Article on Dr. Mohammad Yunus by Pir Habibur Rahman
ড. ইউনূস চলুন আপনাকে হাওর দেখাতে নিয়ে যাব
পীর হাবিবুর রহমান
নোবেল লরিয়েট ড. মুহাম্মদ ইউনূস চলুন আপনাকে হাওর দেখাতে নিয়ে যাব। পশ্চিমা যান্ত্রিক সভ্যতার ভেতর ঢুকতে ঢুকতে চড়া সুদে গ্রামীণ গরিব জীবন বিপন্ন করে দিয়ে হাজারও অনিয়ম আর বিতর্কের মুখে আপনি আজ বড্ড ক্লান্ত। বলা যায় অবসন্ন। কারণ যে করেই হোক, নোবেল জয় করে পশ্চিমা বাদশাহ নামদারদের সঙ্গে ওঠাবসা করে আপনার একটা মানসম্মান তো দাঁড়িয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষ আপনাকে নাইবা কাছে টানল। সচেতন সমাজের মানুষ না হয় আপনাকে নিয়ে বিতর্কের ঝড় তুলল। সুশীল পাখিরা না হয় সরকারের সমালোচনায় বিদেশের টাকায় বিদেশের শরাবে বিদেশের সঙ্গে আপনারই গান গাইল। কিন্তু আপনি যখন জোবরা গ্রাম থেকে ৫০ টাকায় যাত্রা শুরু করেন তখন তো জানেন এসব সুশীল বাংলার মানুষের ভাষা বোঝে না। বাংলার মানুষ আজ জেনে গেছে আপনি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গ্রামীণ ব্যাংককে নিজের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। অন্যায়ভাবে এটাকে দখল করেছিলেন। দেশের আইন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধিবিধান না মেনেই আজীবন ব্যাংকের এমডি থাকতে চেয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক যখন অপসারণ করল তখন আপনি বললেন, চলে যেতে চান। কিন্তু গেলেন না। গেলেন বড় আইনজীবীদের কাছে। তারাও একদিন পশ্চিমাদের কাছে ঠকতে ঠকতে শিখেছেন 'জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস'। আদালত সত্যের পক্ষে রায় দিলেন। আপনি হেরে গেলেন। রিক্ত, নিঃস্ব মানুষের মতো এখন দেখবেন আপনি আপনার গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরকারি শেয়ার কীভাবে কমিয়ে দিয়েছেন। কীভাবে গ্রামীণ ফান্ডের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে আপনি ১৪৭টি প্রতিষ্ঠানে টাকা সরিয়েছেন তার তদন্ত হবে। ড. ইউনূস আপনি সম্মানী মানুষ। নিজের সম্মান নিজেকেই রাখতে হয়। মানুষের ভাষা বুঝে আপনি নোবেল পেয়ে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ থেকে ধুমধাম করে দল করার মহাউদ্যোগ বিসর্জন দিয়েছিলেন। মনে রাখবেন অস্ত্র বড় শক্তি হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। মার্কিন নৌবহর ফিরে গিয়েছিল অনেক আগেই। ব্যক্তিগত সম্পর্ক দিয়ে বিজয় অর্জন করা গেলে ভুট্টো জিততেন, বন্দী মুজিব নয়। আপনি বিদেশের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক দেশের উন্নয়নে কতটা কাজে লাগিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তবে আমাদের সরকারপ্রধানেরও পশ্চিমা ও বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দুনিয়ার সঙ্গে উষ্ণ ও গভীর সম্পর্ক শীতল হওয়ার নয়। কারণ তার হাতে সেক্যুলার রাজনীতির ট্রামকার্ড আছে। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন শেখ হাসিনা। একজন ব্যক্তির অনৈতিক কর্মকাণ্ড ধামাচাপা দিতে ওবামা প্রশাসন বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার ও নেত্রীর মুখোমুখি হয়ে যাবে; এ আশায় ও মতলবে যারা আপনাকে নিয়ে জিগির তুলছেন তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক না হলেও উচ্চাভিলাষী, প্রতিহিংসাপরায়ণ ছাড়া কিছু নয়। অতএব আপনি এখনো সময় আছে ভুল স্বীকার করে সব ছেড়ে দিন। দেখবেন মানুষ সহানুভূতিশীল হবে। একদিন আপনি মার্কিন মুল্লুকে জীবনসঙ্গিনীও নিয়েছিলেন। তিনি বেশিদিন আপনাকে টানেননি। দেশে ফিরে বঙ্গললনার সঙ্গে ঘর বাঁধতে হয়েছে। সম্মানিত লোকদের জীবনে অনেক ঘটনা ঘটে। ঘটনাবহুল জীবন আপনার। গ্রামীণ ব্যাংক যদি চড়া সুদের নির্দয় প্রতিষ্ঠান না হতো তাহলে আজ গ্রামবাংলার নারীরা ছুটত আপনার নামে মিছিল নিয়ে। আদালতের রায় শোনার পর ভাড়া করা লোক রাস্তায় নামিয়ে বলতে হতো না আমরা ইউনূসকে চাই। মার্কিন প্রশাসনের আলোকিত মুখগুলোর তদবির করতে হতো না। রমনার পহেলা বৈশাখ, একুশের বইমেলা, প্রভাতফেরি, শহীদ মিনার_ কোথাও নেই আপনি। মানুষ কেন আপনার চিঠি বা আবেদনে সাড়া দেবে? দরিদ্রের ভাগ্যবদলে যদি নোবেল পাওয়া যায় তাহলে ঋণগ্রহীতার কানের দুল খুলে আত্মহননের পথে ঠেলে দেওয়া গ্রামীণ ব্যাংক নয়, নোবেল পেতেন প্রচারবিমুখ ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা নির্লোভ নিরহঙ্কারী ফজলে হাসান আবেদ।
পশ্চিমাদের তুষ্ট করে হলেও নোবেল অর্জনের কারণে আমি আপনার ভক্ত। যারা আপনার হয়ে আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ তারা আমার শ্রদ্ধেয় স্বজন। কিন্তু সবাই বুঝছেন, অতীতের সরকার ধামাচাপা দিলেও এই সরকার দেয়নি। এটা অন্যায় নয়। সরকার যায়নি আপনি চিকন চাল ও আপনার গৃহকর্মী মোটা চালের ভাত খায় কি না তা দেখতে। সরকার দেখেছে তার অংশ কোথায় গেল। অনিয়ম, আইন পরিপন্থী কাজ কতটা হলো। এবার আপনার অতীত ও গ্রামীণ ব্যাংক সাঁড়াশি তদন্তের মুখে পড়বে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না হলে সরকারের স্বচ্ছতাও দেশে-বিদেশে থাকবে না। নোবেল জয় করে বলেছিলেন দুনিয়া থেকে এখন গরিবি জাদুঘরে পাঠানোর সময় হয়েছে। কিন্তু আজ পরিস্থিতি বলে দিচ্ছে আপনাকেই জাদুঘরে পাঠানোর সময় হয়েছে। তাই জাদুঘরে যাওয়ার আগে বলব, সামনে আরও কঠিন সময়। ড. ইউনূস চলেন কবিতা, গান, প্রেম, আড্ডা ও জোসনার শহর সুনামগঞ্জে। শান্তির শহরে। ওখানে রাজনৈতিক খুন হয় না। ভরা বর্ষায় জোসনা রাতে অথৈ জলতরঙ্গের সঙ্গে চাঁদের আছড়েপড়া রূপের সৌন্দর্য নবযৌবনা সুন্দরীর রূপকে হার মানায়। সেই সঙ্গে নাওয়ে নেব মরমী, বাউল, ভাটিয়ালি, গানের দল। এখন বর্ষা নয়। এখন হাওর হেমন্তের মরা কঙ্কাল। তবে হাওরের বিস্তীর্ণ জলে বেড়ে ওঠা মাছ ধরা চলছে। রাতভর মাছ ধরা, মাছ রান্না, গানের জলসা হাওরে উপভোগ করবেন। থাকবে গানের দল, বাদ্যযন্ত্র_ঢোল, দোতারা, মন্দিরা, বাঁশি। সামনে দেখবেন একদিকে জোসনা ও জলের নান্দনিক সৌন্দর্য, আরেকদিকে অকাল বন্যায় বাঁধ ভেঙে কীভাবে কৃষকের সর্বস্ব ভেসে যায়। ফসল তলিয়ে যায়। জোসনার নিচে বুকের গভীরের বেদনা কীভাবে কৃষকের চোখের কোণে চিক চিক করে ওঠে। হয়তো প্রকৃতির রূপ ও মানুষের মোটা ভাতের স্বর্গসুখ দেখে বলতে পারেন, আর নয় পশ্চিমা বাদশানামদারদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি। দেউলিয়া কমিউনিস্টদের পাল্লায় পড়ে পেছন দরজার উচ্চাভিলাষ দেখব না। আর নয় পশ্চিমাদের ফুসলিয়ে সামাজিক ব্যবসার তদবিরে জীবন কাটানোর। বাকি কটা দিন সবুর করে, গ্রামীণ জনপদের মরমী মানুষের সঙ্গে কাটাই। বুক ভরে বিস্তীর্ণ হাওরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে শ্বাস নিয়ে বলুন, বাহ্ কী সুখ, আহ্ ওম শান্তি, ওম শান্তি।
পশ্চিমাদের তুষ্ট করে হলেও নোবেল অর্জনের কারণে আমি আপনার ভক্ত। যারা আপনার হয়ে আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ তারা আমার শ্রদ্ধেয় স্বজন। কিন্তু সবাই বুঝছেন, অতীতের সরকার ধামাচাপা দিলেও এই সরকার দেয়নি। এটা অন্যায় নয়। সরকার যায়নি আপনি চিকন চাল ও আপনার গৃহকর্মী মোটা চালের ভাত খায় কি না তা দেখতে। সরকার দেখেছে তার অংশ কোথায় গেল। অনিয়ম, আইন পরিপন্থী কাজ কতটা হলো। এবার আপনার অতীত ও গ্রামীণ ব্যাংক সাঁড়াশি তদন্তের মুখে পড়বে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না হলে সরকারের স্বচ্ছতাও দেশে-বিদেশে থাকবে না। নোবেল জয় করে বলেছিলেন দুনিয়া থেকে এখন গরিবি জাদুঘরে পাঠানোর সময় হয়েছে। কিন্তু আজ পরিস্থিতি বলে দিচ্ছে আপনাকেই জাদুঘরে পাঠানোর সময় হয়েছে। তাই জাদুঘরে যাওয়ার আগে বলব, সামনে আরও কঠিন সময়। ড. ইউনূস চলেন কবিতা, গান, প্রেম, আড্ডা ও জোসনার শহর সুনামগঞ্জে। শান্তির শহরে। ওখানে রাজনৈতিক খুন হয় না। ভরা বর্ষায় জোসনা রাতে অথৈ জলতরঙ্গের সঙ্গে চাঁদের আছড়েপড়া রূপের সৌন্দর্য নবযৌবনা সুন্দরীর রূপকে হার মানায়। সেই সঙ্গে নাওয়ে নেব মরমী, বাউল, ভাটিয়ালি, গানের দল। এখন বর্ষা নয়। এখন হাওর হেমন্তের মরা কঙ্কাল। তবে হাওরের বিস্তীর্ণ জলে বেড়ে ওঠা মাছ ধরা চলছে। রাতভর মাছ ধরা, মাছ রান্না, গানের জলসা হাওরে উপভোগ করবেন। থাকবে গানের দল, বাদ্যযন্ত্র_ঢোল, দোতারা, মন্দিরা, বাঁশি। সামনে দেখবেন একদিকে জোসনা ও জলের নান্দনিক সৌন্দর্য, আরেকদিকে অকাল বন্যায় বাঁধ ভেঙে কীভাবে কৃষকের সর্বস্ব ভেসে যায়। ফসল তলিয়ে যায়। জোসনার নিচে বুকের গভীরের বেদনা কীভাবে কৃষকের চোখের কোণে চিক চিক করে ওঠে। হয়তো প্রকৃতির রূপ ও মানুষের মোটা ভাতের স্বর্গসুখ দেখে বলতে পারেন, আর নয় পশ্চিমা বাদশানামদারদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি। দেউলিয়া কমিউনিস্টদের পাল্লায় পড়ে পেছন দরজার উচ্চাভিলাষ দেখব না। আর নয় পশ্চিমাদের ফুসলিয়ে সামাজিক ব্যবসার তদবিরে জীবন কাটানোর। বাকি কটা দিন সবুর করে, গ্রামীণ জনপদের মরমী মানুষের সঙ্গে কাটাই। বুক ভরে বিস্তীর্ণ হাওরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে শ্বাস নিয়ে বলুন, বাহ্ কী সুখ, আহ্ ওম শান্তি, ওম শান্তি।
__._,_.___