Banner Advertise

Thursday, December 12, 2013

[chottala.com] মোল্লার ফাঁসি ও অনৈতিক ভূমিকায় নাভি পিল্লাই



শওগাত আলী সাগর

মোল্লার ফাঁসি ও অনৈতিক ভূমিকায় নাভি পিল্লাই

ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩

শওগাত আলী সাগরএক.

ঘটনাটা ২০১০ সালের। সেবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন চীনের লেখক ও মানবাধিকারকর্মী লিও সিয়াওবো। চীনের রাজনৈতিক সংস্কার এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষে আন্দোলন পরিচালনা করতে গিয়ে কারারুদ্ধ হন তিনি। কারারুদ্ধ অবস্থাতেই তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।

ডিসেম্বরে যখন আনুষ্ঠানিকভাবে নোবেল বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়, তখনও লিও চীনের কারাগারে আটক। আর তাঁর স্ত্রী গৃহবন্দি। নোবেল পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার নাভি পিল্লাইকে। মিজ পিল্লাই সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে অসম্মতি জানান। তাঁর পক্ষ থেকে অবশ্য তখন জানানো হয় যে, জাতিসংঘ ভবনে তাঁর মানবাধিকার বিষয়ক একটি কর্মসূচি পূর্বনির্ধারিত থাকায় তিনি নোবেল পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন না।

তাঁকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল, তাঁর পক্ষে বা জাতিসংঘের পক্ষে যে কোনো পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা যেন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন। অন্তত জাতিসংঘের কোনো একজন কর্মকর্তার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হয়েছিল বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকেও। কিন্তু নাভি পিল্লাই তাতেও সম্মতি দেননি। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তাঁর বা জাতিসংঘের কোনো প্রতিনিধি ওই অনুষ্ঠানে যাবেন না।

কারারুদ্ধ একজন মানবাধিকারকর্মী, নোবেলের মতো আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত একটি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, আর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ওই অনুষ্ঠানে নিজে তো যাবেন-ই না, তাঁর কোনো প্রতিনিধিকেও সেখানে যেতে দিবেন না, এ কেমন কথা!

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষযক হাইকমিশনার কাদের মোল্রার ফাঁসি কার্যকর না করতে সরকারকে কার্যত চাপ দিতে চেয়েছেন

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষযক হাইকমিশনার কাদের মোল্রার ফাঁসি কার্যকর না করতে সরকারকে কার্যত চাপ দিতে চেয়েছেন

লিও'র শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া আর জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের চীন সফরের ঘটনাটা ঘটেছিল কাকতালীয়ভাবে একই সময়ে। সদ্য নোবেল পুরস্কার পাওয়া একজন মানবাধিকারকর্মীর প্রতি জাতিসংঘের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব সহানুভূতিশীল হবেন– এমনটাই প্রত্যাশা করেছিলেন দেশ-বিদেশের মানবাধিকারকর্মীরা। বান কি মুনকে তাঁরা অনুরোধ জানান, চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি যেন লিও'র মুক্তির বিষয়টা তাঁর কাছে তুলে ধরেন। বান কি মুন সেই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন। এমনকি নোবেল পুরস্কার বিজয়ের জন্য লিও-কে অভিনন্দন জানাতেও রাজি হননি তিনি।

চীনের নিপীড়িত মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় লড়াই করতে গিয়ে একজন মানবাধিকারকর্মী যখন বিপন্ন, জাতিসংঘ কিংবা জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার তাঁর পাশে দাঁড়াতে সরাসরি অসম্মতি জানিয়েছেন! তাহলে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন কাদের জন্য কাজ করে? যে নাভি পিল্লাই মানবতার বিরুদ্ধে পৈশাচিক অপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ দণ্ডপ্রাপ্ত একজন অপরাধীর পক্ষে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে দেনদরবারে নেমেছেন, সেই ব্যক্তিই কিনা নোবেল পুরস্কার পাওয়া একজন মানবাধিকারকর্মীর পক্ষে দাঁড়াতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন!

দুই.

চলতি বছরের জুলাই কী আগস্ট মাসের ঘটনা। তামিল গেরিলাদের সঙ্গে চলমান দীর্ঘদিনের সশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত শ্রীলঙ্কার মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখতে সে দেশ সফরে যান নাভি পিল্লাই। তিনি কোথায় যাবেন, কী করবেন সবকিছুই জানানো হয় শ্রীলঙ্কা সরকারকে। কিন্তু একটি কর্মসূচি সম্পর্কে সরকারকে কিছুই জানানো হয়নি জাতিসংঘের স্থানীয় অফিস থেকে। শ্রীলঙ্কান সেনাবাহিনীর হাতে নিহত লিবারেশন টাইগার অব তামিল ইলম (এলটিটিই) সদস্যদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচি নেন তিনি। কলম্বো সরকারকে না জানালেও ঘটনাটা মিডিয়া ফাঁস করে দেয়। তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় পররাষ্ট্র এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সরকার এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিতে শুরু করে।

সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, নাভি পিল্লাই-র সফরকে শ্রীলঙ্কা সরকার স্বাগত জানাবে। কিন্তু নিহত তামিল গেরিলাদের সমাধিতে ফুল দেওয়ার মতো কোনো কর্মসূচি নেওয়া হলে তার পরিণাম হবে খুবই খারাপ। কিন্ত ভারতীয় তামিল বংশোদ্ভূত মিজ পিল্লাই তাঁর কর্মসূচিতে অটল থাকেন এবং তা চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেন। শ্রীলঙ্কান সরকারও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, তিনি তাদের অনুমোদিত কর্মসূচির বাইরে কোনো কিছু নিতে চাইলে পুরো সফরটিই বাতিল করে দেওয়া হবে। বাধ্য হয়ে পিল্লাই তার কর্মসূচি বাদ দেন।

শ্রীলঙ্কায় অবস্থানকালেই মিজ পিল্লাই-এর তৎপরতা সমালোচনার মুখে পড়ে। কলম্বোর প্রায় সব ধরনের মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, ব্লগ সর্বত্রই তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ফিরে যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুরে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে শ্রীলঙ্কান মিডিয়ার সমালোচনার জবাব দেন এবং নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।

সফর শেষে ফিরে গিয়ে তিনি শ্রীলঙ্কার মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং সরকার সম্পর্কে তীব্র সমালোচনা করে বিবৃতি দেন। আর তাঁর এ বিবৃতির পর শ্রীলঙ্কান মিডিয়া তাকে আরেক দফা তুলোধুনা করে ছাড়ে।

তিন

গত বছরের ঘটনা। টিউশন ফি বাড়ানোকে কেন্দ্র করে কানাডার কুইবেকের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লাগাতার বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে কুইবেক প্রাদেশিক সরকার ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়। কুইবেকের ক্ষমতাসীন দল 'ছাত্রদের কোনো ধরনের বিক্ষোভ আয়োজনের অন্তত ৮ ঘন্টা আগে কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং বিক্ষোভের এলাকাসমূহ সম্পর্কে জানানোর নিয়ম বাধ্যতামূলক করে' সংসদে একটি বিল উত্থাপন করে।

কুইবেক প্রাদেশিক সরকারের এই বিলটিতে সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল সবকটি রাজনৈতিক দলই সমর্থন করে। কিন্তু নাভি পিল্লাই জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতায় অভিযোগ করেন, কুইবেক জনসমাবেশ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করে দিচ্ছে। তিনি কুইবেককে কালো তালিকাভূক্ত করারও হুমকি দেন।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে নাভি পিল্লাই-র এই বক্তৃতার তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় কানাডায়। কুইবেক প্রাদেশিক সরকার তো বটেই, ফেডারেল সরকার পর্যন্ত তাঁর বক্তৃতার তীব্র সমালোচনা করে। সেই সমালোচনায় যোগ দেয় কানাডার মিডিয়াও। শীর্ষস্থানীয় মিডিয়াগুলো অভিযোগ করে, নাভি পিল্লাই জাতিসংঘের মানবাধিকারের সংজ্ঞাকেই 'টুইস্ট' করছেন। কোনো কোনো পত্রিকা এমনও মন্তব্য করে যে তাঁর বর্ণাঢ্য পেশাদার জীবন থাকলেও, কানাডার সংবিধান এবং চার্টার অব রাইটস সম্পর্কে কোনো পড়াশুনা নেই। আর কোনো দেশের আইন কানুন সম্পর্কে না জেনে, পড়াশুনা না করে দায়িত্বশীল পদ থেকে কোনো ধরনের মন্তব্য করা সমীচীন নয় বলেও মন্তব্য করে সেদেশের মিডিয়া।

টরন্টো, মন্ট্রিয়লসহ কানাডার বড় বড় শহরে বিক্ষোভ বা সভা সমাবেশ করতে হলে অন্তত ৩০ ঘন্টা আগে লিখিতভাবে জানিয়ে অনুমোদন নিতে হয়। এমনকি জাতিসংঘের সামনে সমাবেশ করতেও ৩০ ঘন্টা আগে জানাতে হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য ৮ ঘন্টা আগে জানানোর নিয়মকেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন নাভি পিল্লাই।

চার

এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা কিংবা পশ্চিমের দেশ কানাডা– যেখানেই ভুল পথে পা রেখেছেন সেখানেই তীব্র সমালোচিত হয়েছেন জাতিসংঘের এই হাইকমিশনার। ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশ। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, রাজাকর-আলবদরদের নৃশংসতা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর কোনো ধারণা থাকবে না– সেটি বিশ্বাস করলে ভুল করা হবে। যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার সম্পর্কেও তাঁর ধারণা আছে বলেই আমরা মনে করি।

তবু তিনি শেষ মুহূর্তে বিবৃতি দিয়ে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর না করতে সরকারকে কার্যত চাপ দিয়েছেন। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, সেই চাপের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যতটা প্রতিক্রিয়া হয়েছে, ক্ষোভ দেখা গেছে, মূলধারার মিডিয়াতে তার ছিটেফোঁটাও নেই। ঢাকার কোনো একটি মিডিয়া কি নাভি পিল্লাই-র বিবৃতির সমালোচনা করে সম্পাদকীয় লিখেছে? বিশিষ্টজনের প্রতিক্রিয়া্ নিয়ে কোনো প্রতিবেদন করেছে? কিংবা কোনো সংগঠন বিবৃতি দিয়ে বা কোনোভাবে তাঁর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে কি?

৯ ডিসেম্বর রাতে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নিয়েও অকস্মাৎ তা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় পুরো দেশ যেভাবে ফুঁসে উঠেছিল, নাভি পিল্লাই-র বিবৃতির বিরুদ্ধেও সেভাবেই প্রতিবাদ হওয়ার কথা। কিন্তু সেটি হয়নি। এমনকি শ্রীলঙ্কার মিডিয়া যে কাজটি করতে পেরেছে, বাংলাদেশের মিডিয়া তার সামান্য কিছুও করতে পারেনি।

কানাডার অন্যতম প্রভাবশালী পত্রিকা 'দ্য মেট্টোপলিটন'-এর কলামিস্ট ব্যারিল ওয়াজসম্যান একটি কলাম থেকে খানিকটা উদ্ধৃতি দিই–

"And what of Pillay herself? As Adrien Pouliot has pointed out, did she bother to talk about the Chinese repression of Tibet where a monk recently set himself on fire in protest? He was the thirtieth such suicide since 2009. Did she protest the jailing and torture of a Cuban dissident after he had testified in front of an American Senate Committee? Did she express concern over the 13 year prison sentence meted out to Iranian dissident leader Addolfattah Soltani? No! Her reaction, and that of the UN, has been total silence on China, on Iran, on North Korea on Zimbabwe, and the list goes on. But somehow Pillay found the time for Quebec.

Pillay is the perfect ethically bankrupt mouthpiece for a morally bankrupt organization.

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে কেউ কোনো নেতিবাচক কথা বলতে এলে আমাদেরও এভাবেই রুখে দাঁড়ানো উচিত। সে ব্যক্তি জন কেরিই হোন আর জাতিসংঘের কোনো কেউকেটা হোন। কানাডার 'দ্য মেট্টোপলিটন' পত্রিকার মতো আসুন আমরাও উচ্চকণ্ঠে বলে দিই– 'ইথিক্যালি ব্যাংকক্রাপ্ট' মানুষের আর যাই হোক, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে কোনো মন্তব্য করার অধিকার নেই।

শওগাত আলী সাগর: দৈনিক প্রথম আলোর সাবেক বিজনেস এডিটর, টরন্টো থেকে প্রকাশিত নতুনদেশ ডটকম এর প্রধান সম্পাদক।

http://bangla.bdnews24.com/opinion_bangla/article713961.bdnews

http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=67748818e81f37530ccd61732fd3e115&nttl=11122013247770


৭১-এ কুখ্যাত কসাই কাদেরদের এই সব নির্মম-নিষ্ঠুর-ভয়ঙ্কর-জঘন্য মানবাধিকার লঙ্গনের সময় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল কোথায় ছিলো?



__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___