Banner Advertise

Tuesday, January 22, 2013

[chottala.com] প্রেসিডেন্ট জিয়ার জন্ম ছিল আমাদের জন্য রহমতস্বরূপ



 

প্রেসিডেন্ট জিয়ার জন্ম ছিল আমাদের জন্য রহমতস্বরূপ

আবদুল আউয়াল ঠাকুর
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ প্রবর্তনের মধ্য দিয়েই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতীয় স্বাতন্ত্র্য পরিচয়ের পতাকা উড্ডীন করেছিলেন। এ সূত্র থেকে বলা যায়, জিয়ার জন্ম না হলে হয়তো আমাদের স্বাধীন পরিচয় তুলে ধরা অসম্ভব হয়ে উঠত। স্বাধীনতার প্রসঙ্গ উঠলে নানা কথা অনেকে বলেন এবং বলে আসছেন। বোধ করি বর্তমান সময়কে যদি বিবেচনায় রাখা যায় বা বিশ্লেষণের জন্য গ্রহণ করা হয়, তাহলে একথা ফের উল্লেখ করার দরকার নেই যে, স্বাধীনতা কেবল কিছু শব্দের সমাহার নয় বরং এর মৌলিক ভিত্তি রয়েছে। আধুনিক সময়ে রাজনৈতিক স্বাধীনতার সীমা নিয়ে প্রাসঙ্গিক নানামাত্রিক আলোচনা থাকলেও রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা বলতে এমন এক কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্বকে বোঝায়, যারা স্বকীয় পরিচয় তুলে ধরতে দ্বিধান্বিত নন। মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপার্সন শহীদ জিয়ার রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী বেগম খালেদা জিয়া মানচিত্র সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি কেন এ আহ্বান জানিয়েছেন, সে আলোচনার মধ্যেই প্রকৃতপক্ষে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বর্তমান হালচাল স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কীভাবে, কার ইঙ্গিতে সরকার গঠিত হয়েছিল তার আলাপ-আলোচনা এখন বিশ্ব দরবারেও চলছে এবং তার সূত্র ধরে বাংলাদেশে যা ঘটছে সেটাই হলো বিবেচ্য। দেশের প্রায় সব নাগরিকই একমত যে, সরকারের একচোখা পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশ প্রায় বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিবেশীর নীতিকে সমর্থন করতে গিয়ে জাতীয় স্বাধীনতার কনসেপ্ট হুমকির মুখে পড়েছে। দৃশ্যমান বাস্তবতা হচ্ছে, প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা হচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সীমান্তের ভূমি, নদী, মাছের ওপর তাদের আগ্রাসন এবং নিরীহ জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ফলে যে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে তাতে ভারতীয় আগ্রাসী নীতিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। কার্যত দেশের জনগণের জানমাল এবং সীমান্ত রক্ষায় সরকারের ব্যর্থতা অথবা দায়িত্বহীনতা মৌলিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় প্রেসিডেন্ট জিয়ার জন্ম এবং শাসনামল বিবেচনায় নিলে নিঃসন্দেহে বলতে হবে, জিয়া যদি না জন্মাতেন এবং তিনি যদি ক্ষমতায় না যেতেন তাহলে হয়তো অনেক আগেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা নামে থাকলেও কাজে তার কোনো অস্তিত্ব থাকত না।
স্বাধীনতার পরবর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে যে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি করেছিল সে চুক্তির কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিঃসন্দেহে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছিল। পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে জিয়া জনতার সমর্থনে ক্ষমতাসীন হয়ে ওই চুক্তি বাতিল না করেও কীভাবে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা যায় এবং বাংলাদেশের বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করা যায় তার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা তৈরি করেছিলেন। দেশপ্রেম থাকলে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি কীভাবে পরিচালিত করতে হয় তার নজির তিনি স্থাপন করেছিলেন। বলা যায়, বর্তমান সময়ের আগ পর্যন্ত জিয়াউর রহমানের প্রবর্তিত পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণের কারণে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে যেভাবে স্বতন্ত্র পরিচিতি লাভ করেছিল, তার প্রভাব অভ্যন্তরীণভাবে পড়েছিল। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মানুষের কর্মবিনিয়োগের যে অবারিত সুযোগ তৈরি হয়েছিল তার ফলে জাতীয় অর্থনীতি সচল হয়ে উঠেছিল। জাতীয় সংহতকরণের চিন্তা সুসংবদ্ধ হয়েছিল এবং স্বাধীনতার পর প্রথম সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফুটেছিল। স্বাধীনতা-পরবর্তী দুর্নীতি এবং দুর্বৃত্তায়িত তথা দুর্ভিক্ষপীড়িত একটি দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্ভাবনাময় হিসেবে পরিচিত করাতে প্রেসিডেন্ট জিয়ার গৃহীত নীতি ও কর্মপন্থার সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে এমন উদাহরণ এখনও পাওয়া ভার। আজও বাংলাদেশের অর্থনীতি যতটুকু টিকে আছে তার প্রবর্তক মূলত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া।
অর্থনীতি বা অর্থনৈতিক চিন্তা রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। আধুনিক যুগে রাজনীতি-অর্থনীতি একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে রয়েছে। কোনো বিবেচনাতেই একটিকে অপরটি থেকে আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই। প্রেসিডেন্ট জিয়া যে সহিষ্ণু গণতান্ত্রিক মূল্যবোধভিত্তিক মধ্যপন্থি রাজনীতির প্রবর্তন করেছিলেন তার প্রভাব সমাজের সর্বত্র পড়েছিল। বাংলাদেশের গত ৪০ বছরের রাজনীতি বিশ্লেষণ করলে জিয়ার চর্চিত রাজনৈতিক সহিষ্ণুতাই গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। দেশপ্রেমকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি রাজনৈতিক সহাবস্থানের নজিরবিহীন বাতাবরণ সৃষ্টিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। গ্রেফতারের চেয়ে মুক্তিদানকেই তিনি অধিকতর বিবেচনায় গ্রহণ করেছেন। আজকের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যারা জিয়ার সেদিনের গৃহীত নীতি ও কৌশলকে তির্যক দৃষ্টিতে দেখেন বা দেখার চেষ্টা করেন, সেদিন তারা এবং তাদের পূর্বসূরিরা জিয়ার ভারসাম্যপূর্ণ রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যের প্রশংসা করেছেন। দলমত নির্বিশেষে তিনি পরমতসহিষ্ণু ছিলেন। রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলার চেষ্টা করেছেন এবং অন্যকেও উদ্বুদ্ধ করেছেন। ব্যক্তিবিরোধ বা বিদ্বেষকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে উঠতে দেননি। সে কারণেই তিনি দল তৈরি করেছেন। কিন্তু দল ভাঙার রাজনীতি করেননি। তিনি সংহত করেছেন, কিন্তু সঙ্কট সৃষ্টি করেননি। তিনি যে একজন দেশপ্রেমিক এবং ভারসাম্যপূর্ণ রাজনীতির ধারক-বাহক ছিলেন, সেকথা তার শাহাদাতের পর জাতীয় সংসদের আলোচনায় বিরোধী নেতারাই অধিকতর স্বীকৃতি দিয়েছেন। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে রাজনীতি যে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে সে কথা চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতার আলোকেই উঠে এসেছে। বিদ্বেষের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক, গণতান্ত্রিক, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়ার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু জনগণের জিয়া জনগণের অন্তরের গভীরেই রয়েছে। যে কোনো সঙ্কটে মানুষের হৃদয়ে একজন দেশপ্রেমিক জিয়ার চিত্রই ফুটে ওঠে।
জিয়া ব্যক্তিজীবনে এবং রাষ্ট্রীয় আচারে যে মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠা করেছেন তা এখনও অপ্রতিদ্বন্দ্বীভাবে টিকে আছে। ব্যক্তিজীবনে তার সততা অতীতের সব শাসকের তুলনায় ঈর্ষণীয়। তিনি সব ধরনের দুর্নীতিমুক্ত এবং ব্যক্তিজীবনে ইসলামী মূল্যবোধ চর্চাকারী ছিলেন। জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠনের সময় তফসিলি ফেডারেশনকে অন্তর্ভুক্ত করার মধ্য দিয়ে তার ব্যক্তিজীবনের সহিষ্ণুতারই নিদর্শন ফুটে উঠেছে। কার্যত বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত যে ধর্মীয় সহমর্মিমতা ও সহিষ্ণুতার ধারা রয়েছে তার বীজ গ্রথিত রয়েছে এ জাতির গভীরে। প্রেসিডেন্ট জিয়া স্বীয় মেধা, মনন ও প্রজ্ঞা দ্বারা এই চেতনাবোধ আত্মস্থ করেছিলেন। সেটাই নিজের জীবন এবং রাষ্ট্রীয় আচারে প্রতিফলন ঘটিয়েছিলেন।
মত দলনের নানা আলোচনার চিত্র বর্তমানেও বিদ্যমান। কার্যত সংবাদপত্র সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে জিয়া গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার চেষ্টা করেছেন এবং এখনও কোনোভাবে তাই টিকে রয়েছে। তবে বর্তমান সময়েও বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আবার হুমকির মুখে পড়েছে, যা বিরোধী মহল থেকে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উচ্চারিত হচ্ছে।
প্রতিটি সমাজ টিকে থাকে যেসব সামাজিক সূত্রের ওপর ভিত্তি করে, প্রেসিডেন্ট জিয়া সেই ভিত্তিকেই স্বীকৃতি দিয়েছিলেন সংবিধানে আল্লাহর ওপর গভীর আস্থা ও বিশ্বাস সংযোজন করে। এর ফলে গণতন্ত্র, মূল্যবোধ, জাতীয়তাবাদ এবং দেশপ্রেমের তিনি সমন্বয় করেছিলেন। মূলত এর মাধ্যমে জাতীয় স্বীকৃতি এবং আপনবৃত্তে পথ চলার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। অনেকেই মনে করেন, সংবিধানে আল্লাহর ওপর গভীর আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে সংবিধান প্রকৃত পূর্ণতা পেয়েছিল। দুর্ভাগ্যের বিষয়, উচ্চতর আদালতের রায়ের সূত্র ধরে বর্তমান সরকার তা সংবিধান থেকে বাতিল করেছে। আদালতের জন্য জনগণ নয় বরং জনগণের জন্যই আদালত। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বোধ, বিশ্বাস ও চেতনাকে পদদলিত করে সমর্থন পাওয়া সম্ভব নয়। সংবিধান থেকে আল্লাহর ওপর গভীর আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে বর্তমানে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে এবং কার্যত যা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য এবং স্বাধীন অস্তিত্ব রক্ষার হুমকি বলে বিবেচিত হচ্ছে, সেই বাস্তবতায় জিয়ার অবদান যে অনস্বীকার্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তত্ত্ব, তথ্য এবং ব্যবহারিক—সবদিক বিবেচনাতেই বলা যায়, প্রেসিডেন্ট জিয়ার জন্ম না হলে হয়তো একটি স্বাধীন দেশ পাওয়া সম্ভব হতো না। সেই বিবেচনায়ই তার পিতা যিনি পারিবারিকভাবে ইসলামী ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন প্রত্যক্ষ করেছেন, সেই মনসুর আহমদ তার নাম রেখেছিলেন জিয়া যার অর্থ নূর (জ্যোতির্ময়)। আজকের এই জন্মদিনে তাই বলা যায়, তিনি জন্মেছিলেন রহমত হিসেবে। তার অনসৃত ও চর্চিত আদর্শই হোক দেশরক্ষার পাথেয়।


__._,_.___


[* Moderator�s Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___