Banner Advertise

Thursday, September 12, 2013

[chottala.com] তাহলে সমস্ত পৃথিবী কোকোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত!




তাহলে সমস্ত পৃথিবী কোকোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত!
মোজাম্মেল খান
দেশে-বিদেশে বাঙালীদের সমস্ত আড্ডায় দেশটা যে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত সেটা নিয়েই সবচেয়ে আলোচনা হয়। এবং এ দুর্নীতির সিংহভাগই যে রাজনৈতিক নেতা এবং তাঁদের সহচররা করছেন সে ব্যাপারে সবাই একমত। 
অবশ্য আমরা যদি দুর্নীতির দায়ে কতজন রাজনীতিকের বিচার হয়েছে সে সংখ্যাটা ধর্তব্যে নিয়ে আসি তাহলে সমাজ যে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত সেটা প্রমাণিত হবে না। উদাহরণস্বরূপ আমরা যদি বিগত কয়েক দশকের দিকে দৃষ্টি দেই তাহলে দেখতে পাব, যদি দুটো সামরিক শাসন এবং বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়টা বাদ দেই তাহলে ৪টা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের শাসনামলে মাত্র দু'জন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত রাজনীতিবিদ বা তাঁদের সন্তানদের বিচার হয়েছে। তাঁদের একজন হলেন গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত একনায়ক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, যিনি দ-িত হয়েছিলেন ১৯৯১-১৯৯৬ বিএনপির শাসনামলে এবং আরেকজন হলেন আরাফাত রহমান কোকো যিনি ২০১১ সালে ২৩ জুন বর্তমান সরকারের সময়ে ৬ বছরের কারাদ- এবং ৩৯ কোটি জরিমানায় দ-িত হয়েছেন। তাঁকে আদালতে তাঁর অনুপস্থিতিতে এ দ- দেয়া হয়েছে। তিনি দেশে এসে আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি এবং ফেরারি হিসেবেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোন একটি দেশে পলাতক রয়েছেন।
এটা এক বিরাট আপাতঃস্ববিরোধিতাপূর্ণ ব্যাপার যে, যদিও আমরা দুর্নীতি নিয়ে প্রচুর কথা বলি কিন্তু এটা সামাজিকভাবে কোন লজ্জাজনক ব্যাপার নয়। এমনকি নির্বাচনের সময়ও এটা কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দেখা দেয় না, এর বদলে অন্যান্য অনুভূতিময় ব্যাপারগুলো সামনে এসে যায়, যার বেশিরভাগই কোন সত্যের ওপর নির্ভরশীল নয়। গত ৫টি মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে তাই অপেক্ষাকৃত সৎ প্রার্থী তাদের অসৎ প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে পরাজয় বরণ করেছেন। পৃথিবীতে কি এমন কোন দেশ আছে যেখানে গণঅভ্যুথানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত কোন একনায়ক দুর্নীতির দায়ে দ-িত হয়ে কারার অন্তরালে বসেই সংসদের একটি আসন নয়, পাঁচ পাঁচটি আসনে নির্বাািচত হয়েছিলেন? তাঁর সম্পর্কে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী উক্তি করেছিলেন, 'তিনি যদি জীবনে কোনদিন জেল থেকে বের হয়ে আসেন তাহলে দেশের সব চোর-ডাকাতের জেল থেকে মুক্তি দেয়া উচিত।' আপাতদৃষ্টিতে সেটা তো ঘটেনি, উপরন্তু তিনি এখন রাষ্ট্রের কিংমেকারের ভূমিকা পালন করছেন। যে কোন সমাজে, যেখানে নৈতিকতার বিন্দুমাত্রও অবস্থিতি রয়েছে সেখানে কোন রাজনীতিবিদের সন্তানরা যদি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিম-লে তাদের 'কুখ্যাত দুর্নীতির' জন্য পরিচিত হন, তাহলে ঐ রাজনীতিবিদের ভবিষ্যত চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। আর দ-িত হলে তো কথাই নেই; সঙ্গে সঙ্গেই ঐ রাজনীতিবিদের রাজনৈতিক জীবনের কবর রচিত হবে।
এটা আমাদের সমাজের প্রচলিত রীতি যে, যখনই কোন কোন ব্যক্তি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত বা দ-িত হন, তখনই তাঁর রাজনৈতিক দল এবং সমর্থকরা তাঁর বিরদ্ধে সব অভিযোগ 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে অভিহিত করেন। আজকাল এ ধরনের বক্ত্যবের অগ্রভাগে রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। কয়েকদিন আগে তিনি তাঁর দলের সিনিয়র সহসভাপতি তারেক রহমানকে অভিহিত করলেন 'আমাদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক' হিসেবে। দেশে তাঁর সমালোচকদের কাছে তিনি যে 'দুর্নীতির বরপুত্র' হিসেবে পরিচিত সেটা বাদ দিয়েও ২০০৮ সালের নবেম্বরের ৮ তারিখে ঢাকায় তদানীন্তন আমেরিকান রাষ্টদূত ওয়াশিংটনে পাঠানো এক তারবার্তায় তারেক রহমানকে 'লোভ-লালসা-চৌর্যবৃত্তি আর দুর্নীতিবাজ সরকারের এবং হিংস্র রাজনীতির' প্রতিবিম্ব হিসেবে উল্লেখ করেন এবং তাঁকে যেন যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার অনুমতি না দেয়া হয় সে সুপারিশ করেছিলেন। এখন কেউ যদি এ দুই বক্তব্যকে একীভূত করেন তাহলে কি দাঁড়াবে 'আমাদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক?'
কিছুদিন আগে আমাদের সংবাদ মাধ্যমসমূহে প্রকাশিত এবং প্রচারিত হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনের দ্বিতীয় সন্তান আরাফাত রহমান কোকোর সিঙ্গাপুরে পাচার করা ২১ কোটি টাকার শেষ কিস্তি হিসেবে ৭.৪ কোটি দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে ফেরত এসেছে। যথারীতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সরকারকে দায়ী করলেন এ ধরনের 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' মামলা কোকোর এবং তারেকের বিরুদ্ধে দায়ের করার জন্য, যার মূল উদ্দেশ্য 'কোকো এবং বিএনপির ভাবমূর্তির ক্ষতি করা।' 'তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে রায় দেয়া হয়েছে,' মন্তব্য ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের। 
আসল সত্যটা হলো কোকো প্যারলের শর্ত ভঙ্গ করায় তাঁর প্যারোল বাতিল করা হয় এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তাঁকে আদালতে হাজির হওয়ার সমন জারি করা হয়, কিন্তু তিনি এবং তাঁর সহঅভিযুক্ত আদালতের সমন উপেক্ষা করে বিদেশে পালিয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। অতএব, 'তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে রায় দেয়া হয়েছে'Ñ এ বক্তব্য সত্যের চরম অপলাপ মাত্র। বরঞ্চ বাংলাদেশের আদালত তাঁর পরিবার এবং বিশেষ করে তাঁর মায়ের প্রতি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল যিনি একের পর এক নিজের ইচ্ছা মাফিক 'রাজনৈতিক কর্মে ব্যস্ত' এ অজুহাতে আদালতের কার্যপ্রণালী থেকে অনুপস্থিত থেকেছেন। 
পৃথিবীতে কি এমন কোন দেশ আছে যেখানে কোন অভিযুক্ত এভাবে নির্বিঘেœ একের পর এক আদালত অবমাননা করতে পারেন? উপরন্তু কোকোকে আইনী যুদ্ধে সহায়তা দেয়ার জন্য শত শত আইনজীবী তৈরি ছিলেন, যাঁরা অবশ্য মুখ কালো কাপড়ে জড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছিল, কোকো এবং তাঁর সহঅভিযুক্ত সাইমন জার্মান কোম্পানি সিমেন্স এবং চীনা কোম্পানি চায়না হারবারের কাছ থেকে ১৯.৭১ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন টেলিকম এবং টার্মিনাল বিল্ডিং তৈরির দুটো কনট্রাক্ট পাইয়ে দেয়ার ব্যাপারে। তাঁরা ঐ টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার করেন। 
এ ধরনের জলজ্যান্ত ঘুষ নেয়ার কারণে কোকো বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত 'অবৈধ টাকা কিভাবে উদ্ধার করা যায়' সে নামে প্রকাাশিত একটি নির্দেশনা পুস্তকে (হ্যান্ডবুক) স্থান করে নেয়ার বিরল 'গৌরব' অর্জন করেছেন। ঐ নির্দেশনা পুস্তকে জাতীয় সম্পদ আত্মসাৎ করার একটা পরিষ্কার উদাহরণ হিসেবে কোকোর এই কয়েক মিলিয়ন ডলার ঘুষ নেয়াকে উপস্থাপন করা হয়েছে। 
২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরের একমাত্র সাধারণ দৈনিক সংবাদপত্র স্ট্রেইট টাইমসে, '৩ মিলিয়ন ডলার স্থানান্তরিত করার ঘোষণাপত্র না দেয়ায় জরিমানা' শীর্ষক খবরে বলা হয়, সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরাফাত রহমান কোকোর একত্রিশ লাখ এক শ' একাত্তর হাজার ডলার কোকোর নির্দেশে তাঁর নিজের ব্যক্তিগত এ্যাকাউন্টে স্থানান্তর এবং জমা রাখার ব্যাপারটা কর্তৃপক্ষকে জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। টাকা পাচারের অপরাধে ২ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরের একটি আদালত লিম সিউ চ্যাং নামে এক স্থানীয় ব্যবসায়ীকে কোকোর অর্থ তাঁর এ্যাকাউন্টে জমা রাখার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে। কোকোর একত্রিশ লাখ এক শ' একাত্তর হাজার ডলার কোকোর নির্দেশ অনুযায়ী তাঁর এ্যাকাউন্টে স্থানান্তর এবং জমা রাখার অপরাধে তাঁকে ৯ লাখ ছয় শ' সাতাত্তর ডলার জরিমানা করেছে। 
প্রশান্ত মহাসাগরের এপারে ২০০৯ সালের ৯ জানুয়ারি এফবিআই ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ৮ জানুয়ারি ডিস্ট্রিক কোর্টে একটি বাজেয়াপ্তকরণের আবেদন করেছে। এ বাজেয়াপ্তকরণের আবেদনটা মূলত আরাফাত রহমান কোকোর তিন মিলিয়ন ডলারকে ঘিরে, যেটা সে ঘুষ হিসেবে সিমেন্স এবং চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কাছ থেকে পেয়েছিল বাংলাদেশে দুটো সরকারী প্রজেক্ট পাইয়ে দেয়ার জন্য এবং সে অর্থ সে সিঙ্গাপুরের একটা ব্যাংকে স্থানান্তরিত করেছিল। 
সিমেন্স এবং তার তিন সহকারী প্রতিষ্ঠান ২০০৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ফরেন করাপ্ট প্রাকটিস এ্যাক্ট ভঙ্গের দোষ স্বীকার করে এবং সে অনুসারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ১.৬ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে রাজি হয়। বিশেষ করে, সিমেন্স বাংলাদেশ বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ব্যক্তিকে ৫,৩১৯,৮৩৯ ডলার ঘুষ দেয়ার কথা স্বীকার করে। 
বাজেয়াপ্তকরণের অভিযোগে বলা হয়, যেহেতু সিমেন্স এবং চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ঘুষের অর্থটা আমেরিকান ডলারে দিয়েছিল এবং এ অবৈধ অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সিঙ্গাপুর ব্যাংকে প্রবাহিত হয়েছিল সেহেতু এটা যুক্তরাষ্ট্রের আইনের আওতাধীন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ পাচার আইনে বিদেশী কোন নাগরিককে ঘুষ প্রদানসহ অন্যান্য অবৈধ অর্থ যদি যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আদান-প্রদান হয় তবে সে অপরাধ যুক্তরাষ্ট্রের আইনের আওতাধীন। 
ওপরে উল্লেখিত যে সমস্ত প্রকাশনা এ সমস্ত ঘুষ প্রদানের সংবাদ প্রকাশ করেছে, যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার কথা বলা হলো তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের কোন সম্পর্ক নেই। সে অবস্থায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের অভিযোগ যদি সত্য হয় তাহলে সিঙ্গাপুর সরকার এবং আদালত, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ, জার্মানির সিমেন্স, বিশ্বব্যাংকে-জাতিসংঘের প্রকাশনা বিভাগ, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং বর্তমান বাংলাদেশ সরকার সবাই একযোগে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে 'নির্দোষ' কোকোর বিরুদ্ধে 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' হয়ে দুনীর্তির মামলা দায়ের করেছে!




__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___