Banner Advertise

Thursday, May 2, 2013

[chottala.com] NY Times report on Jubo League cadre Rana



শটগান হাতে চলাফেরা করতেন রানা
শুক্রবার, ০৩ মে ২০১৩
 
মানবজমিন ডেস্ক: এই মুহূর্তে সবচেয়ে ঘৃণিত বাংলাদেশী সোহেল রানা। অবৈধ উপায়ে গড়ে তোলা সাম্রাজ্য থেকে তার পতন হয়েছে। অথচ কয়েক দিন আগেও সম্ভবত ঢাকার কাছে সাভারে সোহেল রানার মতো নির্লজ্জ ক্ষমতাধর আর কেউ ছিল না। সে মোটরসাইকেলে চড়ে চলাফেরা করতো। মাফিয়া ডন হিসেবে সে ছিল অস্পৃশ্য। তার যাত্রাপথকে প্রহরা দিতো তারই নিজের গ্যাং। স্থানীয় কর্মকর্তারা ও বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম বলছে, সে মাদক ও অস্ত্রের অবৈধ কারবারি। কিন্তু তারপরও তার ছিল একটি ভবন। যার নাম রানা প্লাজা। এখানে ছিল ৫টি কারখানা। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সাভারের গার্মেন্ট ট্র্যাজেডির বর্ণনা এভাবে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। সাভার থেকে জিম ইয়ার্ডলির লেখা এ প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘দ্য মোস্ট হেটেড বাংলাদেশী, টপলড ফ্রম এ শেডি এম্পায়ার’। এতে তিনি লিখেছেন, রাজধানী ঢাকা থেকে মোটামুটি ২০ মাইল দূরে গড়ে ওঠা উপ-শহর এখন বালুময়। বিশৃঙ্খলভাবে এখানে গড়ে উঠেছে শিল্প-কারখানা। এর বেশির ভাগ কারখানায়ই পশ্চিমা ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরি হয়। এখানে বিল্ডিং কোড মানা হয় না। বাধ্যতামূলক তদারক দুর্বল। আর এখানে যে ব্যক্তি ক্ষমতা দেখায় সে সশস্ত্র প্রহরা নিয়ে চলে। রানা প্লাজার উপরতলায় যে শ্রমিকরা জেসি পেনির মতো ক্রেতাদের জন্য কাপড় তৈরি করেন তাদের মাসের বেতন ৪০ ডলারেরও কম। অন্যদিকে নিচতলায় সোহেল রানা স্থানীয় রাজনীতিবিদদের খুশি করতে ব্যস্ত। খেলতো পুল। পান করতো মদ। বুঁদ হয়ে থাকতো মাদকে। ৩৫ বছর বয়সী রানা এখন গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছে। গত সপ্তাহে রানা প্লাজা ধসে প্রায় ৪০০ মানুষ নিহত ও অনেক মানুষ এখনও নিখোঁজ থাকার পর সে এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে নিন্দনীয়। মঙ্গলবার বাংলাদেশের একটি শীর্ষ আদালত তার সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে। জনগণ তার ফাঁসি দাবি করছে। বিশেষ করে যখন দেখা গেছে, এই ট্র্যাজেডি এড়ানো যেতো যদি ওইদিন কাজ শুরুর আগে সে প্রকৌশলীর দেয়া সতর্কতার প্রতি কর্ণপাত করতো। কিন্তু রানা তা করেনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যখন কম মজুরির ভিত্তিতে অল্প খরচে অধিক লাভের সন্ধান করতে থাকে তখন বাংলাদেশের গার্মেন্ট যুগে তার উত্থান। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে আন্তর্জাতিক ব্রান্ডগুলো রানার মতো ব্যক্তিদের সঙ্গে জড়িত। তাদের মাধ্যমে এরা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। তৈরী পোশাকের বৈশ্বিক কোম্পানিগুলো মাঝে মধ্যেই তাদের আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন কড়া পর্যবেক্ষণে রাখে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের কাছে যে পোশাক বিক্রি করা হয় তা যেখানে তৈরি হয় তা নিরাপদ ও নজরদারি করা হয় এমন কারখানায় বানানো হয়। তাদের ইন্সপেক্টররা যথারীতি কারখানার নিরাপত্তা ও কর্মস্থলের পরিবেশ যাচাই করলেও তারা নিজেরা ভবনের স্থায়িত্ব যাচাই করে না। যেসব সাব-কণ্ট্রাক্টর তাদের বেশির ভাগ কাজ করে সেখানে কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। অপরাধ ও রাজনীতি বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে একাকার হয়ে আছে। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে তা বেশি। কিন্তু গার্মেন্ট শিল্প একটি জিনিস চালু করেছে, যা ছিল খুবই দরকারি। তা হলো- টাকা। পশ্চিমাদের নতুন নতুন চাহিদা মেটানোর জন্য সাভারে দ্রুত গড়ে উঠতে থাকে নতুন নতুন কারখানা। এতে সেখানকার জমির মূল্য বাড়তে থাকে। রানা প্লাজা নির্মাণের জন্য রানা ও তার পিতা ভূমি মালিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। তারা বলেছেন, তারা জোর করে তাদের সম্পদ কেড়ে নিয়েছে। জমিতে তার মালিকানা নিয়ে বিতর্ক থাকা সত্ত্বেও রানার রাজনৈতিক মিত্ররা তাকে সেখানে ভবন নির্মাণের অনুমতি দেয়। পরে তাকে দেয়া হয় উপরের তলাগুলো নির্মাণের অনুমতি। এতেই ওই ভবনটি অস্থিতিশীল হয়ে থাকতে পারে। রানা ছিল একেবারে ধরাছোঁয়ার বাইরে। স্থানীয় লোকজন বলেন, তার রাজনৈতিক ক্ষমতা ছিল বিশাল। এমনকি পুলিশও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সাহস দেখাতো না। তার ভবনটি ধসে পড়ার আগের রাতে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো তাতে ফাটলের রিপোর্ট করেছে। কিন্তু পরের সকালে ভবনটি খোলা থেকে রানাকে স্থানীয় কোন কর্তৃপক্ষ থামাতে পারে নি। সাভারের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, রানার ক্ষমতা হলো টাকা। তিনি অভিযোগ করেন, রানা মাদক পাচারের সঙ্গে মারাত্মকভাবে জড়িত ছিল। এ থেকেই সে গড়ে তুলেছে অবৈধ অর্থ। রানা প্লাজা ধসে পড়ার আগে থেকেই বাংলাদেশ পরিস্থিতি ছিল উত্তাল। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর দেশব্যাপী হরতাল দেশকে অচল করে দেয়। ফলে কারখানা মালিকরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্ডার সরবরাহের বিরাট চাপে পড়েন। কয়েক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) সতর্ক করে দেয়। তারা বলে, ওই সময়ের মধ্যেই হরতালের কারণে বাংলাদেশে ৫০ কোটি ডলারের বাণিজ্যের ক্ষতি হয়েছে। হরতালে অংশ নেয়া ছিল রানার নতুন করে যাত্রার সূচনা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় ছাত্র বিষয়ক সংগঠনের সেক্রেটারির পদ ধরে রেখেছিল। এই পদ ব্যবহার করে সে প্রভাব বিস্তার করে এবং লোকজনকে ব্যবহার করতে সহায়তা করে। স্থানীয়রা বলেন, রাজনীতির পেশীশক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হতো সে। কখনও হরতাল করতে। আবার কখনও হরতাল বিরোধিতার জন্য। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র সদস্য ও সাভার পৌরসভার নির্বাচিত সদস্য মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, রানার ছিল অপরাধী একটি গ্যাং। রানা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা অস্ত্র বহন করতো। তারা স্থানীয় পর্যায়ে মাদক ব্যবসার একটি নেটওয়ার্কের সঙ্গেও যুক্ত। শটগান হাতে একজন দেহরক্ষী সহ ৮ জনের একটি দল নিয়ে শহরের ভিতর দিয়ে চলাফেরা করতো। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেন, সেখানে মাদক ব্যবসা ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে, যদিও স্থানীয় পুলিশ প্রধান বলেন তিনি এ সমস্যা দূর করছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, সবচেয়ে ব্যস্ত মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম একজন রানা প্লাজার পিছনের দিকে থাকতো। রানার ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমি সহায়তা করেছে। তার পিতা ছিল একজন গরিব কৃষক। সে তার গ্রামের জমি বিক্রি করে দিয়ে সাভারে একখণ্ড ছোট্ট জমি কেনে। দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে সে ওই জমির একটি অংশ বিক্রি করে দেয়। লাভের সেই অর্থ দিয়ে একটি তেলের কল দেয়। সে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। তারপর ক্ষমতাধর হয়ে উঠতে থাকে এবং আস্তে আস্তে ধনী হতে থাকে। ২০০০ সাল নাগাদ জমির মূল্য অনেক বেড়ে যায়। তখনও পিতাকে সাহায্য করছিল রানা। এ সময়ে তারা দেখতে পায় সাভারে দ্রুতগতিতে অন্যরা ভবন গড়ে তুলছে। পুরোটা জমিতে তাদের পরিষ্কার মালিকানা না থাকা সত্ত্বেও এ সময়েই তারা সিদ্ধান্ত নেয় রানা প্লাজা নির্মাণের। রানার পিতার সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এ জমি কিনেছিলেন রবীন্দ্রনাথ সরকার নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, জমিতে তার যে অংশ আছে তা দখলে নিতে রানার পরিবার তার কাছে গুণ্ডা পাঠায়। তিনি এ বিষয়ে স্থানীয় পুলিশে অভিযোগ দিলে তার ওপর প্রতিশোধ নেয়া হয়। রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, রানা আমাকে সারা সাভার দাবড়ে বেড়ায়। আমাকে রক্ষা করার সাহস পুলিশও দেখায় নি। সব সময় তাদেরকে ভয় পেতো পুলিশ। আরেক প্রতিবেশী বলেছেন, পুকুর সহ তাদের জমি রানার কাছে বিক্রি করে দিতে রানা তার দলবল পাঠায়। এই জমি রানাদের জমির সঙ্গেই। এরপর পুকুরটির দখল নিতে একটি মিথ্যা চুক্তি তুলে ধরে। এরপর তারা ওই জমিতে রানা প্লাজা তৈরি করা শুরু করে।
প্রাথমিকভাবে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিশেষ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা সৃষ্টি করে বাংলাদেশ। এতে উচ্চ গুণগত মান ও কঠোর নিয়মনীতি বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু বিদেশী ক্রেতাদের ডিমান্ড বেড়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে কারখানা নির্মিত হতে থাকে। এর মধ্যে ছোটখাটো অবকাঠামোতেও ছোট ছোট অপারেটররা কাজ করতে থাকে। তারা কঠোর নিয়মের কাজ সাব-কণ্ট্রাক্টে করতে থাকে। ২০১১ সালের মধ্যে রানা তার ভবনের বিদ্যমান ৫টি তলা ভাড়া দিয়ে দেয়। এরপর রাজনৈতিক মিত্র, স্থানীয় মেয়রের কাছ থেকে বাড়তি তলা নির্মাণের অনুমতি পায়। আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় না রেখে ঘুষের বিনিময়ে মাঝেমধ্যে কর্মকর্তারা যখন এভাবে অনুমতি দেন তা থেকেই এই ধরনের মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, সাভারে গার্মেন্ট শিল্প গড়ে উঠেছে খুব দ্রুততার সঙ্গে, অপরিকল্পিতভাবে। সাভারে রানা প্লাজার মতো অনেক ভবন রয়েছে। রানা তার ভবনের উপরের তলাগুলো ভাড়া দেয়ার জন্য কারখানা মালিক পেয়ে যায়। এ থেকে সে ভাল প্রভাব অর্জন করে। এরপর ২৩শে এপ্রিল একটি সমস্যা দেখা দেয় প্রায় দুপুরের দিকে। তৃতীয় তলায় পোশাক সেলাইয়ে ব্যস্ত তখন শ্রমিকরা। তখন অকস্মাৎ তারা একটি বিস্ফোরণের মতো শব্দ শুনতে পায়। রানা প্লাজার ভবনে ফাটল দেখা দেয়। ভয়ে দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে তারা। সকালে রানার লোকজন আবদুর রাজ্জাক খান নামে একজন প্রকৌশলীকে সেখানে নিয়ে যায়। তৃতীয় তলায় তিনি তিনটি সাপোর্ট পিলার পরীক্ষা করেন এবং ফাটল দেখে তিনি সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আমি তো রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে এই ভবনের ভিতরে থাকা মোটেও নিরাপদ নয়। তিনি দ্রুত নিচে নেমে আসেন। রানার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের একজনকে বলেন, অবিলম্বে এই ভবনের কাজকর্ম বন্ধ করতে হবে। তার এ বক্তব্যে রানা দৃশ্যত সন্তুষ্ট হলো না। স্থানীয় কিছু সাংবাদিককে নিয়ে বৈঠক করছিল সে। স্থানীয় এক সাংবাদিক শামীম হোসেন বলেন, রানা তখন বলে এটা কোন ফাটল নয়। দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়েছে। এর বেশি কিছু নয়। এটা কোন সমস্যা নয়।
কিন্তু তা সমস্যা ছিল। পরের দিন সকালে রানা প্লাজা ধসে পড়ে। রানা নিচতলায় তার অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তারপর থেকে ভারত সীমান্তের কাছে আত্মগোপন করেছিল। মিডিয়াগুলো সন্দেহ পোষণ করার পর তাকে পরে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়েছে। তবে এ রিপোর্টের জন্য রানা বা তার কোন প্রতিনিধির মন্তব্য পাওয়া যায় নি। সে এর আগে বলেছিল, ভবনটি ধসে পড়ার দিন কারখানা খোলার জন্য দায়ী কারখানার মালিকরা। এ ঘটনায় ওই কারখানাগুলোর কয়েকজন মালিক ও রানার পিতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবুও সাভারের বেশির ভাগ মানুষ আশ্বস্ত হতে পারছেন না যে, রানাকে শাস্তি দেয়া হবে অথবা সে যে ধরনের ব্যবসা শুরু করেছে তা থেকে তাদেরকে মুক্তি দেয়া হবে। রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, রানা একাই নয়। এখন আমাদের সামনে অনেক অনেক রানা রয়ে গেছে।

 


__._,_.___


[* Moderator's Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___