Banner Advertise

Tuesday, October 9, 2012

[chottala.com] Ramu Tragedy and Govenment action plan targeting the opposition only



সরকারের কথায় ও কাজে অসংগতি

আব্দুল কাইয়ুম | তারিখ: ১০-১০-২০১২
 
 
 
 
রামুর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী সব দায় বিএনপির স্থানীয় সাংসদ লুৎফর রহমানের ওপর চাপিয়ে দিয়ে সরকার ও নিজ দলের দায় এড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন মাত্র। কারণ, পত্রপত্রিকায় ঘটনার বিশদ বিবরণ বেরোবার পর কারও কি জানতে বাকি আছে, কীভাবে কী ঘটেছে? সেদিন সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের একজন সাবেক নেতা প্রথম মিছিলে ছিলেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন, এসব কথা তো এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। সেই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সরিয়েও দেওয়া হয়েছে। তার পরও প্রধানমন্ত্রী বলছেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও প্রশাসন উত্তেজিত মানুষকে শান্ত করার চেষ্টা করছিল। যদি তা-ই হবে, তা হলে এত বড় ঘটনা কীভাবে ঘটতে পারল? বিএনপির স্থানীয় সাংসদ কি এতই ক্ষমতাশালী যে তাঁর এক বক্তৃতায় সরকারি দল ও প্রশাসনের সব শান্তি-চেষ্টা ধূলিসাৎ হয়ে গেল? তা হলে বলতে হয়, আওয়ামী লীগের অবস্থা খুব খারাপ। আগামী নির্বাচনে তাদের তো দাঁড়াবার জায়গা থাকবে না! বিএনপির এক সাংসদ লুৎফর রহমান সারা দেশ চষে বেড়ালেই তো ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগ ভেসে যাবে! প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার সারমর্ম এক অর্থে এ রকমই দাঁড়ায়।
পত্রপত্রিকার খবরে বিএনপির স্থানীয় সাংসদ লুৎফর রহমানের নামও এসেছে। সেদিক থেকে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতেই পারেন। কিন্তু এ জন্য সব দায় তাঁর ওপরে চাপানো কতটা সংগত? আর তা ছাড়া তিনিও তো দাবি করেছেন যে, জনতাকে শান্ত করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। এ জন্যই নাকি তিনি বক্তৃতা দিয়েছেন। দেশে যখন বিরোধী দলের সঙ্গে একটা রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানোর বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, তখন প্রধানমন্ত্রী এভাবে ঢালাও অভিযোগ না আনলেও পারতেন।
প্রধানমন্ত্রী বেশ জোর দিয়েই বলেছেন, হামলার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। এটাই সবাই চায়। কিন্তু তদন্তের আগেই কাউকে দোষী বলে চিহ্নিত করলে তো আইনের প্রয়োগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
বিরোধী দলকে দোষারোপের আগে প্রধানমন্ত্রী যদি নিজ দলের স্থানীয় নেতাদের ডাকতেন, দলের পক্ষ থেকে তাঁদের জবাবদিহি করতেন, তা হলে মানুষ বুঝত যে তিনি অন্ধভাবে শুধু অন্যের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন না। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে যদি তিনি নিউইয়র্ক থেকে প্রথমে নিজেদের দলের নেতা-কর্মীদের বিতর্কিত ভূমিকা ও প্রশাসনের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিতেন, তা হলে ভালো হতো। যদি নিউইয়র্কের সফর সংক্ষিপ্ত করে তিনি দ্রুত দেশে ফিরে আসতেন এবং আসার পর পরই রামু যেতেন, তা হলে হয়তো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ অন্তত তাৎক্ষণিক নিরাপত্তার একটা আশ্বাস পেতেন। এ ধরনের ঘটনায় এক ঘণ্টার দেরিও কিন্তু অনেক বড় ক্ষতি ডেকে আনে।
বিবিসি বাংলায় বেশ কিছু খবরে স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ বলেছেন, পুলিশ যদি দুটি ফাঁকা গুলিও ছুড়ত, যদি সেদিন রাতের মিছিল থেকে দু-চারজনকে গ্রেপ্তার করত, তা হলেও হয়তো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সহজ হতো। এই প্রশ্নের কী উত্তর দেবে সরকার?
দোষারোপের রাজনীতি করে সরকার দুআনি লাভও পাবে না। কারণ, হঠাৎ করে বাস-ট্রাকে করে লোকজন এসে হাজির হতে পারে না। এর পেছনে নিশ্চয়ই মহলবিশেষের প্রস্তুতি ছিল। সরকারের গোয়েন্দা তৎপরতা এটা আগে থেকে টের পায়নি কেন? বিএনপি সাংসদের উসকানিকে দোষারোপ করার আগে নিশ্চয়ই এই ব্যর্থতার কথা বলতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই হামলা বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছিল কি না? এখন তো অভিযোগ উঠছে যে তারা নির্লিপ্ত ছিল। তা হলে বলতে হবে গোড়ায় গলদ।
এখানে প্রশ্ন উঠবে যে, বিরোধী দলও তো একইভাবে সরকারি দলকে ঢালাওভাবে দায়ী করছে, তা হলে সেখানেও তো গোলমাল! এটা ঠিক। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, দোষারোপের রাজনীতি একটা মজ্জাগত রোগে পরিণত হয়েছে। যেকোনো ঘটনায় সরকার ও বিরোধীদলীয় নেতাদের একে অপরকে ঢালাওভাবে দায়ী করা দায়িত্বশীলতার পরিচয় নয়। সামনে নির্বাচন। এখন এ রকম হালকা কথা তাদের মানায় না।
বিশেষভাবে সরকারের দায়িত্ব বেশি। তাদের প্রতিটি কথা মানুষ চুলচেরা বিশ্লেষণ করে। সবাই যাচাই করে। তাই সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া গুরুতর অভিযোগ করা, তদন্তের আগেই কারও দিকে আঙুল তুলে চিহ্নিত করা উচিত নয়।
সরকার যদি নিজেদের ব্যর্থতাকে না ঢেকে বরং দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়, তা হলে দল ও সরকার শক্তিশালী হয়। সম্প্রতি হলমার্ক কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পর থেকেই শেয়ারবাজারে সূচক বাড়তে থাকে। অবশ্য সূচকের ওঠানামার পেছনে অন্য অনেক কারণও থাকে। তবে সোনালী ব্যাংকের দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রথম ব্যবস্থা নেওয়ার পরদিনই পুঁজিবাজারে কিছু গতি এসেছিল। এটা সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার পর মানুষের আস্থা ফেরার লক্ষণ। একটা অজ্ঞাত-অখ্যাত লোক সরকারি ব্যাংক থেকে দুই-তিন হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেল, তার ব্যাপারে যদি কিছু না করা হয়, তা হলে মানুষ কোন ভরসায় এখানে লেনদেন করবে?
এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টার প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠায় অনেকের মনে সন্দেহ দেখা দেয় যে, হয়তো শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত তানভীর মাহমুদের কিছু হবে না। পাঁচ মাস পর্যন্ত তিনি বহাল তবিয়তেই থাকলেন। সরকারের নির্বিকার ভাব নিয়ে কথা উঠল। মানুষ তো বলাবলি করতে শুরু করেছিল যে, সরকার হলমার্কের মূল হোতাকে নিরাপদে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়ে তারপর লোক দেখানো অভিযানে নেমেছে। কিন্তু র‌্যাবের হাতে তানভীর মাহমুদ ধরা পড়ার পর সেই সন্দেহ দূর হয়েছে।
যে দেশে ব্যাংকের দু-চার শ টাকার ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে কৃষকের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা জারি হয়, পুলিশ গরিব কৃষকের কোমরে দড়ি দিয়ে থানায় নিয়ে যায়, সে দেশে হলমার্ক জালিয়াতির বিচার না হলে তো সরকারের মুখ দেখানোর পথ থাকত না। কিন্তু পাঁচ মাসের প্রতিটি দিন, প্রতিটি ঘণ্টা সরকারের পায়ের নিচের অনেকখানি মাটি ধীরে ধীরে সরিয়ে দিয়েছে। তার পরও মানুষ কিছুটা আশ্বস্ত হয়, যখন দেখে সরকার নিজেদের আড়ালে না রেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। সরকার যদি হলমার্কের বিরুদ্ধে আরও আগে ব্যবস্থা নিত, তা হলে তাদের অবস্থান আরও একটু উঁচুতে থাকত।
হলমার্কের ঘটনায় সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে আঙুল না তুলে বাস্তব বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। কারণ, ঘটনা পানির মতো স্বচ্ছ। এর ওপর কায়দাকানুন করতে গেলে পানি ঘোলা করা ছাড়া আর কোনো লাভ হতো না।
অনেক সময় সরকার গড়িমসি করে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনে। যেমন, মানুষ ভেবে পায় না, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের কূলকিনারা কেন হচ্ছে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটা তারিখ দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও কিছু হবে বলে কেউ বিশ্বাস করে না। কোনো বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ ‘ক্রসফায়ার’ সমর্থন করে না। কিন্তু তাও তো কত ‘ক্রসফায়ার’ ঘটে চলেছে। আইনের লোকেরা কত সামান্য অপরাধে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের রিমান্ডে নিয়ে গায়ের ছাল তুলে ফেলছে। অথচ, সাগর-রুনি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ‘আসামিদের’ ধরতে নয় মাস লেগে গেল! মূল ঘটনা যদিও রহস্যাবৃত।
পদ্মা সেতু নিয়ে কতই না টানাহেঁচড়া হলো। শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক তাদের খুব উঁচু পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। অর্থমন্ত্রী স্বাগত জানিয়েছেন। এর কোনো কিছুই হয়তো হতো না, যদি এক বছর আগেই সরকার ব্যবস্থা নিত। এত দিন গড়িমসি করায় এখন প্রশ্ন উঠেছে, সরকারের কোনো খেলা আছে কি না। এখানে তো ঘটনা মাত্র দুটি। হয় দুর্নীতি হয়েছে, অথবা হয়নি। যদি বিশেষজ্ঞ দল এসে দেখে যে দুর্নীতির অভিযোগের ঘটনায় তদন্ত-প্রক্রিয়া ঠিকভাবেই চলেছে, বিশ্বব্যাংকের শর্তগুলো ঠিকভাবেই পালিত হয়েছে, তা হলে ভালো। আর যদি তা না হয়, সরকারকে দায় নিতে হবে। এক বছর আগে এসব উদ্যোগ নিলে সরকারের কাঁধে দায় কম পড়ত। এখন আমরা বিশ্বাস করতে চাই না যে সরকারের কথায় ও কাজে কোনো অসংগতি আছে, কিন্তু যদি কিছু পাওয়া যায়, তা হলে তো সরকারের বারোটা বেজে যাবে। বিভিন্ন প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে শর্তের বিষয় তুলে জোর গলায় আর কিছু বলা যাবে না, বললেও মিনমিনে গলায় বলতে হবে।
এত কিছুর মধ্যেও একটা ভালো খবর যে, মূল্যস্ফীতির হার কমতির দিকে। যদিও অনেক জিনিসের দাম বেশি, কিন্তু মানুষের আয়ও বেড়েছে। গ্রামের মানুষের মজুরি বেড়েছে। সরকারি-বেসরকারি কর্মজীবীদের আয়ও কম-বেশি বেড়েছে। মানুষ কষ্টে আছে, তবে আরও বেশি কষ্টে যে নেই, সেটা মন্দের ভালো।
তার পরও সব সময় মানুষ একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। রামুতে হামলার মতো ঘটনা যদি এত সহজে ঘটতে পারে, তা হলে আবার কোথাও কোনো অঘটন যে ঘটবে না, তার কী নিশ্চয়তা আছে?
নিয়তির ওপর সবকিছু ছেড়ে না দিয়ে সরকারের এখন চারদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা দরকার। সরষের মধ্যে ভূত থাকলে কেবল বক্তৃতার ঝাড়ফুঁকে অবনতিশীল অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো যাবে না।
আব্দুল কাইয়ুম: সাংবাদিক।
quayum@gmail.com



 

হুদার কার্টুন

....................................





 


__._,_.___


[* Moderator's Note - CHOTTALA is a non-profit, non-religious, non-political and non-discriminatory organization.

* Disclaimer: Any posting to the CHOTTALA are the opinion of the author. Authors of the messages to the CHOTTALA are responsible for the accuracy of their information and the conformance of their material with applicable copyright and other laws. Many people will read your post, and it will be archived for a very long time. The act of posting to the CHOTTALA indicates the subscriber's agreement to accept the adjudications of the moderator]




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___