Banner Advertise

Monday, February 13, 2012

[chottala.com] তিনি যে ‘অ্য 94;কসিডেন্টল 95;’ মন্ত্রী(A Must Read Art icle from Bangla news24.com)



তিনি যে ‘অ্যাকসিডেন্টলি’ মন্ত্রী

 

ফজলুল বারী, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
সড়ক দুর্ঘটনা আর দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু নিয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যে কেউ কী অবাক হয়েছেন? আমি হইনি। কারণ সৈয়দ আশরাফুল ‘অ্যাক্সিডেন্টলি’ আওয়ামী লীগের মতো দেশের গুরুত্বপূর্ণ, অন্যতম প্রধান দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী হয়ে গেছেন! এটি সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার ইচ্ছা অথবা দয়ায়। কোনোরকম সাফল্য ছাড়াই এখনও যে তিনি পদ দুটিতে টিকে আছেন, সেটিও উল্লেখিত একই কারণে সম্ভব হচ্ছে। কোনো একজন দায়িত্বশীল মানুষ অথবা দায়িত্বশীল সরকারি দলের মুখপাত্র কী পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে অবলীলায় ‘সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে প্রতিবাদ জানানোর কিছু নেই। অ্যাক্সিডেন্ট ইজ অ্যাক্সিডেন্ট। কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনা ঘটালে তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হলে আমাদের করার কিছু নেই’ জাতীয় ঢালাও, কাণ্ডজ্ঞানহীন কথা বলতে পারেন?

যে দেশে বছরে তেত্রিশ হাজারের বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান, আহত-পঙ্গু হন শতগুন বেশি, রাস্তা-ঘাটের সমস্যা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ চালকসহ নানা কারণ যেখানে এসব দুর্ঘটনার কারণ, সেখানে সরকারি দলের দায়িত্বশীল কেউ এভাবে কাণ্ডজ্ঞানহীনের মতো কথা বলতে পারেন? না এমন বক্তব্য দেওয়া সৈয়দ আশরাফুলের মতো ব্যক্তি বা মন্ত্রীর পক্ষেই শুধু স্বাভাবিক?

সরকারি মন্ত্রীদের এমন ঢালাও কথাবার্তা শুনলে বিএনপি আমলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সেই ‘আল্লাহ’র মাল আল্লাহ নিয়া গেছেন’ বক্তব্যটি মনে পড়ে যায়! আমরা সবাই সেই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছি। শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের নেতারাসহ দেশের সচেতন সব মানুষ এর প্রতিবাদ করেছেন। আলতাফ হোসেনের সেই বক্তব্যের সঙ্গে সৈয়দ আশরাফুলের বক্তব্যের গুণগত কোনো পার্থক্য আছে কী? যদি তা না থাকবে তাহলে পার্লামেন্টে এক তারানা হালিম ছাড়া আর কেউ এর প্রতিবাদ করলেন না কেন? এর জবাব শেখ হাসিনাকে দিতে হবে। আওয়ামী লীগকে দিতে হবে। নতুবা সাহস থাকলে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা আওয়াজ দিয়ে বলুন, সৈয়দ আশরাফুল যা বলেছেন, তা ঠিক আছে। সৈয়দ আশরাফুলের বক্তব্য সরকার ও আওয়ামী লীগের বক্তব্য। সৈয়দ আশরাফুল যেহেতু সরকারি দলের অফিসিয়াল স্পোকসম্যান, এটা নিয়ে তারা আর কথা না বললে পাবলিকের কাছে বিষয়টা তাই দাঁড়াবে! এর পরিণতি কোন পর্যন্ত পৌঁছবে সে খেয়াল কী সরকারি দলের আছে? আগামীতে কি ভোটের জন্য আর পাবলিকের কাছে যাওয়া লাগবে না?
 
দেশের পরিস্থিতি কোথায় চলে যাচ্ছে তা সরকারি দলের নেতাদের শারীরিক ভাষা দেখে বোঝার উপায় নেই! অনেক সংকটের মধ্যে নতুন আরেক সংকট দেখা দিয়েছে শেয়ারবাজারে নিঃস্ব বিনিয়োগকারীরা এখন আত্মহননের পথে যাওয়া শুরু করেছেন। ঢাকার পর চট্টগ্রামে আত্মহত্যা করেছেন নিরুপায় আরেকজন! কিন্তু সরকার এসব নিয়ে মূক ও বধির! কারোরই কোনো বক্তব্য অথবা মাথা ব্যথা নেই! অবশ্য শেয়ারবাজারে বিপর্যয় শুরুর পর এ নিয়ে সরকারের ‘কুচ পরোয়া নেহি’ নীতির জানান দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। শেয়ারবাজারে লগ্নি করা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের টাকাপয়সা একদল লুটে নিয়ে গেল, আর প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলে দিলেন, ‘এ নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন-চিন্তিত নয়। এতে করে দেশের অর্থনীতির কিছু  যাবে আসবে না।’ সত্যি তাই হলো! সরকার একটি তদন্ত কমিটি করলো। লুটেরাদের চিহ্নিত করে রিপোর্ট দিলো তদন্ত কমিটি। পত্রপত্রিকায় তাদের ছবিসহ রিপোর্ট ছাপা হলো। কিন্তু সরকার কিছু করলো না! এ নিয়ে সন্দেহের বিষয়গুলো আগে লোকজন আড়ালে-আবডালে বলতেন। এখন বলেন প্রকাশ্যে। আর দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির এখন কি অবস্থা, তা ব্যাখ্যা করে বলতে বলতে কোনো পন্ডিতের দরকার নেই। অর্থমন্ত্রী কত বেদিশা হয়ে গেলে অর্থনৈতিক নাজুক অবস্থার জন্য দেশের মিডিয়া আর সুশীল সমাজকে দায়ী করেন! তিনি অর্থমন্ত্রী, আর দেশের অর্থনীতি খারাপ করে দিয়েছেন সুশীল সমাজ আর মিডিয়ার লোকজন? এমন মন্ত্রীর জন্য ‘বেদিশা’ শব্দটি কী বেশি কম হয়ে গেল?
আর আওয়ামী লীগের পার্ট টাইম সাধারণ সম্পাদক আর সরকারের পার্ট টাইম স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামতো (যেহেতু তিনি পারিবারিক কারণে প্রায় দেশের বাইরে থাকেন), মাঝে মাঝেই এমন ‘বেদিশা’, ‘কুচ পরোয়া নেহি’ জাতীয় কথা  বলেন। সীমান্তে বিএসএফের মানুষ মারা-অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া এসব এখন প্রায় নৈমত্তিক বিষয়। ভারতের সঙ্গে দোস্তালির সম্পর্ক নিয়েও সরকার এর কোনো সুরাহা নিয়ে আসতে পারেনি। এ নিয়ে কখনো সিরিয়াসলি চেষ্টা করেছে, এমন প্রমাণও নেই। অতঃপর সব কল্পনাকে হার মানিয়ে দেশের এক নাগরিককে সীমান্তে ল্যাংটা করে পিটালো বিএসএফ। এ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া হৈচৈ করলো। ভারত সরকারকে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাইতে বললো সে দেশের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য হিন্দু। আর আমাদের সৈয়দ আশরাফুল বলে দিলেন, ‘সীমান্তের বিষয় নিয়ে রাষ্ট্র চিন্তিত নয়!’

এসব ‘কুচ পরোয়া নেহি’ বক্তব্যের জবাবে কী বলা যায়? সহজ উত্তর মনে হয় একটাই আছে, তা হলো— বহুল বলা সেই কথাটাই, বাংলাদেশে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা ইতিহাস ভালো নয়। এটি স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকার থেকে শুরু করে খালেদা জিয়ার সরকারের সময়েও দেশের মানুষ দেখেছে। এখন তা দেখছে, শেখ হাসিনার সরকার! বলা হয় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা স্বেচ্ছাচারিতার জন্ম দেয়। যা নানাভাবে এখন সরকারি দলের শারীরিক ভাষায় স্পষ্ট। স্বেচ্ছাচারী না হলে কেউ সৈয়দ আশরাফুলের মতো এভাবে কথা বলতে পারেন না। পরিবহন শ্রমিক নেতা, সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খানের কাছে দেশের মানুষের জীবন গরু-ছাগলের চেয়ে কম দামী। নিজের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের নিয়ম বর্হিভূতভাবে লাইসেন্স দাবি করে বিপুল সমালোচনার মুখে অতঃপর তার মুখে লাগাম দেয়ানো হয়েছে। আর লাগামটি সৈয়দ আশরাফুলের মতো দায়িত্বশীল মন্ত্রী, সরকারি দলের মুখপাত্রের মুখ থেকে চলে গেল? আমার তো মনে হয়, এভাবে কথা বলা তার অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া মাহবুবুল আলম হানিফের পক্ষেও সম্ভব না।
 
সৈয়দ আশরাফুল যে কথাগুলো বলেন, ‘তা একটু অন্যভাবে দায়িত্বশীলভাবেও বলা যায়। মানুষকে আঘাত, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করে  কথা বলা একটি শিল্প। রাজনীতিবিদদের এ শিল্পটি জানতে হয় বেশি। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই এই শিল্পটি জানেন। অথবা আওয়ামী লীগে এমন কথা শিল্পীর সংখ্যা বেশি। সৈয়দ আশরাফুল সে শিল্পটি জানেন না। কারণ সেই যে তিনি ‘অ্যাক্সিডেন্টলি আওয়ামী লীগের মতো দেশের গুরুত্বপূর্ণ, অন্যতম প্রধান দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের স্থানীয় সরকারমন্ত্রী হয়ে গেছেন!’ জিল্লুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, সাজেদা চৌধুরী বা আব্দুল জলিলদেরও যেভাবে অনেক দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, কাঠখড় পুড়িয়ে আওয়ামী লীগের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক হতে হয়েছে, সৈয়দ আশরাফুলকে তেমন কিছুই করতে হয়নি। অতএব ‘অ্যাক্সিডেন্টলি’ পদটি পেয়ে যাওয়াতে তিনি যেন দল-পদ কোনো কিছুর সঙ্গেই সুবিচার করতে পারছেন না। অনেক কারণের সঙ্গে তার কারণেও দিনে দিনে পেছাচ্ছে সরকারি দলটি। শুধুই  হারাচ্ছে জনপ্রিয়তা! ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর দেশে যত নির্বাচন হয়েছে, এর একটিতে প্রমাণ নেই যে সরকারি দলের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। সরকারের তিন বছর শেষ। হারানো জনপ্রিয়তা আর কবে কীভাবে উদ্ধার হবে? ধারাবাহিক এই পতনে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে না পারলে এ দলের এবং দেশের অনেক সমস্যা হবে। কিন্তু সৈয়দ আশরাফুলের তো কোনো সমস্যা হবে না। কারণ তার একইসঙ্গে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব অথবা রেসিডেন্সি আছে। পরবর্তী ফ্লাইট ধরেই লন্ডন চলে যেতে পারবেন। আওয়ামী লীগের নেতাদের এসব বিষয়ে কথা বলার সাহস নেই। কারণ তারা শেখ হাসিনাকে বাঘের চেয়ে বেশি ভয় পান। অতএব তাদের কিছু বলে লাভ নেই। শেখ হাসিনার কাছেই কথাটি বলি। দীর্ঘ উদাহরণের দরকার নেই। শেখ হাসিনার কী মনে হয়, সৈয়দ আশরাফুলের সাম্প্রতিক দুই বক্তব্য, ‘সীমান্তের ঘটনা নিয়ে রাষ্ট্র চিন্তিত নয়’ এবং ‘সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে প্রতিবাদ জানানোর কিছু নেই। অ্যাক্সিডেন্ট ইজ অ্যাক্সিডেন্ট। সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হলে আমাদের করার কিছু নেই’, জাতীয় বক্তব্য নিয়ে আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচনের ভোটের মাঠে দাঁড়ানো সম্ভব?
 
ফজলুল বারী: সিডনি প্রবাসী সাংবাদিক  
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১২


__._,_.___


[* Moderator's Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___