Banner Advertise

Tuesday, May 6, 2014

[chottala.com] রাজনীতির পাঁচ কথা



রাজনীতির পাঁচ কথা

মিনা ফারাহ
« আগের সংবাদ

বিশ্বজীত্ হত্যা প্রক্রিয়ার নৃশংস ছবিগুলো যতবার দেখি, ভাবি হত্যাকারীদের সঙ্গে নাত্সী বাহিনীর অঙ্গসংগঠন 'এসএসআর' বাহিনীর পার্থক্য কোথায়? ঘটনার ধারাবাহিকতায় বহু আগেই রাজনীতি থেকে ছাত্রদেরকে ঝেটিয়ে দূর করা উচিত সত্ত্বেও বরং উস্কে দেয়া হয়েছে। মোটাদাগে হত্যা, গোলাগুলি, শিক্ষাঙ্গনকে গোলাবারুদের দুর্গ বানানোর রেকর্ডের পর জজ মিয়াদের ওপর আর দায় চাপাতে পারে না ছাত্রলীগ, যুবলীগ। বরং এই দাগে চরম নৃশংসতায় হোয়াইট ওয়াশ হয়ে গেছে শিবিরসহ সব জজ মিয়া।
রাজনীতি থেকে ছাত্রদেরকে কেন নিষিদ্ধ করা উচিত যথেষ্ট প্রমাণ সত্ত্বেও রাজনীতিতে এদের অনুপ্রবেশই প্রায় মেধাশূন্য সংসদের কারণ। গ্লোবাল ভিলেজে একথা বলে আর পার পাওয়া যাবে না, আমরা ইউরোপ বা আমেরিকা কোনোটাই নই। প্রযুক্তির কল্যাণে তাদের শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র-রাজনীতি কতটুকু, খুঁজে বের করা মোটেও কঠিন নয়। এছাড়াও দেশের বড় বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সন্তানেরা হার্ভার্ড, অক্সফোর্ডে পড়ার দাবি করেন, বরং তাদেরই উচিত ছিল শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র-রাজনীতি বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়া! উল্টো তারাই অসুস্থ রাজনীতিতে আরো বেশি মদত দিয়ে উস্কে দিচ্ছে ছাত্র-সন্ত্রাস। একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো গণতান্ত্রিক দেশেই মোটাদাগে এই দৃষ্টান্ত নেই। ফলে বুলেটের মুখে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব বিপন্ন আজ।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন কেউই অস্বীকার করতে পারে না। যথেষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়া কারো পক্ষেই উন্নত মানুষ হওয়া সম্ভব নয়। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। যেমন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই সক্রেটিস কিংবা স্বশিক্ষিত প্লেটো যা রেখে গেছেন ২৪০০ বছর পরে, আমরা যদি তেমন হতে পারি মন্দ কী! কিন্তু এই চিন্তাও অবাস্তব। পাস না করা উকিল জোর করে ওকালতি করতে গেলেই ধরা খাবে। বাবা ডাক্তার হলে ছেলের কি? বড়জোর কম্পাউন্ডার হবে। কিন্তু কলেজে মৃতদেহ কাটার অভিজ্ঞতা ছাড়া ব্রেইন সার্জন হওয়া সম্ভব না, কিন্তু ফোঁড়া কাটা ডাক্তার অবশ্যই হওয়া সম্ভব। বলছি, মেধাশূন্য সংসদের কথা।
অতি আশ্চর্য দেশটির নাম বাংলাদেশ যেখানে হাসপাতাল আছে, অপারেশনও হচ্ছে অথচ ডাক্তার-নার্স সব ভুয়া। ২৩ মার্চ একটি দৈনিকের খবর—'চিকিত্সক সেজে রক্তের অবৈধ ব্যবসা।' রক্তের অবৈধ ব্যবসা? আমি ওদের দোষ দেই না বরং ওদের চাহিদা বেশি হওয়ার কারণ জ্বিনের বাদশায় বিশ্বাসীরা আশুলিয়ার পাগলা বাবার শরীর ধোয়া পানি কিনে বোতলে ভরে এনে ক্যান্সার আক্রান্ত পুত্রের চিকিত্সা দেয়। সেই পুত্র মারা গেলে ভাগ্যকে দোষে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কোয়াকেরও কম্পিউটার এবং সুন্দরী সেক্রেটারি থাকে। হঠাত্ হঠাত্ দুষ্টু এবং উচ্চাভিলাষী টিভি ক্যামেরা হাজির হলে পাগলা বাবার গোমর ফাঁস। আছে এক ব্যাগ রক্তকে স্যালাইন মিশিয়ে চার ব্যাগ বানিয়ে বিক্রি করার মতো জিনিয়াস। আছে শেওলা মিশ্রিত স্যালাইন এবং হলুদের গুঁড়া ভর্তি ক্যাপসুল বানানোর মতো জিনিয়াস। কীভাবে সম্ভব? কারণ এদের চাহিদা আছে বলেই টিকে আছে, অন্যথায় অসম্ভব। ফলে দেশজুড়ে ভুয়া শিক্ষক, ভুয়া কারখানা, ভুয়া প্রতিষ্ঠানেরই আধিক্য। এদের কীর্তিকলাপ মিডিয়ায় এলেও অধরাই ওরা। বলছি, কোয়াক কখনই ডাক্তার নয়, বরং অনতিবিলম্বে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে সুস্থ রাজনীতির ঘটনাপ্রবাহ সৃষ্টি করলেই শুধু ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে মুক্তি পাবে গণতন্ত্র, অন্যথায় একেবারেই নয়।


জরিপের কারণে সরকার বেজায় নাখোশ, কিন্তু কেন? জরিপকারীরা অবশ্যই ফালতু নন, কোয়াকও নন, সকলেরই আন্তর্জাতিক যোগ্যতা ও বৈধতার সার্টিফিকেট আছে এবং সেই ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই করা তথ্য দিয়ে বলছেন, বিপুল সংখ্যক রাজনীতিবিদদের মধ্যে শিক্ষার অভাব। অভিযোগ, স্থানীয় সরকারের অনেকেরই নাকি ন্যূনতম শিক্ষা নেই। যারা সংসদে, অভিযোগ, মোটাদাগে তারা অল্প শিক্ষিত, অনেকেই মহাধান্দাবাজ ব্যবসায়ী। ব্যবসা এমনই বস্তু যার প্রাণ দুর্নীতি, ফলে দেশজুড়ে এর ভয়াবহতা ছড়িয়ে গেছে এপিডেমিক্সের মতো। দেখা গেছে এলসি খুলে ব্যবসা করছে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে। ঋণখেলাপির বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছে। বিদেশে নাগরিকত্ব, বেনামে ব্যবসা, মোটাদাগে ডলার আদান-প্রদান সবই আছে। রানাপ্লাজা ঘটনার পর, ব্যবসায়ী সংসদ সদস্যদের নিয়ে উদ্বিগ্ন দাতা দেশগুলো। আর আমরা উদ্বিগ্ন আইন সম্পর্কে ধারণা না থাকা আইন প্রণেতাদের নিয়ে যাদের কাজ চোখবুজে প্রধানমন্ত্রীর ফাইলে সই করা। ক'জন সংসদ সদস্য বুকে হাত দিয়ে বলবেন, আইন বানানোর মতো যথেষ্ট মেধাবান এবং শিক্ষিত তারা? সুবিধামত আইন তৈরি হয় মন্ত্রিসভার মিটিংয়ে, অথচ পাস হয়ে যায় তিনবার 'হ্যাঁ' জয়যুক্ত হয়েছে ভোটে, একমাত্র বাংলাদেশেই যা সম্ভব। সুজনের দাবি, '২৩৭ জন এমপি কোটিপতি কিন্তু কর দেন না ২২ জন। ৫৫ সংসদ সদস্যের (১৫.০৭%) বার্ষিক আয় কোটি টাকার ওপরে। ২২৬ জনের (৬৪.৫৭%) রয়েছে কোটি টাকার ওপরে সম্পদ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২৭৩ সংসদ সদস্যের ১৫৬-১৫৪ অর্থাত্ ৭১.০৬ শতাংশ এমপি কোটিপতি। জাতীয় পার্টির ৪৫ শতাংশের সম্পত্তির পরিমাণ কোটি টাকার বেশি। এমনকি সমাজতান্ত্রিক দলের এমপিরাও কোটিপতি। তরিকত ফেডারেশনের ১০০ ভাগ এমপি কোটিপতি...৩৫০ জন সংসদ সদস্যের ৪৯ জন ঋণ গ্রহীতা। ৩০০ সংসদ সদস্যের ৪২ জন কর দেন না, ১০ লাখ টাকার বেশি আয়কর দেন ৩১ সংসদ সদস্য। ১০৭ জন সংসদ সদস্য ৫ হাজার টাকা বা তারচেয়ে কম আয়কর দেন। ১৫ সংসদ সদস্য এসএসসির গণ্ডি পার হননি। ৩৫০ জনের মধ্যে ১৭৫ জন ব্যবসায়ী। বিধি লংঘন করে সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করছেন সংসদ সদস্যরা। ৩৫০ সংসদ সদস্যের মধ্যে ৩১ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা রয়েছে, অতীত ও বর্তমান সময়ে মামলা ছিল বা রয়েছে এমন সংখ্যা ২৩ জন।' বর্তমানে বার্ষিক ২ লাখ টাকা আয় করলে কর দিতে হয়। সুজনের নির্বাহী সদস্য আলী ইমাম মজুমদার বলেন, 'তাহলে কি আমরা ধরে নেব ৪২ সংসদ সদস্যের কেউই ২ লাখ টাকা আয় করেন না?' ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাল ভোট, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, আগের রাতে ভোটবাক্স ভরে ফেলা, প্রিসাইডিং অফিসার এবং প্রশাসনের লোকজন কেউই পিছিয়ে নেই। বলছি, মেধাশূন্য রাজনীতির পেছনের কথা, কোয়াক রাজনীতির শুরুতে লাঠি রাজনীতির জন্মকথা।
রাজনীতিতে কোয়াকের জায়গা অবশ্যই নেই বরং পড়ালেখা শেষ করে সংসদে আসতে হবে। পারলে সকলেই আইন বিশেষজ্ঞ হলে মন্দ কি! কিন্তু এর সাংঘাতিক ব্যতিক্রম হওয়ায় সংসদ টিভির কারণে দারুণ চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ। সংসদে যেসব বর্জ্য ঢালা হচ্ছে, উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে দেশ-বিদেশে। পাবলিকের টাকায় উত্তেজিত কেউ কেউ খালেদার শাড়ির গজপ্রতি ৫০০ ডলার কিংবা ব্লাউজের মূল্য ২৫,০০০ টাকা জানাতে মিনিটপ্রতি ৪৮,০০০ করের টাকা খরচ করে বিশ্বকেও আতঙ্কিত করে ফেলেছে। এর মূলে অধিকাংশই আইয়ুব আমলে বাঁশ হাতে রাজনীতি শিখে নেতা হয়েছে। স্বাধীনতার পর আইনপ্রণেতা হয়েছে। পরবর্তীকালে মন্ত্রিত্বের সৌভাগ্যও অর্জন করেছে। ২৪০০ বছর আগে প্লেটো লিখেছিলেন, 'দ্য রিপাবলিক'। তিনি সক্রেটিসের প্রধান অনুসারী। 'হেমলক' পানে গুরুর মৃত্যুর আগে শিষ্যের সঙ্গে যেসব কথা লিখেছেন বিখ্যাত 'এপোলজি' বইতে। সক্রেটিসের প্রগতিশীল পশ্চিমা চিন্তাচেতনায় প্রভাবিত প্লেটো ৪৪টি বিষয়ের অন্যতম রাজনীতি। 'রিপাবলিকে' লিখেছেন রাজনীতিবিদদের শিক্ষাদীক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা। তারা হবেন বিদ্যাবুদ্ধিতে 'এলিট' শ্রেণী যারা পঞ্চায়েত ধরনের সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করবেন। আমাদের সংসদে যা হচ্ছে, প্লেটো বেঁচে থাকলে, নিজেও এক কাপ 'হেমলক' পান করে আত্মহত্যা করতেন না, বলা যাবে না।
দৃশ্যত ৪৩ বছরে বুড়িগঙ্গার সমান দূষিত হয়েছে রাজনীতি। রাজনীতির চামড়া ব্যবসায়ীরা, ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিনই রাজনীতির বর্জ্য ঢালছে সংসদে এবং বাইরে। বাতাসে কার্বনের চেয়ে অধিক দূষিত আমাদের বুড়িগঙ্গা এবং তার চেয়ে দূষিত রাজনীতি। দূষণ এবং বর্জ্য এমনভাবে মিশেছে যা পরিশোধনের চিন্তা ছেড়ে দিয়ে এখন রাজনীতির পরিবেশবিদরা টকশোতে তাদের হা-হুতাশ এবং অস্থিরতা প্রকাশ করছেন। লাভ নেই কারণ, তারাও ভুল করছেন, এদেশের মানুষ চায় বলেই কোয়াকদের ব্যবসা রমরমা। সুতরাং যখন বুড়িগঙ্গার দূষণ ঠেকানো যাবে, একমাত্র তখনই উপজেলা নির্বাচনে প্রকাশ্যে ভোট ডাকাতির মতো ভয়ানক লাঠি-রাজনীতিবাজদের দৌরাত্ম্য থেকে পরিত্রাণ পাবে রাজনীতি।


গৃহপরিচারিকাদের নাকফুল নিয়ে ঝগড়াঝাটি থেকে রাজনীতির ভাষা 'ভিন্ন'। উকিলের বক্তব্যে গালাগাল নেই কিন্তু বাস্তবে দুইপক্ষ আদালতে ঝগড়াই করেন, শুধু ভাষাটা ভিন্ন। আবার কোর্ট শেষে একসঙ্গে 'চা' খেতে খেতে যখন অন্য আলাপ করেন, বোঝাই যাবে না আদালতে এরা কেমন সাপ আর নেউল। বলছি, ভদ্র ভাষা জানা এবং ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা। দায়িত্বপ্রাপ্তদের একটি ভুল বাক্য নিউক্লিয়ার যুদ্ধ বাধানোর জন্য যথেষ্ট। বলছি, ওয়াশিংটনে পাঠানো রিপোর্টে স্থানীয় পর্যবেক্ষণগুলোই লেখেন রাষ্ট্রদূতেরা। সেখানে যখন ড. ইউনূসকে সংসদে প্রকাশ্যে চোর, রক্তচোষা, সুদখোর, ঘুষখোর, নোবেল ক্রেতা, চরিত্রহীন বলা হয়, যা অবিকৃত। আওয়ামী সংসদ সদস্যদের ভাষা কেন ভয়াবহ পর্যায়ে, ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করে পাশ্চাত্যের প্রতিক্রিয়াই যথেষ্ট প্রমাণ। সুবচন না হওয়ার অভিশাপ মোটাদাগে কুড়াচ্ছে বাংলাদেশ। রানাপ্লাজা দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে 'ক্রিশ্চিয়ান আমানপোরের' সঙ্গে সরকারপ্রধানের সাক্ষাত্কারটি রাজনৈতিক ভাষা হারিয়ে ফেলা বা গুলিয়ে ফেলার ভয়াবহ সাক্ষী হওয়ায় সামাজিক মিডিয়ায় ঝড় এখন পর্যন্ত থামেনি। আমরা খুব বেশি আশা না করলেও জঘন্য-অকথ্য ভাষা ব্যবহার থেকে মুক্তি চাই, মুক্তি দিতেই হবে।


৪ হাজার বছর পর, রাজনীতিতে নতুন 'ফেরাউনবাদ' প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলে কঠিন সমালোচনাও ভোগ করতে হবে। ৫৬ হাজার মাইল জুড়েই অসংখ্য মূর্তি, বিলবোর্ড, দেয়াল লিখন, এমনকি খেলার মাঠগুলো পর্যন্ত কি নৈরাজ্যকরভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে ফেরাউনবাদীদের নামে। যেন দেশটা তাদেরই বাপের জমিদারি। এই দৃষ্টান্ত কি আফ্রিকাতেও আছে? মনে হয় না। রাজনীতি যদি কয়েকশ' গজ দূরে দূরে তোরণ বানিয়ে নিজের ছবির ওপর প্রিমিয়ারের ছবি, প্রাগৈতিহাসিক ভাষার ব্যবহার, তাহলে অযোগ্যদের কথা অবশ্যই ভাবতে হবে। সুতরাং জিএসপি স্থগিত শুধুই ট্রেডইউনিয়ন কিংবা আমিনুল ইসলাম ইস্যু নয়। এমনকি পদ্মা সেতু নিয়ে সরকারের ডিগবাজিও নয়। বরং জিএসপি স্থগিতের পাশাপাশি কংগ্রেশনাল হিয়ারিং করে কি বার্তা দিচ্ছে ওয়াশিংটন? এটা কি শুধুই নাখোশ ওয়াশিংটনের ঝি মেরে বৌ শিক্ষা! বলছি, শিক্ষিত হয়ে সংসদে এলে কিছুই ঘটত না, সরকার চলত স্বাভাবিক নিয়মে এবং পদ্মা সেতুও এতদিনে অর্ধেক তৈরি হয়ে যেত। বলছি, ছাত্র-রাজনীতি থেকে ভেসে আসা মূল রাজনীতিতে ভয়ানক সংক্রামক অসুখের স্রোতের কথা যেজন্য রোগীর মৃত্যু অবধারিত।
সর্বশেষ, তারেকের বক্তব্য কেন্দ্র করে সংসদে শেখ সেলিমদের সর্বনিম্ন ভাষার ব্যবহার যেন বুড়িগঙ্গার মতোই রাজনীতিকেও দূষিত করার সর্বনিকৃষ্ট উদাহরণ। খালেদা যদি 'শয়তানের বাছুর' জন্ম দেন কিংবা নিজেও একটার বদলে ১০ রঙের শাড়ি পরে ঠান্ডা রুমে বসে গরম গরু বা মুরগির হাড় চিবান, সেটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। অর্থাত্ রাজনীতিকে দেখতে হবে 'প্লেটোর' ফর্মুলায়, অন্যথায় নর্দমার দুর্গন্ধ ছড়াবেই। বলছি, লাঠির বদলে শুধু নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষা শেষে কেন ৪ খলিফাদের রাজনীতিতে আসা উচিত ছিল, সেই ধারাবাহিকতার কথা।


রাজনীতির কোয়াকদের চোখে খালেদা উঠলে দোষ, বসলেও। ঘুমালে দোষ, না ঘুমালেও। বেলা ১২টায় উঠলে দোষ, আগে উঠলেও। ট্রেনে উঠলে গোলাপি, না উঠলেও। হাসলে দোষ, না হাসলেও। চুলে খোঁপা পরলে পরচুলা, না পরলেও। জনসভায় গেলে দোষ, না গেলে অভিযোগ, বরবাদ হয়ে গেছে। কথা বললে জঙ্গি, না বললেও। খালেদা যাবেটা কোথায়? জাতীয় সঙ্গীত যদি কেউ গাইতে না চায়, কিংবা ইচ্ছামত যত জোরে এবং যত খুশি গায়, ইনুর সমস্যা কোথায়?
একটি কথা সত্য, খালেদাই বেকার আওয়ামী লীগের একমাত্র কাজ, এছাড়া যেন সরকারের কোনো কাজই নেই। এদিক সেদিক লক্ষ্য করি, সত্যিই সরকার কর্মহীন। ফিতাই আর কত কাটা যায়? বরং খালেদার চিন্তায় শেখ সেলিম বা বাদলের মতো প্রায় ২ ডজন মন্ত্রীর রাতে ঘুম হয় না, সংসদে গিয়েও প্রসঙ্গ খুঁজে পায় না। খাদ্যমন্ত্রী বলবেন, খাদ্যের কথা। তথ্যমন্ত্রী বলবেন তথ্যের কথা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলবেন...বরং সবার মুখেই খালেদা, বিষয়টি অতি আশ্চর্য। তবে খালেদার ব্লাউজের দাম সত্যিই ২৫০০০ টাকা হলে বরং স্টাইলে পিছিয়ে থাকা মতিয়া চৌধুরীদের মতো সমালোচকদের উচিত তাকে অনুসরণ করে যুগোপযোগী হওয়া। খালেদা বড়ই ভাগ্যবান, তার চিন্তায় সবক'টার রাতের ঘুম হারাম, দিনের কাজকর্মেও মঙ্গা। বইয়ের বদলে 'লাঠি' হাতে গ্র্যাজুয়েশন নিলে এসব তো হবেই।
তবে খালেদার ভয়ঙ্কর নীরবতা, অতিসংযম এবং সহ্য ক্ষমতা রাজনীতির জন্য অশনি সঙ্কেত। এত মৃত্যু, এত দুর্ঘটনা, এত মানবাধিকার হরণ কিন্তু তিনি নীরব। আর এজন্যই আরো বেশি স্বৈরাচার হয়ে উঠেছে সরকার। দু'একটি বাদে, সকল মিডিয়াই বক্তব্য প্রচার করায় খালেদার আর চুপ না থাকার কারণ অনেক বেশি। বিরোধী দলের কাজ ভারসাম্য রক্ষা করা, কথা রাখেনি বিরোধী দল। আশা করব, অতি সত্তর নীরবতা ভাঙবেন অহল্যা কন্যা খালেদা। কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই, সংসদে না থেকেও প্রমাণ হলো, রওশন নয়, মিডিয়া এবং সাধারণ মানুষ খালেদাকেই বিরোধী দল মনে করছে। ফলে তার দায়িত্ব আরো বেড়েছে। এখানে একটি কথা, মার্কিন ইতিহাসে সবচে' সফল প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট ছিলেন অর্ধাঙ্গ। রুজভেল্টের শরীরের বাম অংশ ছিল অকেজো। হুইল চেয়ারে বসে রাষ্ট্র চালাতেন। বরং যুদ্ধবিধ্বস্ত আমেরিকাকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যেসব আইন পাস করেছিলেন—সোশ্যাল সিকিউরিটি, ৬ মাস পর্যন্ত বেকার ভাতা, ফুড স্ট্যাম্প, পেনশন, করপোরেট বিনিয়োগের সংস্কৃতি সৃষ্টির মাধ্যমে ৩০ লাখ নতুন কর্মসংযোজন। দলমত নির্বিশেষে সকল পক্ষই রুজভেল্টকে সমান সম্মান করেন। বলছি, শারীরিক সমস্যা কোনো সমস্যা নয়।
পাঁচ কথার শেষ কথা
অভিযোগ লাখ লাখ, কিন্তু কী লাভ? যুক্তিবিদ হলে বলতাম, বাবা-মা খারাপ হলে কি সন্তানও খারাপ হয়, নাকি সন্তান খারাপ হলে বাবা-মাকে খারাপ হতে বাধ্য করে! তাহলে ১৬ কোটি সন্তানই কি খারাপ? না। বরং ১৬ কোটি সন্তান ভালো কিন্তু রাজনৈতিক পিতামাতারা বদমাশ হওয়ায় বাধ্য হচ্ছে বিপথে যেতে যার অন্যতম উদাহরণ বিশ্বজীত্ হত্যা। এই ঘটনা কোনো সুস্থ পরিবারের নয়। ফলে একা বিশ্বজীতই ছাত্র-রাজনীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ওদের দোষ নেই। মেধাহীন রাজনীতির কারণেই চোখে ভালো কিছু দেখছে না, কানে ভালো কিছু শুনছে না, শিক্ষাঙ্গনেও ভালো কিছু পাচ্ছে না। অন্যথায় এরাই গর্ব করার মতো মানুষ হতো বলি কী করে!। যে কথা ড্যান মজীনা বলেন, 'এদের মতো সহজ-সরল অল্পে তুষ্ট শান্তিপ্রিয় মানুষ বিশ্বের কোথাও নেই।' এই সুযোগই নিচ্ছে রাজনীতির মাফিয়ারা। বুড়িগঙ্গাকে যেমন আপাদমস্তক ধুয়ে দূষণমুক্ত করা অবাস্তব, রাজনীতির দূষণ ঠেকানো এরচেয়ে অবাস্তব। এজন্যই বলছি, নিজের সক্ষমতার অভাবে অন্যের হাতে সার্বভৌমত্ব বিলিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় সত্যিই গিনিজ বুকে যাওয়া উচিত বাংলাদেশের।
সারমর্ম : শিক্ষার বিকল্প, শিক্ষা।


ই-মেইল : farahmina@gmail.com
ওয়েবসাইট : www.minafarah.com


__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___