Banner Advertise

Friday, March 21, 2014

[chottala.com] খালেদা কোন নেতার ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না : নিয়মিত দলের বাইরের বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছেন




শনিবার, ২২ মার্চ ২০১৪, ৮ চৈত্র ১৪২০
খালেদা নিয়মিত দলের বাইরের বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছেন
কোন নেতার ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না
শরীফুল ইসলাম ॥ দলের কোন নেতার ওপরই ভরসা রাখতে পারছেন না বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এ কারণে দলীয় কর্মকা- পরিচালনার ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যেই হোঁচট খেতে হয় তাঁকে। এ পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া এখন নিয়মিত দলের বাইরের কিছু বুদ্ধিজীবীর পরামর্শ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। 
উল্লেখ্য, ওয়ান ইলেভেনের সময় তৎকালীন বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভুইয়া ও স্থায়ী কমিটির সদস্য এম সাইফুর রহমানসহ দলের সিনিয়র নেতারা যখন একে একে তাঁর কাছ থেকে দূরে সরে যান, তখন থেকেই তিনি দলীয় নেতাদের ওপর ভরসা করা ছেড়ে দেন। তবে মান্নান ভুইয়াকে বহিষ্কারের পর খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে মহাসচিব করে তাঁর ওপর ভরসা রাখতে পেরেছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু ২০১১ সালের ১৬ মার্চ খোন্দকার দেলোয়ার মারা যাওয়ার পর তিনি আশাহত হন। ওই বছরই ৬ এপ্রিল দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দিয়ে তাঁর ওপর ভরসা রাখতে শুরু করেন খালেদা জিয়া। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার নির্দেশমতো রাজপথের আন্দোলন চাঙ্গা করতে কোন ভূমিকাই রাখতে পারেননি। বরং মির্জা ফখরুল নিজেই পালিয়ে গিয়ে রাজপথের আন্দোলনে মাঠে থাকা নেতাকর্মীদের হতাশ করেন। এতে খালেদা জিয়া মির্জা ফখরুলের ওপর চরম ক্ষুব্ধ হলেও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেননি। তবে মির্জা ফখরুলের ওপর তিনি যে ভরসা হারিয়ে ফেলেছেন সে সংবাদ মির্জা ফখরুলও পেয়ে গেছেন। তাই বর্তমানে কারাবন্দী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
সূত্রমতে, একসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ওপর ভরসা রাখতেন চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তাই আইনগত যে কোন ব্যাপারে সবার আগে ব্যারিস্টার মওদুদের সঙ্গেই তিনি পরামর্শ করতেন। কিন্তু ২০১০ সালে মওদুদের পরামর্শে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বাড়ি ছাড়া হওয়ার পর খালেদা জিয়া ব্যারিস্টার মওদুদের ওপর চরম ক্ষুব্ধ হন। এর পর থেকে ব্যারিস্টার মওদুদও কৌশলে খালেদা জিয়ার কাছ থেকে দূরে সরে থাকেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি যখন সরকারবিরোধী লাগাতার আন্দোলনের ছক করে, তখনই ব্যারিস্টার মওদুদ বিদেশে চলে যান। বিদেশে গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগও রাখেননি তিনি। এমনকি আগে প্রতিদিন দলের পক্ষে এবং আওয়ামী লীগের বিপক্ষে বক্তব্য নিয়ে সরব থাকলেও এখন আর তিনি সে ভূমিকা পালন করছেন না। 
ওয়ান ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে বেইমানী করে তাঁকে মাইনাস করে দল পরিবর্তনের চেষ্টা করলেও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সবকিছু ভুলে গিয়ে আবার ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতি সাদেক হোসেন খোকাকে কাছে টেনে নেন খালেদা জিয়া। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কিছুদিন পালিয়ে থাকার পর গ্রেফতার হয়ে কারাবন্দী হন সাদেক হোসেন খোকা। রাজধানীতে আন্দোলন চাঙ্গা করার চেষ্টা না করে খোকার পালিয়ে থাকা ও গ্রেফতারকে ভালভাবে নেননি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তাই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সাদেক হোসেন খোকাকে ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার কৌশল নেন তিনি। এ কৌশলের অংশ হিসেবে তিনি ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব দিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আ স ম হান্নান শাহর ওপর ভরসা রাখেন। কিন্তু সাদেক হোসেন খোকা সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেয়ায় হান্নান শাহ ঢাকা মহানগরীর নেতৃত্ব নিতে নিরুৎসাহিত হন। এ কারণে হান্নান শাহর ওপরও এখন পর্যন্ত পুরোপুরি ভরসা রাখতে পারছেন না খালেদা জিয়া। 
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষের দিকে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে ব্যবসায়ীদের মাঠে নামাতে চেয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এ জন্য তিনি তাঁর উপদেষ্টা ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুর ওপর ভরসা করেন। কিন্তু আবদুল আউয়াল মিন্টু কিছুদিন দৌড়ঝাঁপ করে ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করলেও হঠাৎ একদিন গ্রেফতার হয়ে যান। আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রধানমন্ত্রীর একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টার আত্মীয় হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আবদুল আউয়াল মিন্টুর গ্রেফতার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। 
একসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের ওপর ভরসা করতেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে শুরু করে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত রাজপথের আন্দোলনে কোন ভূমিকা পালন করতে না পারায় তাঁর ওপরও এখন তিনি ভরসা হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলের ভাইস-চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও উপদেষ্টা সাবিহউদ্দিন আহমেদ, রিয়াজ রহমান ও ড. ওসমান ফারুকসহ কয়েকজন নেতার ওপর ভরসা করেন খালেদা জিয়া। তাঁরা খালেদা জিয়াকে আশ্বস্ত করেছিল বিদেশী কূটনীতিকদের কাজে লাগিয়ে যে কোন মূল্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু তা করতে না পারায় বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কেও অবনতি হওয়ায় দলের এসব নেতাদের ওপরও ক্ষুব্ধ হন খালেদা জিয়া। 
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মাঝামাঝি সময় দলের বাইরে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. ইউনূসের ওপর ভরসা করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ড. ইউনূসও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে বিএনপিকে জিতিয়ে দেয়ার কৌশল নিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কৌশলের কাছে ড. ইউনূসের কৌশল হার মেনেছে। এ কারণে ড. ইউনূসের ওপরও ভরসা রাখতে পারেনি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দলের সিনিয়র নেতাদের ওপর ভরসা করতে না পেরে এখন নিয়মিত দলের বাইরের কিছু বুদ্ধিজীবীর কাছ থেকে নিয়মিত পরামর্শ নিচ্ছেন সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এ সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না এমন অবস্থানে ছিল বিএনপি। কিন্তু চলমান উপজেলা নির্বাচনে কিছু বুদ্ধিজীবীর পরামর্শেই বিএনপি অংশ নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এসব বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছে ফরহাদ মাজহার, ড. পিয়াস করিম, ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, ড. মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিয়া প্রমুখ। 
দলের পরবর্তী জাতীয় কাউন্সিলে ভরসা রাখা যায় এমন কোন সিনিয়র নেতাকে মহাসচিবের দায়িত্ব দিতে চান বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এ জন্য তিনি একজন উপযুক্ত নেতা খুঁজছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠজনরা এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোন নেতার নাম খালেদা জিয়ার কাছে দিতে পারছেন না। খালেদা জিয়ার পাশাপাশি লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানও তাঁর মা ভরসা রাখতে পারেন এমন একজন নেতার সন্ধান করছেন বলে জানা গেছে। 
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, বড় রাজনৈতিক দলে সব সময়ই কিছু না কিছু সমস্যা থাকে। বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাই এ দলে ছোটখাটো কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। তবে উপজেলা নির্বাচনের পর জাতীয় কাউন্সিল হলে সব সমস্যা কেটে যাবে। আর এই কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যোগ্য মেধাবী নেতাদের নিয়ে দলের জন্য একটি ভাল কমিটি করবেন। তাই আমরা জাতীয় কাউন্সিলের জন্য অপেক্ষা করছি।

প্রকাশ : শনিবার, ২২ মার্চ ২০১৪, ৮ চৈত্র ১৪২০





__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]





__,_._,___