খালেদা যুদ্ধাপরাধীর পক্ষ না নিলে সহজেই সব সমস্যার সমাধান
নিরপেক্ষ নির্বাচনের গ্যারান্টি দিতে প্রস্তুত, বান কি মুনকে বলেছি পর্যবেক্ষক দল পাঠাতে ॥ নিউইয়র্কে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা
মাহমুদুল আলম নয়ন, নিউইয়র্ক থেকে ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান সংবিধানের আওতায় পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে জোট পরিত্যাগ করে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে এলে পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে কোন রাজনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি হবে না।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিপেরপেক্ষ হওয়ার বিষয়ে আমরা 'গ্যারান্টি' (নিশ্চয়তা) দিতে প্রস্তুত। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তর হবে। আর একমাত্র আওয়ামী লীগই যে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারে, তার প্রমাণ আমরা অতীতে দিয়েছি। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করার রীতি কাউকে না কাউকে চালু করতে হবে, সেটি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট করে দেখাতে চায়। আমি পরবর্তী নির্বাচনের নিরপেক্ষতা যাচাই করতে পর্যবেক্ষক দল পাঠাতে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনকে অনুরোধ করেছি।
শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে জনাকীর্ণ এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে না দাঁড়ান, তাহলে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে খুব সহজে। বিরোধীদলীয় নেতা ভাবছেন যে, জামায়াত-শিবির আর হেফাজতের মদদে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেই ওনাদের দুয়ার খুলে যাবে। কিন্তু তা কখনোই ঘটবে না। যারা ক্ষমতা নেবে তারা একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের চেয়েও জঘন্য অপকর্মে লিপ্ত হবে।
'জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করতে সরকার কালক্ষেপণ করছে'- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি বর্তমানে আদালতে রয়েছে। সরকার আদালতের কর্মকান্ডে হস্তক্ষেপ করে না। আদালতই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। এ সময় সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, 'আমি নিজেও একজন রাজনীতিক, তাই একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার কথা বলবো কীভাবে?
জাতিসংঘের ৬৮তম সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের শেষ দিনে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনের পর প্রবাসীদের দেয়া এক নাগরিক সর্ম্বধনায় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লেিগর নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ অব্যাহত রাখতে বিএনপিকে ভোট বিপ্লবে পরাজিত করতে হবে। ম্যানহাটানের হিল্টন হোটেলের বলরূমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। এতে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংহ এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ নাজিম বিন তুন আবদুল রাজ্জাকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এরপর রবিবার সকালে ঢাকা উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বিকেলে তাঁর ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ মিশনের ফাস্ট সেক্রেটারি (প্রেস) মামুন-অর-রশিদের সঞ্চালনায় এ সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ছেড়ে সংসদে এসে কথা বলার জন্য বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কে জাতীয় সংসদে বিএনপির উত্থাপিত মুলতবি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু পরে বিএনপি নেতা অশুভ উদ্দেশ্যে প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জাতীয় সংসদে প্রস্তাবটি পেশ করার জন্য বিরোধী দলের নেতার প্রতি পুনর্বহার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের মানুষকে জানতে দিন আপনারা আসলে কী চান? সংসদে যোগ দিয়ে বিরোধী দলের নেতা কী চান তা স্পষ্ট করে বলতে পারেন। তবে আমি এবং আমরা চাই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বে কখনোই কোনো পার্লামেন্ট বাতিল করে নির্বাচন করা হয় না। তবে আমরা পারবো না কেন? গত পৌণে পাঁচ বছরে ৬ হাজার ৭৭৭টি নির্বাচন হয়েছে। প্রতিটিতেই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীও ছিলেন। কখনোই তারা কোনো নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেননি, তুলতে পারেনি। অর্থাৎ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব- এটি আজ প্রতিষ্ঠিত। সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বিএনপি নেত্রীর সদিচ্ছা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে জয়লাভ করার পর জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে তাঁর এতো ভয় কীসের? জনগণের প্রতি আস্থা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস থাকলে বিএনপি নির্বাচনে আসবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের কিছু সংবাদমাধ্যমের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার সমর্থক প্রার্থী পরাজয়ের জন্য 'মিডিয়ার নেতিবাচক' প্রচারণাকেও দায়ী করেন। তিনি বলেন, গত ৫টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিপর্যয় ঘটার অনেক কারণের একটি হচ্ছে মিডিয়াগুলোর নেতিবাচক প্রচারণা। আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতির সংবাদ তেমন আসে না। একটু খারাপ কিচু দেখলেই সবগুলো মিডিয়া সেটি ফলাও করে প্রচার করে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মিডিয়া এখন পুরো স্বাধীনতা ভোগ করছে। এছাড়া বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো নেগেটিভ সংবাদকে বেশী গুরুত্ব দেয়ার কালচার তৈরি করেছে। এটি মিডিয়াগুলোর 'সাইকোলিক্যাল প্রবলেম'।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সিটি কর্পোরেশনেই নির্বাচনের সময় অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। ব্যাপক উন্নযন হলেও আমাদের প্রার্থীরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে জয় পায়নি। তিনি প্রশ্ন করেন, এই নির্বাচনের বিজয়ী হওয়ার পর বিরোধী দল ফুল-মালা দিয়ে তাঁদের প্রার্থীকে বরণ করেন, আবার বলে নির্বাচন অবাধ হয়নি! বিরোধী দলের এমন স্ববিরোধী অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে আগামী নির্বাচনে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ভোট দেয়ার আহবান জানান।
কিছু টকশ'র অতিথি ও সুশিল সমাজের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নানা কথা বলে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছেন তাদের অনেকেই সরকারি অথবা আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে ছিলেন। তাঁরা চাকুরি জীবনে জনগণের সেবা ও নাগরিক সমস্যার সমাধানে তাদের অদক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। যে সময় তারা কে কী করেছেন সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে, আর তা না হলে বাংলাদেশে সঙ্কট দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই সুশিলরা আবার গাড়িতে পতাকা উড়াতে পারবেন। সে আশা পূরণ হচ্ছে না ভেবে এখন তাঁরা হা-হুতাশ করছেন। তিনি বলেন, যারা বড় বড় কথা বলছেন, পরামর্শক সেজেছেন- তারা সকলেই চাচ্ছেন দেশ আবার সঙ্কটে আবর্তিত হোক। তাহলেই তাদের গুরুত্ব বাড়বে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে কোনো সঙ্কট নেই, কিছু লোক কথার ফুলঝুড়ি ছড়িয়ে দেশে সঙ্কটের কথা বলছেন। সঙ্কট আছে স্ব স্ব ক্ষেত্রে কিছু ব্যর্থ মানুষের কথায় ও মনে। কারন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে যাদের গুরুত্ব বাড়ে বা পদ পওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। সংকটের কথা বলে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং দেশকে অন্ধকারের ঠেলে দেয়ার প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হবে। কারণ আমারা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরে জাতিসংঘ সফরকে সরকার এবং বাংলাদেশের জনগনের জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসু হিসাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার দায়িত্ব গ্রহনের পর ৬৫তম অধিবেশন থেকে ৬৮তম জাতিসংঘ অধিবেশন দেশের জন্য ছিলো অত্যন্ত গতিময় ও গৌরবের। দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের 'সাউথ সাউথ' পুরস্কার গ্রহন ও বাংলাদেশের এমডিজি অর্জনে সাফল্য দেশ ও জনগণের জন্য সম্মান ও গৌরব বয়ে এনেছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘর বিভিন্ন ফোরামে প্রশংসিত হয়েছে এবং আর্ন্তজাতিকভাবে দেশের ভাবমুর্তি উজ্জল হয়েছে।
জাতিসংঘে তাঁর বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগদানের বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবারও জাতিসংঘ অধিবেশনে তাঁর বাংলায় ভাষণ সাড়ে ৩শ' মিলিয়ন মানুষের ভাষা হিসাবে পরিচিতি এনে দিয়েছে। বাংলার জনগন আরো একবার সুযোগ দিলে বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষার পরিণত করতে পারার বিষয়ে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত তিনি বলেন, কযুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগকে সর্বাত্মক সমর্থন করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।
সংবাদ সন্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়। সমঝোতার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই যদি সুষ্ঠ নির্বাচন চায় তাহলে ঐক্যমত হবে। সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী আরো নমনীয় এবং দু' নেত্রীর মধ্যে আলোচনা হতে পারে কিনা এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অবশ্যই আমি চা খেতে পছন্দ করি এবং একসঙ্গে চা খেতে আপত্তি নেই। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগকে ছোট করতে গিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় আনা যাবে না। কারণ যারা ক্ষমতায় আসবে তারা আবার যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে পতাকা তুলে দেবে। এ ব্যপারে জনগনকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি জানি বিরোধী দলীয় নেতা আমাকে পছন্দ করেন না। কারণ যেদিন জাতির জনককে হত্যা করা হয়, যেদিন আমি বাবা মা ও পরিবারের সব সদস্যদের হারিয়েছি- সেদিন জন্মদিন না হওয়া সত্বেও বিরোধী দলীয় নেত্রী জন্মদিন পালন করেন। উনি ক্ষমতায় থাকতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তারপরেও দেশ, জনগন ও সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নমনীয় হয়ে চলেছি।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আব্যাহত রাখবে। রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুুত কেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না।
পরে দলীয় সংবর্ধনা সভায় প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের সফলতা তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে পুনরায় আওয়ামী লীগ ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, সংবিধান অনুয়ায়ি আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এনিয়ে কোন সংশয় নেই। তিনি প্রবাসীদের তাদের আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির পক্ষে কাজ করারও আহবান জানিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ আবার অন্ধকারের চোরাগলিতে হারিয়ে যাবে। আলোর পথে যে যাত্রা মহাজোট সরকার শুরু করেছে, তা অব্যাহত রাখতে হবে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে মহাজোটের প্রার্থীদের আরেকটিবার বিজয়ী করার মাধ্যমে।
শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের আর এক ব্যাটালিয়ন সেনা নিয়োগের সম্মতি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বান কি মুন এমডিজি অর্জন, নারীর ক্ষমতায়ন ও বিশ্ব শন্তি রক্ষায় বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের আরো এক ব্যাটালিয়ন সৈন্য নিয়োগে সম্মতি দেন। প্রধানমন্ত্রী এজন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন জানান, শীঘ্রই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আরো এক ব্যাটেলিয়ান সৈন্য নেয়া হবে বাংলাদেশ থেকে। এটি বাংলাদেশের জন্যে অনেক বড় একটি সংবাদ। জাতিসংঘ মহাসচিব এ ব্যাপারে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিপেরপেক্ষ হওয়ার বিষয়ে আমরা 'গ্যারান্টি' (নিশ্চয়তা) দিতে প্রস্তুত। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তর হবে। আর একমাত্র আওয়ামী লীগই যে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারে, তার প্রমাণ আমরা অতীতে দিয়েছি। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করার রীতি কাউকে না কাউকে চালু করতে হবে, সেটি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট করে দেখাতে চায়। আমি পরবর্তী নির্বাচনের নিরপেক্ষতা যাচাই করতে পর্যবেক্ষক দল পাঠাতে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনকে অনুরোধ করেছি।
শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে জনাকীর্ণ এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে না দাঁড়ান, তাহলে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে খুব সহজে। বিরোধীদলীয় নেতা ভাবছেন যে, জামায়াত-শিবির আর হেফাজতের মদদে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেই ওনাদের দুয়ার খুলে যাবে। কিন্তু তা কখনোই ঘটবে না। যারা ক্ষমতা নেবে তারা একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের চেয়েও জঘন্য অপকর্মে লিপ্ত হবে।
'জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করতে সরকার কালক্ষেপণ করছে'- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি বর্তমানে আদালতে রয়েছে। সরকার আদালতের কর্মকান্ডে হস্তক্ষেপ করে না। আদালতই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। এ সময় সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, 'আমি নিজেও একজন রাজনীতিক, তাই একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার কথা বলবো কীভাবে?
জাতিসংঘের ৬৮তম সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের শেষ দিনে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনের পর প্রবাসীদের দেয়া এক নাগরিক সর্ম্বধনায় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লেিগর নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ অব্যাহত রাখতে বিএনপিকে ভোট বিপ্লবে পরাজিত করতে হবে। ম্যানহাটানের হিল্টন হোটেলের বলরূমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। এতে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংহ এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ নাজিম বিন তুন আবদুল রাজ্জাকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এরপর রবিবার সকালে ঢাকা উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বিকেলে তাঁর ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ মিশনের ফাস্ট সেক্রেটারি (প্রেস) মামুন-অর-রশিদের সঞ্চালনায় এ সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ছেড়ে সংসদে এসে কথা বলার জন্য বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কে জাতীয় সংসদে বিএনপির উত্থাপিত মুলতবি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু পরে বিএনপি নেতা অশুভ উদ্দেশ্যে প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জাতীয় সংসদে প্রস্তাবটি পেশ করার জন্য বিরোধী দলের নেতার প্রতি পুনর্বহার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের মানুষকে জানতে দিন আপনারা আসলে কী চান? সংসদে যোগ দিয়ে বিরোধী দলের নেতা কী চান তা স্পষ্ট করে বলতে পারেন। তবে আমি এবং আমরা চাই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বে কখনোই কোনো পার্লামেন্ট বাতিল করে নির্বাচন করা হয় না। তবে আমরা পারবো না কেন? গত পৌণে পাঁচ বছরে ৬ হাজার ৭৭৭টি নির্বাচন হয়েছে। প্রতিটিতেই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীও ছিলেন। কখনোই তারা কোনো নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেননি, তুলতে পারেনি। অর্থাৎ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব- এটি আজ প্রতিষ্ঠিত। সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বিএনপি নেত্রীর সদিচ্ছা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে জয়লাভ করার পর জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে তাঁর এতো ভয় কীসের? জনগণের প্রতি আস্থা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস থাকলে বিএনপি নির্বাচনে আসবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের কিছু সংবাদমাধ্যমের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার সমর্থক প্রার্থী পরাজয়ের জন্য 'মিডিয়ার নেতিবাচক' প্রচারণাকেও দায়ী করেন। তিনি বলেন, গত ৫টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিপর্যয় ঘটার অনেক কারণের একটি হচ্ছে মিডিয়াগুলোর নেতিবাচক প্রচারণা। আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতির সংবাদ তেমন আসে না। একটু খারাপ কিচু দেখলেই সবগুলো মিডিয়া সেটি ফলাও করে প্রচার করে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মিডিয়া এখন পুরো স্বাধীনতা ভোগ করছে। এছাড়া বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো নেগেটিভ সংবাদকে বেশী গুরুত্ব দেয়ার কালচার তৈরি করেছে। এটি মিডিয়াগুলোর 'সাইকোলিক্যাল প্রবলেম'।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সিটি কর্পোরেশনেই নির্বাচনের সময় অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। ব্যাপক উন্নযন হলেও আমাদের প্রার্থীরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে জয় পায়নি। তিনি প্রশ্ন করেন, এই নির্বাচনের বিজয়ী হওয়ার পর বিরোধী দল ফুল-মালা দিয়ে তাঁদের প্রার্থীকে বরণ করেন, আবার বলে নির্বাচন অবাধ হয়নি! বিরোধী দলের এমন স্ববিরোধী অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে আগামী নির্বাচনে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ভোট দেয়ার আহবান জানান।
কিছু টকশ'র অতিথি ও সুশিল সমাজের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নানা কথা বলে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছেন তাদের অনেকেই সরকারি অথবা আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে ছিলেন। তাঁরা চাকুরি জীবনে জনগণের সেবা ও নাগরিক সমস্যার সমাধানে তাদের অদক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। যে সময় তারা কে কী করেছেন সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে, আর তা না হলে বাংলাদেশে সঙ্কট দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই সুশিলরা আবার গাড়িতে পতাকা উড়াতে পারবেন। সে আশা পূরণ হচ্ছে না ভেবে এখন তাঁরা হা-হুতাশ করছেন। তিনি বলেন, যারা বড় বড় কথা বলছেন, পরামর্শক সেজেছেন- তারা সকলেই চাচ্ছেন দেশ আবার সঙ্কটে আবর্তিত হোক। তাহলেই তাদের গুরুত্ব বাড়বে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে কোনো সঙ্কট নেই, কিছু লোক কথার ফুলঝুড়ি ছড়িয়ে দেশে সঙ্কটের কথা বলছেন। সঙ্কট আছে স্ব স্ব ক্ষেত্রে কিছু ব্যর্থ মানুষের কথায় ও মনে। কারন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে যাদের গুরুত্ব বাড়ে বা পদ পওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। সংকটের কথা বলে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং দেশকে অন্ধকারের ঠেলে দেয়ার প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হবে। কারণ আমারা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরে জাতিসংঘ সফরকে সরকার এবং বাংলাদেশের জনগনের জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসু হিসাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার দায়িত্ব গ্রহনের পর ৬৫তম অধিবেশন থেকে ৬৮তম জাতিসংঘ অধিবেশন দেশের জন্য ছিলো অত্যন্ত গতিময় ও গৌরবের। দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের 'সাউথ সাউথ' পুরস্কার গ্রহন ও বাংলাদেশের এমডিজি অর্জনে সাফল্য দেশ ও জনগণের জন্য সম্মান ও গৌরব বয়ে এনেছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘর বিভিন্ন ফোরামে প্রশংসিত হয়েছে এবং আর্ন্তজাতিকভাবে দেশের ভাবমুর্তি উজ্জল হয়েছে।
জাতিসংঘে তাঁর বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগদানের বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবারও জাতিসংঘ অধিবেশনে তাঁর বাংলায় ভাষণ সাড়ে ৩শ' মিলিয়ন মানুষের ভাষা হিসাবে পরিচিতি এনে দিয়েছে। বাংলার জনগন আরো একবার সুযোগ দিলে বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষার পরিণত করতে পারার বিষয়ে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত তিনি বলেন, কযুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগকে সর্বাত্মক সমর্থন করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।
সংবাদ সন্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়। সমঝোতার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই যদি সুষ্ঠ নির্বাচন চায় তাহলে ঐক্যমত হবে। সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী আরো নমনীয় এবং দু' নেত্রীর মধ্যে আলোচনা হতে পারে কিনা এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অবশ্যই আমি চা খেতে পছন্দ করি এবং একসঙ্গে চা খেতে আপত্তি নেই। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগকে ছোট করতে গিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় আনা যাবে না। কারণ যারা ক্ষমতায় আসবে তারা আবার যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে পতাকা তুলে দেবে। এ ব্যপারে জনগনকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি জানি বিরোধী দলীয় নেতা আমাকে পছন্দ করেন না। কারণ যেদিন জাতির জনককে হত্যা করা হয়, যেদিন আমি বাবা মা ও পরিবারের সব সদস্যদের হারিয়েছি- সেদিন জন্মদিন না হওয়া সত্বেও বিরোধী দলীয় নেত্রী জন্মদিন পালন করেন। উনি ক্ষমতায় থাকতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তারপরেও দেশ, জনগন ও সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নমনীয় হয়ে চলেছি।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আব্যাহত রাখবে। রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুুত কেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না।
পরে দলীয় সংবর্ধনা সভায় প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের সফলতা তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে পুনরায় আওয়ামী লীগ ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, সংবিধান অনুয়ায়ি আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এনিয়ে কোন সংশয় নেই। তিনি প্রবাসীদের তাদের আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির পক্ষে কাজ করারও আহবান জানিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ আবার অন্ধকারের চোরাগলিতে হারিয়ে যাবে। আলোর পথে যে যাত্রা মহাজোট সরকার শুরু করেছে, তা অব্যাহত রাখতে হবে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে মহাজোটের প্রার্থীদের আরেকটিবার বিজয়ী করার মাধ্যমে।
শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের আর এক ব্যাটালিয়ন সেনা নিয়োগের সম্মতি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বান কি মুন এমডিজি অর্জন, নারীর ক্ষমতায়ন ও বিশ্ব শন্তি রক্ষায় বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের আরো এক ব্যাটালিয়ন সৈন্য নিয়োগে সম্মতি দেন। প্রধানমন্ত্রী এজন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন জানান, শীঘ্রই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আরো এক ব্যাটেলিয়ান সৈন্য নেয়া হবে বাংলাদেশ থেকে। এটি বাংলাদেশের জন্যে অনেক বড় একটি সংবাদ। জাতিসংঘ মহাসচিব এ ব্যাপারে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন
__._,_.___