এখন করছে ধর্মীয় প্রচারণা আগে চালিয়েছে ধ্বংসলীলা
28 Jun, 2013
২৩ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ট্রাজেডিটি ঘটে। ওই দিনটি ইতিহাসে না থাকলে এই জনপদের ভাগ্য ভিন্ন রকম হত। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের জন্যও একটি ভাগ্য বিপর্যয়ের দিন। বাংলার নবাব সিরাজের পতনের মধ্যে দিয়ে উপমহাদেশের স্বাধীনতা লুণ্ঠিত হয় ইংরেজদের হাতে।
একইদিন বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জন্ম। ইতিহাসের প্রতি বাংলাদেশিদের বরাবরই অনীহা। আওয়ামী লীগের জন্ম দিবস নিয়ে পত্রিকা একটা খবর দিলেও বাংলার পতন নিয়ে পত্রিকাগুলো যেন একেবারেই নীরব। ব্যতিক্রম রয়েছে নয়া দিগন্ত ও ইত্তেফাক। এ পত্রিকা দুটি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর খবর যথাযথভাবে দিয়েছে।
ইত্তেফাক যেভাবে সিরাজের পতনের খবরটি দিল তার চেয়ে বরং না দিলেই ভাল হত। পত্রিকাটি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর খবরটি প্রথম পাতার টপে দিয়েছে। ৫ নম্বর পাতাটি শ্রাদ্ধ করেছে এ উপলক্ষে একটি ক্রোড়পত্রের জন্য। অন্যদিকে সিরাজকে নিয়ে ১১ নম্বর পাতায়, 'পলাশী দিবস আজ' শিরোণামে ছোট একটি রিপোর্ট ছাপে। ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি বিমল সাহার দায়সারা প্রতিবেদনটি হতে পারে শিশুশ্রেণীর পাঠ্য। দেড়শ শব্দের স্টোরিটি একেবারে সরল একটি বর্ণনা।
নয়া দিগন্ত দুটো প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রথম পাতার উপরে দিকে এক কলাম করে সংবাদ করেছে। সিরাজের একটি ছবি দিয়ে অস্টম কলামের টপে পলাশী ট্রাজেডির খবরটি বরং বেশি একটু গুরুত্ব দেয়া হল। পত্রিকাটি ৭ নম্বর পাতাটিতে এ নিয়ে একটি ক্রোড়পত্রও ছাপল। ক্রোড়পত্রে তিনটি নিবন্ধ। একটি নিবন্ধের ভেতরে দেয়া একটি ছবির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, ইউরোপীয় চিত্রকরের তুলিতে প্রহসনের যুদ্ধের পর ক্লাইভের সামনে অবনত মস্তকে মীরজাফর।
সমকাল একমাত্র পত্রিকা যারা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নিয়ে প্রধান শিরোণাম করেছে। তবে তারা পলাশি ট্রাজেডি নিয়ে ডেইলি স্টার প্রথম আলো ও কালের কণ্ঠের মত কোথাও একটা শব্দও লিখেনি।
সংসদে অশ্লীল বাক্যবান নিয়ে এদিন কার্টুন ছেপেছে প্রথম আলো ও সমকাল। প্রথম আলো প্রথম পাতার শুরুতে চার কলামে বড় করে দেওয়া ওই কার্টুনের প্রধান দুটি চরিত্র হলেন স্পীকার ও অর্থমন্ত্রী। স্পীকারের গম্ভীর মুখের সামনে ঝুলে রয়েছে একটি শব্দ 'হেল্প'। অর্থমন্ত্রীর বড় চেহারায় মুখ খোলা। তিনি বলছেন, ..... কিন্তু! আমার বাজেটে অশালীন খাতে তো কোনো বরাদ্দ নেই ........! সমকালের কার্টুনের চরিত্র নারী সংসদরা। দুজন নারী পাশাপাশি বসেছেন। তারা শাড়ীকে টাইট করে শরীরের সাথে গুছিয়ে নিয়েছেন। দুজনকে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে দেখা যাচ্ছে। মারমুখি এই দুই সংসদের সামনে টেবিলের ওপর একই বই রাখা। ওটার নাম 'গালাগালি সমগ্র'। তিন কলাম বক্সের উপর অংশে কার্টুনটি এবং নিচের অংশে ''সংসদে 'সুবচন'' শিরোণামে একটি স্টোরি।
বাংলাদেশের হার্টহিটিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালের বিয়েটি বেশ আলোচিত হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী নেত্রীসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের দাওয়াত দিয়েছেন। বিরোধী নেত্রী বিয়ের একটি অনুষ্ঠানে হাজিরও হন। রোববার নয়া দিগন্ত প্রথম পাতায় তিন কলামে নববধূর সাথে তামিমের ছবিটি বড় করে ছাপা হয়েছে। এ পত্রিকাটি আশরাফুলের ম্যাচগড়াপেটা নিয়ে খবরটি সমালোচনার ভঙ্গিতে প্রচার করে। অন্যদিকে প্রথম আলো সেই খবরটি পর পর প্রধান শিরোণাম করে। অবশ্য তামিমের বিয়েটা প্রথম আলোর প্রথম পাতায় স্থান পায়নি সে অনুপাতে।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নিয়ে একপর্যায়ে সবচেয়ে বড় খবর হয়ে উঠেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর। সমকাল ও কালের কণ্ঠ খবরটি তিন কলামে দ্বিতীয় প্রধান শিরোণাম করে। প্রথম আলো করে প্রধান শিরোণাম। প্রথমেই তারা তিন কলাম একটি ছবি দিয়ছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে জাহাঙ্গীর মাইক্রোফোন হাতে কিছু বলছেন। একইসাথে টিস্যু দিয়ে অশ্রু মুছছেন। তার পাশে উপবিস্ট আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা ও দলটির স্থানীয় নেতারা। ছবির নিচে শিরোণাম করেছে, "জাহাঙ্গীর নাটকের অবসান?" সব পত্রিকায় জাহাঙ্গিরের ইস্যুটি গুরুত্ব পেয়েছে।
প্রথম আলোর দ্বিতীয় প্রধান সংবাদটি মানবাধিকার কমিশনার মিজানুর কে নিয়ে, না পা হারানো লিমনকে নিয়ে একজন পাঠক সেই দ্বিধায় পড়তে পারেন। মিজানুর রহমানের ছবিটি তারা স্ট্যাম্প সাইজের চেয়ে আরো ছোট করে খবরের মাঝখানে সেঁটে দিয়েছে। অন্যদিকে লিমনের ছবিটি তার ওপর প্রায় পাসপোর্ট সাইজের আকারে দিয়েছে। দুটি ছবির মাঝে শিরোনাম করেছে : লিমনের মামলা নিয়ে এ কেমন মধ্যস্থতা।
বিস্তারিত বিবরণে পত্রিকাটি লিখেছে, র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেনের পক্ষে-বিপক্ষে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। .....এসময় তিনি র্যাবের করা মামলা প্রত্যাহারের স্বার্থে র্যাবের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের করা মামলা তুলে নেয়ার প্রস্তাব দেন।
একাজটিকে প্রথম আলো জঘন্য হিসেবে দেখছে। নিজেরা এ মন্তব্য না করলেও প্রতিবেদনে সেটাই উপজীব্য করেছেন। যেখানে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান দাড়িয়েছেন দালালের ভুমিকায়। তিনি আইনের পক্ষে মানবতার পক্ষে থাকার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও র্যাবের পক্ষে। এ বিষয় নিয়ে অন্য পত্রিকায় অবশ্য কোনো রিপোর্ট দেখা গেল না।
এই মিজানের আগের অন্যায় আচরণকে সবসময় প্রথম আলো প্রশ্রয় দিয়ে গেছে। তিনি হত্যার শিকার মানুষদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের মানবাধিকার নিয়ে ভাবেননি। হত্যা, গুম, খুন নিয়ে দেশের বাইরের মানবাধিকার সংগঠনগুলো যখন কথা বলেছেন, তখন এর বিরুদ্ধে দাড়িয়েছেন। প্রথম আলো তখনও মিজানকে নিয়ে কোনো প্রতিবেদন রচনা করেনি।
এদিন ইনকিলাব প্রথম পাতায় একটি ছবি দিয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে জনতা দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পত্রিকাটি প্রথম পাতার ডানপাশে উপরে তিন কলামে ধারবাহিকভাবে চারটি ছবি ছেপেছে। তারা এক নিরীহ রিকশা চালককে বেদম মারধর করায় জনতা উত্তেজিত হয়ে তাদের ধাওয়া করে। বিস্তারিত বিবরণে জানা যায়, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান সিরাজের গাড়ি বহরের সামনে পড়ে যায় এক রিকশা। পুলিশ রিকওয়ালাকে মারধর করলে জনতা উত্তেজিত হয়ে তাদের ধাওয়া করে।
সোমবার চট্টগ্রামে টেন্ডার দখলকে কেন্দ্র চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষে এক শিশুসহ দুজন নিহত হয়। মঙ্গলবার পত্রিকা বন্ধ থাকায় খবরটি বুধবারের পত্রিকায় গুরুত্ব দিয়ে আসে। যুগান্তর প্রধান শিরোণাম করে- আখেরি ধান্ধায় ছাত্রলীগ; ভয়াবহ বেপরোয়া। পত্রিকাটির প্রথম পাতার প্রায় সব সংবাদ ক্ষমতাসীন দলের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরল এদিন। ৫ কলাম প্রধান শিরোণামের ওপর দুটি ছবি। একটিকে যুবলীগ ছাত্রলীগের বন্দুকযুদ্ধে ক্রসফায়ারে নিহত শিশুটিকে নিয়ে স্বজনদের আহাজারি। শিশুটি সকালে নানীর বাসার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল। বাসায় টুথ পেস্ট না থাকায় সে নানির বাসায় যায়। সহসাই বাসায় ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু অন্য শিশুর সাথে সে খেলায় মেতে উঠে। একপর্যায়ে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের বুলেটের শিকার হয়।
একই খবর কিভাবে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে গেল তা সমকাল দেখলে বোঝা যায়। তারাও একই খবর প্রধান শিরোণাম করেছে। তবে ঘুরিয়ে দিয়েছে খবরের সম্মুখভাগ। তাদের কাছে এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিচারকের অবস্থান। তাই শিরোণাম করেছে : যুবলীগ-ছাত্রলীগের ৪৪ জন রিমান্ডে। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের যখন অন্যায়ভাবে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তখন সেখবর এ পত্রিকাটিকে ভুলে যেতে দেখা গেছে। ছাত্রশিবিরের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে একটানা ৫৩ দিন রিমান্ডে নির্যাতন চালানোর পর আবার ১৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। দেলোয়ার তখন বসার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন। তাকে দুই পুলিশ পাজাকোলে করে আদালতে হাজির করেন। এই খবর প্রথম আলো, যুগান্তর ও কালের কণ্ঠের মত সমকালও করেনি। জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে গিয়ে পত্রিকা মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকারের বিরদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
শাপলা চত্বরে হেফাজতের ওপর সরকারের ওপারেশন বাংলাদেশের পত্রিকাগুলো দেখেছে অনেকটা সরকারি অবস্থান থেকে। অর্থ্যাৎ একদল উচ্ছৃঙ্খল আইন অমান্যকারিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হটিয়ে দিয়েছে। কিভাবে লাখ লাখ মানুষকে হটানো হল সেটার ব্যাপারে পত্রিকা আগ্রহ দেখায়নি। বিশেষ করে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, সমকাল, কালের কণ্ঠের প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল হেফাজত কর্মীদের ধ্বংসযজ্ঞ। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার তার সর্বশেষ রিপোর্টে জানিয়েছে ৬ মে রাতে হেফাজতের ২০০ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল শাপলা চত্বরে। বিদেশি সংবাদমাধ্যমে এ হত্যালীলা নিয়ে খবর করেছে।
শুক্রবার ডেইলি স্টার প্রথম পাতায় দুই কলাম একটি সংবাদ শিরোণাম : ইউস অব রিলিজিয়ন গাজীপুর ঠু-উ। বিস্তারিত বিবরণে তারা লিখেছে বিএনপি হেফাজত মিলে একাজটি (ধর্মের ব্যবহার) করেছে। যখন হেফাজতের শত শত লোককে হত্যা করা হলো তখন সংবাদটি দেয়া হল না। তারা (হেফাজত) সরকারের এ হত্যালীলার প্রতিকার পায়নি। সরকারের কাছ থেকে এ প্রতিকার পাওয়ার কোনো আশাও তারা করেনা। সিটি নির্বাচন তাদের জন্য একটি সুযোগ। বিচার যেহেতু পাচ্ছে না সেহেতু তারা জনগণের কাছে এর প্রতিকারের দাবি জানাচ্ছে। তারা জানিয়ে দিচ্ছে কিভাবে সরকারি বাহিনী তাদের ওপর হত্যাকান্ড চালিয়েছিল। এ প্রচারণাকে ডেইলি স্টার গুরুত্ব দিয়ে রিপোর্ট করছে 'ইউস অব রিলিজিয়ন' বলে।
প্রথম আলো অতটা প্রপাগান্ডায় যায়নি। তারা এ বিষয়ে ফ্যাক্ট উঠিয়ে আনার চেষ্টা করছে। শুক্রবার প্রথম পাতায় একটি দুই কলাম সংবাদ করেছে, বিএনপির পাশে হেফাজত। এর নিচে বডি হরফের চেয়ে বড় করে লেখা রয়েছে, আওয়ামী লীগ বলছে, হেফাজতের একটি অংশ তাদের সঙ্গেও রয়েছে। এ খবরের বিস্তারিত বিবরণে পত্রিকাটি সোর্সের উদ্ধৃতিতে পরিস্কার করেছে হেফাজত বিএনপির সাথে কাজ করছে। এর সাথে তারা একটি ছবিও দিয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে হেফাজতের নেতাকর্মীরা বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে লিফলেট বিতরণ করছে। অন্যদিকে অওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লাহর সাথে থাকা একজন আলেমের ব্যাপারেও তথ্য দেয়া হয়েছে। একটি সূত্রে পত্রিকাটি জানিয়েছে ওই মাওলানা আজমতের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি মসজিদের ইমাম।
একই খবর সমকাল টুইস্ট করেছে আওয়ামী লীগের পক্ষে। পত্রিকাটি প্রথম পাতায় তিন কলাম শিরোণাম করেছে, হেফাজতের দুই অংশ দুই দলে। পত্রিকাটি লিখেছে দুই প্রধান প্রার্থী হেফাজতকে কাছে টানছেন। বিস্তারিত বিবরণে অবশ্য শিরোণামের সমর্থনে কিছু পাওয়া গেল না।
নারীরা অপরাধি সিন্ডিকেট
নারীদের একটি অংশ জড়িত হচ্ছে নিন্দনীয় অসৎকাজে। নিজেদের ইজ্জত আব্রু বিলিয়ে দিচ্ছে অবলীলায়। করছে মাদক ব্যবসা। কেউ বা ফাঁদছে প্রতারণার জাল। কেউ কেউ পকেটমারের মত পেশাও বেছে নিচ্ছে। এসব কাজে নিজেদের বিচার ও পুলিশি একশনের বাইরে রাখার জন্য তারা গড়ে তুলছে সিন্ডিকেট। একাজে তারা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে অর্থ উপার্জনকে। এ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে নয়া দিগন্তের শুক্রবার সংখ্যায়। নারীদের নানান ধরনের অপরাধের খবর কয়েক মাসে বেশি দেখা গেছে।
যে নারী মাদক সেবনে অভ্যস্ত হচ্ছে এক পর্যায়ে সে নিজেই এর ব্যবসায় জড়াচ্ছে। নিজের ব্যবসার বিস্তৃতির জন্য সে আরো অনেককে মাদক সেবনে উদ্বুদ্ধ করছে। যারা একবার অর্থের বিনিময়ে ইজ্জত বিক্রি করছে। সে আরো বেশি অর্থ কামানোর জন্য এ ব্যবসার একজন সক্রিয় কর্মী হয়ে উঠছে। ডেকে আনছে অন্যদের সর্বনাশ। এভাবে অপরাধ প্রবনতা তাদের আরো আগ্রাসী করে তুলছে। একইভাবে অপরাধ জগতকে করে তুলছে বিস্তৃত।
কিশোরী এবং তরুণীদের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে বেশিহারে। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েরা প্রধান টার্গেট। গ্রাম ও মফস্বল শহরের মেয়েরা সহজে ফাঁদে পড়ে। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে এসে তারা এ অন্ধকার জগতে পা বাড়াচ্ছে। যখন কোনোভাবে এটি ফাঁস হয় তখন কেবল টনক নড়ে। সর্বনাশ থেকে মুক্তি পাওয়ার আর কোনো পথ থাকে না তখন। পারিবারিক মানমর্যাদা ও আভিজাত্য ধুলায় লটেু তখন। তবে ধনী পরিবারের অনেকের কাছে মাদক ব্যবসা এখন ফ্যাশনেবল। অনেকে রোমাঞ্চ নেয়ার জন্যই জড়িয়ে পড়ছে অপরাধী সিন্ডিকেটের সাথে।
এগুলো নারীকে নামিয়ে এনছে পণ্যের মর্যাদায়। তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বাজারে। এই প্রতিযোগিতায় নেমে উপরে ওঠার যে নেশা তরুণীদের পেয়ে বসছে তা অনেককে সর্বনাশ করছে। অনেকে কেবলমাত্র একটি সুযোগ পাওয়ার জন্য 'গুরুদের' নিকট নিজেদের শপে দিচ্ছে। অন্যদিকে এ প্রতিযোগিতার নাম করে অনেক ভন্ড প্রতারক বাজারে সক্রিয় হয়ে উঠছে। মাদক ও যৌন ব্যবসার অন্ধকার জগতকে এরাই বিস্তার ঘটাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা তাদেরকে সহায়তা করছে।
একইদিন বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জন্ম। ইতিহাসের প্রতি বাংলাদেশিদের বরাবরই অনীহা। আওয়ামী লীগের জন্ম দিবস নিয়ে পত্রিকা একটা খবর দিলেও বাংলার পতন নিয়ে পত্রিকাগুলো যেন একেবারেই নীরব। ব্যতিক্রম রয়েছে নয়া দিগন্ত ও ইত্তেফাক। এ পত্রিকা দুটি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর খবর যথাযথভাবে দিয়েছে।
ইত্তেফাক যেভাবে সিরাজের পতনের খবরটি দিল তার চেয়ে বরং না দিলেই ভাল হত। পত্রিকাটি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর খবরটি প্রথম পাতার টপে দিয়েছে। ৫ নম্বর পাতাটি শ্রাদ্ধ করেছে এ উপলক্ষে একটি ক্রোড়পত্রের জন্য। অন্যদিকে সিরাজকে নিয়ে ১১ নম্বর পাতায়, 'পলাশী দিবস আজ' শিরোণামে ছোট একটি রিপোর্ট ছাপে। ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি বিমল সাহার দায়সারা প্রতিবেদনটি হতে পারে শিশুশ্রেণীর পাঠ্য। দেড়শ শব্দের স্টোরিটি একেবারে সরল একটি বর্ণনা।
নয়া দিগন্ত দুটো প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রথম পাতার উপরে দিকে এক কলাম করে সংবাদ করেছে। সিরাজের একটি ছবি দিয়ে অস্টম কলামের টপে পলাশী ট্রাজেডির খবরটি বরং বেশি একটু গুরুত্ব দেয়া হল। পত্রিকাটি ৭ নম্বর পাতাটিতে এ নিয়ে একটি ক্রোড়পত্রও ছাপল। ক্রোড়পত্রে তিনটি নিবন্ধ। একটি নিবন্ধের ভেতরে দেয়া একটি ছবির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, ইউরোপীয় চিত্রকরের তুলিতে প্রহসনের যুদ্ধের পর ক্লাইভের সামনে অবনত মস্তকে মীরজাফর।
সমকাল একমাত্র পত্রিকা যারা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নিয়ে প্রধান শিরোণাম করেছে। তবে তারা পলাশি ট্রাজেডি নিয়ে ডেইলি স্টার প্রথম আলো ও কালের কণ্ঠের মত কোথাও একটা শব্দও লিখেনি।
সংসদে অশ্লীল বাক্যবান নিয়ে এদিন কার্টুন ছেপেছে প্রথম আলো ও সমকাল। প্রথম আলো প্রথম পাতার শুরুতে চার কলামে বড় করে দেওয়া ওই কার্টুনের প্রধান দুটি চরিত্র হলেন স্পীকার ও অর্থমন্ত্রী। স্পীকারের গম্ভীর মুখের সামনে ঝুলে রয়েছে একটি শব্দ 'হেল্প'। অর্থমন্ত্রীর বড় চেহারায় মুখ খোলা। তিনি বলছেন, ..... কিন্তু! আমার বাজেটে অশালীন খাতে তো কোনো বরাদ্দ নেই ........! সমকালের কার্টুনের চরিত্র নারী সংসদরা। দুজন নারী পাশাপাশি বসেছেন। তারা শাড়ীকে টাইট করে শরীরের সাথে গুছিয়ে নিয়েছেন। দুজনকে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে দেখা যাচ্ছে। মারমুখি এই দুই সংসদের সামনে টেবিলের ওপর একই বই রাখা। ওটার নাম 'গালাগালি সমগ্র'। তিন কলাম বক্সের উপর অংশে কার্টুনটি এবং নিচের অংশে ''সংসদে 'সুবচন'' শিরোণামে একটি স্টোরি।
বাংলাদেশের হার্টহিটিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালের বিয়েটি বেশ আলোচিত হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী নেত্রীসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের দাওয়াত দিয়েছেন। বিরোধী নেত্রী বিয়ের একটি অনুষ্ঠানে হাজিরও হন। রোববার নয়া দিগন্ত প্রথম পাতায় তিন কলামে নববধূর সাথে তামিমের ছবিটি বড় করে ছাপা হয়েছে। এ পত্রিকাটি আশরাফুলের ম্যাচগড়াপেটা নিয়ে খবরটি সমালোচনার ভঙ্গিতে প্রচার করে। অন্যদিকে প্রথম আলো সেই খবরটি পর পর প্রধান শিরোণাম করে। অবশ্য তামিমের বিয়েটা প্রথম আলোর প্রথম পাতায় স্থান পায়নি সে অনুপাতে।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নিয়ে একপর্যায়ে সবচেয়ে বড় খবর হয়ে উঠেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর। সমকাল ও কালের কণ্ঠ খবরটি তিন কলামে দ্বিতীয় প্রধান শিরোণাম করে। প্রথম আলো করে প্রধান শিরোণাম। প্রথমেই তারা তিন কলাম একটি ছবি দিয়ছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে জাহাঙ্গীর মাইক্রোফোন হাতে কিছু বলছেন। একইসাথে টিস্যু দিয়ে অশ্রু মুছছেন। তার পাশে উপবিস্ট আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা ও দলটির স্থানীয় নেতারা। ছবির নিচে শিরোণাম করেছে, "জাহাঙ্গীর নাটকের অবসান?" সব পত্রিকায় জাহাঙ্গিরের ইস্যুটি গুরুত্ব পেয়েছে।
প্রথম আলোর দ্বিতীয় প্রধান সংবাদটি মানবাধিকার কমিশনার মিজানুর কে নিয়ে, না পা হারানো লিমনকে নিয়ে একজন পাঠক সেই দ্বিধায় পড়তে পারেন। মিজানুর রহমানের ছবিটি তারা স্ট্যাম্প সাইজের চেয়ে আরো ছোট করে খবরের মাঝখানে সেঁটে দিয়েছে। অন্যদিকে লিমনের ছবিটি তার ওপর প্রায় পাসপোর্ট সাইজের আকারে দিয়েছে। দুটি ছবির মাঝে শিরোনাম করেছে : লিমনের মামলা নিয়ে এ কেমন মধ্যস্থতা।
বিস্তারিত বিবরণে পত্রিকাটি লিখেছে, র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেনের পক্ষে-বিপক্ষে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। .....এসময় তিনি র্যাবের করা মামলা প্রত্যাহারের স্বার্থে র্যাবের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের করা মামলা তুলে নেয়ার প্রস্তাব দেন।
একাজটিকে প্রথম আলো জঘন্য হিসেবে দেখছে। নিজেরা এ মন্তব্য না করলেও প্রতিবেদনে সেটাই উপজীব্য করেছেন। যেখানে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান দাড়িয়েছেন দালালের ভুমিকায়। তিনি আইনের পক্ষে মানবতার পক্ষে থাকার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও র্যাবের পক্ষে। এ বিষয় নিয়ে অন্য পত্রিকায় অবশ্য কোনো রিপোর্ট দেখা গেল না।
এই মিজানের আগের অন্যায় আচরণকে সবসময় প্রথম আলো প্রশ্রয় দিয়ে গেছে। তিনি হত্যার শিকার মানুষদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের মানবাধিকার নিয়ে ভাবেননি। হত্যা, গুম, খুন নিয়ে দেশের বাইরের মানবাধিকার সংগঠনগুলো যখন কথা বলেছেন, তখন এর বিরুদ্ধে দাড়িয়েছেন। প্রথম আলো তখনও মিজানকে নিয়ে কোনো প্রতিবেদন রচনা করেনি।
এদিন ইনকিলাব প্রথম পাতায় একটি ছবি দিয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে জনতা দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পত্রিকাটি প্রথম পাতার ডানপাশে উপরে তিন কলামে ধারবাহিকভাবে চারটি ছবি ছেপেছে। তারা এক নিরীহ রিকশা চালককে বেদম মারধর করায় জনতা উত্তেজিত হয়ে তাদের ধাওয়া করে। বিস্তারিত বিবরণে জানা যায়, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান সিরাজের গাড়ি বহরের সামনে পড়ে যায় এক রিকশা। পুলিশ রিকওয়ালাকে মারধর করলে জনতা উত্তেজিত হয়ে তাদের ধাওয়া করে।
সোমবার চট্টগ্রামে টেন্ডার দখলকে কেন্দ্র চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষে এক শিশুসহ দুজন নিহত হয়। মঙ্গলবার পত্রিকা বন্ধ থাকায় খবরটি বুধবারের পত্রিকায় গুরুত্ব দিয়ে আসে। যুগান্তর প্রধান শিরোণাম করে- আখেরি ধান্ধায় ছাত্রলীগ; ভয়াবহ বেপরোয়া। পত্রিকাটির প্রথম পাতার প্রায় সব সংবাদ ক্ষমতাসীন দলের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরল এদিন। ৫ কলাম প্রধান শিরোণামের ওপর দুটি ছবি। একটিকে যুবলীগ ছাত্রলীগের বন্দুকযুদ্ধে ক্রসফায়ারে নিহত শিশুটিকে নিয়ে স্বজনদের আহাজারি। শিশুটি সকালে নানীর বাসার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল। বাসায় টুথ পেস্ট না থাকায় সে নানির বাসায় যায়। সহসাই বাসায় ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু অন্য শিশুর সাথে সে খেলায় মেতে উঠে। একপর্যায়ে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের বুলেটের শিকার হয়।
একই খবর কিভাবে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে গেল তা সমকাল দেখলে বোঝা যায়। তারাও একই খবর প্রধান শিরোণাম করেছে। তবে ঘুরিয়ে দিয়েছে খবরের সম্মুখভাগ। তাদের কাছে এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিচারকের অবস্থান। তাই শিরোণাম করেছে : যুবলীগ-ছাত্রলীগের ৪৪ জন রিমান্ডে। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের যখন অন্যায়ভাবে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তখন সেখবর এ পত্রিকাটিকে ভুলে যেতে দেখা গেছে। ছাত্রশিবিরের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে একটানা ৫৩ দিন রিমান্ডে নির্যাতন চালানোর পর আবার ১৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। দেলোয়ার তখন বসার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন। তাকে দুই পুলিশ পাজাকোলে করে আদালতে হাজির করেন। এই খবর প্রথম আলো, যুগান্তর ও কালের কণ্ঠের মত সমকালও করেনি। জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে গিয়ে পত্রিকা মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকারের বিরদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
শাপলা চত্বরে হেফাজতের ওপর সরকারের ওপারেশন বাংলাদেশের পত্রিকাগুলো দেখেছে অনেকটা সরকারি অবস্থান থেকে। অর্থ্যাৎ একদল উচ্ছৃঙ্খল আইন অমান্যকারিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হটিয়ে দিয়েছে। কিভাবে লাখ লাখ মানুষকে হটানো হল সেটার ব্যাপারে পত্রিকা আগ্রহ দেখায়নি। বিশেষ করে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, সমকাল, কালের কণ্ঠের প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল হেফাজত কর্মীদের ধ্বংসযজ্ঞ। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার তার সর্বশেষ রিপোর্টে জানিয়েছে ৬ মে রাতে হেফাজতের ২০০ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল শাপলা চত্বরে। বিদেশি সংবাদমাধ্যমে এ হত্যালীলা নিয়ে খবর করেছে।
শুক্রবার ডেইলি স্টার প্রথম পাতায় দুই কলাম একটি সংবাদ শিরোণাম : ইউস অব রিলিজিয়ন গাজীপুর ঠু-উ। বিস্তারিত বিবরণে তারা লিখেছে বিএনপি হেফাজত মিলে একাজটি (ধর্মের ব্যবহার) করেছে। যখন হেফাজতের শত শত লোককে হত্যা করা হলো তখন সংবাদটি দেয়া হল না। তারা (হেফাজত) সরকারের এ হত্যালীলার প্রতিকার পায়নি। সরকারের কাছ থেকে এ প্রতিকার পাওয়ার কোনো আশাও তারা করেনা। সিটি নির্বাচন তাদের জন্য একটি সুযোগ। বিচার যেহেতু পাচ্ছে না সেহেতু তারা জনগণের কাছে এর প্রতিকারের দাবি জানাচ্ছে। তারা জানিয়ে দিচ্ছে কিভাবে সরকারি বাহিনী তাদের ওপর হত্যাকান্ড চালিয়েছিল। এ প্রচারণাকে ডেইলি স্টার গুরুত্ব দিয়ে রিপোর্ট করছে 'ইউস অব রিলিজিয়ন' বলে।
প্রথম আলো অতটা প্রপাগান্ডায় যায়নি। তারা এ বিষয়ে ফ্যাক্ট উঠিয়ে আনার চেষ্টা করছে। শুক্রবার প্রথম পাতায় একটি দুই কলাম সংবাদ করেছে, বিএনপির পাশে হেফাজত। এর নিচে বডি হরফের চেয়ে বড় করে লেখা রয়েছে, আওয়ামী লীগ বলছে, হেফাজতের একটি অংশ তাদের সঙ্গেও রয়েছে। এ খবরের বিস্তারিত বিবরণে পত্রিকাটি সোর্সের উদ্ধৃতিতে পরিস্কার করেছে হেফাজত বিএনপির সাথে কাজ করছে। এর সাথে তারা একটি ছবিও দিয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে হেফাজতের নেতাকর্মীরা বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে লিফলেট বিতরণ করছে। অন্যদিকে অওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লাহর সাথে থাকা একজন আলেমের ব্যাপারেও তথ্য দেয়া হয়েছে। একটি সূত্রে পত্রিকাটি জানিয়েছে ওই মাওলানা আজমতের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি মসজিদের ইমাম।
একই খবর সমকাল টুইস্ট করেছে আওয়ামী লীগের পক্ষে। পত্রিকাটি প্রথম পাতায় তিন কলাম শিরোণাম করেছে, হেফাজতের দুই অংশ দুই দলে। পত্রিকাটি লিখেছে দুই প্রধান প্রার্থী হেফাজতকে কাছে টানছেন। বিস্তারিত বিবরণে অবশ্য শিরোণামের সমর্থনে কিছু পাওয়া গেল না।
নারীরা অপরাধি সিন্ডিকেট
নারীদের একটি অংশ জড়িত হচ্ছে নিন্দনীয় অসৎকাজে। নিজেদের ইজ্জত আব্রু বিলিয়ে দিচ্ছে অবলীলায়। করছে মাদক ব্যবসা। কেউ বা ফাঁদছে প্রতারণার জাল। কেউ কেউ পকেটমারের মত পেশাও বেছে নিচ্ছে। এসব কাজে নিজেদের বিচার ও পুলিশি একশনের বাইরে রাখার জন্য তারা গড়ে তুলছে সিন্ডিকেট। একাজে তারা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে অর্থ উপার্জনকে। এ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে নয়া দিগন্তের শুক্রবার সংখ্যায়। নারীদের নানান ধরনের অপরাধের খবর কয়েক মাসে বেশি দেখা গেছে।
যে নারী মাদক সেবনে অভ্যস্ত হচ্ছে এক পর্যায়ে সে নিজেই এর ব্যবসায় জড়াচ্ছে। নিজের ব্যবসার বিস্তৃতির জন্য সে আরো অনেককে মাদক সেবনে উদ্বুদ্ধ করছে। যারা একবার অর্থের বিনিময়ে ইজ্জত বিক্রি করছে। সে আরো বেশি অর্থ কামানোর জন্য এ ব্যবসার একজন সক্রিয় কর্মী হয়ে উঠছে। ডেকে আনছে অন্যদের সর্বনাশ। এভাবে অপরাধ প্রবনতা তাদের আরো আগ্রাসী করে তুলছে। একইভাবে অপরাধ জগতকে করে তুলছে বিস্তৃত।
কিশোরী এবং তরুণীদের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে বেশিহারে। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েরা প্রধান টার্গেট। গ্রাম ও মফস্বল শহরের মেয়েরা সহজে ফাঁদে পড়ে। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে এসে তারা এ অন্ধকার জগতে পা বাড়াচ্ছে। যখন কোনোভাবে এটি ফাঁস হয় তখন কেবল টনক নড়ে। সর্বনাশ থেকে মুক্তি পাওয়ার আর কোনো পথ থাকে না তখন। পারিবারিক মানমর্যাদা ও আভিজাত্য ধুলায় লটেু তখন। তবে ধনী পরিবারের অনেকের কাছে মাদক ব্যবসা এখন ফ্যাশনেবল। অনেকে রোমাঞ্চ নেয়ার জন্যই জড়িয়ে পড়ছে অপরাধী সিন্ডিকেটের সাথে।
এগুলো নারীকে নামিয়ে এনছে পণ্যের মর্যাদায়। তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বাজারে। এই প্রতিযোগিতায় নেমে উপরে ওঠার যে নেশা তরুণীদের পেয়ে বসছে তা অনেককে সর্বনাশ করছে। অনেকে কেবলমাত্র একটি সুযোগ পাওয়ার জন্য 'গুরুদের' নিকট নিজেদের শপে দিচ্ছে। অন্যদিকে এ প্রতিযোগিতার নাম করে অনেক ভন্ড প্রতারক বাজারে সক্রিয় হয়ে উঠছে। মাদক ও যৌন ব্যবসার অন্ধকার জগতকে এরাই বিস্তার ঘটাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা তাদেরকে সহায়তা করছে।
__._,_.___