থানা হেফাজতে ৬ দিন নির্যাতন- আড়াই লাখ টাকা দিয়েও বাঁচতে পারেনি শামীম
বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০১৩
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ফোর মার্ডারের সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছিল তাকে। আটকের পর সোনারগাঁ থানায় রাখা হয় ছয় দিন। সেখানেই চালানো হয় নির্যাতন। স্বজনদের কাছে দাবি করা হয় পাঁচ লাখ টাকা। টাকা দেয়া হলে ছেড়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। স্বজনদের দাবি-আড়াই লাখ টাকা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ছাড়া মেলেনি শামীম রেজার। বরং মুমূূর্ষু অবস্থায় তাকে চালান দেয়া হয় আদালতে। আদালত তার অবস্থা গুরুতর দেখে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মারা যান তিনি। শামীম রেজা একজন ব্যবসায়ী। তাকে আটক করা হয়েছিল সন্দেহভাজন হিসেবে। নিয়ম অনুযায়ী আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হবে। কিন্তু টানা ছয়দিন রাখা হয়েছিল থানায়। কোন মামলাও দেয়া হয়নি। নেয়া হয়নি আদালতে। প্রথম তিন দিন সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়নি স্বজনদের সঙ্গে। তিন দিন পর স্বজনদের ডেকে নিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। পুরো টাকা দিতে না পারায় তাকে কোর্টে চালান দেয়া হয়। বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছিলেন শামীমের পরিবারের সদস্যরা। নিহতের বড় ভাই ইকবাল হোসেন জানান, শামীমের নামে কোথাও কোন অভিযোগ নেই। ফোর মার্ডারের সঙ্গে সে কোনভাবেই জড়িত নয়। শামীম একজন পাথর ব্যবসায়ী। গত ১৯শে এপ্রিল স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের স্ত্রী এবং কাজের মেয়েসহ ৪ জনকে এক সঙ্গে খুন করা হয়। মামলায় শামীমকে আসামিও করা হয়নি। হঠাৎ ১৪ই মে ভোর ৫টার দিকে সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) অরূপ তরফদার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সন্দেহজনকভাবে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যান শামীমকে। থানায় এনে তাকে বেধড়ক পেটানো হয়। হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ঝুলিয়ে পেটানো হয়। শামীমকে ধরে আনার পরপরই আমি থানায় যাই। থানা পুলিশ আমাকে তার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। তিনদিন পর ওসি আমাকে বলেন, ‘আজ বিকালে থানায় আসেন। শামীমকে দেখে যেতে পারবেন। আমি বিকালে গেলে ওসি আমাকে দেখা করতে দেননি। বলেন, রাতে আসেন।’ চতুর্থ দিনের মাথায় রাত ৮টার দিকে থানায় গেলে শামীমের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ মেলে। আমাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে ভাই। বলে, পুলিশ আমাকে মেরে ফেলেছে। আমি আর বাঁচতে পারবো না। আমার জন্য দোয়া করিস। আমি দেখি- তার সারা শরীরে পেটানোর জখম। হাত-পা নাড়াতে পারছে না। উঠে দাঁড়াতে পারছে না। প্রশ্রাবের রাস্তা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তার এ অবস্থা দেখে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ি। ভাই আমাকে বলে, আমাকে ছাড়িয়ে নিতে হলে পুলিশকে টাকা দিতে হবে। সে অনুযায়ী আমি ওসি অরূপ তরফদারের সঙ্গে চুক্তি করি। ওসি আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। আমি ১৯শে মে রাত ১১টার দিকে ওসিকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে ভাইকে ছেড়ে দিতে বলি। ওসি বলেন, পুরো টাকা না দেয়া পর্যন্ত তাকে ছাড়বো না।
ইকবাল জানান, আমি বাকি টাকা ম্যানেজ করতে পারিনি। এ কারণে পরদিন শামীমকে কোর্টে চালান দেয়া হয়। চালানের পরও ওসি ফোন করে আমার কাছে টাকা দাবি করেন। অন্যদিকে আমি জানতে পারি তাকে চালান দেয়া হয়েছে। কেন চালান দেয়া হলো- জানতে চাইলে ওসি বলেন, এখনও চালান দেয়া হয়নি। টাকা না দিলে চালান দেব। নিহতের ছোট ভাই সুমন জানান, ৬ষ্ঠ দিনের মাথায় ২০শে মে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ জোর করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি আদায় করে। আদালতে দাঁড়াতে পারছিল না শামীম। তার শারীরিক অবস্থা দেখে আদালত তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ী তাকে নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ধানমন্ডি সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে বুধবার সকাল ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, ৩ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে শামীম মেজো। দেড় বছর বয়সী তার এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বাবার নাম হাজী আলাউদ্দিন। থাকেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর কুতাবের চরে। বুধবার বিকালে হাসপাতাল মর্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরা ববি’র উপস্থিতিতে মোস্টমর্টেম করেন সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান। ডাক্তারি পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. কামরুল কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নিহত শামীমের বাবা আলাউদ্দিন জানান, তাদের বাড়ি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বাড়ির পাশেই। চেয়ারম্যানের প্রথম স্ত্রী কামরুন নাহারের ছেলে শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে শামীম রেজার ভালো সম্পর্ক ছিল। আলাউদ্দিন দাবি করেন, তার ছেলে শামীম কোনভাবেই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। কিন্তু তার পরেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) অরূপ তরফদার গত ১৪ই মে শামীমকে তার বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তথ্য জানতে ডেকে নিয়ে যায়। পরে শামীমকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আলাউদ্দিন বলেন, আমার ছেলেকে রিমান্ডে না এনেই থানার ছাদে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয়। প্রচণ্ড মারধরের কারণে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ছেলেকে মামলা থেকে বাঁচাতে হলে ওসি অরূপ আলাউদ্দিনের কাছে টাকা চান। সোনারগাঁ থানার ওসি আতিকুর রহমান খান জানান, রোববার শামীম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সেখানে শামীম হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে বলে, হত্যাকাণ্ডে যে দেড়লাখ টাকার চুক্তি হয় তার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা সে পেয়েছিল। স্বীকারোক্তি দেয়ার পরেই শামীমকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। নির্যাতন ও টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে অভিযোগ সত্য নয়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওসি অরূপ তরফদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইকবাল জানান, আমি বাকি টাকা ম্যানেজ করতে পারিনি। এ কারণে পরদিন শামীমকে কোর্টে চালান দেয়া হয়। চালানের পরও ওসি ফোন করে আমার কাছে টাকা দাবি করেন। অন্যদিকে আমি জানতে পারি তাকে চালান দেয়া হয়েছে। কেন চালান দেয়া হলো- জানতে চাইলে ওসি বলেন, এখনও চালান দেয়া হয়নি। টাকা না দিলে চালান দেব। নিহতের ছোট ভাই সুমন জানান, ৬ষ্ঠ দিনের মাথায় ২০শে মে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ জোর করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি আদায় করে। আদালতে দাঁড়াতে পারছিল না শামীম। তার শারীরিক অবস্থা দেখে আদালত তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ী তাকে নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ধানমন্ডি সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে বুধবার সকাল ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, ৩ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে শামীম মেজো। দেড় বছর বয়সী তার এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বাবার নাম হাজী আলাউদ্দিন। থাকেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর কুতাবের চরে। বুধবার বিকালে হাসপাতাল মর্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরা ববি’র উপস্থিতিতে মোস্টমর্টেম করেন সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান। ডাক্তারি পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. কামরুল কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নিহত শামীমের বাবা আলাউদ্দিন জানান, তাদের বাড়ি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বাড়ির পাশেই। চেয়ারম্যানের প্রথম স্ত্রী কামরুন নাহারের ছেলে শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে শামীম রেজার ভালো সম্পর্ক ছিল। আলাউদ্দিন দাবি করেন, তার ছেলে শামীম কোনভাবেই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। কিন্তু তার পরেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) অরূপ তরফদার গত ১৪ই মে শামীমকে তার বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তথ্য জানতে ডেকে নিয়ে যায়। পরে শামীমকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আলাউদ্দিন বলেন, আমার ছেলেকে রিমান্ডে না এনেই থানার ছাদে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয়। প্রচণ্ড মারধরের কারণে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ছেলেকে মামলা থেকে বাঁচাতে হলে ওসি অরূপ আলাউদ্দিনের কাছে টাকা চান। সোনারগাঁ থানার ওসি আতিকুর রহমান খান জানান, রোববার শামীম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সেখানে শামীম হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে বলে, হত্যাকাণ্ডে যে দেড়লাখ টাকার চুক্তি হয় তার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা সে পেয়েছিল। স্বীকারোক্তি দেয়ার পরেই শামীমকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। নির্যাতন ও টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে অভিযোগ সত্য নয়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওসি অরূপ তরফদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
__._,_.___