Banner Advertise

Sunday, November 9, 2014

[chottala.com] ৩৬ ঘন্টা পর পিতাকে হত্যা করার খবর জানতে পায় শহীদ তাজউদ্দীনের পরিবার



শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি ও তার পরিবার অন্যান্য সদস্যরা ১৯৭৫ সালের ৩ নবেম্বর জেলহত্যাকাণ্ডের প্রায় ৩৬ ঘন্টা পর তাজউদ্দীন আহমেদের হত্যার খবর জানতে পারেন। তিনি বলেন, সেই সময় জানাজা অনুষ্ঠান ও লাশ দাফন নিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়েছিল। অনেকে সাময়িক গ্রেফতারও হয়েছিলেন। পরে সেনা সদস্যরা এসে জোর করে লাশ নিয়ে যায় এবং বনানীতে দাফন করেন। রোববার খবরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ১৯৭৫ সালের ৩ নবেম্বরের জেলহত্যার কদিনে আগে অর্থাৎ অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ঢাকা কেন্ত্রীয় কারাগারে বন্দি পিতার সাথে সাক্ষাৎকালের কিছু স্মৃুতিকথা উল্লেখ করেন। পিতার সাথে আলাপকালে তিনি যেসব কথা বলেছিলেন তারমধ্যে বঙ্গবন্ধুকে স্বপ্নে দেখে যে উক্তি করেছিলেন তা ছিল 'আমাদেরকে আর বাঁচিয়ে রাখবে না।' আমি মুজিব ভাইকে স্বপ্নে দেখেছি। আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,' তাজউদ্দীন তুমি চলে এসো, সেই ১৯৪৪ সাল থেকে তোমার সাথে আমার পরিচয়। তারপর থেকে আমরা দুজন এক সাথে ছিলাম , এখন তোমাকে ছাড়া আর ভাল লাগে না। '

02112014_03_SIMIN_HOSSAIN_RIMI

৩ নবেম্বর ১৯৭৫ সালের জেলখানায় হত্যার ক'দিনে আগে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ঢাকা কেন্ত্রীয় কারাগারে সাক্ষাৎ করতে গেলে এই কথা জানিয়ে শহীদ তাজ উদ্দীন আহমেদ তার স্ত্রী জোহরা তাজউদ্দীন ও সন্তানদের আরো বলেছিলেন , 'আমাদেরকে আর বাঁচিয়ে রাখবে না। আমি মুজিব ভাইকে স্বপ্নে দেখেছি। আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, তাজউদ্দীন তুমি চলে এসো ,তোমাকে ছাড়া আর ভাল লাগে না।' 'আমার ছোট বেলা ১৯৭১ এবং বাবা তাজউদ্দীন আহমদ' গ্রন্থেও এ সব বিষয় লিখেছেন সিমিন হোসেন রিমি এমপি। তিনি আরো বলেন , মৃত্যুর দুদিন আগে ১ নবেম্বর স্ত্রী জোহরা তাজউদ্দীন লিলির সাথে কারাগারে তাদের শেষ কথা হয় । হাই কোর্টে রীট করে কিভাবে তার পিতাকে মুক্ত করা যায় এই ব্যাপারে আইনজীবী নিয়ে তার মা জোহরা তাজউদ্দীন কারাগারে গিয়েছিলেন । রিমি তার বইতে লিখেন, ' তাজউদ্দীন আহমদ তার স্ত্রীকে আরো বলেছিলেন-' লিলি (সৈয়দা জোহরা তাজদ্দীন) আমি আমার এই জীবনে কোনদিন সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করিনি । ১৫ আগস্ট বাসা থেকে বের না হওয়াটাই আমার জীবনের মারাত্মক ভুল ছিল।'

তিনি বলেন ' ২ নবেম্বর রোববার রাতে রিমি ও তার ছোট ভাই সোহেল তাজ খাটে ঘুুমিয়ে ছিলাম। ওই দিন মাকে বেশ উদ্বিগ্ন ও অন্যরকম মনে হয়েছে। জেলখানা থেকে বাসায় ফিরে মা আমাকে বললেন,আজ জেলখানার পরিবেশকে অন্যরকম মনে হয়েছে। তারা আমার সাথে ভাল আচরণ করেনি। রাতে মা অনেক চিন্তিত ছিল। ভোর রাতে মার ডাকে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যাবার আগে আমি দেখেছি বাবা যেন বাসায় এসেছে। ওই দিন সকালে আকাশে জঙ্গী বিমানের খুব শব্দ ছিল। ভোর হতেই মনটা যেন কেমন হয়ে গেল।' তিনি বলেন, '৩ তারিখ সারাদিন নানা জল্পনা-কল্পনা আর গুজবের মধ্যে কেটেছে। জেলখানায় কি হয়েছে তা জানায়নি। তবে ৪ তারিখ সকালে অন্য রকম গুজব ছিল। জেলখানায় পরশু রাতে পাগলা ঘন্টা বেজেছে, গুলির শব্দ শোনা গেছে। ওই দিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ফোন করেছি। আমি তাজউদ্দীনের মেয়ে পরিচয় দিয়ে কথা বলেছি বিভিন্ন জায়গায় কিন্তু কোন কিছুই জানতে পারিনি। তাই আমি আর রিপি পাশেই মফিজ কাকুর বাসায় গিয়েছি। কিছুক্ষণ পর কয়েকজন মহিলা বাসায় ঢুকে একজন নিজেকে খালেদ মোশারফের মাতা পরিচয় দেন। পরে তিনি আমার ছোট ফুফুর ছেলে ঢাকা কলেজের ছাত্র বাবুলকে পাশে ঘরে ডেকে নিয়ে বাবার হত্যার কথা জানান। বাবুল ভাই বলল,'' মামা মানে আব্বু আর নেই।' বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলায় বাসায় ফিরে দেখি অন্যরকম দৃশ্য।

রিমি বলেন ' ভর সন্ধ্যায় আব্বুর কয়েকজন বন্ধু বাসায় আসেন । তারা এসে আমাদের ডা, করিম কাকুর মাধ্যমে আব্বুর হত্যার ঘটনা জানান। আমার মা এই কথা জানার পর মনে হলো এক প্রাণহীন পাথর। আমি যেন শক্তিহীন হয়ে পড়ি। পরে আমি আবার মফিজ কাকুর বাসায় যাই । সেখানে পরে জানতে পারি যে রাত ১২টা ২৫ মিনিটে আব্বুর মৃতদেহ বাসায় এসেছে। বাসায় ফিরি দেখি আম্মুর সেই পাথর মূর্তি । আমি রাতভর আব্বুর পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়েছি।''সেদিন সোহেলকে সাথে নিয়ে আব্বুর কাছে গিয়ে দেখি ডান পায়ের গোড়ালিতে বুলেটের রক্তাক্ত ক্ষত। ময়না তদন্ত রিপোর্টে লেখা আছে বুলেটবিদ্ধ হওয়ার পর রক্তক্ষরণে আব্বুর মৃত্যু হয়েছে' এ কথা উল্লেখ করে শহীদ জাউদ্দীনের কন্যা বলেন, এরই মধ্যে মনসুর কাকুর মৃতদেহ আমাদের বাসার পিছনে তাদের এক আত্মীয় বাসায় রাখা আছে জেনে আমি সেখানে গিয়ে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছি। এদিকে ছাত্রদের দাবি ছিল জাতীয় চারনেতার লাশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একপাশে কবর দিতে হবে। বাড়ির বাইরে শ্লোগান ও পুলিশের লাঠিপেটা করা হয়। সাময়িক গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটেছে । পরে কয়েকজন সেনা সদস্য এসে লাশ নিয়ে গেল এবং বনানী কবরস্থানে দাফন করলো। তিনি বলেন, আমার আব্বু ছিলেন স্বপ্নের রাজপুত্র। আকাশের তারার মাঝে তাঁকে খুঁজতাম। তাই যেদিন থেকে আব্বু মিশে গেল বাংলাদেশের মানচিত্রের মাটিতে আমার মনে হয় তখন তিনি আরো শক্তিশালী।



__._,_.___

Posted by: Gonojagoron Moncho <projonmochottar@gmail.com>


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___