মহান আলেম দেলোয়ার হোসেন সাইদী এবং তার মহৎ এসলামী কর্মসমূহ
০৪ ঠা জুলাই, ২০১০ রাত ৩:২৩
বিশিষ্ট আলেম, আলেমকুল শিরোমনি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী একজন রাজাকার তথা ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষদের খুন, পাক বাহিনীর নিকট ধরিয়ে দেয়া, নারী ধর্ষন, পাক বাহিনীর নিকট বাঙ্গালি নারীদের যৌনদাসী হিসাবে সরবরাহ,ধর্মের দোহাই দিয়ে পাড়ের হাট বন্দরের হিন্দু সমপ্রদায়ের ঘরবাড়ি লুট করেছেন ও নিজে মাথায় বহন করেছেন, দোকান লোটপাট, লুটের মাল বিক্রি সহ নানা পূণ্য কর্মে লিপ্ত ছিলেন। আসুন দেখি তার কি কি মহান কর্ম জাতিকে রক্ত আর অশ্রু দিয়ে বরন করতে হয়েছিল।
খুন সমুহঃ
এই মহান কর্মবীর একসময় গর্ব করতেন তিনি বলেশ্বর নদীর পাড়ের বধ্যভূমিতে ৫০০ জন মুক্তিকামী (তার ভাষায় বেইমান, কাফের) মানুষকে জবাই করে হত্যা করেছেন। সম্পতি গণতদন্ত কমিশন পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে গিয়ে সরেজমিনে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে।
১। '৭১-এর ৬ মে পিরোজপুর থানার সামনে থেকে মহান সাইদী বাহিনী তত্কালীন মহকুমা এসডিপিও ফয়জুর রহমান আহমেদকে ধরে বলেশ্বর নদীর পাড়ে বধ্যভূমিতে নিয়ে যায় এবং হত্যা করে।
২। এই মহান আলেম পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত এসডিও আবদুর রাজ্জাক কে হত্যা করেছেন।
৪। পিরোজপুরের মেধাবী ছাত্র গণপতি হালদারকে সাঈদী ধরে নিয়ে গিয়ে বলেশ্বর নদীর পাড়ের বধ্রভূমিতে নিজে জবাই করে হত্যা করেছেন।
৫। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান
৬। স্কুল হেডমাস্টার আব্দুল গাফফার মিয়া,
৭। সমাজসেবী শামসুল হক ফরাজী
৯। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তথ্য সরবরাহকারী ভগীরথীকেও এই মহান আলেমের নির্দেশেই মোটরসাইকেলের পিছনে বেঁধে পাঁচ মাইল পথ টেনে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
১০।তদানীন্তন ইপিআর সুবেদার আব্দুল আজিজ,
১১। পাড়ের হাট বন্দরের কৃষ্ণকান্ত সাহা
১২। বাণীকান্ত সিকদার,
১৩। তরুণীকান্ত সিকদার
১৪।'৭১-এর ১৬ আগস্ট সাঈদীর নেতৃত্বে গোপাল বণিক নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে পাকসেনাদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
১৫। পাড়ের হাটের আনোয়ার হোসেন
১৬। আবু মিয়া,
১৭। নূরুল ইসলাম খান,
১৮। বেনীমাধব সাহা,(মৌসুমী ভৌমিকের গাওয়া সেই বেনীমাধব গানটা কি মনে পড়ে?)
১৯। বিপদ সাহা,
২০। মদন সাহা,
২১। হরি সাধু
২২। নিখিল পাল ও অন্যান্য
২৩। তালুকদার বাড়ির হত্যাযজ্ঞ
২৪। ১৯৭১ সালের ৮ মে বাদুরা এলাকার ইব্রাহীম হাওলাদার
আরও নাম না জানা অজস্র শহীদ, অসংখ্য নাম। যাদের অনেকেই শহর ছেড়ে পালিয়ে যেতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন, স্বজনেরা অপেক্ষায় থেকেছে আমার ফুফুর মতো আমৃত্যু, তার খোকা যে বাড়ি ফিরবে, ক্লান্ত খোকা!
যেন ফুরোবেনা এই তালিকা। বলেশ্বর নদীল শান্ত জল আজও সেই নির্মমতার স্বাক্ষী হয়ে আছে। যেন শোকবার বইতে না পেরে শুকিয়ে গেছে জলধারা আর ঘাতক প্রিয় মানুষদের খুনে রঞ্জিত করেছে তার দাড়ী!
লুটপাট
১। ৭১ সালের তিনি মদন নামে এক হিন্দু ব্যবসায়ীর বাজারের দোকানঘর ভেঙে তার নিজ বাড়ি নিয়ে গেছেন। মদন বাবুর বাড়ি উঠিয়ে নিয়ে সাঈদী তার শ্বশুর বাড়িতে স্থাপন করেন।
২।পাড়ের হাটের আনোয়ার হোসেন, আবু মিয়া, নূর"ল ইসলাম খান, বেনীমাধব সাহা, বিপদ সাহা, মদন সাহা প্রমুখের বসতবাড়ি, গদিঘর, সম্পত্তি এই দেলোয়ার হোসেন সাঈদী লুট করে নেন বলে তিনি গণতদন্ত কমিশনকে জানিয়েছেন।
৩। পিরোজপুরের নিখিল পালের বাড়ি তুলে সাঈদী এবং তার সহযোগী ঘাতকেরা এনে পাড়ের হাট জামে মসজিদের গনিমতের মাল হিসেবে ব্যবহার করে।
৪।পাড়ের হাট বন্দরে লুটপাটে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, সেকান্দার শিকদার, মওলানা মোসলেহ উদ্দিন, দানেশ মোলা প্রমুখ। এ ছাড়াও সাঈদীকে একটি ঘরের আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যেতে দেখেছিলেন রুহুল আমীন।
৫।সদর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সইজুদ্দিন পশারীর বাড়িতে পাকিস্তানী সেনাদের উপস্থিতিতে ১০ লাখ টাকা মূল্যের ঘর জ্বালিয়ে দেয় এবং ৫০ হাজার নগদ টাকাসহ ঘরের মালামাল লুট করে।
নারী ধর্ষন ও পাকিদের হাতে তুলে দেয়া
অনেকেই আজও বেচে আছেন। মৃতের মতোই! অথচ তাদের ত্যাগে অর্জিত স্বদেশ। মুখ খুলতে চান না সামাজিকতা চিন্তা করে, নষ্ট সমাজ বাচ্চাদের জারজ বলে ডাকবে ভেবে, সমাজ পরিত্যাক্তা হবেন ভেবে। তারপরও দু একজনের নাম তো বলতেই হয় যাদের নিজে ধর্ষন করেছে সাইদী, তারপর হত্যা করেছে। অনেক তথ্য প্রমান আছে এই মহান আলেম নিয়মিত পিরোজপুরের বিভিন্ন অঞ্চলের নারীদের ধরে এনে তুলে দিয়েছেন তার পিতাদের হাতে। তিনশ জন রাজাকারের একটা বাহিনী ছিল তার। প্রতাপ ছিল জবর।
১। হরি সাধুর মেয়েকে নির্যাতন করেছেন তিনি ও তার বাহিনী।
২। বিপদ সাহার মেয়ের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন।
৩। বিখ্যাত তালুকদার বাড়ি থেকে ২০-২৫ জন মহিলাকে ধরে এনে পাকসেনাদের ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
দেশের জন্যে করা মহান এই দেশপ্রেমিকের এসব মহান কর্মে তথ্য প্রমান আছে বৈকি। যুদ্ধাপরাধ আদালতে এসব তথ্য প্রমান উপস্থাপিত হবে সময়মতো।
শেষ কথা
তারপরও সাইদী আমাদের মহান নেতা। আমার ভাইয়ের বুকের রক্তে স্বাধীন এই দেশে নির্বাচিত সাবেক সাংসদ।পবিত্র সংসদ তার পদভারে ধন্য। তার মুখ নিসৃত মধু বয়ানে সংসদ কক্ষ এবং জনগনের নির্বাচিত সাংসদগন আনন্দিত হয়েছেন। এমনকি স্বাধীন বাংলাদেশে মন্ত্রিত্বের খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর সময়ে একাবর গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। ৭৫ এর পর জামিনে বেড়িয়ে আসেন এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার মেধার যোগ্য স্বাক্ষর রাখেন।
আজ স্বাধীনতার ৪০ বছর পর আমার ভাইয়ের মতো শহীদদের আত্মাকে আমরা যারা ধারন করে আছি , প্রতি মূহুর্তে রক্তক্ষরণ নিয়ে বেচে আছি তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ আসুন অন্তত এই মহান ব্যক্তিদের বিচারের ক্ষেত্রে আমরা একজোট হয়ে দাড়াই। কলঙ্ক মুক্ত করি নিজেদের। এখনও যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী সমর্থন করে স্বাক্ষর করেননি তাদেরকে এই লিংকে গিয়ে নিজের নাম আর ইমেইল লিখে দেওয়ার বিনীত অনুরোধ রাখছি।
http://www.somewhereinblog.net/blog/Hunuman007/29191895
লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): জামাত-শিবির, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী ;
প্রকাশ করা হয়েছে: বিভাগের নাম বিভাগে । সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১০ রাত ১০:৩১
উপরের লিষ্ট টা কোন দাদা বাবু বানিয়েছেন?
লেখক বলেছেন: জ্বি না জনাব, কোন দাদাবাবু নয়। সম্প্রতি মানবতা বিরোধী অপরাদ তদন্তে গঠিত গণতদন্ত কমিশন পিরোজপুরে গেলে ভুক্তভোগীরা এসব তথ্য-প্রমান তাদের কাছে হস্তান্তর করেন। গোয়েবলসের কায়দায় প্রচারনা চালায় জামাত। আমরা সাধারন মানুষেরা নই। অবশ্য আমাদের কথা বিশ্বাস আপনার হবে কি ভাবে। ওনারাতো আপনার মাথা আগেই খেয়ে ফেলেছেন। আপনি এক কাজ করেন কুখ্যাত আল বদর আমিনুল হক রচিত আমি বদর বলছি বইটা পড়ে আসুন। তিনি আপনাদের লোক। চেপে চুপে যাও খানিকটা আভাসে ইঙ্গিতে বলেছেন, বিন্দুমাত্র মনুষত্য যদি আপনার অবশেষ থাকে তবে ঠিকই বুঝে নেবেন। অন্তত পড়েছেন সেজন্যে ধন্যবাদ। আপনার শুভবুদ্ধির উদয় হোক কামনা করি।
লেখক বলেছেন: শুধু সহমত জানিয়ে আর প্লাস দিয়ে কিন্তু সব কাজ হবে না ভাই। আপনার এলাকার বিশিষ্ট আলেমদের দেশপ্রেমিক কর্মকান্ডের তথ্য যা জানেন রেফারেন্স সহ সংগ্রহ করে প্রকাশ করুন। কারও সাক্ষাতকার নিলে রের্কড রাখবেন। শহীদ সম্পর্কিত তথ্যগুলো যাচাই করে নেবেন। মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর চলে গেছে। রাজাকারগুলো যেভাবে বয়সের কারনে মারা পড়ছে তাতে কিন্তু তাদের সংখ্যা কমছে না। নিও রাজাকাররা এসে তাদের স্থান দখল করে নিচ্ছে। তথ্য প্রমানসহ আমাদের প্রকাশনা অব্যাহত থাকলে রাজাকাররা আমাদের প্রজন্মকে অন্তত নিও রাজাকারে পরিনত করে যেতে পারবে না। ধন্যবাদ।
আমরা হব গালাগালি লীগ,
সভ্য মানুষ থাকবে না ঠিক,
যদি তোমরা বাচতে চাও
ইনডিয়াকে মেনে নাও।
মোদের আশা, মোদের ভরষা,
আমরা যে ভাই চাপাতিলীগ
জীবব নিয়ে গড়ব এবার
ভাদাকারের রাজনীতি ।
গনতন্ত্র নিপাত নিয়ে
আমরা করব ছাএলীগ ।
দেশটা আমরা উজার করইয়া
চলব মোরা গর্ব নিয়া
মেয়েদের নিয়া ফুর্তি করইয়া
বানাবো আমরা নতুন দেশ
সোনার ছেলেরা আসবে তবে
কায়েম করবে স্বাধীন দেশ ।
থাকবে না কো রাজাকার
আর আলবদর, আর আল শামছ,
বাকশালীরা কায়েম করবে
দেশের মানুষ পিঠাইয়া লাল ।
থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে
দেখব দেশটাকে উজার করে
ছাড়বো না গদি আমি
পাইছি যে আমি মজা তারে ।
লেখক বলেছেন: কায়েম করবে স্বাধীন দেশ ।
থাকবে না কো রাজাকার
আর আলবদর, আর আল শামছ,
বাকশালীরা কায়েম করবে
তারমানে আপনি পরাধীন দেশ চান? ৭১ এ এত কুকর্ম করার পরেও রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের চান? ভাল কথা! আজ যখন লীগ আপনাদের পেটাচ্ছে সে তো ভালই করছে। কোন নৈতিক কারন কি আপনার থাকে এরপর এর অবসান চাওয়ার? উপরে একজন যে আছেন বলে বিশ্বাস করেন, তিনি কিন্তু দুনিয়াবি হিসাব দুনিয়াতেই মিটিয়ে দেন। হত্যাকারীদের জন্য আছে লানত। আর অপেক্ষা করে আছে জাহান্নামের আগুন।
লেখক বলেছেন:
লেখক বলেছেন:
ব্লগারকে লালসালাম এমন একটি সময়োপযোগী পোস্টের জন্য......
একশ্রেণীর নব্য রাজাকারেরা সাঈদী গংদের জাতীয় নেতা দাবী করতে ও তা প্রতিহত করতে সচেষ্ট। এই পোস্ট অনেক বিভ্রান্তি দূর করতে সহায়তা করবে।
সবাই কে অনুরোধ করছি এই পোস্টের লিঙ্ক শেয়ার করার জন্য...
লেখক বলেছেন: মহান আলেম মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদীর দেশপ্রিমিক কর্মকান্ডের শিকার হয়েছেন প্রান্তিক জনপদ পটুয়াখালীর নাগরিককুল। যোগাযোগের ক্ষেত্রে পশ্চাদপদ জেলা ছিল সেদিনও। লঞ্চে করে বরিশাল হয়ে যেতে হত। এতএব মুক্তিযদ্ধের তথ্য সংগ্রাহকেরা মুলত ঢাকা কেন্দ্রীক হওয়ায় তার কর্মকান্ড সম্বন্ধে বিশদ জনগনের সম্মুখে আসতে দেরী হয়েছে। তিনি ছিলেন একজন মহান রাজাকার। হত্যা, খুন, ধর্ষন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নারীদের পাকিস্থানীসৈন্যদের হাতে তুলে দেয়া হেন কোন যুদ্ধাপরাধ নেই যা তিনি করেন নি। তার নেতৃত্বে ছিল ৩০০ জন রাজাকারের বিশাল বাহিনী। পটুয়াখালীর পুরো জনপদ দেলু বা দেউল্যা রাজাকারের নামে তটস্থ থাকতো। ব্যক্তিগত জীবনে মুদী দোকানী সাইদী তাবিজ কবজের ব্যবসা করতেন তখন। সুর করে সুরা পড়তে পারতেন। স্বাধীনতার পর দেশদ্রোহী আইনে গ্রেফতার হলেও জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দিলে তিনিও মুক্ত বাতাসে আসেন আবার দেশপ্রেম দেখাতে। শুরু করেন ওয়াজ ব্যবসা। আর পেচনে তাকাতে হয়নি তাকে। পবর্তীতে জামায়াত এই মহান রাজাকারকে নিজেদের দলভূক্ত করে নেয়। ২০০৮ সালের ১১ই নভেম্বর তত্বাবধায়ক সরকারের সময় এ যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এডভোকেট লিটন মিয়া , সাফায়াৎ হোসেন সজিব এবং রাজিব আহমেদ৷
সাইদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা
সাইদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা
সাঈদীর চ্যালেন্জের ১৩ বছর
লেখক বলেছেন: উপরে মামলার লিংকগুলা ঘুরে আসুন। সত্য মিথ্যা আদলতে যাচাই হবে। ১৯৯৬ সালে করে নাই তো এখন করবে না এটা কি যুক্তিসঙ্গত কথা হল ভাই? সকাল বেলা নাস্তা করেননি বলে সারাদিন আর খাওয়া যাবে না এমনটা কি আপনি নিজে মানবেন? মানবেন না তো! বেশ, উত্তরটি এবার নিজে দেন।
লেখক বলেছেন: এইটা একটা আজব দেশ বস। দশটা হোন্ডা আর বিশটা গুন্ডা থাকলে কদিন আগেও পটুয়াখালীর মতো প্রত্যন্ত জনপদে এটা সম্ভব ছিল। ৩৬ বছরে নতুন প্রজন্মের কাছে অনেক কিছুই ছিল অজানা। জামাতের গোয়েবলসিয় প্রচার দপ্তর সব মিথ্যা বলে প্রচারনা চালিয়ে গেছে। এখনও যে চালাচ্ছে তা দেখতেই পাচ্ছেন।অবশ্য এখন তথ্য যোগাযোগ বাড়ায় তথ্য প্রকাশ অনেক সহজ হওয়ায় এবার তারা মার খাচ্ছে বলেই বোধ হচ্ছে।
লেখক বলেছেন: জ্বি আপনি যে বর্বর মিথ্যার সেনাপতি সেটা না হয় বলে গেলেন আর আমরা জেনে রাখলাম।
রাজাকারের আত্মকথা
বীরাঙ্গনা
লেখক বলেছেন: আপনাকেও ছাগু খেতাবে আখ্যায়িত করে গদাম সহকারে ব্লক করা হল।
লেখক বলেছেন: কে আপনি নাকি মহান আলেম দেলোয়ার হোসেন সাইদী?
লেখক বলেছেন: সত্যি কথা বললেই যদি চাপাতি লীগ, কাপতি লীগ ইত্যাদি বিভূষনে ভূষিত হতে হয় তবে ভাইজান আমি তাই। কবে যে আপনাদের ফাকা মাথায় এটা ঢুকবে যুদ্ধাপরাধীদের বিপক্ষে শুধূ লীগই নয় সাধারন জনগনেরও বিশাল একটা অংশ আছে। যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন ততই আপনাদের মঙ্গল। আপনাদের হেদায়েত কামনা করছি।
বিশাল না...বেশিরভাগ
দুই একটা ছাগু বাদে ।
মুছে দিতে ওরা কেউ পারেনি
সত্যের কথা মোরা বলেই যাব
বাধার পাহাড় যত মাড়িয়ে।
আপনি কি সেই সাঈদীর ব্যাপারে এইসব কথা বলছেন যা ৭২-৭৫ পর্যন্ত কেউ কখনো শোনেনাই? ইনি এমন একজন লোক যার হাতে হাজারো আদম সন্তান ইসলামের এই পরিবারে নতুন সদস্য হয়েছে। এই সেই সাঈদী যিনি হাজার হাজার ৭-১২ বছরের বালককে হিফজ করা শেষ হলে পাগড়ী পরিয়েছেন। আপনার মসজিদের তারাবীর নামায যে ছেলেটা পড়ায় এটা মোটেই অস্বাভাবিক না সে সাঈদীর হাতে পাগড়ী পরেছে। এই সেই সাঈদী যার মাহফিলে আমি নিজে আওয়ামীলীগের স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে অংশ নিতে দেখেছি।
আপনি অভিযোগ এনেছেন।
"প্রমাণ হাজির কর। যদি সত্যবাদী হও"- আল কুরাআন (রেফারেন্স মনে নাই, দাবী করলে খুজে দেব ইনশাআল্লাহ)
আপনার কাছে একটা সহজ প্রশ্ন করি। আপনি আপনার লেখায় যেহেতু যুক্তির গুরুত্বকেই বেশী স্থান দিয়েছেন। অন্তত ১ নাম্বার কমেন্টের জবাব পড়ে তাই মনে হল। আপনার কাছে আমি যৌক্তিক আচরন আশা করছি।
১৯৭১ এ সবচাইতে বড় পাকিস্থান পন্থী দল কোনটা ছিল? পাকিস্থান পন্থীদের মধ্যে কাদের জনশক্তি ও সমর্থন বেশি ছিল? সেটা কি জামায়াতে ইসলামী? নাতো। এটা তো ছিল মুসলিম লীগ। তারাই সব আসনে আওয়ামীলীগের সাথে ফাইট দিত। জামায়াত অর্ধেক আসনে লোক দাড়াকরানোর ক্ষমতাও ছিলনা। একটা বাচ্চাও বুঝবে যে মুসলীম লীগের পক্ষেই এটা স্বাভাবিক যে পাকিস্থান আর্মির সবচেয়ে বড় দালালী করা। এটা সত্য যে জামায়াতের ভূমিকা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা না হওয়া বা পাকিস্তান না ভাঙ্গার পক্ষে। যদি একথা বিশ্বাসও করি যে জামায়াত রাজনৈতিক বিরোধিতার সাথে সাথে এই অন্যায় গুলোও করেছিল তাহলে মুসলিম লীগের নেতাদের শাস্তির আওতায় আনার পরই তো তাদের কথা বিবেচন করা যেতে পারে। কিন্তু মুসলিম লীগারদের কথা এখন আর শুনিনা। কেন? they are no more threat to power. thats what matters my friend!
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামের ইতিহাস যদি খুজে দেখেন দেখবেনসেখানে মুসলীম লীগের নেতাদের তেমন ভূমিকার কথা লেখা নেই। মোনায়েম খান, খান এ সবুর খান, ফ কা চৌধুরীর মতো অল্প দু একজন ছাড়া আর তেমন কারও নাম আপনি খুজে পাবেন না। কেন এমনটা হল। তার একটা বিচিত্র কারন আছে। পাকিস্থান সৃষ্টির পরই ক্ষমতার দ্বন্ধে মুসলীম লীগ দুটুকরা হয়ে যায়। একটা অংশের আওয়ামীলীগ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে পূর্ববাংলায় দুর্বল হয়ে পড়ে মুসলীম লীগ। আর মুসলীমলীগকে শুষে ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উঠে আওয়ামীলীগ। মুসলীম লীগ দুর্বল হওয়ার পরও এর নিস্তার ছিল না। সামরিক শাসকেরা নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে প্রত্যেকেই মুসলিমলীগের এক একটা টুকরো নিয়ে নিজের দল বানিয়েছেন।
মুলত মুসলিম লীগ কোন কোর দল ছিল না। বাঙ্গালী সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারগুলোর কন্টিনিয়াসনেস নিয়ে টিকে ছিল এ দল। আজকের বিএনপির কথা আপনি এখানে ভাবতে পারেন। এ দল যারা করতো তারাদের মেধা মননে অনেকেই এ ভূখন্ডকেই ধারন করতো। ১৯৬৯ এর গণ অভূত্থানকে কেন্দ্র করে তাই আমরা দেখি মুসলিম লীগের ছাত্র সংগঠন এনএসএফ দু টুকরা হয়ে যায়। পাচুপাত্তর নেতৃত্বাধীন একটা অংশ যেটি সরকারকে সমর্থন করল আর জিএস নাজিমের নেতৃত্বাধীন এনএসএফ সরাসরি গণঅভূত্থানকে সমর্থন করল। ছাত্র ইউনিয়নের ক্যাডাররা পাচুপাত্তুকে হত্যা করলে সে অংশটিও দুর্বল হয়ে পড়ে আর জি এস নাজিমের নেতৃত্বাধীন অংশটি সরাসরি গণআন্দোলনে যোগ দেয়। আপনি দেখবেন আগরতলা মামলায় মুক্তির পর শেখ মুজিবকে ছাত্র জনতার যে সভায় বঙ্গবন্ধু উপাধি দেয়া হয় সে সভা পরিচালনা করেছিলেন নাজিম, সভাপতিত্ব করেছিলেন তোফায়েল। বস্তুত এর মধ্য দিয়ে বাঙ্গালী মধ্যবিত্তের জাতিয়তাবাদী আন্দোলনে অভিজাত মুসলীম লীগ বিলীন হয়ে যায়। সত্তরের নির্বাচনে এর প্রতিফলন আমরা দেখি।
ভূমিকা শেষে আসুন এবার দেখি কেন জামাতকে একাই সব দায় নিতে হল। পূর্ববাংলায় মুসলিম লীগের এই বিধ্বস্থ অবস্থার কথা জানতেন পাকিস্থানী সমরনায়কেরা। তাই তারা মুসলিমলেগের উপর ভরসা রাখতে পারেন নি। রক্তাক্ত আক্রমন শুরু হলে এনএসএফ নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। অনেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান এবং মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করেন। যারা জামায়াত করেন তাদের জন্যে আমিনুল হকের আমি বদর বলছি এই বইতে দেখবেন তিনি এন এস এফ মুক্তিযোদ্ধাদের কথা লিখেছেন। আর তাই পাকিস্থানী সমর নায়কেরা ঝুকে পড়েন কোর সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর দিকে। তার যোগাযোগ করেন তত্কালীন পূর্ব পাকিস্থান জামাতের আমির গোলাম আজমের। গোলাম আজম নিজেকে মুজিবের সমান ভাবতেন।তিনি দেখলেন আর্মি আওয়ামীলীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে বদ্ধপরিকর। তিনি আওয়ামীলীগের শুন্যতার সুযোগ নিতে চাইলেন এবং ইতিহাসের নিরিখে সবচেয়ে বড় ভূলটি করলেন।
(পরের কিস্তি আসছে)
লেখক বলেছেন: এই সুযোগে প্রথমেই গোলাম আযম প্রাদেশিক সরকারে তাদের অংশীদারিত্ব দাবী করেন। নতুন করে যে প্রাদেশিক সরকার গঠিত হয় তাতে মন্ত্রীদের মনোনয়ন দেন গোলাম আযম। জামাত থেকে দুজন হর মন্ত্রী। একজন মন্ত্রী মাওলানা ইউসুফ এখনও জামতের নায়েবে আমির।
জামায়াতে ইসলামী বরাবরের মতোই তখনো গোছানো সুশৃংখল সংগঠন। দেশের অনেক কলেজে তাদের ছাত্র সংগটন ছাত্র সংঘের কমিটি ছিল। সেই দিকে বলতে গেলে সারা বাংলাদেশে এটি ছড়ানো ছিল। গোলাম আজমের নির্দেশে জামায়াত এবং এর ছাত্র সংগটন ছাত্র সংঘ পাকিস্তান আর্মির পক্ষে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে। গোলাম আজমের সরাসরি তত্বাবধানে সারাদেশে ছাত্র সংঘের নেতাদের তদারকিতে রাজাকার ফোর্স গঠন করা হয়। এই রাজাকারদের সবাই যে জামায়ত ছিল তা কিন্তু নয়্ বেশীরভাগই ছিল স্থানীয সুবিধাবাদী। ছাত্রসংঘের নেতারা যেহেতু শিক্ষিত অর্থাৎ কলেজ পড়ুয়া ছিলেন, পাকিদের সাথে কথাবার্তা চালাতে পারতেন তাই তারা পাক আর্মির সাথে কোলাবরেশনে থাকেন এবং অপারেশনের প্লান প্রোগ্রাম হাজির করেন। রাজাকারদের সহায়তা নিয়ে পাক আর্মিকে দিয়ে তাদের কেন্দ্রীয় নীল নকশা অনুযায়ী আওয়ামীলীগ ও হিন্দু নিধন যজ্ঞ শুরু করেন। অনেকে প্রশ্ন করবেন কেন তারা এমনটা করবেন। তার এমনটা করলেন কারন তারা ভাবলেন স্থানীয় নেতাকমীদের হত্যা করে আওয়ামীলীগকে নেতৃত্বশুণ্য করে ফেলতে পারলে এবং হিন্দুদের উপর নির্যাতন চালালে একদিকে যেমন আওয়ামীলীগ পরীক্ষিত কর্মীদের অভাবে আর মাথা তুলে দাড়াতে পারবে না তেমনি হিন্দু সম্প্রদায় কিছুটা খুন হয়ে কিছুটা ভারতে পালিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে আওয়ামীলীগের কোর ভোটাররাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ফলে আওয়ামীলীগ আর মাথা তুলে দাড়াতে পারবে না। জামায়াত তার একচেটিয়া রাজত্ব কায়েম করতে পারবে। সেনাবাহিনী ও চাইছিল তাদের বংশবদ কারও হাতে যদি পূর্বের নেতৃত্ব থাকে তবে এটা আর সমস্যার কারন হবে না।
এর সপক্ষে প্রমান যদি চান আমি বলব মধ্য সেপ্টেম্বরে গোলাম আযম যখন লাহোর সফরে যান তখন তিনি দাবী করেছিলেন পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রীত্ব একজন পূববাসীর হাতে থাকা উচিত। তখনকার সংগ্রামে দেখতে পারবেন এ সংক্রান্ত সংবাদ। অমি পিয়ালের ব্লগে সম্ভবত সংবাদের কাটিংটা আছে।
যাই হোক রাজাকাররা গোলাম আজমের জামাতের মত সুশৃংখল ছিল না। ফলে তারা পাইকারি খুন জখমে লেগে গেল। হত্যা, ধর্ষন, পাকিস্থানী সেনাদের জন্য মেয়েদের তুলে আনা, লুটতরাজ চালিয়ে গেল। ফলে ছাত্র সংঘের নেতাদের চেয়ে পাকিদের সাথে রাজাকারদের সম্পর্ক ভাল হয়ে গেল। কারন তারা সেনাদের সব দাবী দাওয়া মেটাচ্ছিল। (পরে অবশ্য এসব রাজাকারদের বেশীল ভাগই জামায়াতে যোগ দেয়। সেটিরও আরেকটি কারন। তা হল ৭১ থেকে ৭৫ পর্যন্ত জেলে বন্দী থাকা অবস্থায় জামায়াত নেতারা এদের জামাতে যোগ দিতে উদ্ধুদ্ধ করেছিলেন।)
কিন্তু পাক আর্মিও রাজাকারদের দিয়ে পাইকারী হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যেয়ে সাধারন জনগনের কাছে জামায়াতের নেতারা চিহ্নিত হযে পড়েন। রাজাকারদের দস্যুতা, লুটতরাজ,ধর্ষন ইত্যাদি বদনাম তাদের নিজেদের গায়ে লেগে যায়। ফলে তাদের নিজেদের নীল নকশা বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে পড়তে শুরু করে। সেপ্টেম্বরের শেষ হতে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমন ভারতীয় সেনাদের সহযোগিতায় তীব্রতর হযে উঠলে রাজাকার বাহিনী আর সেনারা প্রতি আক্রমন সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। জামাত নেতৃত্ব তখন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে।তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সমর্থন নিয়ে সরকারী গেজেট অনুযায়ী দুটি এলিট কোলাবরেটর ফোর্স তৈরী করে। এগুলো হল আল বদর, আর আলশামস। মুলত ছাত্র সংঘের জেলা মহকুমা ইত্যাদির সভাপতিরা এর কমান্ডার হন। এরই সাথে তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সব কোলাবরেটর ফোর্সের জেলা মহকুমা ইত্যাদি সমন্বয়কারী হিসাবে থাকেন। একটা জিনিষ খেয়াল করলে দেখবেন যখন জামায়াত কারো মেধার কাছে পরাজিত হয় তখন তারা তাকে হত্যার পথ বেছে নেয়। আলবদর আলশামসকে অনেক উন্নত অস্ত্র দেয়া হল। তাদের থাকার ব্যবস্থা হল স্থানীয় স্কুল কলেজ বিল্ডিংএ। গোলাম আজমের ঠান্ডা মাথার প্লান ছাত্র সংঘের করিত্কর্মা সভাপতি মতিউর রহমান নিজামী এবং সাধারন সম্পাদক মুজাহিদের সাহয্যে বাস্তবায়ন হতে লাগল। আগের পাইকারী হত্যার বদলে বেছে বেছে হত্যা যজ্ঞ চলল এবার। বুদ্ধিজীবি হত্যা এর একটি চমত্কার উদাহরন।
সবশেষে যুদ্ধ সমাপ্তিতে বিজয়ীরা এসে দলে দলে গ্রেফতার করল আলবদর আলশামসদের। (যদিও অনেকেই এদেশীয় হওয়ার সুযোগে জনগনের কাতারে মিশে গিয়ে পালিয়েছিল দীর্ঘদিন।) আর এদের মুখ থেকে মুক্তিযোদ্ধারা জানল একাত্তরের তাদের বীভত্স নানা কীর্তিকান্ড। দন্ডিত হল জামায়াত।
আশাকরি এরপর আপনাকে আর বলার প্রয়োজন পরবে না কেন একা জামায়াতের ঘাড়ে যুদ্ধাপরাধের দায় চাপল।
সাইদীর যুদ্ধাপরাধের কথা সুবিদিত।
৭১ এ সাইদী জামায়াত করতেন না। তিনি ছিলেন একজন মুদীর দোকানদার। তাবিজ কবজের ব্যবসা করতেন। সম্ভবত সেকারনেই জামায়াতের শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের সাথে তাকে এককাতারে ফেলা যায় না। সেকারনেই সম্ভবত তার বিরদ্ধে নৈতিক স্থলন জনিত অপরাধের অভিযোগ বেশী।যেটা জামায়াত নেতাদের ক্ষেত্রে তেমনটা শোনা যায় না।
স্বাধীনতার পরে সাইদী এদেশীয় হওয়ার সুযোগে পালিয়ে জনগনের সাথে মিশে যান। ৭২-৭৫ পর্যন্ত সাইদী কোথায় ছিলেন তা খুজতে গিয়ে দারুন তথ্য পেয়েছি আমি। তিনি তখন ওয়াজ মাহফিলে জড়িয়ে পড়েন। কার শিষ্য ছিলেন তখন সেটা আমি আর কদিন পর ডিটেইলে বলতে পারবো। তো সম্ভবত ৭৩ সালে দিকে দেশবিরোধী আইনে সাইদীকে গ্রেফতার কার হয়। এ তথ্য আমরা জানতে পারি আমি আল বদর বলছি বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় থেকে। সেখানে আমিনুল হক লিখেছেন জেলখানায় সাইদীর সাথে তার দেখা হয়েছিল। তার একসাথে এক কারা প্রকোষ্টে ছিলেন। শহিদুল্লাহ কায়সারের হত্যাকারী চৌধুরী মইনউদ্দিন সহ বুদ্ধিজীবি হত্যায় অভিযুক্ত অনেকের খবর আমরা তার বই থেকে জানতে পারি। সাইদী জেলখানায় সুরেলা গলায় ওয়াজ করতেন। সেখানে তার অনেক ভক্ত তৈরী হয্ মোটামুটি জামাতের নেতাদের সাথে ঘনিষ্টতাও হয়তো তখন থেকে শুরু হয়। যাই হোক জিয়াউর রহমান সৈয়দা জোরা তাজউদ্দিনের কঠিন আপত্তির মুখে আওয়ামীলীগে চেষ্টা করে ঢুকতে না পেরে আওয়ামীলীগের বিকল্প শক্তি দাড় করাতে চাইলেন। সে জন্যে সব কারাবন্দী যুদ্ধাপরাধীদের তিনি মুক্ত করে দেন। তখন সাইদীও বের হয়ে এসন। এরপর সাইদীকে আমরা দেখি ৭৭ সালে এক ওয়াজ মাহফিলে। সুনলা কন্টের কারনে তার নাম ছড়াতে থাকে এবং ধীরে ধীরে সাইদী বিখ্যাত হয়ে পড়েন। অবশ্য তাকে বিখ্যাত করে আওয়ামীলীগ ও প্রগতিশীল শক্তিগুলো। বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ করতে সাইদীকে বাধা দিলে তিনি মিডিয়া নিউজ হয়ে যান। আর বুদ্ধিমান সাইদী এসব ব্যবহার করতে থাকেন এবং আওয়ামী বিরোধী বলয়ের মানুসদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন। ক্রমাগত প্রতিরোধের মুখে পরতে পরতে সাইদী জাময়াতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন এবং স্বীয় মেধা খাটিয়ে খুব জামাতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কাতারে নিজের জায়গা করে নিতে সক্ষম হন। যেটা জামাতের রাজনীতির ইতিহাসে দেখা যায় না। বস্তুত আওয়ামীলীগ এবং জামায়াতে বহিরাগতদের সন্দেহের চোখে দেখা হয়। তাদের নেতৃত্বের আসলে বসতে দেয়া হয় না। যে রক্ষনশীলতার ভূইয়া, খোকাদের মতো অসংখ্য বাম নেতা আওয়ামীলীগে জায়গা না পেয়ে বিএনপিতে চলে গিয়েছেন। এবং ঠিকই শীর্ষ নেতৃত্বে জায়গা করে নিয়েছেন।
সাইদীর যুদ্ধাপরাধের অবশ্যই তথ্য প্রমান আছে। এখন এসব সংরক্ষিত আছে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুন্যালের তদন্ত টিমের কাছে্ সংগত কারনেই প্রত্যক্ষ স্বাক্ষীদের নাম গোপন রাখা হচ্ছে। কারন নইলে শক্তিমান সাইদী তাদের নিরাপত্তার ব্যাঘাত ঘটাতে পারেন। খুব শিগগিরই এসব তথ্য প্রমান পত্রিকার পাতা এব সামুতে আমাদের পোষ্টে চলে আসতে শুরু করবে। লক্ষ্য রাখুন।
আর সবশেষে,
"প্রমাণ হাজির কর। যদি সত্যবাদী হও" এমন না হয়ে এমনটা কি হবে,
"নিশ্চয়ই মুমীন ওরাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান এনেছে , অত:পর এতে কোন সন্দেহ-সংশয়ে পড়েনি....। তারাই তো সত্যবাদী।" [সুরা আল হুজরাতঃ (১৫)]
অবশ্য আমি পুরোপুরি নিশ্চিত নই। আমারও প্রথমেমনে হয়েছিল সুরা বাকারা অথবা সুরা বনী ইসরায়েলে এমন আয়াত থাকল্ওে তাকতে পারে। যেহেতু নিশ্চিত নই তাই আপাতত পড়ে নিই। তারপর বলা যাবে।
যে আইডিওলজিকাল মুভমেন্ট নিয়ে আপনি কথা গুলো বললেন সেই মুভমেন্টের সামনে দুনিয়ার আরেক প্রান্তে এমনো সময় গেছে যখন আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সামনেই তাদের মা, মেয়ে, বোন অথবা স্ত্রী কে ধর্ষন করেছে ফ্যাসিস্ট শাসক গোষ্ঠীর পেটয়া বাহিনী। কিন্তু শরীয়াহর অনুমোতি না থাকার কারন তারা পালটা আক্রমন চালায় নাই। তাই আপনি যে বললেন জামায়াত যখন মেধায় পরাজিত হয় তখন হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় এই কথাটা মোটেই সত্য না। এটা নির্জলা মিথ্যাকথা।
এটা জামায়াত স্বীকার করে নিয়েছে যে ৭১ সালে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান সঠিক ছিল না। আর গোলাম আজম তার জীবনে যা দেখলাম বইতে স্পষ্ট করে একথা বলেছেন যে ঐ টালমাটাল সময়ে অনেক সুযোগ সন্ধানী নানা অকাম কুকাম করে থাকতেই পারে। কারন জামায়াতে ইসলামী একদল মানুষ নিয়ে গঠিত, এটা ফেরেস্তাদের দল না। সিপিবি থেকে যে নকশাল বাড়ীয়ার গলা কাটা বাহিনীর উদ্ভব আত্র দায় কি সিপিবিকে নিতে বলা হয়? তাহলে জামায়াতের কেউ পথভ্রষ্ট হয়ে এইসব অন্যায় করে থাকলে তার দায় কেন জামায়াত কে নিতে বলা হয়? শুধু এতটুকুই বলার আছে যদি আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যাল গঠন করে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ক্যামেরার সামনে একটা বিচার হয় তবে অবশ্যই অবশ্যই এটা প্রমান হবে যে কোন প্রকারের যুদ্ধাপরাধ জামায়াত নেতৃবৃন্দের নীতিগত সিদ্ধান্তের ফলে সংঘটিত হয় নাই। অর্থাৎ এমনটা মোটেই সত্য না যে জামায়াত নেতারা নির্দেশ দিতেন আর ছাত্রসংঘের ছাত্ররা গিয়ে হিন্দুনারী ধর্ষন করে আসতেন।
আপনি যেভাবে মুসলিম লীগকে এখানে হাজির করেছেন তা আমার কাছে অতি সরলীকরন মনে হয়েছে। অবশ্যই অবশ্যই তখনো মুসলিম লীগের ক্ষমতা ও জনসমর্থন ও একটা শক্তি হিশাবে তার অবস্থান জামায়াত তো বটেই অন্যান্য অনেক দলের চাইতে বেশি ছিল। তারা ছিল সেকেন্ড লার্জেস্ট পার্টি ইন বাংলা।
__._,_.___