On Thursday, April 23, 2015 8:54 AM, Muhammad Ali <manik195709@yahoo.com> wrote:
'অবাক বিস্ময়ে নতুন বাংলাদেশকে দেখছে ক্রিকেট বিশ্ব'
বৃহস্পতিবার এপ্রিল ২৩, ২০১৫, ১১:৫৮ এএম.
ডা. মুহাম্মদ আলী মানিক: ফতুল্লায় প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের কাছে পাকিস্তান হেরে যাওয়ার পর ফেসবুক স্ট্যাটাসে 'বাংলাওয়াশ' এর ইঙ্গিত দেওয়াতে কিছু বন্ধু বলেছিল 'একটু বেশী হয়ে যাচ্ছে'! তবে সত্যি যখন 'ধবলধোলাই' হলো, তখন সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি সত্যি ফলে যাওয়াতে আমার চেয়ে খুশি আর কেই বা আছে এই জগতে। জীবনে অনেক ক্রিকেট ম্যাচ দেখেছি, দেখেছি পাকিস্তানের অনেক খেলা। কিন্তু এমন অসহায়ের মতো হারতে দেখিনি পাকিস্তানকে কখনো। শক্তিধর অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত তাদের নিজেদের দেশে পাকিস্তানকে এমন শোচনীয়ভাবে হারাতে পারেনি।
ক্রিকেট জগতে পাকিস্তানকে বলা হয় সবচেয়ে 'আনপ্রেডিক্টটেবল' দল। প্রায় প্রতিটি সিরিজে দেখা গেছে 'খাদের কিনারা' থেকে বের হয়ে আসতে তাদের। এমনকি গত বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড শেষে যখন দেশে ফিরে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত, ঠিক তখনই সাউথ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে ফিরে এসেছে শেষ আটে। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশ সফরে একদিনের সিরিজে ব্যাকফুটে গিয়ে এবার পাকিস্তান তার ঐতিহ্য অনুযায়ী আর ফিরে আসতে পারেনি।
এমনিতেই পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপ বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী। আর 'বাংলাওয়াশ' রোধে তাকে আরো ক্ষুরধার করা হয়েছিল উমর গুলকে দেশ থেকে এনে। একইসঙ্গে যোগ হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে হাফিজের স্পিন। কিন্তু কোনোটাই কাজে আসেনি। উল্টা নবাগত সৌম্য সরকারের উইলোবাজিতে বিশ্ববিখ্যাত বোলারদের মনে হয়েছে 'সাধারণ মহল্লার' বোলার! এগারো ওভার বাকি থাকতে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের টার্গেট ২৫০ রান অতিক্রম করে তাই প্রমাণ করেছে টাইগার বাহিনী। শুধু ব্যাটসম্যানরা নয়, বোলাররাও চমৎকার খেলেছে এই ম্যাচে। পাকিস্তানের স্কোর এক সময় ছিল ৩৯ ওভারে দুই উইকেটে ২০৩। তিনশ রান টপকে যাওয়া কোনো ব্যাপারই ছিলনা। বোলারদের কৃতিত্বে পাকিস্তান ২৫০ রানে অল আউট হয়ে যায় অর্থাৎ মাত্র ৪৮ রানে পাকিস্তানের শেষ আট উইকেট এর পতন ঘটে।
ক্রিকেট বিশ্ব এখন অবাক বিস্ময়ে দেখছে নতুন এক বাংলাদেশকে। গত বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স যে কোনো 'ফ্লুক' ছিলনা, এখন সবাই তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। কোয়ার্টার ফাইনালে আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলো না হলে কিছু একটা হয়তো বাংলাদেশ করে ফেলত গত বিশ্বকাপেই! এই মুহূর্তে ক্রিকেট জগতে বাংলাদেশ 'সমীহ জাগা' এক নাম। হঠাৎ করে শক্তিশালী দেশগুলো বাংলাদেশে খেলতে আসার আগ্রহ দেখাচ্ছে। পরাক্রমশালী ভারত আর সাউথ আফ্রিকা সহসাই আসছে। অথচ এই সেদিনও এদেরকে হাতে-পায়ে ধরেও আনা যেতনা!
বাংলাদেশের এই জয়ের ধারাকে ধরে রাখতে হবে। ক্রিকেট কাঠামোকে আরো ঢেলে সাজাতে হবে। সফল কোচ হাথুরো সিংহকে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে রাখতে হবে। আজ হাতুড়ি শিং ছিলেন বলেই সৌম্য সরকার দলে সুযোগ পেয়েছে। না হলে 'ক্রিকেট রাজনীতি'র জন্য এই প্রতিভাকে আমরা হয়ত অঙ্কুরেই হারিয়ে ফেলতাম। সৌম্য, সাব্বির, তাসকিনদের মতো অনেক খেলোয়ার পাইপলাইনে আছে। তাদেরকে সঠিক পরিচর্যা করে সময়মতো সুযোগ দিতে হবে। এখন বাংলাদেশ আর সাকিব-তামিম-মুশফিকের উপর নির্ভরশীল দল নয়। সাকিব তো এই সিরিজে ভালোভাবে ব্যাট করার সুযোগই পায়নি। অথচ কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের ব্যাটিং-বোলিং সাকিবের উপর নির্ভরশীল ছিল। আগামী বিশ্বকাপে এলিট গ্রুপের আটটি দল সরাসরি খেলবে আর বাকি দুটি দলকে কোয়ালিফাই করে আসতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ যেভাবে খেলছে তাতে আগামী বিশ্বকাপে হেসেখেলে এলিট গ্রুপ থেকে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলবে ইনশা আল্লাহ।
একটি কথা না বললেই নয়। স্বাধীন না হয়ে আজও যদি আমরা পাকিস্তানের অংশ হিসাবে থাকতাম, তাহলে বুকে হাত দিয়ে বলুন তো কয়জন বাঙালি পাকিস্তান টিমে সুযোগ পেতো? সাকিব-মাশরাফি-মুশফিকদের সেই মফস্বলে বাস করে ক্রিকেটের বদলে "ডান্ডা গুলি" খেলতে হতো! আর যারাই সুযোগ পেতো, তাদের বেশীরভাগকে রকিবুল হাসানের মত 'পানি টেনেই' সাইড লাইনে বসে থাকতে হতো!
তাই হে প্রাণের স্বাধীনতা, তোমার মহানুভবতায় বাংলাদেশ আজ গৌরবের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে 'ক্রিকেট মানচিত্রে'!
লেখক: সহ-সভাপতি, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।
ক্রিকেট জগতে পাকিস্তানকে বলা হয় সবচেয়ে 'আনপ্রেডিক্টটেবল' দল। প্রায় প্রতিটি সিরিজে দেখা গেছে 'খাদের কিনারা' থেকে বের হয়ে আসতে তাদের। এমনকি গত বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড শেষে যখন দেশে ফিরে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত, ঠিক তখনই সাউথ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে ফিরে এসেছে শেষ আটে। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশ সফরে একদিনের সিরিজে ব্যাকফুটে গিয়ে এবার পাকিস্তান তার ঐতিহ্য অনুযায়ী আর ফিরে আসতে পারেনি।
এমনিতেই পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপ বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী। আর 'বাংলাওয়াশ' রোধে তাকে আরো ক্ষুরধার করা হয়েছিল উমর গুলকে দেশ থেকে এনে। একইসঙ্গে যোগ হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে হাফিজের স্পিন। কিন্তু কোনোটাই কাজে আসেনি। উল্টা নবাগত সৌম্য সরকারের উইলোবাজিতে বিশ্ববিখ্যাত বোলারদের মনে হয়েছে 'সাধারণ মহল্লার' বোলার! এগারো ওভার বাকি থাকতে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের টার্গেট ২৫০ রান অতিক্রম করে তাই প্রমাণ করেছে টাইগার বাহিনী। শুধু ব্যাটসম্যানরা নয়, বোলাররাও চমৎকার খেলেছে এই ম্যাচে। পাকিস্তানের স্কোর এক সময় ছিল ৩৯ ওভারে দুই উইকেটে ২০৩। তিনশ রান টপকে যাওয়া কোনো ব্যাপারই ছিলনা। বোলারদের কৃতিত্বে পাকিস্তান ২৫০ রানে অল আউট হয়ে যায় অর্থাৎ মাত্র ৪৮ রানে পাকিস্তানের শেষ আট উইকেট এর পতন ঘটে।
ক্রিকেট বিশ্ব এখন অবাক বিস্ময়ে দেখছে নতুন এক বাংলাদেশকে। গত বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স যে কোনো 'ফ্লুক' ছিলনা, এখন সবাই তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। কোয়ার্টার ফাইনালে আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলো না হলে কিছু একটা হয়তো বাংলাদেশ করে ফেলত গত বিশ্বকাপেই! এই মুহূর্তে ক্রিকেট জগতে বাংলাদেশ 'সমীহ জাগা' এক নাম। হঠাৎ করে শক্তিশালী দেশগুলো বাংলাদেশে খেলতে আসার আগ্রহ দেখাচ্ছে। পরাক্রমশালী ভারত আর সাউথ আফ্রিকা সহসাই আসছে। অথচ এই সেদিনও এদেরকে হাতে-পায়ে ধরেও আনা যেতনা!
বাংলাদেশের এই জয়ের ধারাকে ধরে রাখতে হবে। ক্রিকেট কাঠামোকে আরো ঢেলে সাজাতে হবে। সফল কোচ হাথুরো সিংহকে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে রাখতে হবে। আজ হাতুড়ি শিং ছিলেন বলেই সৌম্য সরকার দলে সুযোগ পেয়েছে। না হলে 'ক্রিকেট রাজনীতি'র জন্য এই প্রতিভাকে আমরা হয়ত অঙ্কুরেই হারিয়ে ফেলতাম। সৌম্য, সাব্বির, তাসকিনদের মতো অনেক খেলোয়ার পাইপলাইনে আছে। তাদেরকে সঠিক পরিচর্যা করে সময়মতো সুযোগ দিতে হবে। এখন বাংলাদেশ আর সাকিব-তামিম-মুশফিকের উপর নির্ভরশীল দল নয়। সাকিব তো এই সিরিজে ভালোভাবে ব্যাট করার সুযোগই পায়নি। অথচ কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের ব্যাটিং-বোলিং সাকিবের উপর নির্ভরশীল ছিল। আগামী বিশ্বকাপে এলিট গ্রুপের আটটি দল সরাসরি খেলবে আর বাকি দুটি দলকে কোয়ালিফাই করে আসতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ যেভাবে খেলছে তাতে আগামী বিশ্বকাপে হেসেখেলে এলিট গ্রুপ থেকে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলবে ইনশা আল্লাহ।
একটি কথা না বললেই নয়। স্বাধীন না হয়ে আজও যদি আমরা পাকিস্তানের অংশ হিসাবে থাকতাম, তাহলে বুকে হাত দিয়ে বলুন তো কয়জন বাঙালি পাকিস্তান টিমে সুযোগ পেতো? সাকিব-মাশরাফি-মুশফিকদের সেই মফস্বলে বাস করে ক্রিকেটের বদলে "ডান্ডা গুলি" খেলতে হতো! আর যারাই সুযোগ পেতো, তাদের বেশীরভাগকে রকিবুল হাসানের মত 'পানি টেনেই' সাইড লাইনে বসে থাকতে হতো!
তাই হে প্রাণের স্বাধীনতা, তোমার মহানুভবতায় বাংলাদেশ আজ গৌরবের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে 'ক্রিকেট মানচিত্রে'!
লেখক: সহ-সভাপতি, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।
__._,_.___