ভাঙছে হেফাজত
বাদ পড়েছে মুফতি ফয়েজউল্লাহ ও মাওলানা রুহি ॥ অর্থ লোপাটের অভিযোগ
জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ অর্থ লোপাট, টাকার ভাগাভাগি, আর ১৮ দলের নির্বাচনের প্রার্থিতা নিয়ে বিরোধের মুখে দুই প্রভাবশালী নেতাকে বাদ দিয়ে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটি গঠন করেছে হেফাজতে ইসলাম। অর্থ লোপাটসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে কয়েকজন যুগ্ম মহাসচিব নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়লেও শনিবার সংগঠনটির ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত দুই নেতা মুফতি ফয়জুল্লাহ ও মাওলানা মাঈনুদ্দিন রুহীকে বাদ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন আমির আহমদ শফী। চট্টগ্রামকেন্দ্রিক নেতাদের সঙ্গে বিরোধের কারণে নির্ধারণী কমিটিতে আধিপত্য কমেছে ঢাকার লালবাগ মাদ্রাসাকেন্দ্রিক নেতাদের। তবে হেফাজতের নেতৃত্ব আছে জামায়াত মদদপুষ্ট ১৮ দলের সেই বিতর্কিত উগ্রবাদী নেতাদের হাতেই। নতুন কমিটিতেও মূল আধিপত্য রয়েছে জঙ্গীবাদের দায়ে অভিযুক্ত মুফতি ইজহারুল ইসলামসহ বিএনপি-জামায়াত জোটের চিহ্নিত উগ্রবাদী নেতাদের হাতেই। এদিকে অরাজনৈতিক সংগঠন দাবি করে হেফাজতের নতুন কমিটি গঠন করা হলেও দাবি আদায়ের নামে সচিবালয় ঘেরাও করার মতো সরকারবিরোধী কর্মসূচীসহ ধ্বংসাত্মক কর্মসূচীর কথা ভাবছে হেফাজত নেতারা।
জানা গেছে, অর্থ লোপাট, টাকার ভাগাভাগি, আধিপত্য বিস্তার, আর ১৮ দলের নির্বাচনে পাঁয়তারা নিয়ে কিছুদিন ধরেই বিরোধ চলছিল হেফাজতের শীর্ষ নেতাতের মধ্যে। ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, আর টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে রাজধানীতে হেফাজতের সবচেয়ে বড় আস্তানা হিসেবে পরিচিত লালবাগ মাদ্রাসা, কামরাঙ্গীর চর ও বারিধারা মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণকারী নেতারাও জড়িয়ে পড়েছেন বিরোধে। লালবাগ মাদ্রাসার হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে অন্য নেতারা অভিযোগ তুলেছেন, লাগবাগীরা আহমদ শফীকে নিয়ন্ত্রণে রেখে হেফাজতের সব কর্মসূচীকে জামায়াত-শিবিরের সহযোগিতায় হিংসাত্মক ও জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে পরিণত করছে। লালবাগ মাদ্রাসার হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছেন চট্টগ্রামের হেফাজত নেতারাও। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী হেফাজতের প্রভাবশালী দুই যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ও মাঈনুদ্দীন রুহীর বিরুদ্ধে রীতিমতো লিখিত অভিযোগ দেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। দুজনের বিরুদ্ধে ১৮ দলের কাছ থেকে টাকা এনে আত্মসাত করা ও নির্বাচন-বাণিজ্য করার অভিযোগ এনে আমিরের কাছে বহিষ্কারের পাশাপাশি, কঠোর শাস্তির দাবি আগেই তুলেছিলেন নেতাকর্মীরা। রাজধানীতে হেফাজতের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে মূলত লালবাগ, কামরাঙ্গীর চর ও বারিধারা মাদ্রাসাকেন্দ্রিক নেতারা। তবে লালবাগ মাদ্রাসার নেতাদের আবার প্রত্যেকেরই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দল। যার প্রত্যেকটি ১৮ দলের অন্তর্ভুক্ত। তাই ১৮ দলের সুবিধা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অভিযোগ এখানকার নেতাদের বিরুদ্ধে ছিল সব সময়ই। তবে সেই বিরোধ এবার চরম আকার ধারণ করেছে। যদিও এসব ঘটনা লালবাগ নেতাদের কেউ স্বীকার করছে না। তবে ক্ষোভের কথা বলছেন, অন্য মাদ্রাসার নেতারা। অবস্থা এ পর্যায়ে চলে গেছে যে, আগে লালবাগ থেকে হেফাজতের ব্যানারে ঢাকার নেতারা আমিরের বক্তব্যসহ সব কর্মসূচী প্রচার করলেও এখন চট্টগ্রামের নেতারা তা মানছেন না। একাধিক ব্যক্তি নিজেদের প্রচার সম্পাদক পরিচয় দিয়ে হেফাজতের বিবৃতি দিচ্ছেন। একই বিষয়ে দেয়া হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন বিবৃতি। বিষয়টি জানতে পেরে আমির আহমদ শফী চট্টগ্রাম থেকে নিজেই বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করা শুরু করেছেন কয়েকদিন ধরে। বলা হয়েছে, তাঁর স্বাক্ষর ছাড়া বিবৃতি দেয়া যাবে না। আবার ঢাকার নেতারা বিভিন্নভাবে বলে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের বাদ দিয়ে কিছু করতে গেলে তাঁরা মানবেন না। ঢাকায় সংগঠন করতে দেবেন না বলেও হুমকি দিয়েছেন ঢাকার অনেক নেতা। চট্টগ্রামের কয়েক নেতা আমিরের কাছে দাবি তুলেছেন, হেফাজতের বর্তমান অবস্থার জন্য ঢাকার নেতারাই দায়ী। তাঁদের মতে, ঢাকার নেতাদের অতি উৎসাহ, আর স্বার্থের কারণেই হেফাজতের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। যুগ্ম মহাপচিব পদের এক নেতা শনিবার রাতে জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা আমির সাহেবকে আগেই বলেছি সঙ্কটের জন্য যাঁরাই দায়ী তাঁদের তদন্ত করে চিহ্নিত করতে হবে। সব কর্মসূচীতে ঢাকার নেতাদের মধ্যে যাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে তাঁদের রাখা যাবে না।
নেতারা অভিযোগ করেন, ঢাকার কিছু নেতারা তাঁদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই সেদিন অবস্থান কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে নিরীহ হেফাজত কর্মীদের ওপর হামলার সুযোগ পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর রাতে সাধারণ কর্মীদের রেখে নেতারা নিজেরা সেখান থেকে সরে পরেছিলেন। অবরোধে জামায়াত-শিবিরের নাশকতার কথা উল্লেখ্য করে আগেই কর্মসূচী থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিল চট্টগ্রামের ছয়টি বড় মাদ্রাসা। এর একটির অধ্যক্ষ অভিযোগ করলেন, কিছু নেতার 'মঞ্চ কাঁপানো-অযৌক্তিক' বক্তব্যের জন্যই হেফাজতের আজকে এ দশা হয়েছে। হেফাজত আজ বিতর্কের মুখে পড়েছে। এদিকে হেফাজতের সাধারণ কর্মীরা বলছেন, বিরোধের কারণে একে-অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে চলেছেন। শনিবার কমিটি গঠন নিয়েও বিরোধে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ থেকে বেরিয়ে আসছে নানা গোপন তথ্য। ঢাকার দুটি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, হেফাজতে ইসলামের ৫ মের অবরোধের পেছনে জামায়াতের গোপন পরিকল্পনা অনুযায়ী শাপলা চত্বরে অবস্থান করে পরদিন ৬ মে ভোরে ব্যাংকসমূহ লুট করাসহ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ছিল। অবস্থান সফল না হওয়ায় এখন প্রাপ্ত বিপুল অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে ঢাকা মহানগর হেফাজত এবং কেন্দ্রীয় হেফাজতের মধ্যে জামায়াতঘেঁষা নেতাদের মধ্যে চলছে চরম দ্বন্দ্ব। অর্থের ভাগবাটোয়ারা সঠিক না হওয়া, লালবাগ, কামরাঙ্গীর চর ও বারিধারা মাদ্রাসার নেতারা পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করাসহ বিবৃতি দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গেল রমজান মাসে হোটেল পূর্বাণীতে ইসলামী ঐক্যজোট (একাংশ) আয়োজিত মুফতি আমিনী স্মরণে আলোচনা ও ইফতার পার্টিতে বারিধারাকেন্দ্রিক নেতাদের দাওয়াতই দেয়া হয়নি। শনিবার কমিটি গঠনকালে উপস্থিত থাকা কয়েক নেতা জানিয়েছেন, নেতাদের বিরোধ আর অনিয়মের অভিযোগ আপাত সামাল দিয়েছেন আমির। তবে নেতাকর্মীদের অভিযোগ আছে আরও অনেক নেতার বিরুদ্ধেই। তবে নতুন কমিটিতে বাদ পড়া দুই নেতা টাকা লোপাট ছাড়াও আঠারো দলের শরিক দলে থাকায় তাঁরা হেফাজতের নামে ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছিলেন। হেফাজতের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু না বললেও জানা গেছে, অর্থ লোপাট আর বিরোধের প্রেক্ষাপটে শনিবার চট্টগ্রামের বাবুনগর মাদ্রাসায় সকাল ১০টায় প্রায় দুই হাজার আলেম- ওলামার অংশগ্রহণে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলন শুরু হয়। প্রথম পর্বে নীতিনির্ধারণী কমিটি গঠন করে শেষ পর্বে সন্ধ্যায় কর্মসূচী নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটি গঠন পর্বে ২০১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা পরিষদ গঠন করা হয়। এদের মধ্য থেকে ২৫ জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা নিয়ে গঠিত হয় সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ। এ পরিষদের আমির হিসেবে আহমদ শফী ও মহাসচিব হিসেবে মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীই আছেন। নতুন এ কমিটিতে ঢাকার তিন নেতা স্থান পেয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা আবুল হাসনাত আমিনী। কমিটির বাকি সবাই চট্টগ্রামকেন্দ্রিক। দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ২০১ জন শুরা সদস্য নির্বাচন করা হয়। শুরা কমিটিতে সংগঠনের সব নায়েবে আমির এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবদের নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, সম্মেলনে মুফতি ফয়জুল্লাহ উপস্থিত থাকলেও মাওলানা রুহী ছিলেন অনুপস্থিত। আমির শফী পরিস্থিতি বুঝতে পেরে আগেই রুহীকে এ সম্মেলনে যোগ না দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
২০১০ সালে সরকারের নারী নীতির প্রতিবাদ জানাতেই মূলত হেফাজতে ইসলাম নামের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী অধ্যক্ষ আল্লামা শাহ আহমদ শফী। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারেই ১৮ দলীয় জোট ইসলামবিরোধী কর্মকা- বন্ধের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেমেছে। শনিবার নতুন কমিটি হলেও হেফাজতের আন্দোলনে নেতৃত্বে আছেন ১৮দলীয় জোটভুক্ত সব ইসলামী দলের নেতারাই। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শফীর পরই অন্য নেতাদের অবস্থান। তাঁদের কেউ নায়েবে আমির, কেউ যুগ্ম মহাসচিব বা অন্য পদে আছেন। নায়েবে আমির পদে আছেন নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি জঙ্গীবাদের দায়ে অভিযুক্ত মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপি সমর্থিত জাতীয় ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল মান্নান, আছেন ১৮ দলের নেতা আবদুল লতিফ নেজামী। নেতৃত্বে আছেন ঢাকার তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং জামায়াতে ইসলামীর রুকন জয়নাল আবেদীন, সম্মিলিত ওলামা-মাশায়েখ সংগ্রাম পরিষদের সেক্রেটারি ইসলামী দলগুলোর সমন্বয়কারী এবং চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের রুকন অধ্যক্ষ মিয়া মুহাম্মদ হোসাইন শরীফ এবং আছেন চট্টগ্রামের লিয়াজোঁ কমিটির আহ্বায়ক ও নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি আব্দুর রহমান চৌধুরী। এরা হেফাজতের নামে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় আন্দোলন করছে বলে অভিযোগ আছে। এদিকে শনিবার কোন সংবাদকর্মীকে মূল সম্মেলন কক্ষে প্রবেশ করতে দেয়নি হেফাজত নেতারা। পরে সম্মেলন শেষে সংবাদ কর্মীদেরকে কর্মসূচী জানানো হয়। সম্মেলন চলাকালে আশপাশে বিপুল সংখ্যক বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন ছিল। রাতে বাইরে সাংবাদিকদের কাছে কর্মসূচী তুলে ধরেন নেতারা। তাঁরা ৮ দফা দাবি তুলে ধরে তা বাস্তবায়নে সচিবালয় ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন।
এ ছাড়াও ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় মহাসমাবেশ। নেতারা বলেন, হেফাজত কর্মসূচী থেকে বিরত থাকলেও সরকার উল্টো তাঁদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও বিভিন্ন পন্থায় নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সচিবালয় ঘেরাওয়ের হুমকি দিলেও কর্মসূচী পালনের কোন নির্দিষ্ট সময় সংগঠনটি ঘোষণা করেনি। এবার দাবি বাস্তবায়নে মোট সাত দফা কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। প্রস্তাবিত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৩ সংসদে পাস না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচীও ঘোষণা করেছে হেফাজতে ইসলাম। ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুর ১২টায় সারাদেশে একযোগে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। ঘোষিত অন্য কর্মসূচীর মধ্যে আছে, ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সব জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠন করা, ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৫ নবেম্বর থেকে ৩০ নবেম্বরের মধ্যে ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে ওলামা-সুধী সমাবেশ এবং পেশাজীবী সংলাপের আয়োজন করা, আগামী ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে দুই দিনব্যাপী ইসলামী মহাসম্মেলন করা, ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রত্যেক জেলায় শানে রেসালত সম্মেলন। সম্মেলন থেকে ঘোষিত দাবিগুলো হচ্ছে, হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত ১৩ দফা দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন, গত ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে সংঘটিত ঘটনা তদন্তের বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন, হেফাজতের নেতা মুফতি ওয়াক্কাছের মুক্তি, ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আদর্শের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নারী নীতিমালা প্রণয়ন, কওমি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৩ সংসদে পাস করার তৎপরতা বন্ধ করা, মাদ্রাসায় ছাত্র কমানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য প্রত্যাহার করা, আহমদ শফীসহ আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে মন্ত্রী-এমপিদের মিথ্যাচার বন্ধ করা, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও অধিকারের সাধারণ সম্পাদক আদিলুর রহমানের মুক্তি ও বন্ধ করে দেয়া মিডিয়া খুলে দেয়া।
জানা গেছে, অর্থ লোপাট, টাকার ভাগাভাগি, আধিপত্য বিস্তার, আর ১৮ দলের নির্বাচনে পাঁয়তারা নিয়ে কিছুদিন ধরেই বিরোধ চলছিল হেফাজতের শীর্ষ নেতাতের মধ্যে। ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, আর টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে রাজধানীতে হেফাজতের সবচেয়ে বড় আস্তানা হিসেবে পরিচিত লালবাগ মাদ্রাসা, কামরাঙ্গীর চর ও বারিধারা মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণকারী নেতারাও জড়িয়ে পড়েছেন বিরোধে। লালবাগ মাদ্রাসার হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে অন্য নেতারা অভিযোগ তুলেছেন, লাগবাগীরা আহমদ শফীকে নিয়ন্ত্রণে রেখে হেফাজতের সব কর্মসূচীকে জামায়াত-শিবিরের সহযোগিতায় হিংসাত্মক ও জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে পরিণত করছে। লালবাগ মাদ্রাসার হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছেন চট্টগ্রামের হেফাজত নেতারাও। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী হেফাজতের প্রভাবশালী দুই যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ও মাঈনুদ্দীন রুহীর বিরুদ্ধে রীতিমতো লিখিত অভিযোগ দেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। দুজনের বিরুদ্ধে ১৮ দলের কাছ থেকে টাকা এনে আত্মসাত করা ও নির্বাচন-বাণিজ্য করার অভিযোগ এনে আমিরের কাছে বহিষ্কারের পাশাপাশি, কঠোর শাস্তির দাবি আগেই তুলেছিলেন নেতাকর্মীরা। রাজধানীতে হেফাজতের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে মূলত লালবাগ, কামরাঙ্গীর চর ও বারিধারা মাদ্রাসাকেন্দ্রিক নেতারা। তবে লালবাগ মাদ্রাসার নেতাদের আবার প্রত্যেকেরই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দল। যার প্রত্যেকটি ১৮ দলের অন্তর্ভুক্ত। তাই ১৮ দলের সুবিধা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অভিযোগ এখানকার নেতাদের বিরুদ্ধে ছিল সব সময়ই। তবে সেই বিরোধ এবার চরম আকার ধারণ করেছে। যদিও এসব ঘটনা লালবাগ নেতাদের কেউ স্বীকার করছে না। তবে ক্ষোভের কথা বলছেন, অন্য মাদ্রাসার নেতারা। অবস্থা এ পর্যায়ে চলে গেছে যে, আগে লালবাগ থেকে হেফাজতের ব্যানারে ঢাকার নেতারা আমিরের বক্তব্যসহ সব কর্মসূচী প্রচার করলেও এখন চট্টগ্রামের নেতারা তা মানছেন না। একাধিক ব্যক্তি নিজেদের প্রচার সম্পাদক পরিচয় দিয়ে হেফাজতের বিবৃতি দিচ্ছেন। একই বিষয়ে দেয়া হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন বিবৃতি। বিষয়টি জানতে পেরে আমির আহমদ শফী চট্টগ্রাম থেকে নিজেই বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করা শুরু করেছেন কয়েকদিন ধরে। বলা হয়েছে, তাঁর স্বাক্ষর ছাড়া বিবৃতি দেয়া যাবে না। আবার ঢাকার নেতারা বিভিন্নভাবে বলে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের বাদ দিয়ে কিছু করতে গেলে তাঁরা মানবেন না। ঢাকায় সংগঠন করতে দেবেন না বলেও হুমকি দিয়েছেন ঢাকার অনেক নেতা। চট্টগ্রামের কয়েক নেতা আমিরের কাছে দাবি তুলেছেন, হেফাজতের বর্তমান অবস্থার জন্য ঢাকার নেতারাই দায়ী। তাঁদের মতে, ঢাকার নেতাদের অতি উৎসাহ, আর স্বার্থের কারণেই হেফাজতের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। যুগ্ম মহাপচিব পদের এক নেতা শনিবার রাতে জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা আমির সাহেবকে আগেই বলেছি সঙ্কটের জন্য যাঁরাই দায়ী তাঁদের তদন্ত করে চিহ্নিত করতে হবে। সব কর্মসূচীতে ঢাকার নেতাদের মধ্যে যাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে তাঁদের রাখা যাবে না।
নেতারা অভিযোগ করেন, ঢাকার কিছু নেতারা তাঁদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই সেদিন অবস্থান কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে নিরীহ হেফাজত কর্মীদের ওপর হামলার সুযোগ পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর রাতে সাধারণ কর্মীদের রেখে নেতারা নিজেরা সেখান থেকে সরে পরেছিলেন। অবরোধে জামায়াত-শিবিরের নাশকতার কথা উল্লেখ্য করে আগেই কর্মসূচী থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিল চট্টগ্রামের ছয়টি বড় মাদ্রাসা। এর একটির অধ্যক্ষ অভিযোগ করলেন, কিছু নেতার 'মঞ্চ কাঁপানো-অযৌক্তিক' বক্তব্যের জন্যই হেফাজতের আজকে এ দশা হয়েছে। হেফাজত আজ বিতর্কের মুখে পড়েছে। এদিকে হেফাজতের সাধারণ কর্মীরা বলছেন, বিরোধের কারণে একে-অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে চলেছেন। শনিবার কমিটি গঠন নিয়েও বিরোধে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ থেকে বেরিয়ে আসছে নানা গোপন তথ্য। ঢাকার দুটি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, হেফাজতে ইসলামের ৫ মের অবরোধের পেছনে জামায়াতের গোপন পরিকল্পনা অনুযায়ী শাপলা চত্বরে অবস্থান করে পরদিন ৬ মে ভোরে ব্যাংকসমূহ লুট করাসহ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ছিল। অবস্থান সফল না হওয়ায় এখন প্রাপ্ত বিপুল অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে ঢাকা মহানগর হেফাজত এবং কেন্দ্রীয় হেফাজতের মধ্যে জামায়াতঘেঁষা নেতাদের মধ্যে চলছে চরম দ্বন্দ্ব। অর্থের ভাগবাটোয়ারা সঠিক না হওয়া, লালবাগ, কামরাঙ্গীর চর ও বারিধারা মাদ্রাসার নেতারা পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করাসহ বিবৃতি দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গেল রমজান মাসে হোটেল পূর্বাণীতে ইসলামী ঐক্যজোট (একাংশ) আয়োজিত মুফতি আমিনী স্মরণে আলোচনা ও ইফতার পার্টিতে বারিধারাকেন্দ্রিক নেতাদের দাওয়াতই দেয়া হয়নি। শনিবার কমিটি গঠনকালে উপস্থিত থাকা কয়েক নেতা জানিয়েছেন, নেতাদের বিরোধ আর অনিয়মের অভিযোগ আপাত সামাল দিয়েছেন আমির। তবে নেতাকর্মীদের অভিযোগ আছে আরও অনেক নেতার বিরুদ্ধেই। তবে নতুন কমিটিতে বাদ পড়া দুই নেতা টাকা লোপাট ছাড়াও আঠারো দলের শরিক দলে থাকায় তাঁরা হেফাজতের নামে ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছিলেন। হেফাজতের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু না বললেও জানা গেছে, অর্থ লোপাট আর বিরোধের প্রেক্ষাপটে শনিবার চট্টগ্রামের বাবুনগর মাদ্রাসায় সকাল ১০টায় প্রায় দুই হাজার আলেম- ওলামার অংশগ্রহণে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলন শুরু হয়। প্রথম পর্বে নীতিনির্ধারণী কমিটি গঠন করে শেষ পর্বে সন্ধ্যায় কর্মসূচী নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটি গঠন পর্বে ২০১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা পরিষদ গঠন করা হয়। এদের মধ্য থেকে ২৫ জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা নিয়ে গঠিত হয় সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ। এ পরিষদের আমির হিসেবে আহমদ শফী ও মহাসচিব হিসেবে মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীই আছেন। নতুন এ কমিটিতে ঢাকার তিন নেতা স্থান পেয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা আবুল হাসনাত আমিনী। কমিটির বাকি সবাই চট্টগ্রামকেন্দ্রিক। দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ২০১ জন শুরা সদস্য নির্বাচন করা হয়। শুরা কমিটিতে সংগঠনের সব নায়েবে আমির এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবদের নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, সম্মেলনে মুফতি ফয়জুল্লাহ উপস্থিত থাকলেও মাওলানা রুহী ছিলেন অনুপস্থিত। আমির শফী পরিস্থিতি বুঝতে পেরে আগেই রুহীকে এ সম্মেলনে যোগ না দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
২০১০ সালে সরকারের নারী নীতির প্রতিবাদ জানাতেই মূলত হেফাজতে ইসলাম নামের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী অধ্যক্ষ আল্লামা শাহ আহমদ শফী। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারেই ১৮ দলীয় জোট ইসলামবিরোধী কর্মকা- বন্ধের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেমেছে। শনিবার নতুন কমিটি হলেও হেফাজতের আন্দোলনে নেতৃত্বে আছেন ১৮দলীয় জোটভুক্ত সব ইসলামী দলের নেতারাই। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শফীর পরই অন্য নেতাদের অবস্থান। তাঁদের কেউ নায়েবে আমির, কেউ যুগ্ম মহাসচিব বা অন্য পদে আছেন। নায়েবে আমির পদে আছেন নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি জঙ্গীবাদের দায়ে অভিযুক্ত মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপি সমর্থিত জাতীয় ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল মান্নান, আছেন ১৮ দলের নেতা আবদুল লতিফ নেজামী। নেতৃত্বে আছেন ঢাকার তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং জামায়াতে ইসলামীর রুকন জয়নাল আবেদীন, সম্মিলিত ওলামা-মাশায়েখ সংগ্রাম পরিষদের সেক্রেটারি ইসলামী দলগুলোর সমন্বয়কারী এবং চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের রুকন অধ্যক্ষ মিয়া মুহাম্মদ হোসাইন শরীফ এবং আছেন চট্টগ্রামের লিয়াজোঁ কমিটির আহ্বায়ক ও নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি আব্দুর রহমান চৌধুরী। এরা হেফাজতের নামে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় আন্দোলন করছে বলে অভিযোগ আছে। এদিকে শনিবার কোন সংবাদকর্মীকে মূল সম্মেলন কক্ষে প্রবেশ করতে দেয়নি হেফাজত নেতারা। পরে সম্মেলন শেষে সংবাদ কর্মীদেরকে কর্মসূচী জানানো হয়। সম্মেলন চলাকালে আশপাশে বিপুল সংখ্যক বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন ছিল। রাতে বাইরে সাংবাদিকদের কাছে কর্মসূচী তুলে ধরেন নেতারা। তাঁরা ৮ দফা দাবি তুলে ধরে তা বাস্তবায়নে সচিবালয় ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন।
এ ছাড়াও ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় মহাসমাবেশ। নেতারা বলেন, হেফাজত কর্মসূচী থেকে বিরত থাকলেও সরকার উল্টো তাঁদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও বিভিন্ন পন্থায় নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সচিবালয় ঘেরাওয়ের হুমকি দিলেও কর্মসূচী পালনের কোন নির্দিষ্ট সময় সংগঠনটি ঘোষণা করেনি। এবার দাবি বাস্তবায়নে মোট সাত দফা কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। প্রস্তাবিত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৩ সংসদে পাস না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচীও ঘোষণা করেছে হেফাজতে ইসলাম। ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুর ১২টায় সারাদেশে একযোগে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। ঘোষিত অন্য কর্মসূচীর মধ্যে আছে, ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সব জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠন করা, ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৫ নবেম্বর থেকে ৩০ নবেম্বরের মধ্যে ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে ওলামা-সুধী সমাবেশ এবং পেশাজীবী সংলাপের আয়োজন করা, আগামী ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে দুই দিনব্যাপী ইসলামী মহাসম্মেলন করা, ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রত্যেক জেলায় শানে রেসালত সম্মেলন। সম্মেলন থেকে ঘোষিত দাবিগুলো হচ্ছে, হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত ১৩ দফা দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন, গত ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে সংঘটিত ঘটনা তদন্তের বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন, হেফাজতের নেতা মুফতি ওয়াক্কাছের মুক্তি, ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আদর্শের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নারী নীতিমালা প্রণয়ন, কওমি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৩ সংসদে পাস করার তৎপরতা বন্ধ করা, মাদ্রাসায় ছাত্র কমানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য প্রত্যাহার করা, আহমদ শফীসহ আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে মন্ত্রী-এমপিদের মিথ্যাচার বন্ধ করা, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও অধিকারের সাধারণ সম্পাদক আদিলুর রহমানের মুক্তি ও বন্ধ করে দেয়া মিডিয়া খুলে দেয়া।
রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ৭ আশ্বিন ১৪২০
হেফাজত একটি জঙ্গী সংগঠন, এটাকে নিষিদ্ধ করুন
গার্মেন্টস শ্রমিক মহাসমাবেশের দাবি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ পোশাক শিল্প শ্রমিক নেতারা হেফাজতে ইসলামকে একটি জঙ্গী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের কার্যকলাপ বন্ধে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা না হলে নারী শ্রমিকরা ঘরে বন্দী হয়ে পড়বেন। এ ছাড়া পোশাক শিল্প শ্রমিকদের বাঁচার মতো ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা, এ শিল্পে সকল প্রকার ষড়যন্ত্র বন্ধ, জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, জিএসপি পুনর্বহালসহ ইত্যাদি দাবি জানানো হয়। শনিবার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পোশাক শিল্প শ্রমিক মহাসমাবেশে . . .
রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ৭ আশ্বিন ১৪২০
__._,_.___