Banner Advertise

Sunday, January 8, 2012

[chottala.com] Election results of EVM can easily be manipulated from DMM by softwar e






 
 
 

লোলুপ রাজনীতির উপহার

॥ মোহাম্মদ আসাফ্ উদ্দৌলাহ্ ॥

কিছু দিন আগে আওয়ামী লীগের দু’জন ভারাক্রান্ত নেতাকে মন্ত্রী করা হলো আর অন্য একজনকে পদোন্নতি দিয়ে প্রতিমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী করা হলো। টেলিভিশনের বদৌলতে আজকাল অনেক কিছু দৃষ্টির গোচরে আসে যা আগে নিজে উপসি'ত না হলে দেখা যেত না। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে শপথবাক্য পাঠ করার পর চা-চক্র শুরু হওয়ার সাথে সাথেই শপথ গ্রহণকারীদের মধ্যে দু’জন ঝাঁপিয়ে পড়লেন প্রধানমন্ত্রীর পায়ের ধূলি নিতে; অপরজন ঝাঁপিয়ে পড়লেন সাজেদা চৌধুরীর পদযুগলে। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে কদমবুচি করার আগেই ক্যামেরা সরিয়ে নিলো দৃশ্যপট। পায়ে ধরা মন্ত্রী আর চেয়ার মুছে দেয়া উপদেষ্টাদের নিয়ে আর কত দিন? আর কত দূর? নাকি বাংলাদেশের ভাগ্যেই আকীর্ণ রয়েছে এই অন্তহীন আকিঞ্চন।
এর মধ্যে এক হাজার শিল্পী এক বিশাল অনুষ্ঠান করলেন রাষ্ট্রীয় আয়োজনে বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স সেন্টারে। আয়োজনটি ছিল রবীন্দ্রনাথের দেড় শ’ তম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে। সবই ঠিক আছে, তবে একটি জিনিস ঠিক নেই। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কিন' কাজী নজরুল ইসলাম। রবীন্দ্রনাথের চর্চায় কোনো অসুবিধা দেখি না। তিনি বাংলা ভাষার কবি। তাই যেখানে বাংলা ভাষা বা বাংলা গানের চর্চা আছে সেখানে রবীন্দ্রনাথ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন' রাষ্ট্রীয় উদযাপনে জাতি একাত্ম হবে তার জাতীয় কবিদের নিয়ে। আমার এই মন্তব্যের সপক্ষে দৃষ্টান্ত দিচ্ছি। ইংল্যান্ডের মতো আমেরিকার ভাষাও ইংরেজি। তারা শেক্সপিয়রের নাটক মঞ্চস' করছে, চর্চা করছে কিটস্, শেলির বা ইলিয়টের। কিন' এসব বিশ্বসেরা নাট্যকার বা কবি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে উদযাপিত হন না। আমেরিকা তাদের স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনে নাটক দেখায় আর্থার মিলারের ইউজিন ও’নিলের, উইলিয়াম টেনেশির নাটক, রবার্ট ফ্রস্টের কবিতা, মার্ক টোয়েনের হাস্যরস। এর অর্থ এই নয় যে, এ সাহিত্যিকেরা শেক্সপিয়র, কিটস কিংবা এলিয়টের চেয়ে অগ্রগণ্য। এর অর্থ এই যে, তারা আমেরিকান।
রবীন্দ্রনাথ বিশ্বখ্যাত কবি হতে পারেন, হতে পারেন প্রশংসাতীত সঙ্গীতরচয়িতা- কিন' তিনি আমার দেশের মানুষ নন। তার চর্চা করব, তার সাহিত্যকর্মকে তুলে নেবো বুকে- কিন' তিনি আমার দেশের মানুষ নন। সুতরাং আমরা তাকে সে সম্মান দেবো যে সম্মান শেক্সপিয়রকে দিয়ে থাকে আমেরিকা। আমেরিকার থিয়েটারগুলো মুখর তার নাট্য মঞ্চায়নে, কিন' রাষ্ট্রীয় আয়োজনে ৪ জুলাই নিউ ইয়র্কের রেডিও সিটি হলে মঞ্চস' হবেন মিলার কিংবা টেনেশি। এর মধ্যে কাউকে ছোট বা বড় করার প্রশ্ন অবান্তর। বিষয়টি দেশপ্রেমের সাথে সংশ্লিষ্ট। যা আমার কাছে আছে সেটুকুই আমার। ঘর আমার জীর্ণ হোক, পরিধেয় হোক শতচ্ছিন্ন- তবু যথার্থ অর্থে তা-ই আমার। অন্যকে নিয়ে উৎসব করলেই সে আমার হয়ে যায় না। এই পার্থক্যের সাথে জড়িয়ে আছে আমার সত্তা ও আমার অহঙ্কার। আমাদের নজরুল, জসীমউদ্‌দীন, ফররুখ আহমদ, আল মাহমুদ, শামসুর রাহমান, ওয়ালীউল্লাহ। জাতি হিসেবে তাদেরই তুলে ধরতে হবে আমাদের।
এর মধ্যে বাংলা একাডেমী পালন করল তাদের বার্ষিক সম্মেলন। এ উপলক্ষে ফেলোশিপ প্রদান করা হলো অমর্ত্য সেন ও শেখ হাসিনাকে। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে গোটা দশেক অনারারি ডক্টরেটও ব্যাগস' করেছেন তার অনন্য সাহিত্যিক প্রতিভা ও অসাধারণ বুদ্ধি ও জ্ঞানের স্বীকৃতিস্বরূপ। তার পাশে বসেছিলেন নোবেল বিজয়ী ড. অমর্ত্য সেন। আমাদের দেশেও আছেন একজন নোবেল বিজয়ী- তাকে পাশে বসিয়ে ফেলোশিপ প্রদান করা তো অনেক দূরের কথা- তাকে ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পর্যন্ত জানানোর সাহস হয়নি বাংলা একাডেমী পরিচালনা পরিষদের- যেহেতু শেখ হাসিনা তাকে পছন্দ করেন না। কী দারুণ আনুগত্য প্রধানমন্ত্রীর মনোভাবের প্রতি!
যেকোনো দেশের উন্নয়নের পথে সব থেকে বড় বাধা রাজনৈতিক অসি'রতা। এ কথা জেনেও ইচ্ছাকৃতভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপদ্ধতিকে বাতিল করে এবং অত্যন্ত অনির্ভরশীল ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যবহার চালু করে আমাদের দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনকে প্রায় নিশ্চিতভাবে অনিশ্চিত করে দেশকে এক অনিবার্য সঙ্ঘাত ও অসি'তিশীলতার মধ্যে নিমজ্জিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ বুশের দ্বিতীয় নির্বাচনকালে ফ্লোরিডা রাজ্যে এই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণনায় কারচুপি করায় (বুশের আপন সহোদর তখন ফ্লোরিডার গভর্নর পদে আসীন) সারা যুক্তরাষ্ট্রে ওঠে তীব্র নিন্দা যার জন্য বুশের বিজয় হয়েছিল প্রশ্নবিদ্ধ। জার্মানিতে এই পদ্ধতি নির্ভরযোগ্য নয় বলে এর ব্যবহার সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য, জাপান, ভারত- ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার করে না। হঠাৎ করে এই পরিত্যজ্য পদ্ধতি আমাদের সরকার কেন ভোট গণনায় ব্যবহার করতে আদা-নুন খেয়ে উঠেপড়ে লেগেছে? লক্ষাধিক ইভিএম ক্রয়ের এই অশুভ উদ্যোগের পেছনে কেউ আর্থিকভাবে লাভবান হতে যাচ্ছেন কি? নাকি এই নতুন চালাকির মাধ্যমে আগামীতে ইচ্ছেমতো ভোট গণনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে? এখন পাঠকদের বোঝাতে চেষ্টা করব ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গণনাকে কিভাবে পাল্টে দেয়া যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতানুযায়ী ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে নির্বাচনে অতি সহজেই ফলাফল পাল্টে ফেলা সম্ভব। কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা প্রমাণিত করেছেন কিভাবে অপরাধীরা ইভিএম ‘হ্যাক’ করে অনায়াসে ভোট চুরি করতে সক্ষম। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও স্যান ডিয়েগো, মিশিগান ও প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ‘রিটার্ন ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং’ ব্যবহার করে ইভিএমকে দুর্ব্যবহার করার সক্ষমতা প্রমাণিত করেছেন। বিশেষজ্ঞদের সামনে তারা দেখিয়েছেন কিভাবে একটা ‘ভাইরাস’ ব্যবহারের মাধ্যমে ইভিএম মেশিনে হ্যাকাররা ভোটের ফলাফল সহজেই ‘ম্যানিপুলেট’ করতে পারে। একটি পত্রিকা [BLITZ] ইতোমধ্যেই তাদের ১২ জানুয়ারির সংখ্যায় প্রকাশ করেছে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ভারতের কিছু ‘নটোরিয়াস’ হ্যাকারদের সাথে যোগাযোগ করেছে যাতে তাদের নিয়োগ করে বাংলাদেশের নির্বাচনে ভোট গণনায় কারচুপি করা যায়। এই ভারতীয় হ্যাকারদের তাদের এই কর্ম সম্পাদনের জন্য ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেয়ার প্রস্তাবও নাকি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত করার পথে।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, ইভিএমের একটি ক্ষুদ্র অংশ যার নাম Detectable Memory Module (DMM)। তার মধ্যেই নির্বাচনের ফলাফল সংরক্ষিত থাকে এবং এই অংশটি ইভিএম থেকে খুলে নেয়া যায় এবং এভাবে অতি সহজেই নির্বাচনের ফলাফলকে পাল্টে দেয়া সম্ভব। আয়ারল্যান্ড ২০০৬ সাল থেকে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। মার্চ ২০০৯ সাল থেকে জার্মানি ইভিএম-এর ব্যবহারকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে। ফিনল্যান্ডের সর্বোচ্চ আদালত ২০০৯ সালে মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে ব্যবহৃত ইভিএম-এর ফলাফল ইনভ্যালিড ঘোষণা করেছে। এপ্রিল ২০০৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়া ইভিএম-এর ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আর আমাদের সরকার এই অগ্রহণযোগ্য মেশিন ক্রয়ের ও ব্যবহারের জন্য কেন এত উন্মুখ তা বুঝতে কারোরই অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
শুধু ক্ষমতায় চিরস'ায়ী হওয়ার জন্য এত লোলুপ রাজনীতি? ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার ব্যবস'াকে অসম্ভব করে তুলতে হবে।
লেখক : সাবেক সচিব ও সম্পাদক
 


__._,_.___


[* Moderator's Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___