আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে ১৯৭১ এর যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার এবং কিছু 'নিরেপক্ষ ও স্বাধীনতার পক্ষের' লোকের কথা ও ভুমিকা
প্রকৌশলী সফিকুর রহমান অনু
অকলেন্ড, নিউজিলেন্ড,
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল (ইংরেজি ভাষায়: International Crimes Tribunal) বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত একটি অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যার উদ্দেশ্য ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহের বিচার করা। এর আওতায় পড়ে যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ। বাংলাদেশে ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ নামক রাজনৈতিক দলটির অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক ইশতেহার ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা। সে নির্বাচনে তারা নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে বিজয়ী হয়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আওয়ামী লীগের একজন সাংসদ ২০০৯ সালের ২৯শে জানুয়ারি জাতীয় সংসদে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রস্তাব পেশ করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
ভারতকে অভিযুক্ত করল জামায়াত: গতকাল সংসদে পাস হওয়া প্রস্তাব সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা বলেন, 'সরকার যদি পাকিস্তানি ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে এনে বিচার করতে পারে, তাহলে আপত্তির কিছু নেই। আবার লুটতরাজও যুদ্ধাপরাধ। সেই হিসেবে স্বাধীনতার পর ভারত যে অস্ত্রশস্ত্র ও কলকারখানার যন্ত্রপাতি নিয়ে গেল, তাদের যদি ধরে এনে বিচার করা যায়, তাহলে আমরা খুশি।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, তাঁদের দলে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই। এখন যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়, তাহলে আইনগতভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী হারুন-অর-রশিদের কাছে কাদের মোল্লার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারত যদি এই লুটতরাজ করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে তারা সংসদে বিল আনুক। তারা লুকিয়ে বলে কেন। আর জামায়াতে যুদ্ধাপরাধী নেই কি না, তা বিচারের সময়েই প্রমাণিত হবে।
অন্যদের প্রতিক্রিয়া: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করাসংক্রান্ত প্রস্তাব সংসদে পাস হওয়ার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, প্রচলিত আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা যাবে না। এ কারণে সরকারের এখন এক বা একাধিক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা উচিত। এই ট্রাইব্যুনাল গঠনের এখতিয়ার ও অধিকার আইনের মধ্যেই আছে। প্রথম পর্যায়ে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী, যাদের সম্পর্কে প্রমাণ ও দলিল-দস্তাবেজ আছে, তাদের কয়েকজনকে শনাক্ত করে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের সামনে দাঁড় করাতে হবে।
সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) কে এম সফিউল্লাহ্ বলেন, 'আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। তবে আমাদের প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি।' তিনি বলেন, যখন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কাজ শুরু করবে, কমিশন গঠন করা হবে এবং জাতিসংঘের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানো হবে, তখনই তাঁদের আন্দোলন শেষ হবে।
ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি, বাংলাদেশের আহ্বায়ক ডা. এম এ হাসান মনে করেন, এই প্রস্তাব এনে একাত্তরের শহীদ ও নির্যাতিতদের মর্যাদা প্রদর্শনের যাত্রা শুরু হলো। তিনি বলেন, 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে বিচারহীনতার অবসানের মধ্যে নিয়ে জাতীয় অহংকার ফিরে পাব, মূল্যবোধের অবক্ষয় পুনর্নির্মাণ করতে পারব।'
২০০৯ সালের ২১শে মে সরকার বিশেষজ্ঞদের মতামত চেয়ে ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টটি আইন কমিশনে পাঠায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আইন কমিশন দেশের বিশেষজ্ঞ আইনজীবী, বিচারপতি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আরও কয়েকজন আইনজ্ঞের মতামতের ভিত্তিতে ১৯৭৩ সালে প্রণীত ট্রাইব্যুনালের কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে সংশোধন আনার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেয়।
অবশেষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ৩৯ বছর পর যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫শে মার্চ ট্রাইবুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়।
২০১০ সালের ২৬শে জুলাই ট্রাইব্যুনালের প্রথম শুনানির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তার কার্যক্রম শুরু হয়। ঢাকার পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নিজামুল হকের নেতৃত্বে অপর দুই সদস্য বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর ও বিচারক এ কে এম জহির আহমেদ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে শুনানি পরিচালনা করেন। শুনানি শেষে ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর চার নেতা— মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়।
১৯৭১ এর যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের ব্যপারে --
শেখ হাসিনা ও তার এই সরকারের এত দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, সমালোচনা, লেখালেখি ও সরকারের উপর চাপ, ভয় ভীতি, উপেক্ষা করে - সময় উপযোগী এবং প্রয়োজনীয় সকল সাহসী পদক্ষেপ, প্রচেষ্টা, দৃড় আন্তরিকতা, সাহসিকতার মাধ্যমে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে!
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০১০ সালের মার্চ মাসে। দীর্ঘ পথপরিক্রমায় মামলার তদন্ত, সাক্ষী জোগাড়, শুনানি, যুক্তি-পাল্টা যুক্তির পর ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু হয় এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথম রায় রায় (ফাসি) হয়েছিল হয় গত ২১সে জানুয়ারী ২০১৩, বাচ্চু রাজাকরের বিরুদ্ধে!
ইতিমধ্যে ৯ জনের অধিক যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের রায় হয়েছে!
সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে আরও ৬টি মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। ২টি মামলার আসামি পলাতক থাকায় তাদের ট্রাইব্যুনালের সাজা মৃত্যুদ-ই বহাল রয়েছে। একটি মামলা ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছে। ৮টি মামলার বিচারকাজ চলছে। বাকি ১২টি মামলার বিভিন্ন পর্যায়ে তদন্তাধীন রয়েছে।
'সারা পৃথিবীতে কয়েকশত গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু খুব সামান্যই বিচার হয়েছে। গণহত্যার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে যাচ্ছে।'
তাই এত কিছুর পরও যারা বলে বা মনে করে --
১৯৭১ এর যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের ব্যপারে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের আন্তরিক না, সব লোক দেখানো!
এবং যারা এই ১৯৭১ এর যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের ব্যপারে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের প্রচেষ্টা,আন্তরিকতা নিয়ে -
বিন্দুমাত্র,
হাঁ, বিন্দুমাত্রও
সন্দেহ করে, দোষারোপ করে -
তাদের,
বেড়ে উঠায়, তাদের বিকাশে, তাদের জ্ঞানে, তাদের চিন্তা-চেতনায় -চরিত্রে, তাদের সততায় - নৈতিকতায়, তাদের রুচিতে - সর্বোপরি তাদের মাথায়- ব্যাপক সমস্যা আছে, ভেজাল আছে!!!
তারা আসলে নিরেপক্ষতার বা 'লাল' বাবুর মুখোশ পড়া--
পুরানো এবং নব্য রাজকার, রাজকারের আন্ডা বাচ্চা এবং তাদের প্রকাশ্য ও গোপন সমর্থক!
কোটি কোটি ধিক, ঘৃনা এই সমস্থ,
পুরানো এবং নব্য রাজকাদের প্রতি, রাজকারের আন্ডা বাচ্চাদের প্রতি এবং তাদের প্রকাশ্য ও গোপন সমর্থকদের প্রতি!
দেশে বিদেশে বাঙ্গালীরা এবং বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ গুনুমুগ্ধ ভক্ত গন
সুখে থাকুন, ভালো থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন
জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু
শুভেচ্ছান্তে
Engr. Shafiqur Rahman Anu
__._,_.___