যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড নিয়ে আইন সংশোধন ॥ রাষ্ট্রপতির মাফ নয়
০ আইনমন্ত্রী জানালেন আইন সংশোধন হবে
০ দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের স্মারকলিপি প্রদান
০ দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের স্মারকলিপি প্রদান
ভবিষ্যতে কোন রাষ্ট্রপতি যাতে যুদ্ধাপরাধীদের দণ্ড মওকুফ করতে না পারেন সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন। এজন্য প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করা হতে পারে বলেও আভাস দিয়েছেন তিনি। যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির দণ্ড মওকুফের সুযোগ না রাখা, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রিভিউ পিটিশন এবং দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের দাবিতে রবিবার আইনমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার। দায়িত্বপ্রাপ্ত আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক ও আইনমন্ত্রীর একান্ত সচিব মাসুদ করীম সচিবালয়ের ফটক থেকে স্মারকলিপি এনে মন্ত্রীর কাছে দেন।
স্মারকলিপি দেখিয়ে মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, 'এটা ভাবতে হয় যে, বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধীকে মাফ করে দেবেন- এটা ভাবতেও গাঁ শিউরে ওঠে। কিন্তু আমরা দেখেছি মুজাহিদ-নিজামী বাংলাদেশের মন্ত্রী হয়েছিলেন। ভবিষ্যতের জন্য কিছু একটা চিন্তা করতে হবে (মানবতাবিরোধীদের ক্ষমায়) এটা আমি মনে করি।'
যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিধান রহিতে সরকারের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'ভবিষ্যতে কোন রাষ্ট্রপতি যদি মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ক্ষমা করার সাহস দেখান তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে যে বিচার করা হচ্ছে সব নষ্ট হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, 'আমার কথা হচ্ছে এই যে প্রক্রিয়া (যুদ্ধাপরাধীদের বিচার) এটা নিয়ে কোন আপোস নেই। ১৯৭১ সালে যে নৃশংসতা হয়েছিল, যারা এটা করেছে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতেই হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধীরা যাতে কোন ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে না যেতে পারে তাও নিশ্চিত করতে হবে। 'নিশ্চয়ই আমি আপনাদের (সাংবাদিক) এটুকু বলতে পারি যে, নীতি নির্ধারক সর্বোচ্চ মহলে আমি এই কথাগুলো তুলব এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের জন্য আমি চেষ্টা করব।'
স্মারকলিপিতে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তির রায় কার্যকর প্রজন্মের সূর্যমুখী আন্দোলনের এক অনন্য ফসল। বিগত পাঁচ ফেব্রুয়ারি থেকে সম্পূর্ণ অহিংস ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চ সুনির্দিষ্ট দাবি দাওয়া আদায়ে বদ্ধপরিকর। আমরা লক্ষ্য করছি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়েছে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। কেবল দেশেই নয়, দেশের বাইরেও নানা ষড়যন্ত্র চলছে ট্রাইব্যুনাল ও যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা তারুণ্যের তীব্র গণ-আন্দোলনের ভিত্তিভূমি গণজাগরণ মঞ্চকে প্রশ্নবিদ্ধ করার। কিন্তু সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনে।
এতে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সর্বোচ্চ শাস্তির রায় প্রদান করে। দীর্ঘ এক বছরের অধিক সময় পর যখন উচ্চ আদালত থেকে যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু করাদন্ডের রায় দেয় তখন মুষড়ে পড়ে সমগ্র জাতি, অপনানিত হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে আপনি নিশ্চয় রাজাকার সাঈদীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও তার সম্বন্ধে আদালতের বক্তব্য বিষয়ে ওয়াকিবহাল। একজন বিজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রধান কৌঁসলি হিসেবে আপনি নিঃসন্দেহে এ হতাশার কারণটি বুঝতে পারেন। গণজাগরণ মঞ্চ শুরু থেকেই বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে অহিংস পদ্ধতিতে আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে। বিগত ১৭ সেপ্টেম্বর যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মামলার চূড়ান্ত রায় প্রদান করে আদালত। এতে স্তম্ভিত হয়ে যাই আমরা। ট্রাইব্যুনালের রায় বিশ্লেষণের জন্য আপীল বিভাগের পাঁচ বিচারকের সমন্বয়ে বেঞ্চ গঠন করা হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত এই বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহহাব মিয়া, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী, বিচারপতি এসকে সিন্হা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় হত্যা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে আগুন দেয়ার দু'টি ঘটনায় সাঈদীকে মৃত্যুদ- দেয়। এর পাশাপাশি আরও ৬ অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ট্রাইব্যুনাল সেই রায়কে বিচার বিশ্লেষণের পর আপীল বিভাগ নতুন এই রায় ঘোষণা করেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন। আর বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহহাব মিয়া সব অভিযোগ থেকে সাঈদীকে খালাস দেন। এর পর অন্য তিন বিচারকের মতামতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় আসে, যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিটি মানুষের জন্য হতাশার। সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়েছে। কিন্তু যে লক্ষ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য সাঈদী ওই অপরাধগুলো করেছিল, তা ছিল সমগ্র বাঙালী জাতি ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। তাই সাঈদীসহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীর সে লক্ষ্য ও আদর্শকে রুখে দেবার জন্য বা সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যেন বাংলাদেশে আর না ঘটে তার জন্য আলোচ্য রায়টি কতখানি ভূমিকা রাখতে পারবে সে বিচার-বিশ্লেষণ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে পাওয়ার জন্য একান্ত জরুরী বলে মনে করে গণজাগরণ মঞ্চ।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা-সংগঠনের মানুষের এক সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম গণজাগরণ মঞ্চ। আইনের নানা দিক বিশ্লেষণপূর্বক সাঈদীর রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশনের দাবি নিয়ে এই স্মারকলিপি প্রদান করছি। আইন মন্ত্রীর উদ্দেশে এই লিপিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপক্ষের কোর্ট অব বাংলাদেশ (আপীল বিভাগ) রুলস ১৯৮৮-এর অর্ডার ২৬ অনুযায়ী রিভিউ করা যেতে পারে। সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রপক্ষকে সেই অধিকার নিশ্চিত করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের জন্য সংবিধানের ৪৭ক(২) প্রয়োজ্য হলেও রাষ্ট্রপক্ষের জন্য তা প্রয়োজ্য হবে না। তাই সাঈদীর আপীল মামলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ করতে কোন বাধা নেই। সুপ্রীমকোর্ট অব বাংলাদেশ (আপীল বিভাগ) রুলস ১৯৮৮ অনুযায়ী রিভিউ করতে হবে রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে। এছাড়া সুপ্রীমকোর্ট অব বাংলাদেশ (আপীল বিভাগ) রুলস ১৯৮৮-এর অর্ডার ২৬, রুল ৩ অনুযায়ী নতুন প্রমাণ উদ্ঘাটনের প্রেক্ষিতে রিভিউ করার সুযোগ রয়েছে। তাই এটি রিভিউ করার জোর দাবি জানিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।
স্মারকলিপি দেখিয়ে মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, 'এটা ভাবতে হয় যে, বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধীকে মাফ করে দেবেন- এটা ভাবতেও গাঁ শিউরে ওঠে। কিন্তু আমরা দেখেছি মুজাহিদ-নিজামী বাংলাদেশের মন্ত্রী হয়েছিলেন। ভবিষ্যতের জন্য কিছু একটা চিন্তা করতে হবে (মানবতাবিরোধীদের ক্ষমায়) এটা আমি মনে করি।'
যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিধান রহিতে সরকারের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'ভবিষ্যতে কোন রাষ্ট্রপতি যদি মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ক্ষমা করার সাহস দেখান তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে যে বিচার করা হচ্ছে সব নষ্ট হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, 'আমার কথা হচ্ছে এই যে প্রক্রিয়া (যুদ্ধাপরাধীদের বিচার) এটা নিয়ে কোন আপোস নেই। ১৯৭১ সালে যে নৃশংসতা হয়েছিল, যারা এটা করেছে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতেই হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধীরা যাতে কোন ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে না যেতে পারে তাও নিশ্চিত করতে হবে। 'নিশ্চয়ই আমি আপনাদের (সাংবাদিক) এটুকু বলতে পারি যে, নীতি নির্ধারক সর্বোচ্চ মহলে আমি এই কথাগুলো তুলব এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের জন্য আমি চেষ্টা করব।'
স্মারকলিপিতে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তির রায় কার্যকর প্রজন্মের সূর্যমুখী আন্দোলনের এক অনন্য ফসল। বিগত পাঁচ ফেব্রুয়ারি থেকে সম্পূর্ণ অহিংস ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চ সুনির্দিষ্ট দাবি দাওয়া আদায়ে বদ্ধপরিকর। আমরা লক্ষ্য করছি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়েছে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। কেবল দেশেই নয়, দেশের বাইরেও নানা ষড়যন্ত্র চলছে ট্রাইব্যুনাল ও যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা তারুণ্যের তীব্র গণ-আন্দোলনের ভিত্তিভূমি গণজাগরণ মঞ্চকে প্রশ্নবিদ্ধ করার। কিন্তু সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনে।
এতে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সর্বোচ্চ শাস্তির রায় প্রদান করে। দীর্ঘ এক বছরের অধিক সময় পর যখন উচ্চ আদালত থেকে যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু করাদন্ডের রায় দেয় তখন মুষড়ে পড়ে সমগ্র জাতি, অপনানিত হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে আপনি নিশ্চয় রাজাকার সাঈদীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও তার সম্বন্ধে আদালতের বক্তব্য বিষয়ে ওয়াকিবহাল। একজন বিজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রধান কৌঁসলি হিসেবে আপনি নিঃসন্দেহে এ হতাশার কারণটি বুঝতে পারেন। গণজাগরণ মঞ্চ শুরু থেকেই বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে অহিংস পদ্ধতিতে আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে। বিগত ১৭ সেপ্টেম্বর যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মামলার চূড়ান্ত রায় প্রদান করে আদালত। এতে স্তম্ভিত হয়ে যাই আমরা। ট্রাইব্যুনালের রায় বিশ্লেষণের জন্য আপীল বিভাগের পাঁচ বিচারকের সমন্বয়ে বেঞ্চ গঠন করা হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত এই বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহহাব মিয়া, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী, বিচারপতি এসকে সিন্হা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় হত্যা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে আগুন দেয়ার দু'টি ঘটনায় সাঈদীকে মৃত্যুদ- দেয়। এর পাশাপাশি আরও ৬ অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ট্রাইব্যুনাল সেই রায়কে বিচার বিশ্লেষণের পর আপীল বিভাগ নতুন এই রায় ঘোষণা করেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন। আর বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহহাব মিয়া সব অভিযোগ থেকে সাঈদীকে খালাস দেন। এর পর অন্য তিন বিচারকের মতামতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় আসে, যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিটি মানুষের জন্য হতাশার। সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়েছে। কিন্তু যে লক্ষ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য সাঈদী ওই অপরাধগুলো করেছিল, তা ছিল সমগ্র বাঙালী জাতি ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। তাই সাঈদীসহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীর সে লক্ষ্য ও আদর্শকে রুখে দেবার জন্য বা সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যেন বাংলাদেশে আর না ঘটে তার জন্য আলোচ্য রায়টি কতখানি ভূমিকা রাখতে পারবে সে বিচার-বিশ্লেষণ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে পাওয়ার জন্য একান্ত জরুরী বলে মনে করে গণজাগরণ মঞ্চ।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশা-সংগঠনের মানুষের এক সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম গণজাগরণ মঞ্চ। আইনের নানা দিক বিশ্লেষণপূর্বক সাঈদীর রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশনের দাবি নিয়ে এই স্মারকলিপি প্রদান করছি। আইন মন্ত্রীর উদ্দেশে এই লিপিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপক্ষের কোর্ট অব বাংলাদেশ (আপীল বিভাগ) রুলস ১৯৮৮-এর অর্ডার ২৬ অনুযায়ী রিভিউ করা যেতে পারে। সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রপক্ষকে সেই অধিকার নিশ্চিত করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের জন্য সংবিধানের ৪৭ক(২) প্রয়োজ্য হলেও রাষ্ট্রপক্ষের জন্য তা প্রয়োজ্য হবে না। তাই সাঈদীর আপীল মামলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ করতে কোন বাধা নেই। সুপ্রীমকোর্ট অব বাংলাদেশ (আপীল বিভাগ) রুলস ১৯৮৮ অনুযায়ী রিভিউ করতে হবে রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে। এছাড়া সুপ্রীমকোর্ট অব বাংলাদেশ (আপীল বিভাগ) রুলস ১৯৮৮-এর অর্ডার ২৬, রুল ৩ অনুযায়ী নতুন প্রমাণ উদ্ঘাটনের প্রেক্ষিতে রিভিউ করার সুযোগ রয়েছে। তাই এটি রিভিউ করার জোর দাবি জানিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।
__._,_.___