের প্রত্যাশী, তার মূলধন ৬০ হাজার টাকা। ছয়জনের মধ্যে একজনের পড়ে ১০ হাজার টাকা। এ বিষয়টি আপনারা যেভাবে লিখলেন, যেভাবে উপস্থাপন করলেন তা দুঃখজনক। তবে আগামীতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
__._,_.___